ঘুম থেকে উঠে কেউ যদি দেখে পুরো ঘর ফুলে ভরা তাহলে কেমন লাগবে…??
শান্তা ঘুম থেকে দেখে তার পুরো রুম ফুলে ভরা…
শান্তারর কাছে মনে হয় গোলাপ ফুলের কোন গন্ধ নাই…
সে শত চেষ্টা করেও কখনও গোলাপের গন্ধ পায় নি…
তবে আজকে পাচ্ছে..
হয়ত অনেক গোলাপ একসাথে দেখে গন্ধটা আসছে
শান্তার মনে হচ্ছে তার হ্যালোসেলুশন হচ্ছে। যদি দেখেত রুম পুরো খালি সে নিচে ফ্লোরে ঘুমিয়ে আছে তাহলে একটা যুক্তি দাড় করানো যেত চোর এসে সব চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু চোর এসে কিছু না নিয়ে ফুল রেখে যাবে এটা কোন যুক্তির কথা না…শান্তা চোখ ডলে আবার তাকালো দেখল সত্যিই ফুল গুলো আছে।তার পরও তার বিশ্বাস হচ্ছে না। সে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে দিনের কাজ শুরু করল।
সারাদিনে একবারও শান্তা আর ঘুমে গেল না। তার বার বার সন্দেহ হচ্ছে সে রুমে ডুকবে দেখবে ফুল গুলো যেখানে ছিল সেখানেই আছে। আর তার চিন্তা আরও বাড়বে। ফুল গুলো যদি না থাকে তাহলে যেন সে সস্তি পায়। কিন্তু কেন যেন রুমে যেতে ভয় লাগল তার।।
সন্ধার সময় শান্তা বাসা থেকে বের হলো। নিচের বাগানে গেলে একটু ভালো লাগে সেই আসায়। এ সময় যে যার নিজ আস্তানায় ফিরে যায়।পাখিরা তাদের সারাদিন আকাশের বুকে ঘুরে বেড়িয়ে সন্ধারর সময় কোন এক গাছের ডালে ঘর বাধেঁ।সবার মতে সকালের সোনালী রোদ শান্তি নিয়ে আসে।কিন্তু সন্ধার পর তো সব আওয়াজ কমে যায়। মানুষজন ফিরে যায় পরিবারের কাছে।একটি শুশি যখন দিন শেষে তার বাবাকে দেখে তখন তার সুখের হিসেব নেই।তাহলে সন্ধাকে কেন শান্তি বলা হয় না..?
শান্তা ঘন্টা দুয়েক বাগানে কাটালো।সেখানে নতুন কয়টা গাছ লাগানো হয়েছ, আজ কোন গাছটা মারা গেল,কোন গাছে নতুন ফুল ধরেছে দেখল…
শান্তার উপরে যেতে ইচ্ছা করছে না। ছয় তালা এই বিল্ডিয়এ কেন কোন লিফ্ট দেওয়া হয় নি। সিড়ি বেয়ে উঠার কারোনে শান্তা ছাদে যেতে পারে না। ছাদ তার অনেক পছন্দের জায়গা।তাদের ফ্লাট দোতালায়। মাঝে মাঝে তার দোতালায় উঠতে গেলেও বিরক্ত লাগে। আজ যেমন লাগছে।
দরজা সামনে গিয়ে শান্তা অবাক সে নিচে যাওয়ার সময় দরজা লাগায় নি।কি মন ভোলা হয়েছে সে এখন ভাবে ভাবতেই কখন যযে রুমে চলে গেল খেয়াল করে নি। সে লক্ষ করলো রুমে ফুল গুলো নেই। শান্তা এখন নিশ্চিত হলো সকালে সে ভুল দেখেছে।সেটা তার কল্পনা ছিল।
রাব্বির আসতে দেরি দেখে সে টিভি ছেড়ে টিভি দেখছে। কোন চ্যালেনে আজকে মন মত কিছু হচ্ছে না..বিরক্ত নিয়ে চ্যালেন পাল্টাচ্ছে। দরজায় টোকা পড়লো। শান্তার বুঝতে বাকি রইল না রাব্বি ফিরেছে। এই কলিংবেলের যুগে রাব্বি শুধু কড়া নাড়ে।
দরজা খুলতেই রাব্বি হাপাতে হাপাতে বলল,এই চলো ছাদে যাই..।।শান্তা কোন প্রশ্ন করার আগেই রাব্বি তার হাত ধরে টেতে ছাদের দিকে রওনা দিল।
রাব্বির ছাদে যাওয়া মানে জোছনা দেখা যেটা শান্তার ভালো লাগে না। বারো মাস ছাদ তো আলোই দিয়ে যায়। হয়ত কোন দিন একটু বেশি দেয়। সেটা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করার কি আছে..?? কোন দিন হয়ত কম আলো দেয় কই সেটা নিয়ে তো কেউ কথা বলে না..।
তারা ছাদে যেতে শান্তা লক্ষ করল ছাদ যেন আজ বড্ড বেশি অন্ধকার।তাহলে রাব্বি তাকে এখানে জোসনা দেখাতে আনে নি..?
ভেতরে ডুকতেই লাইট জ্বলে উঠলো। একসাথে এত আলো যেন চোখ মেনে নিতে পারে না। শান্তার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে…। ছাদে শুধু যে আজ তারা দুজন আছে তা না বিল্ডিংএর অনেকে আছে। শান্তা আর রাব্বি কি দেখে তারা সবাই একই শুরে গাইছে…হ্যাপি বার্থডে টু ইউ.. হ্যাপি বার্থডে ডিয়ার শান্তা..হ্যাপি বার্থডে টু ইউ।।
উইশ শেষে রাব্বি সবার উদ্দেশ্যে বলল,ধন্যবাদ সবাইকে আমাকে সাহায্য কারার জন্য এবং এখানে আসার জন্য..। এখন বোধ হয় বার্থডে র্গাল কে একটু সেজে আসা উচিত। তাকে অনুষ্ঠান উপযোগি হওয়ার জন্য কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিচ্ছি। ”
রাব্বি শান্তার হাতে একটি পেকেট দিল যেখানে ছিল নতুন একটা শাড়ি,চুড়ি, পায়েল,এক জোড়া ঝুমকো কানের দুল।
অনুষ্ঠান শেষে রাব্বি আর শান্তা রাস্তায় হাটতে বের হলো। শান্তা তার চুল ঠিক করছে বার বার চুলগুলো চোখে লাগছে..।
রাব্বি- উহু,চুল বেধো না। এভাবেই ভালো লাগছে।
– আর আমার যে রাখ হচ্ছে সেটা..?
– তোমার রাগ হচ্ছে দেখেই তো বেশি ভালো লাগছে। রাব্বি হেসে ফেলল
শান্তা অভিমানো প্রশ্ন করলো,”খুব মজা লাগছে তোমার আমাকে এভাবে কষ্ট পেতে দেখে..?? ”
– দেখো জগতের নিয়ম হচ্ছে যে যত কষ্ট পাবে অন্যজন তত আনন্দ।আমি তার ব্যতিক্রম নই..।। দেখ তুমি রাগ করো না তোমাকে রাগতে দেখলে আমার আরও বেশি হাসি পায়। বলেই রাব্বি জোড়ে জোড়ে হাসা শুরু করল..
দুজন নর নারী হাত ধরে নিস্তব্ধ রাস্তার মাঝ দিয়ে হেটে যাচ্ছে।কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে না।
দুজনের দোলয়মান হাতের কারনে মেয়েটির কাচের চুরির শব্দ যেন সব নিরবতা ভেঙ্গে দিচ্ছে….