:-মা পলি ঘুমাইছে?(আমি)
:-হুম সেই দুপুর থেকে শুয়েই আছে(মা)
:-কেনো?ডাকোনি?শরীর খারাপ নাকি?
:-না..ডেকেছিলাম..কিন্তু কোনো কথাই বলছেনা।চুপ করেই শুয়ে আছে
:-ওহ..আমি দেখছি।ও খেয়েছে?
:-না..তোর সাথে খাবে বলে খায়নি
:-আমাকে জানাওনি কেনো?
:-মনে ছিলনা?
:-ওহ..
অতঃপর আমি নিজের রুমে চলে আসলাম..এবার পরিচিত হই..আমি হলাম চয়ন।পড়ালেখার পাশাপাশি একটা চাকরি করি।আর যাকে নিয়ে কথা বলছিলাম..সে হচ্ছে পলি আমার বউ।আমার থেকে ২বছরের ছোট..কিন্তু পলি এখনো বাচ্চাদের মতোই আচরন করে।আসলে আমরা দুজন পাশাপাশি বাসাতে থাকি..আর পলিকে বিয়ে করেছি কারন আমি ওকে খুব ভালোবাসি..বিশেষ করে ওর বাচ্চামি।
:-এই পলি ওঠো খাবে চলো
:-তুই যা তোর সাথে কথা নাই..
:-কি..কেনো?
:-তুই বলেছিলি..দুপুরে বাড়ি এসে খাইয়ে দিবি।তাহলে আসিসনি কেনো?
:-সোনা আমার একটু কাজ ছিলো..তাই আসতে পারিনি।চলো এখন খাইয়ে দিবো..এই দেখো তোমার জন্য পুতুল এনেছি
:-পুতুল এনেছো?দাও আমি খেলবো
:-না খেলা পরে..আগে খেতে আসো
:-আচ্ছা চলো এসে দুজনে একসাথে খেলবো..অনেক মজা হবে..
:-হুম..চলো খেতে..
:-হুম..চলো…
তারপর পলিকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলাম..তারপর ওকে বিছানাতে শুইয়ে দিয়ে..আমি খাবার খেয়ে একটু পড়াশোনা করে..তারপর পলির পাশে গিয়ে শুলাম..পলি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো…
:-এই কাল আমাকে এক জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাবা?
:-কোথায়?
:-ঐইতো আমাদের নদীর পাড়ে একটা মেলা হচ্ছে সেখানে..
:-আমারতো অফিস আছে..বিকালে গেলে হবে?
:-হ্যা হবে…মেলা বিকালেই বসবে।।।
:-আচ্ছা..লক্ষিটি এখন ঘুমিয়ে পড়ো
:-আচ্ছা..আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও..
:-হুম দিচ্ছি ঘুমাও..
পাগলীটাকে ঘুম পাড়িয়ে নিজেও ঘুমালাম..
সকালে ঘুমটা ভাঙলো কোনো ভারি কিছুর চাপে..চোখ খুলে দেখি।।পলি সম্পূর্ন আমার উপর শুয়ে আছে..বেলা হয়ে গেছে বিধায়।।পলিকে আমার উপর থেকে সরিয়ে…বিছানাতে শুইয়ে দিয়ে…ফ্রেশ হয়ে কলেজ যাওয়ার জন্য রেডি হলাম।।তারপর পলিকে ডেকে তুললাম…
:-পলি আমি কলেজ যাচ্ছি…বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করবা।।আর মায়ের সাথে থাকবা।কোনোরকম দুষ্টামি করবেনা
:-আচ্ছা..তাড়াতাড়ি আসবা অফিস থেকে আসবা..আমরা মেলাতে যাবো কিন্তু
:-আচ্ছা।।
তারপর আমি কলেজে এসে কয়েকটা ক্লাস করলাম..তারপর আবার অফিস করে বাসাতে ফিরলাম…
রুমে এসে দেখি…পলি সেজে বসে আছে।।আজকে শাড়ি পরেছে।।আজকে ওকে দেখে মনে হচ্ছেনা..ওর কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে..
:-এই চয়ন..চলে এসেছো তুমি..চলো মেলাতে যাবো..
:-হুম যাবো বাবুটা..আমি মাত্রই অফিস থেকে আসলাম..একটু রেষ্ট করি তারপর যাবো..
:-না এখনি যাবো..আমি সেই কখন থেকে সেজে বসে আছি..
:-বাবু এখন একটু না রেষ্ট নিয়ে গেলে..কিন্তু বেশিক্ষন ঘুরতে পারবোনা..
:-আচ্ছা তাহলে তুমি একটুখানি রেষ্ট নাও..তারপর আমরা মেলাতে ঘুরবো..
:-হুম..তোমাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে কে?
:-মা পরিয়ে দিয়েছে..
:-ওহ..
অতঃপর কিছুক্ষন রেষ্ট নিয়ে..পলিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলাম..তারপর একটা রিক্সা নিয়ে নদির পাড়ে আসলাম..তারপর পলিকে নিয়ে ঘুরছিলাম..হঠাৎ এক বান্ধবীর সাথে দেখা হলো…
:-দোস্ত কেমন আছিস?(আমার বান্ধবী রিপা)
:-হুম দোস্ত ভালো..তুই?
:-হুম আমিও ভালো..দোস্ত এইটা আমার বর
:-ওই..হাই(হাত বাড়িয়ে)
:-হ্যালো…
:-দোস্ত তুই বিয়ে করিসনি?
:-হুম করেছিতো…এই যে তোর ভাবি
:-ওহ..ভাবি ভালো আছেন?
পলি কোন কথা না বলে আমার পিছনে এসে দাড়ালো..পলি কোন অপরিচিত মানুষের সাথে কথা বলেনা..
:-আসলে দোস্ত কিছু মনে করিসনা..দোস্ত এই হলো পলি..যার কথা তোদের বলতাম।।
:-দোস্ত তোর মনটা আসলেই ভালো..মেয়েটাকে কত ভালোবাসিস।।আর আমারটা দেখ..আমাকে দেওয়ার মত তার একটুও সময় নেই..
:-হা হা হা…চল কিছু খাওয়া দাওয়া করি?
:-নারে দোস্ত..এখন চলে যেতে হবে।।
:-ওহ..আচ্ছা ভালো থাকিস..
:-হুম..তোরাও ভালো থাকিস..
রিপা আর ওর বর চলে গেলো..তারপর আমি আর পলি সন্ধা পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে..বাসাতে ফিরে আসলাম।তখন মা আমাকে ডাকলো..
:-চয়ন তোকে কিছু বলার ছিলো..
:-হ্যা বলো..
:-পলিকে রুমে দিয়ে তারপর নিচে আয়..
:-আচ্ছা..
পলিকে নিয়ে রুমে আসলাম..তারপর ড্রেস পাল্টিয়ে আবার মায়ের কাছে আসলাম…
:-হ্যা মা বলো কি বলবে?
:-দেখ চয়ন তুই সবই বুঝিস..পলিকে এই বাড়ির বৌ করে আনার পর আমার কাজ কমার চেয়ে বরং বেড়ে গেছে..এই বয়সে এত কাজ কিভাবে করবো?
:-দেখো মা আমি পলিকে ছাড়তে পারবোনা..আর আমি নতুন কাজের লোক রেখে দিবো
:-আচ্ছা..কিন্তু সমস্যা হলো।।সারাদিন বাসাতে একা থাকতে ভালো লাগেনা..আর তোর বউয়ের সাথে কথা বলতে গেলেই কেদে দেয়..
:-মা তোমার কথা বুঝতে পেরেছি..কিন্তু পলির বাচ্ছা নেওয়া সম্ভব?
:-জানিনা?তবুও একটু ভেবে দেখিস?
:-আচ্ছা…
আজ ৪বছর পর পলি মা হয়েছে…আর আমি বাবা..আমাদের মেয়ের নাম হৃদিতা..ওর বয়স ১বছর..সারাদিন বাড়ি মাতিয়ে রাখে..তবে ইদানিং দেখছি পলি সবার সামনে বাচ্চাদের মতো আচরন করলেও..হৃদিতার সাথে বড়দের মতই কথা বলে..তবে গোপনে আর এজন্যই..আজকে অফিস শেষে ডাক্তারের চেম্বারে এসেছি..যেখানে হৃদিতা জন্মেছিল..
:-ডাক্তার সাহেব আপনার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে এসেছি
:-হ্যা বলুন..
:-আমি আমার স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে এসেছিলাম..আপনি দেখেছেন আমার স্ত্রী কেমন বাচ্চা বাচ্চা ভাব করে..কিন্তু ইদানিং সে বড়দের মত আচরন করে গোপনে..
:-আপনার স্ত্রী হয়ত এখন এই বাচ্চামোর অভিনয় করছে..কারন আপনার স্ত্রীর যে রোগে এমন করতো..সেই রোগ বেবি ডেলিভারির সময় ঠিক হয়ে গেছে..
:-ওকে..ধন্যবাদ
অতঃপর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরে এলাম..তারপর সোজা রুমে এসে পলিকে জড়িয়ে ধরলাম..
:-আর অভিনয় করতে হবেনা..আমি সব জেনে গেছি..
:-কি জেনে গেছো?
:-এই যে আমার পুচকু বউটা এখন বড় হয়ে গেছে…
:-তাই?
:-হুম..আই ইউ পুচকু বউ
:-আই ইউ টু বুইড়া বর..হি হি হি