আমি একটা গাছের নিচে বসে আছি। গালে হাত দিয়ে।
>> তুমি এখানে?
আমি তোমাকে কত জায়গায় খুঁজেছি তোমার কোনো ধারণা আছে? থাকবে কি করে সারাদিন তো মন মরা হয়ে থাকো। (সুস্মিতা)
>> মন মরা হয়ে থাকব না কেন? তুমি আমাকে অতিথিদের সামনে বকা দিলে কেন?
>> এর জন্য রাগ করে আছো? ঠিক আছে আর বকা দিব না। এবার একটা হাসি দেও।
>> আমি এখন হাসতে পারব না। তুমি সব সময় ।আমাকে বকা দেও।
>> দেখো সে সময় আমার রাগ টা একটু বেশি ছিল। আমার মাথা গরম থাকলে কি যে বলে পেলি কিছু বলতে পারি না।
>> ঠিক আছে বললাম তো সরি।
>> আচ্ছা আমাকে একটা কবিতা শুনাও।
>> আমি কবিতা শুনাতে পারব না। তুমি সারাদিন কবিতা শুনতে চাও কেন?
>> কবিতা শুনতে আমার ভালো লাগে। তুমি তা বুঝবে না। তুমি তো একটা রোবট।
>> কি বললে তুমি?
>> আমি তো ভুল কিছু বললাম না। যা সত্যি তাই বলছি।
>> আমি রোবট। তাইলে রোবটের সাথে প্রেম করতে বসে আছো কেন?
>> রোবট কে মানুষ করার জন্য রোবটের সাথে প্রেম করছি।
>> তাইলে আমি চলে যাই?
>> তুমি চলে যেতে হবে না। তোমাকে আমি এগিয়ে দিয়ে আসবো। রাস্তাঘাটে কাকে বকা দিবে কে জানে?
>> তুমি আমাকে নিয়ে এতো চিন্তায় থাকো কেন?
>> কারণ আমি যে তোমার প্রেমে পাগল। তোমার জন্য রাস্তায় বসে বসে হাজার সময় অপেক্ষা করতে পারি। তোমার জন্য বেলা শেষে আইসক্রিম নিয়ে আসতে পারি।
>> এতো কিছু করতে হবে না। শুধু আমাকে আমার বাসায় দিয়ে আসো।
>> চলো। বসে আছো কেন?
>> উঠছি তো।
.
>> এই যে রিক্সা মামা এইদিকে যান। (সুস্মিতা)
>> না। এই রাস্তা দিয়ে যাবেন না।
>> আরে আমি বাসায় যাব। এই রাস্তা দিয়ে না গেলে আমি কোন রাস্তা দিয়ে যাব।
>> সেটা তুমি বুঝতে হবে না।
>> না। আমাকে বুঝিয়ে বলো।
>> তাইলে শুনো এই রাস্তা দিয়ে গেলে তুমি তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাবে।
>> আমি তো তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে চাই।
>> না তুমি কেন যাবে?
আমি যেতে দিব না।
>> আরে বাবা বাসায় অনেক কাজ। কাজ করতে হবে না?
>> একটু সময় বসো।
>> আমি তো রিক্সায় বসে আছি।
>> মামা একটু আস্তে চালান। তোমার কাছে বসে থাকতে আমার অনেক ভালো লাগে।
>> আচ্ছা মামা আস্তে চালান।
(২)
>> আমি নদীর পাড়ে একটু সময় ঘুরতে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি সুস্মিতা একটা ছেলের কাছে বসে আছে।
>> তুমি এখানে কি করো?
আর এই ছেলেটা কে?
>> তা তোমাকে বলতে যাব কেন?
তুমি বাসায় যাও। এখানে আমি কিছু দরকারি কাজে এসেছি।
>> আমাকে বলছ আমি বাসায় যেতে?
>> হ্যা। বললাম।
>> তুমি এই ছেলের সাথে চিপকাইয়া চিপকাইয়া বসে আছো কেন?
>> আমি কোথায় চিপকাইয়া চিপকাইয়া বসে আছি?
>> এতো কথা বলো কেন?
>> ঠিক আছে। তুমি বাসায় যাও। তোমাকে আমি রাতে ফোন দিব।
>> তার আগে বলো। এই ছেলেটা কে?
>> এই টা আমার খালাতো ভাই।
>> ও খালাতো ভাই। তুমি আগে বলবে না।
>> বলার কি আছে। তুমি চিন না?
>> তুমি আমাকে বলেছ কোনো দিন?
>> তা বলি নি। কিন্তু তুমি তো জানো আমার খালাতো ভাই আছে।
>> আচ্ছা যাও। সরি।
>> আর কোনো দিন বলো না।
>> ঠিক আছে। এবার মুখ টা খুলে একটা হাসি দেও।
.
(৩)
>> তুমি কোথায় আছ? তাড়াতাড়ি আমাদের বাসার সামনে আসো। তোমার সাথে আমার কিছু দরকারি কথা আছে।
(সুস্মিতা)
>> কি কথা ফোনে বলো?
>> ফোনে বলতে পারব না। তুমি আসো।
>> ঠিক আছে আমি আসছি।
.
>> কেন ডেকেছ বলো?
>> শুভ জন্মদিন।
>> হিহিহি। তুমি কিভাবে জানো আজ আমার জন্মদিন।
>> শুনো আমি না জানলে কে জানবে তোমার আজ জন্মদিন।
>> অনেক ধন্যবাদ।
>> জানো আজ তোমার জন্য আমি নিজে রান্না করেছি।
>> সত্যি। তাইলে আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিবে না?
>> দিব বাবা দিব।
>> বড় করে হা করো।
>> করছি তো। এতো খাবার মুখে কেন দেও? আমি খাব কিভাবে।
>> ইশ! তুমি ছোট বাবু যে এতো কম খাবার খেতে পারো না।
>> আমি তো বাবু ওই। তোমার পিচ্চি বাবু।
>> এবার পানি খাও। আর সোজা বাসায় চলে যাও। বাসায় গিয়ে আমাকে ফোন দিবে কিন্তু।
>> আচ্ছা বাবু।
(৪)
>> ইশ! ছাতার ভিতর আসো না। তুমি তো রোদে কালো হয়ে যাচ্ছ। ( সুস্মিতা)
>> নাতো। তুমি কালো হয়ে যাচ্ছ।
আজ রোদ টা অনেক বেশি।
>> মনে হচ্ছে আমার গাঁ টা পুড়ে যাচ্ছে।
>> বলো কি?
তাইলে চলো এক জায়গায় গিয়ে বসি।
>> তোমাকে নিয়ে বের হলে এই একটা সমস্যা। কিছু হলেই বলো চলো কোথায় বসি।
>> তোমার তো কষ্ট হচ্ছে। তাই বললাম।
>> এতো দরদ দেখাতে হবে না।
>> তুমি না একটা পঁচা।
>> হ্যা। আমি পচা। তাতে তোমার কি তোমার জ্বলে কেন?
>> আমি কি আগুন যে আমি জ্বলব।
>> তুমি একটা হিংসুটে ছেলে।
>> আমি হিংসুটে হবো না কেন? তোমাকে তো রোদ অনেক কষ্ট দিচ্ছে। তাই আমার একটু কষ্ট হচ্ছে।
>> ইশ! আইছেন আমার কোথাকার রাজকুমার।
>> আমি তো সত্যি রাজকুমার।
>> হ্যা। তুমি আমার রাজকুমার।
(৫)
>> বাইকা টা আস্তে আস্তে চালাও। এতো জোরে চালাও কেন?
>> তুমি কার পিছনে বসে আছো তা তো তুমি বুঝতে পারতাছ না।
>> হ্যা। আমি জানি তুমি তামিম।
আমাকে তুমি কে শিখাতে হবে না।
>> তাইলে কথা বলতাছ কেন?
চুপ করে বসে থাকো।
>> আমি তো চুপ করে বসে থাকতে পারব না। তুমি দেখে শুনে চালাও।
>> আচ্ছা বাবা চালাচ্ছি।
.
>> এই তোমার কি হলো গালে হাত দিয়ে চুপ করে বসে আছো কেন?
>> তুমি আমার কোনো কথা শুনো। আমার কথা তো তুমি একদম ওই শুনো না।
>> আমি তোমার কথা শুনি না কে বলছে?
>> কেউ বলতে যাবে কেন?
আমি নিজে বলছি। তুমি আমার কোনো কথা শুনো না।
>> আচ্ছা কি কথা এখন বলো। আমি তোমার কথা শুনব।
>> শুনবে। তাইলে এক কাজ করো আমার জন্য কিছু কদমফুল নিয়ে আসো।
>> এই বিকালবেলা আমি কদম ফুল কোথায় পাব?
>> আমি জানতাম তুমি এই কথা বলবে তার জন্য ওত আমি তোমাকে কোনো কথা বলতে চাই নি।
>> আচ্ছা রাগ করতে হবে না আমি তোমার জন্য কদমফুল নিয়ে আসছি।
>> আমি এখানে বসে আছি। তুমি তাড়াতাড়ি নিয়ে আসো।
>> ঠিক আছে মহারানী আমি নিয়ে আসছি।
.
>> এই নেও তোমার কদমফুল।
>> হিহিহি। এতো গুলা কদমফুল।
>> হ্যা। এতোগুলা কদমফুল।
এবার আমাকে নিজের হাত দিয়ে মাথা হাতিয়ে দেও।
>> দিচ্ছি।
তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
>> সত্যি তাই।
>> খুব সুন্দর।
>> তাইলে চলো তোমাকে আমি আজ আমার পক্ষ থেকে ট্রিট দিব।
>> কি খাওয়াবে আগে বলো।
>> আগে রেস্টুরেন্টে চলো।
(৬)
>> তুমি এই দুপুর বেলা আমাকে ফোন দিয়ে আসতে বললে কেন?
>> তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
>> কি কথা আগে বলো?
>> বলবো বলবো। এতো পাকনামি করতাছ কেন?
>> আমি কোথায় পাকনামি করলাম।
>> তুমি কাল বিকালবেলা কোথায় ছিলে?
>> কেন বাসায় ছিলাম। মিথ্যা কথা বলবে না। তুমি কাল বিকাল বেলা সমুদ্রের পাড়ে ছিলে না?
>> কি বলছ তুমি?
>> মিথ্যা কথা বলবে না।
>> সরি ছিলাম।
>> আমি জানি। সেখানে একটা ছেলের সাথে ঝগড়া করেছ। ছেলেটার সাথে ঝগড়া কেন করলে?
>> ওই ছেলে আমার সাথে ঝগড়া করেছিল। তাই আমি ঝগড়া করছি।
>> আমি তোমাকে ভালো করে চিনি। তুমি কত টা মানুষের সাথে ঝগড়া করতে পারো।
>> বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছা করে ঝগড়া করে নি।
>> তুমি জানো তোমাকে নিয়ে আমি কত টা চিন্তায় থাকি। তুমি কেন মানুষের সাথে ঝগড়া করো।
>> আপেল খাবে?
>> এর জন্য ওই তোমাকে আমার সব সময় ভালো লাগে না। একটু শান্তিতে থাকতে দিবে না আমাকে? আমি তো একটা মেয়ে।
>> ঠিক আছে এখন থেকে আমি আর কারো সাথে ঝগড়া করব না। সব সময় চুপ থাকবো।
>> কথা টা মনে থাকবে তো।
>> থাকবে।
>> তাইলে তোমার মাথা টা দেও একবার হাতিয়ে দেই।
>> হিহিহিহি।
>> এতো দাঁত বের হাসতে হবে না।
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক