ম্যাডামরে নিয়ে পালানো

ম্যাডামরে নিয়ে পালানো

– ক্রিকেট খেলছিলাম…. মাম্মা ক্যাচ, এই এলাকার আমরাই একমত্র দল যে কোনদিন কোথাও জিততে পারি নাই… তবে অনেক নাম ডাক আছে আমাদের…
হাজার হলে ও দলের ক্যাপ্টেন আমি বলে কথা… ।
ওহহহহহহহহহহহ নাকটা গেছেরে, দলের ক্যাপ্টেন এর ঐ যদি এই অবস্থা হয় বাঁকি গুলোর কথা না বললে ও চলে।

– এমন সময় পুরো শরীলটা কেঁপে উঠলো….
ওরে খোদা আবার ভূমিকম্প শুরু হলো নাকি…।
পকেটে হাত দিয়ে দেখি, ওহহহহহহ এই ব্যাপার কে আবার ফোন করলো…
স্কিনে তাঁকাই দেখি লাবন্য ম্যাডাম..
আমার ম্যাডাম হলে ও বয়সে আমার থেকে বেশি না পাঁচ বছরের বড়ো, তাঁতে কী ভালোবাসা কোন বাঁধাই মানে নারে পাগলা,
থাকতো বয়স…

– হ্যালো ম্যাডাম…।
– সাহরিয়া কই তুমি।
– আমি এই তো ক্রিকেট খেলছি, কেনো।
– না মানে আমার সাথে একটা জায়গায় যেতে পারবা।
– হুমমমমমমমমমম… কোথাই যাবো… এক মিনিটের মধ্যে আসছি।
– ঠিক আছে স্টেশনে চলে আসো।
– আচ্ছা জামা কাপড় ও নিয়ে আসবো নাকি এমনি…।
– ওকে পারলে নিয়ে আসো।
– আপনি ঐ বট গাছটার নিচে বসেন,,, আমি এক্ষুনি আসতেছি।
ফোনটা রেখেই দৌঁড়…।
– সাহরিয়া মাম্মা কই যাস…
এবার তো আমরা ব্যাটিং….
– রাখ তোর ব্যাটিং….
আমার কপাটা মনে হয় আজকে খুললো.. আর আছোস ব্যাটিং নিয়ে।

বাসাই গিয়েই ব্যাগটা গুছিয়ে নিয়ে,,
এক বালতি পানি মাথাই ঢেলে…
আবার দৌড় স্টেশনের দিকে….।
দেখি আমার সপ্নের পাখিটা বসে আছে…. আহা কী সুন্দর লাগছে।

– ম্যাডাম চলে আসছি…।
– এতো তাঁড়াতাড়ি হয়ে গেলো।
– পড়লে তো উঁড়েই আসতাম….।
– কী বললা।
– না না কিছু না ।
– আর হ্যা তুমি আমার নাম ধরে বলতে পারো… আর তুমি করে বলো।
না হলে সমস্যা হতে পারে
এমন ম্যাডাম ম্যাডাম বললে….।
– এইটা শুনার পর তো আমি
খুঁসিতে একদম গদগদ হয়ে গেছি।
– ঐ এমন করছো কেনো।
– না মানে আপনাকে তুমি করে বলবো ভাবতেই কেমন লাগছে।
– ঠিক আছে তাহলে আপনি করেই বলো।
– না না তুমিই তো আমার ভালো লাগছে, তুমিই বলি কেমন।
– ওকে।
– আচ্ছা আমরা কই যাবো।
– সাহরিয়া আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে আসছি,বাবা, মা জোর করে বিয়ে ঠিক করছে তাই…।
– এটা শোনার পড় তো পরানডা একদম জুরাই গেলে…।
আচ্ছা তাহলে আমরা এবার কোথায় যাবো।
– সিলেট……।
– কীইইইইই… সিলেট কেনো, সিলেট তো মেলা দূর…।
– আরে তুমি কোন টেনশন করো না আমি তো আছি…।
– হুমমমমম পাগলি তুমি বললে তো আমি সোজা সুইজারল্যান্ড চলে যামু আর তো সিলেট…।
– কী বলো এমন ফিসফিস করে।
– না মানে সিলেট যাবো তাই না।
– হ্যা…. ওখানে আমার প্রেমিক আছে… একা একা যেতে বোরিং লাগবে তাই তোমাকে বললাম,তোমার কোন প্রবলেন নাই তো।
– না না কোন সমস্যা নাই….
এতক্ষণ কী সুখেই না ছিলাম ,
এইটা শুনার পড়ে তো যেমন বাংলা সিনেমাতে আগে নায়ক, নাইকার মন ভাঙ্গলে উতাল পাতাল সমুদ্রের সিন চোখের সামনে
ভাসতো, আমার সামনে ও ঠিক সেম কাহিনী।

হায়রে কপাল আমার… নিজের প্রেমিকাকে অন্যে হাতে তুলে দিতে নিয়ে যাচ্ছি ….।
ওহহহহহহহ এই দুঃখ যে কোথায় রাখি…।
– ঐ সাহরিয়া কী ভাবছো এমন,
হাঁসিখুঁশিই তো ছিলে একটু আগে।

– না মানে ম্যাডাম… আমার কাছে তো এত টাকা নাই…
আমি আব্বার কাছে থেকে টাকা নিয়ে আসি…।
– আরে দূর আমি আছি না, টাকা লাগবে না তুমি শুধু আমার সাথে চলো।
– ওকে….. হায়রে কপাল আমার ভিতরটা জ্বলে পুরে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
– আমাকে ম্যাডাম ডাকবা না বলছি না…।
– না মানে ওই টাই এখন বেশি ভালো লাগছে…।
– মানে…।
– টাকা দেন টিকেট নিয়ে আসি।
– হুমমম ধরো….।

টিকেট নিতে গিয়ে দেখি সামনে আব্বা…।
– তুই এখানে কী করছিস শুনি।
– না মানে আব্বা লাবন্য ম্যাডাম বললো যে স্টেশনে আজকে অংক শিখাবে তাই।
– তো স্টেশনে যা… টিকিট কাউন্টার এ কী করছিস।
– আসলে অংকটা হইল ট্রেন নিয়ে, আর আমি অংকে একটু কাঁচা তো তাই.. ম্যাডাম বললো একে বারে হাতে কলমে শিখাবে সেই জন্য টিকেট নিতে এসেছি।
– আমার সাথে ফ্যাজলেমি করিস তাই না।
– তুমি কী মোর হারামি বন্দু লাগো যে ফ্যাজলেমি করমু… এমনি এইদিকে সব ফেঁটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
এমন সময় কান ধরে ম্যাডামের কাছে নিয়ে গেলো।

– আচ্ছা লাবন্য শয়তানটা এই সব কী বলছে, তুমি নাকি ওকে ট্রেনের মধ্যে অংক শিখাতে নিয়ে আসছো।
– না মানে আংকেল, আমার দেশের বাড়িতে কিছু নোট আছে, তাই সাহরিয়া কে নিয়ে যাচ্ছি , কোন কী সমস্যা।
– আরে না না কী সমস্যা হবে, ও তোমার কাছে থাকলেই একটু মানুষ হবে।
– এহহহহহ মানুষ হবে… কাছে তো থাকতেই চাই, সেটা তো আর বেশিদিন সম্ভব না (মনে মনে)।
– কী বলিস এই সব।
– কিছু না….।
– যা টিকেটে নিয়ে আয়।
লাবন্য মা ভালো করে যেও, শয়তানটার কথাই যেন কিছু মনে করো না… ওর মা থাকলে আর আজ এমন হতো না।
ঠিক পিটিয়ে সোজা করতো।
– ঠিকআছে আংকেল আমি তো আছি… আপনি যান।

ঠিকেট নিয়ে আসলাম পাশাপাশি আমি আর লাবন্য বসে আছি…
মানে লাবন্য ম্যাডাম …।
– আমার জানা মতে সাহরিয়া তো এমন চুপচাপ থাকে না, আজকে ও ছিলো না, তবে হঠাৎ চুপ কেনো শুনি।
– না মানে এমনি… আমার ভবিষ্যত বউ এর সমনে বিয়ে তাই মন খারাপ।
– মানে, কী শুনি।
– না…. মানে কিছু না এমনি…।
– ঠিকআছে তোমার কাঁধে, ঘুমিয়ে গেলাম, কোন রকম বিরক্ত করবে না কিন্তুু ….।
– বলেই ঘুমিয়ে গেলো, আমি তাঁর মায়া ভরা মুখটা দেখছি।
আর ভাবছি… এই মুখটা একবার দেখার জন্য কতোই না দুষ্টুমি করেছি।
রাতে জানালাই দাঁড়িয়ে থেকেছি।
অংক শেখার নাম করে কত যে তাঁর বাসাই গেছি তাঁর হিসেব নাই…
কলেজ শেষে পিছন পিছন গেছি,অনেক থাপ্পড় ও খেয়েছি… তাও একবার এই মুখটা দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যেতো….

কিন্তুু এই মুখটা আজ চোখের সামনে তাও শান্তি নেই,
দুইদিন পরে যে এই মুখটা আর আমার থাকবে না, অন্য কারোর হয়ে যাবে…
আগে চুরি করে দেখা.. দিন গুলিই ভালো ছিলো…
আবার এটা ও ভাবছি যে, সব বাদ দিয়ে আবার আমাকেই কেন তাঁর সাথে নিয়ে যাচ্ছে ।

ক্যান যে এমন তাঁর পিছনে ঘুর ঘুর করতাম…..

– ঐ এমন আমার দিকে হা করে কী দেখছো, কোন খারাপ মতলব আছে নাকি।
– না না আমি তো এমনি তোমার দিকে তাঁকাই ছিলাম….
সরি মানে আপনার দিকে।
– আপনি বলতে হবে না… তুমি করেই বলবা… এবার বলো কী খাবে…।
– মনের মধ্যে শান্তি নাই আর কী খাবো…….।
– ঐ কী হলো বলো।
– আমি তো ভাত খাবো।
– ঠিক আছে চলো…।
– ট্রেনটা চলছে…..
আমি আর লাবন্য খাচ্ছি।

– ঐ আমার তো যতদূর মনে হয়… তোমার আমাকে বলার কথা লাবন্য একটু খাইয়ে দিবা… তা না চুপ চাপ খেয়েই যাচ্ছো….।
দেখি বড়ো করে একটা হা করো।
– হায়য়য়য়য়য়য়া…..।
– এই তো মিষ্টি ছেলে।

খেয়ে দেয়ে আবার সিটে চলে আসলাম… লাবন্য পুরো রাস্থা আমার কাঁধে মাথা রেখেই ঘুমাই ছিলো………।

সিলেট এসে গেলাম….।

– আচ্ছা এবার আমরা কোথায় যাবো…।
– হোটেলে।
– কেনো আপনার লাভার কই।
– সাহরিয়া তোমাকে না একটা কথা মিথ্যা বলছি….
আমি একটা লটারি পাইছি এখানের একটা হোটেলে তিনদিন থাকার…।
– তাহলে প্রমিক কই।
– আরে কোন প্রেমিক নাই…
তুমি যদি না আসো, তাই নাটকটা করছি….।
– মেয়ে বলে কী.. এইটা শুনে তো মনের মধ্যে আবার নতুন জোয়ার ভাঁটা শুরু হয়ে গেলো, খালি খালি কষ্ট নিয়ে
আসলাম ট্রেনে মধ্যে দূর।

– ঐ হঠাৎ এমন খুশি কেন ।
– আবে বলবানা… বলেই…
হঠাৎ মুখটা ফসকে একটা পাপ্পি দিয়ে দিছি।
– ঐ এটা কী হলো।
– হায় হায় খুঁশি তে কী করে ফেলছি… না মানে মুখটা ফসকে গেছে হি হি হি।
– অনেকের অনেক কিছু ফসকে যায় শুনছি… তোমার মুখ ফসকে যায় তাই না শয়তান একটা।
– হুমমমমমমম….তোমারি তো।
– কীইইই।
– তুমি না তুমি বলতে বলছো।
– ওকে এবার চলো।
– হুমমমমমম চলো….
কী যে খুঁশি খুঁশি লাগছে আহা।

না আর দেরি করা ঠিক হবে না…
কখন যে কী ঘটে…
মনের কথা মনের মধ্যে রাখলেই বিপদ… তার উপরে তো সুন্দরী মেয়ে হলে আরো আগে বলা দরকার।
যাই হোক আজকে রাতে বলতেই হবে……………..।
লাবন্য এক রুমে আমি এক রুমে।
ফ্রেশ হয়ে তো খালি খাটের উপরে লাফাতেছি.. কখন যে রাত হবে।

না আর থাকা যাচ্ছে না এখনি বলমু গিয়ে….।
– দরোজাই ঠক ঠক করতেছি…।
– ঐ কী হয়েছে এমন করছো ক্যান।
– তোমার সাথে আমার কথা আছে।
– কী কথা বলো শুনছি।
– না এখানে না।
– তাহলে।
– বাহিরে…..।
– দাঁড়াও রেডি হয়ে আসছি…।
– না এমনি ভালো লাগছে….।
– ঐ গাধা থ্রিকোয়াটার পড়েই যাবো নাকি।
– হুমমমমমমমম, এখনি।
– ওকে চলো…..।

বলো এবার কী বলবা…….।

– না মানে….।
– ঐ এমন লাফাচ্ছ কেনো।
– কেমনে যে বলি।
– তাঁড়াতাড়ি বলবা না চলে যাবো।
– আমি তোমাকে ভালবাসি।
– কীইইইইই।
– হুমমমমমমমমম সত্যি…..।
– আসার সময় যখন হঠাৎ বললা না যে তোমার প্রেমিক আছে… তখন তো আমার হৃদয়, পড়ান, মন সব জ্বলে পুরে ছারখার হয়ে গেছিলো….।
যখন শুনলাম নাই… আবার সব ফিরে পাইছি… তাই আর পুরাতে চাই না সে জন্যই তো বলে দিলাম।
আর আমি তোমাকে সব সময় আগলে রাখবো দেখো।
– হি হি হি শয়তান তোমাকেই তো আমার আগলে রাখতে হবে…
– যাই হোক একজন রাখলেই হবে।
এবার বলো ভালোবাসো।
– হুমমমমমম রে বোকা…. না হলে কী
এতদূরে নিয়ে আসতাম… আর
আমি জানতাম তুমি… বলতেই পারবা না খালি আমাকে দেখার জন্য দুষ্টুমি করবা… তাই তো সব প্লান।
– দৌড়ে গিয়ে জরাই ধরলাম….
– ঐ ছাড়ো বলছি….।
– না ছাড়বে না… আমাকে কষ্ট দিলে?
ক্যান আসার সময় হুমমমম।
– ওকে ধরেই থাকো।
– ওকে…আর ছাড়বো না
হি হি হি হি !!!

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত