ঝগড়াটে জুটির বিয়ে

ঝগড়াটে জুটির বিয়ে

:-মা আমি কলেজ গেলাম…(আমি)
:-তৃনাকে সাথে নিয়ে যা…(মা)
:-ওকে নিয়ে যেতে হবে কেনো?ও একাইতো যেতেই পারে..
:-পারে কিন্তু এখন থেকে পারবেনা..এখন থেকে তুই নিয়ে যাবি..
:-আমি পারবোনা…
:-আজ থেকে হাত খরচ আর পাবেনা….
:-আচ্ছা..তৃনাকে নিয়ে যাচ্ছি…
:-হুম..যা

অতঃপর নিচে নেমে আসলাম…এবার পরিচয় পর্বটা সেরে ফেলি..আমি চয়ন..বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে..বাবার নিজস্ব ব্যাবসা আছে..আর সাথে শেয়ারে আছে তৃনার বাবা..আমার বাবা আর তৃনার বাবা খুব ভালো বন্ধু..শুনেছি তৃনার বাবা ছোট থেকেই আমাদের এখানে থাকে..আমাদের বাড়িটা দোতলা উপর তলাতে আমরা থাকি নিচ তলাতে তৃনারা থাকে..আমি এবার অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি..আর তৃনা অনার্স শেষ বর্ষে..তবে আমরা সমবয়সী…এইস.এস.সি পরীক্ষার সময় টাইফয়েড জ্বরের কারনে পরীক্ষাটা দেওয়া হইছিল না..তাই তৃনা আমার থেকে এগিয়ে গেছে…আমি আর তৃনা একই কলেছে পড়ছি..

নিচে এসে দেখতে পেলাম কাকি(তৃনার মা) ঘর গোছাচ্ছে..তাই কাকিকে জিজ্ঞাস করলাম..

:-ও কাকি তৃনা কই গো?
:-ওর ঘরে আছে…
:-তৃনা কলেজ যাবেনা?
:-হুম..রেডি হচ্ছে..গিয়ে ডাক দে..

অতঃপর আন্টির ওখান থেকে তৃনার রুমের সামনে আসলাম..দরজা ভেজানো ভিতর থেকে গুন গুন গানের আওয়াজ আসছে..তৃনার কন্ঠস্বর অনেকে সুন্দর..

আসার সময় আন্টি বললো তৃনা রেডি হচ্ছে..তাই আমার ঘরে ঢোকা ঠিক হবেনা..সেজন্য বাইরে থেকেই ডাক দিলাম..

:-ঘৃনাআআ..এই ঘৃনা..?
:-কিরে কুত্তা..চিল্লাস কেন?
:-তুই নাকি আমার সাথে কলেজ যাবি?
:-কে বলেছে?
:-মা বললো…
:-হু..যাবো।তুই বাইরে থাক ভিতরে আসবিনা..
:-হুম..তাড়াতাড়ি আসবি
:-হু..

আমি তৃনার রুমের সামনে থেকে সোজা রান্না ঘরে আসলাম..যতদুর দেখছি কাকি কিছু একটা ভাজছে..এগিয়ে গিয়ে দেখলাম মাছ ভাজছে..আমি একটা মাছ তুলে নিয়ে খেতে খেতে বাইরে চলে আসলাম..

কিছুক্ষন পর তৃনা আসলো…

:-জুনিয়র চল..(তৃনা কলেজে জুনিয়র বলেই ডাকে)
:-চলেন মিস.ঘৃনা….
:-কুত্তা…

অতঃপর দুজনে কলেজে চলে আসলাম..তারপর দুজনে দুদিকে..কারন দুজন আলাদা ইয়ারের..আমি ২য় ক্লাস শেষ করে ক্যাম্পাস দিয়ে হেটে আরেকটা ক্লাসে যাচ্ছি..তখন তৃনা এসে বললো…

:-বাড়ি যাবিনা?
:-এখনো ২টা ক্লাস বাকি আছে..ক্লাস শেষ হলেই যাবো
:-তাহলে আমি কি হুদাই বসে থাকবো?
:-কেনো?ক্লাস নেই?
:-আজ আর নেই..
:-ওহ..তাহলে বাড়িতে চলে যা..আমি ক্লাস ২টা শেষ হলে যাবো।
:-আমি একা যেতে পারবোনা..
:-কেনো?
:-মা,কাকি(আমার মা)দুজনেই তোর সাথে যেতে বলেছে..

:-এই কাহিনী কি বল দেখি..এতদিন তো একাই যাতয়াত করেছিস..তাহলে শেষ সময়ে কেনো আমার সাথে যাওয়া আসা করতে বললো..

:-চল যেতে যেতে বলছি..(হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে)
:-আরে আমার ক্লাস..
:-রাখ তোর ক্লাস..খুব খিদা পেয়েছে।
:-ধ্যাত দুইটা গুরুত্বপূর্ন ক্লাস বাদ গেলো..

:-এত ক্লাস করে কি হবে বলতো..তুই সারাজীবন ক্লাস করে যা রেজাল্ট করিস..আর আমি ক্লাস না করেই সেই রেজাল্ট করি..

:-তুই ভালো ছাত্রী তাই তোর ক্লাস করা লাগেনা..কিন্তু আমার লাগে।
:-হুম..
:-এবার বল আমার সাথে যাওয়া আসা করার কারন..

:-গত পরশু কলেজ থেকে ফিরছিলাম..ওই সময় কিছু বখাটে আমাকে বাজে কথা বলেছিলো..তাই বাড়ি এসে বললাম..এজন্য মা আর কাকী বলেছে তোর সাথে যাওয়া আসা করতে..

:-তারমানে আমাকে তোর বডিগার্ড বানিয়ে পাঠিয়েছে?
:-এটা মা,কাকিই ভালো বলতে পারবে..
:-আমার একটা কথা মাথায় আসছেনা..বখাটের তোকে কেনো উত্ত্যাক্ত করবে?
:-কেনো করবেনা?আমি অনেক সুন্দর না..
:-দাড়া হেসে নিই..হা হা হা
:-হাসার কি হলো?
:-তুই সুন্দর..?
:-কেনো?আমি সুন্দর নয়?
:-উহু..সুন্দর হয় ছেলেরা..আর মেয়েরা হয় সুন্দরী।তুই বাংলার স্টুডেন্ট হয়ে কিভাবে এমন ভুল কিভাবে করলি?
:-ইচ্ছে করে করেছি নাকি?ভুল করে ভুল হয়ে গেছে..
:-হা হা..ভালো
:-দাত মেলানো বন্ধ করে রিকশা থেকে নাম
:-ওহ..নামছি

অতঃপর রিকশা থেকে নেমে দুজন বাসাতে চলে আসলাম..আমি আমার রুমে এসে ব্যাগ রেখে শুয়ে পড়লাম..ঘুম থেকে উঠলাম রিংটোনের শব্দে…তৃনার ফোন..

:-হ্যালো..
:-কই তুই?
:-ঘরে শুয়ে আছি..
:-নিচে আয় খেতে..
:-কেনো?
:-আজ মা আর কাকী একসাথে রান্না করেছে..
:-আচ্ছা আসছি..

অতঃপর ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম..বিশাল আয়োজন মানে অনেক খাবার রান্না করা হয়েছে…কারনটা জানতে পারলাম।কাকু আর কাকীর বিবাহবার্ষিক আজ..অনেক রকমের খাবার রান্না হয়েছে..

:-চয়ন দাড়িয়ে আছিস কেনো?খেতে বস(কাকি)
:-হ্যা কাকি বসছি..কাকি তোমাকে আজ সুন্দর লাগছে..
:-পাকামো বাদ দিয়ে..খাওয়া শুরু কর..
:-আচ্ছা..

অতঃপর জমপেশ খাওয়া দাওয়া হলো..অনেকদিন পর তৃপ্তি করে খেলাম..দুপুরে খাওয়ার পরে আমার ঘুমানো অভ্যাস..তাই নিজের রুমে এসে বিছানাতে গা এলিয়ে দিলাম..

বিকাল ৫.০০টায় ঘুম ভাঙলো..ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সিড়ি দিয়ে নামছিলাম..তখন তৃনা সিডি দিয়ে উপরে উঠছিল..আমাকে দেখে থেমে গেলো..আর বলল

:-কিরে কোথাই যাচ্ছিস?
:-এইতো..একটু হাটতে বের হচ্ছি..তুই উপরে কার কাছে যাচ্ছিস?
:-এইতো..তোর কাছেই যাচ্ছিলাম..
:-আমার কাছে?কেনো?আর এত সেজেছিস কেনো?
:-আমার এক ফ্রেন্ডের জম্মদিনে যাবো..তাই তোকে ডাকতে যাচ্ছিলাম..আর এজন্যই সেজেছি..
:-তোর ফ্রেন্ডের জন্মদিনে যাবি যা..আমাকে কেনো ডাকতে যাচ্ছিলি?
:-বাহ রে!মনে নেই..মা,কাকি বলছে না কোথাও গেলে তোকে সাথে নিয়ে যেতে?
:-হ্যা বলেছে..কিন্তু এখন আমি যেতে পারবনা?
:-কেনো..?শুনি..
:-এখন আমি ঘুরতে যাবো..আর তাছাড়া তোর ফ্রেন্ড তোকে নিমন্ত্রন দিছে..আমাকে দেইনি..সো তুই একাই যা..
:-আরেহ..তোকেও নিমন্ত্রন দিছে..
:-কিভাবে?তোর ফ্রেন্ড আমাকে কিভাবে চিনে?

:-আর ও যখন আমাকে নিমন্ত্রন দিয়েছিলো..তখন আমি বলেছিলাম..আমার একা কোথাও যাওয়া বারন..আমি তোকে ছাড়া যেতে পারবনা..তাই ও তোকেও নিয়ে যেতে বলেছে..

:-মা,কাকি আমাকে মহা ঝামেলায় ফেলাইছে..
:-হু..যা রেডি হয়ে আয়…
:-আমি রেডিং আছি..চল
:-কিইই?তুই এই ট্রাউছার আর টি শার্ট পরে যাবি?
:-তো..কোর্ট,প্যান্ট পরে যাবো?আমি তোর সাথে যাবো কিন্ত তোর ফ্রেন্ডের জন্মদিনে যাবোনা..
:-শার্ট আর জিন্স প্যান্ট পরে আয় এক্ষুনি..আমি নিচে অপেক্ষা করছি..
:-ঠিক..আছে

অতঃপর বাধ্য হয়ে রেডি হতে হলো..কারন ওর সাথে না গেলে..হাত খরচ আর পাবোনা..অবশ্য হাতখরচ না পেলেও কোনো সমস্যা নাই..হাত খরচ পুরোটাই আমি জমিয়ে রাখি..মাঝে মাঝে অল্প কিছু খরচ করি..
রেডি হয়ে নিচে গেলাম…

:-তৃনা চল..
:-হুম চল..

অতঃপর তৃনাকে সাথে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে আসলাম..

:-কিসে যাবি?রিক্সা ডাক দে..(তৃনা)
:-চল হাটতে হাটতে যাই?
:-মাথা খারাপ নাকি?ওদের বাড়ি অনেক দুর..
:-তাহলে রিক্সাতে চল..
:-হুম..

অতঃপর রিক্সা ডাক দিলাম..তারপর কিছুক্ষন রিক্সা ভ্রমনের পর একটা বিশাল বাড়ির সামনে গিয়ে থামলাম..বাইরে থেকেই বোঝা যাচ্ছে এটাই তৃনার বন্ধবীদের বাসা…

:-তৃনা তুই ভিতরে যা..আর যাওয়ার সময় আমাকে কল করিস..আমি চলে আসবো..
:-উহু..কোথাও যাওয়া হচ্ছেনা..এখন আমার সাথে ভিতরে যাবি..
:-তৃনা..এমন কিন্তু কথা ছিলনা
:-হি হি..চল ভিতরে

তৃনা আমার হাত ধরে ভিতরে নিয়ে গেলো..আমিও আটকাতে পারলাম না।কারন বাড়ির সামনে বেশকয়েকজন..তাই জোরাজোরি করলে সবাই খারাপ ভাববে..আর এই সুযোগটা তৃনা কাজে লাগালো..তৃনার সাথে ভিতরে যেতেই..নেহা দৌড়ে এসে..

:-তৃনা জানু..

বলেই জড়িয়ে ধরলো তৃনাকে..নেহাকে আমি চিনি..তৃনাদের সাথে পড়ে..আমাদের কলেজের সেরা সুন্দরীদের একজন…তৃনাও তাদের ভিতর এজজন..এজন্য ওদের মধ্যে ভাবটা একটু বেশিই..নেহা কলেজের শত শত ছেলে ক্রাশ…

:-জানু এইটা কে?(নেহা)
:-আরে ওইতো চয়ন..(তৃনা)
:-ওহ…ছোটভাই আসো।
:-না আপু ঠিক আছে..তৃনা তুই থাক আমি বাইরে গেলাম..(আমি)
:-এই কি ছোটভাই..বড়দের নাম ধরে কেউ ডাকে?(নেহা)
:-নেহা জানু..চয়ন আমাদের সমবয়সী(তৃনা)
:-তাই নাকি?তাহলে ও আমাদের এক ইয়ার নিচে পড়ে কেনো?
:-আমরা একসাথেই পড়তাম..চয়ন অসুখের কারনে এক ইয়ার লস দিয়েছিলো..
:-ওহ..চয়ন আসো ভিতরে আসো..
:-না আপু ঠিক আছে..

অতঃপর তৃনা আর নেহা ভিতরে চলে গেলো..তৃনা আমাকে আর জোর করেনি..কারন ও জানে আমি বেশি কোলাহল পছন্দ করিনা…তারপর নেহার জন্মদিনের অনুষ্ঠান শেষে তৃনাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসলাম..এসেই জমপেশ একটা ঘুম..

পরেরদিন থেকে আবার শুরু হলো তৃনাকে নিয়ে কলেজ যাওয়া আসা…দেখতে দেখতে তৃনার ফাইনাল পরীক্ষা চলে আসলো…আমি ঘরে বসে ল্যাপটপে গেইম খেলছিলাম..তখন তৃনা এসে খাটের পর বসলো..

:-কিরে ঘৃনা রানী..পড়া বাদ দিয়ে এখানে কেনো?
:-কুত্তা আর একবার ঘৃনা বললে কিন্তু মেরে ফেলবো..
:-আচ্ছ বলবনা..বল কেনো এসেছিস?
:-তোর ল্যাপটপটা একটু দিবি আমাকে?
:-কেনো?তোরটা কি হয়েছে?

:-আমরটা অনেক পুরানো..তাই বার বার হ্যাং করছে..এখন ঠিক করতে দিলে অনেক সময় লাগবে..আর পরশুদিন আমার পরীক্ষা তাই এখন ল্যাপটপের খুব দরকার..তোরটা দিলে ভালো হতো..

:-আচ্ছা..রাতে এসে নিয়ে যাইস
:-ওকে..

অতঃপর তৃনা আমার রুম থেকে প্রস্থান করলো..তারপর আমি কিছুক্ষন গেইম খেলার পর..স্নান সেরে খাওয়া দাওয়া করে ঘুম দিলাম..

তারপর বিকালে ঘুরাঘুরি করে..সন্ধায় বাড়িতে ফিরে আসলাম..তারপর ল্যাপটপ থেকে গুরুত্বপূর্ন জিনিসগুলো কপি করে পেন ড্রাইভে রাখছিলাম..তখন মা এসে হাজির..

:-সোনাবাবু কি করিস?(যখন কোন কাজের দরকার হয়..তখন মা খুব আদর করে ডাক দেয়)
:-এইতো..বলো কি বলবা?
:-বলছিলাম..পরশুদিন থেকে তৃনার পরীক্ষা..তুই ওর সাথে যাবি।
:-এ আর নতুন কি?নিয়ে যাবোনে..
:-আচ্ছা কাজ শেষ হলে..নিচে যাইস খেতে..তোর কাকি ডেকে গেলো..
:-আচ্ছা…

মা চলে যাওয়ার পরে..আমি পেন ড্রাইভটা ড্রয়ারে রেখে..ল্যাপটপ নিয়ে নিচে গেলাম..
ডাইনিং টেবিলে খাবার রেডি করে রাখা..তৃনা বেলকনিতে বসে পড়ছে..আর তৃনার কাছে গেলাম..

:-এই নে ধর..(ল্যাপটপটা এগিয়ে দিয়ে)
:-ধন্যবাদ..
:-হুম..খেতে যাবিনা?
:-হুম..খাবার রেডি?
:-তৃনা খেতে আয়..খাবার রেডি(কাকি)
:-চল..

আমি আর তৃনা খেতে গেলাম..কাকি আমাকে দেখে বললো..

:-ওহ..চয়ন চলে এসেছিস?আয় বস
:-আচ্ছা..
অতঃপর খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম..তারপর নিচ থেকে উপরে চলে আসলাম..

অতঃপর খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম..তারপর নিচ থেকে উপরে চলে আসলাম..
এসেই ঘুমের দেশে হারিয়ে গেলাম..

অবশেষে তৃনার পরীক্ষার দিন আসলো..বাবা বাইক রেখে গেছে তৃনাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য..আমি রেডি হয়ে নিচে এসে গ্যারেজ থেকে বাইকটা বের করে তৃনাকে ডাক দিলাম…তৃনা এসে বাইকে বসলো..বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তাতে আসলাম..আসতেই দেখি নেহা আমাদের এদিকে আসছে..নেহাকে দেখে তৃনা পেছন থেকে বলে উঠলো..তাই আমি ব্রেক করলাম..

:-নেহা জানু..(চিৎকার করে)
:-তৃনা জানু..আমাকে রেখেই চলে যাচ্ছিস?
:-তুই আমাকে বলেছিস?তুই আমার সাথে যাবি?
:-বলতে হবে কেনো?আমি কখনো আমার তৃনা জানুকে রেখে কোথাও গেছি?
:-উফফফ!সরি..আয় একসাথেই যাবো
:-হু চেপে বস..

অতঃপর নেহা সুন্দরীও আমার ঘাড়ে চেপে বসলো থুক্কু বাইকে চেপে বসলো..ভাবতেই কেমন লাগছে..আমি বাইকে করে দুই সুন্দরীকে নিয়ে যাচ্ছি..

দুই সুন্দরীকে বাইকের পিছনে বসিয়ে রওনা দিলাম..রাস্তায় সবাই আমদের দিকেই তাকিয়ে ছিলো..মনে হচ্ছে রোড শো করছি..

কিছুক্ষন বাদে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌছালাম..তারপর ওর দুজনে বাইক থেকে নামলো..আর তৃনা বললো..

:-চয়ন তুই বাড়িতে যা..৩ঘন্টা পরে এসে নিয়ে যাবি আমাদের
:-আচ্ছা..ঠিক আছে..

তারপর নেহা আর তৃনা দুজনে ভিতরে চলে গেলো..আমিও বাড়িতে ফিরে আসলাম..
বাড়ি এসে খাওয়া দাওয়া করে..বই পড়ছিলাম..বই পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নাই..
ঘুম থেকে উঠে দেখি..তৃনাকে আনতে যাওয়ার সময় পেরিয়ে ১৫ মিনিট বেশি হয়ে গেছে..আমি ভাবলাম হয়ত ওরা ফিরে এসেছে..তাই শিওর হওয়ার জন্য নিচে গেলাম..কিন্তু তৃনাকে দেখলাম না।তাই দ্রুত বাইক নিয়ে রওনা দিলাম..
পৌছে দেখি তৃনা,নেহা দুজনেই দাড়িয়ে গল্প করছে..আমি ওদের কাছে যেতেই তৃনা মারতে মারতে বললো..

:-কুত্তা আসতে এত দেরি হলো কেনো?কতক্ষন থেকে দাড়িয়ে আছি..পা ব্যাথা হয়ে গেছে
:-তৃনা জানু..ওকে মারা বন্ধ করো।এইটা পাবলিক প্লেস
:-হুম..আয় বাইকে ওঠ
:-হুম..

অতঃপর আবার দুজন বাইকে উঠে বসলো..তারপর সোজা বাড়িতে এসে থামলাম..তৃনা নেমে পড়লো কিন্তু..নেহা নামলোনা

:-চয়ন জানুকে একটু বাড়িতে পৌছে দিয়ে আয়(তৃনা)
:-আচ্ছা..

অতঃপর নেহাকে নিয়ে রওনা দিলাম ওদের বাড়ির দিকে..রাস্তায় নেহার সাথে একটাঔ কথা হয়নি..
নেহাদের বাড়িতে আসার পর নেহা বাইক থেকে নেমে বললো..

:-চয়ন ভিতরে আসো..
:-না আজ থাক..অন্য একদিন যাবো
:-আচ্ছা..তাহলে তোমার নাম্বারটা দিয়ে যাও
:-আমার নাম্বার কি করবেন?
:-এমনিতেই..
:-আচ্ছা নিন ০১৭১১*******।আসি তাহলে
:-ওকে..সবধানে যেও

নেহাকে ওদের বাসার সামনে রেখে আমি বাড়িতে ফিরে এলাম..

এরপর থেকে নেহা আর তৃনাকে প্রতিটা পরীক্ষায় নিয়ে যেতাম আর নিয়ে আসতাম..নেহাকে ফোন নাম্বার দেওয়ার পর থেকে নেহা মাঝে মাঝে কল দিতো আমাকে টুকটাক কথা হতো…

দেখতে দেখতে ওদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো..তারপর থেকে নেহা আরো বেশি ফোন দিতো..আর এদিকে বাড়িতে তৃনা জ্বালাতন করতো..

একদিন পড়ছিলাম তখন নেহা ফোন করলো..

:-কি করছো?
:-এইতো পড়ছি..তুমি?

:-তোমার সাথে কথা বলবো ভাবছিলাম..কিন্তু তুমি যেহেতু পড়ছো তাই তোমার সময় নষ্ট করবনা..একটা কথা কাল……..এখানে চলে আসবে

:-কেনো?
:-আসলেই বলবো..আর টাইমটা আমি টেক্সট করে দিবো..
:-আচ্ছা..বাই
:-মন দিয়ে পড়ো..বাই
:-হুম..

নেহার সাথে কথা শেষ করে আবার পড়াতে মন দিলাম..রাতে নেহার টেক্সট করে টাইম জানিয়ে দিলো..
পরেরদিন বাবা অফিসে যাইনি তাই বাইক বাড়িতে ছিলো..আমি বাইক নিয়ে সোজা তৃনার দেওয়া ঠিকানাতে..চলে আসলাম।দুর থেকে যতটুকু দেখা যাচ্ছিলো মনে হলো তৃনা শাড়ি পরে এসে..

কাছে গিয়ে দেখলাম সত্যিই শাড়ি পরে এসেছে..এমনিতেই সুন্দরী আবার শাড়ি পড়েছে একেবারে সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে..

:-এই পরে দেখার অনেক সময় পাবে বসো
:-ওহ..হুম
:-আসতে অসুবিধা হয়নিতো?
:-না..এখন বলো কিজন্য ডেকেছো?

:-দেখো চয়ন তুমি হয়ত ভাববে আমি মজা করছি..কিন্তু আমি সিরিয়াস।তোমার সরলতা,ভদ্রতার প্রেমে পড়ে গেছি।আমি তোমাকে ভালোবাসি..

:-(সত্যিই আমার কাছে এটাকে মজা মনে হচ্ছে..কারন ওর মতো সুন্দরী আমাকে কিভাবে ভালোবাসবে)
:-এই কিছু বলো..?
:-নেহা আমি উত্তরটা একটু ভেবে রাতে জানাই?
:-ঠিক আছে তবে হ্যা উত্তর চাই..চলো এখন ঘুরবো
:-আচ্ছা চলো..

অতঃপর নেহাকে নিয়ে সারাদিন ঘুরলাম..বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকাল হয়ে গেলো..বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখলাম..অনেক পরিচিত আত্মীয় এসেছে..বাড়িটা হালকা সাজানো..মাত্র কয়েক ঘন্টার ভিতরে এত কিছু হয়ে গেলো..কিন্তু কেনো?সেইটা জানার জন্য উপরে উঠছিলাম..তখন পাড়ার কয়েকটা বৌদি এসে ধরলো..

:-চলো দেবরজি?
:-কোথায় যাবো?
:-স্নান করাতে হবে না?
:-আরে ধুর স্নান আমি একাই করতে পারি..
:-কিন্তু আজ যে আমরা তোমাকে স্নান করাবো?
:-কোন উপলক্ষে?
:-এমা!আজ তোমার না বিয়ে?
:-আমার বিয়ে?
:-হ্যা তোমার বিয়ে..চলো দেরি হয়ে যাচ্ছে স্নান করাতে হবে
:-বৌদি ১মিনিট আমি বাবার সাথে কথা বলবো..
:-আচ্ছা যাও..

আমার বিয়ে অথচ আমি জানিনা?দ্রুত বাবার রুমের এলাম..তারপর বাবাকে জিজ্ঞাস করলাম..

:-বাবা এসব কি শুনছি?আজ নাকি আমার বিয়ে?
:-ঠিকই শুনেছো..আজ তোমার বিয়ে
:-মানে হঠাৎ করে বিয়ে কেনো?

:-আজ যখন তুমি আমার বাইক নিয়ে প্রেম করতে গেছিলে..তখন আমি বাইক নিতে গেছিলাম তোমার থেকে..কিন্তু গিয়ে দেখলাম তুমি প্রেম করছো..ছোট থেকেই তোমার আর তৃনার বিয়ে ঠিক করে রেখেছি..ভেবেছিলাম তোমার পড়া শেষ হলে বিয়েটা দিবো।কিন্তু বাধ্য হয়ে বিয়েটা আজই দিতে হচ্ছে..

:-বাবা…
:-আমি কোন কথা শুনতে চাইনা..বিয়ে হবে এটাই ফাইনাল..

শেষমেষ আমার আর তৃনার বিয়েটা হয়েই গেলো..আমি গিয়ে বাসর ঘরে ঢুকলাম..
:-ওই তুই নাকি নেহার সাথে প্রেম করিস?
:-নারে!আজই মাত্র প্রপোজ করলো..
:-শোন আজ থেকে নেহা টেহা বাদ..আজ থেকে তুই আমার আর আমি তোর..বুঝেছিস?
:-হুম

অতঃপর ফোনটা নিয়ে নেহাকে টেক্সট করলাম.”নেহা তোমাকে নিয়ে ভাববার আগেই তৃনা আমার গলায় ঝুলে পড়েছে..”

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত