– কলেজ থেকে হেঁটে হেঁটে বাসাই
আসছি.. টাকা না থাকই
তাই হেঁটেই আসতে হয়, এক দিক
দিয়ে আবার ভালোই লাগে।
এমন সময় পিছন থেকে কেউ
ডাক দিলো।
– সাহরিয়া ওই সাহরিয়া দাঁড়াও একটু।
– পিছনে তাঁকিয়ে দেখি কেউ নেই,
ওমা হায় হায় আজকাল আমার
পিছনে আবার পেত্নী লাগলো নাকি,
আমি এই সবে আবার হেব্বি ভয় করি।
– ঐ এদিক ও দিক কী দেখো
আমি উপরে।
– উপরে তাঁকাইতেই দেখি নীলা
মুচকি মুচকি হাঁসছে।
ওহহহহহ এই মেয়েটা যে আমাকে
কী পাইছে আল্লাই জানে, আর
সে জানে।
– সাহরিয়া তুমি নিচে থাকো আমি
এক মিনিটের মধ্যে আসছি।
– দূর আমার তো আর খেয়ে দেয়ে
কাজ নাই দাঁড়াই থাকবো,
তাই বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটা
দিলাম।
একটু পরে আবার পিছন থেকে
ডাক।
– ওই তোমারে না দাঁড়াইতে
বল্লাম।
– কী আর করার দাঁড়িয়ে গেলাম।
– দৌড়ে চলে আসলো… আর
হাঁপাইতে হাঁপাইতে বললো
ওটা আমাদের বাসা।
– হুমমমম বেশ বড়ো।
– হুমমমম।
– আচ্ছা তোমারে একটা কথা বলি।
– হুমমমম।
– ওই তোমার আমি বড় না ছোট
তাই এমন সাহরিয়া সাহরিয়া বলে
চিল্লাইতেছ।
– বাহরে… আমি তোমাকে
ভালবাসি তাহলে আপনি করে বলতে
যাবো কেন।
– তোমার মাথা না পুরাই গেছে।
– হুমমমম তোমার জন্য।
– দূর থাকো।
– ঐ ফোন নাম্বার দিয়ে যাও।
– না দিবো না..
– দিবা না তাই
না তাহলে কিন্তুু।
– ঐ কী করবা হুমমমম ।
– চিল্লাবো…. সবাই রে বলবো
তুমি আমাকে খারাপ কথা বলছো।
– হুমমমম ওকে বলো।
– আহহহহহহহহহহহহহহহহহ….।
– হায় হায় যে মেয়ে সত্যি সত্যি
হয়তো বলবে..
মনে অযান্তে নীলার মুখ চেঁপে ধরলাম।
আর চিল্লানি বন্ধ হয়ে গেল।
– ঐ ছেঁড়ে দিলে কেন…. ধরেই
থাকো না।
– আচ্ছা থাকো তুমি গেলাম আমি।
– নাম্বার না দিলে কিন্তুু আবার
চিল্লাবো।
– হুমমমম ওকে এই না ০১৭৪২৫৪….।
হইছে শান্তি এবার।
– না আমি ও তোমার সাথে যাবো।
– কীইইইইইইইইইই…… ঐ যে তোমার বাবা আসছে।
অন্য দিকে তাঁকাতেই দৌড়।
এই মেয়েকে নিয়ে যে কী করি..
যখন তখন যেখানে সেখানে বলে
ভালোবাসি।
দেখতে খারাপ না অনেক সুন্দরী,
বড় লোকের মেয়ে কেমন বাচ্চা বাচ্চা টাইপের…. অনেক কিউট..।
যেদিন থেকে ট্রেনে করে এক সাথে
আসছি যেদিন থেকে বলেই চলেছে
ভালবাসি ভালবাসি।
আমার দিকেই নাকি পুরো পথ তাঁকিয়ে ছিলো।
– আমি ওকে ভালবাসি না সেটা
কিন্তুু না… আমি ও ওকে অনেক
ভালবাসি কিন্তুু মুখে বলি না।
কারণ আমি ওর যোগ্য না ও
কত বড় ঘরের মেয়ে আর আমার
আছেটাই বা কী…
কোনদিন চাকরি পাবো কী না তা ও
ঠিক জানি না।
শুধু শুধু দুই দিন ভালবাসি বলে একটা ফুলের মতো মনটা নষ্ট করার
মানে হয় না।
আর আমি তেমন না।
কী করে যে নীলার মাথা থেকে
এই ভুতটা নামাই সেটাই ভাবছি।
এমন সময় বাবা আসলো।
– সাহরিয়া কালকে তোর আম্মুর
বান্ধবী এর মেয়ের বিয়ে,
আমাকে খুব করে বললো, আমি
তো আর যেতে পারবো না তুই
যাবি।
– ঠিক আছে বাবা।
পরেরদিন বিয়ে বাড়িতে
গেলাম….
– অনেক বড় একটা বাড়ি মনে হয়
অনেক বড়লোক হবে।
– বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই একটা
মহিলা বললো।
– কে তুমি বাবা, তোমাকে
তো চিনলাম না।
– আন্টি আমি সালমা এর ছেলে।
– ও বাবা এসো ভেতরে এসো।
– ভাবি দেখেন কে এসেছে।
– কে ?
– আপনার ছোট বেলার বন্ধবি।
– তুমি সাহরিয়া।
– হুমমমম আন্টি…. ( মনে মনে ভাবছি আমার নাম কেমনে জানলে)
– কী ভাবছো তোমার নাম কেমন করে জানলাম এটাই তো।
– হুমমমমমম।
– ও ছোট থেকেই বলতো
ওর একটা ছেলে হলে তার নামের
সাথে মিল রেখে নাম রাখবে… এই
সাহরিয়া নামটা ও নিজেই ঠিক করে ছিলো।
তোমার কপালটা অনেক খারাপ বাবা মায়ের ভালোবাসাটা ও পেলে না… আজ ও থাকলে কত কী
যে করতো… পৃথিবীর স্রেষ্ট মা হতো।
– আরে কী করছো ছেলেটা আসছে
একটু খেতে দিবে তা না,
কী সব শুরু করলে।
– চলো বাবা তোমাকে খেতে দিই…।
– আন্টি একটা কথা বলবো।
– হুমমমম বলো।
– মা খুব ভালো ছিলো তাই না।
– হুমমমম অনেক।
আরে কাঁদছো কেন।
– মাকে খুব মিস করছি।
জানালাই চোখ পড়তেই দেখি
নীলা….
তাঁর চোখে ও পানি কেমন টলমল
করছে।
– আন্টি নীলাকে দেখতে পেয়ে।
– নীলা মা এই দিকে আয়তো…
সাহরিয়া কে খেতে দে।
ওহহহ হ্যা সাহরিয়া এ হলো আমার
মেয়ের বান্ধবী নীলা।
নীলা ওকে খেতে দে আমি গেলাম।
এই মেয়েটা যেমন পাগলি তোমার
মা ও ওমন ছিলো।
আচ্ছা আমি গেলাম।
– ওই আগে বলোনি কেন মা নেই।
– মা মানে।
– তোমার মা মানে আমার মা।
– আবার শুরু হয়ে গেলো।
– আমি তোমাকে ভালোবাসি বুঝলে।
– ওকে….
খেয়ে দেয়ে আস্থে করে কেঁটে পড়লাম।
ভাবছি কী করা যায়… হঠাৎ একটা
বুদ্ধি আসলো সিগরেট হাতে নিয়ে
থাকবো আর নীলা দেখলে আমাকে
খারাপ ভাববে আর চলে যাবে।
প্লান অনুযায়ী কাজ চলছে…
আর নীলা ও আসলো।
– তুমি সিগরেট খাও।
– হুমমম প্রতিদিন ১০ টা না না ২০টা
করে হুমমমম।
– বাহ্ আমার সামনে এটা খাও দেখি।
– দূর ফেঁসে গেলাম মনে হয়।
– কী হলো খাও।
– একবার একটা টান দিতেই
আমি শেষ।
– হা হা হা হা এই খাও তাই না বুদ্ধুরাম।
– বলো না ভালোবাসো।
– নীলা তোমাকে কিছু কথা বলার
আছে আমার।
– হুমমমম বলো।
– আমি এমন করি বলে যে
এই না আমি তোমাকে ভালোবাসি
না।
তবে কোন মুখে ভালোবাসি বলবো
বলো, আমার ভবিষ্যত
কী সেটা আমি নিজে ও জানি না।
তোমাকে কেমন করে এর মধ্যে জরাই বলতে পারো।
আমার বাবার আমি ছাড়া আর
কোন সম্পত্তি নেই,
মানলাম তোমাকে ভালোবাসলাম
বিয়ে করলাম তারপরে কী হবে।
এইটা নাই ওইটা নাই,
তখন আর ভালোবাসা থাকবে
না আমাদের মধ্যে সব সময়
ঝগড়া হবে, আর তুমি
আমাকে পদে পদে তুলনা দিবে।
আমাদের ভালোবাসার শেষটা
এমনি হবে।
তুমি এখন বলতে পারো তোমার বাবা
অনেক বড়লোক সে তোমাকে
অনেক ভালোবাসে।
কিন্তুু আমার মতো ছেলে কে সে
কোনদিন ও মেনে নিবে আর
তোমাকে ও ত্যাগ করবে।
কোন দামি গাড়ি নেই, ঘরে এসি
নেই ভালো দামি খাবার নেই।
এখন বলো এমন দুই দিনের
ভালোবাসা চাও।
হঠাৎ নীলা চলে যেতে লাগলো।
– যাক বাবা কাজ হয়েছে।
একটু পরে দৌড়ে এসে আমাকে
জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
– যাই হোক না কেনো আমি তোমাকেই চাই ব্যাস… পরেরটা
পরে দেখা যাবে।
দাঁড়াও একটু…..।
– আবার কী হলো।
কাকে ফোন করছো।
– চুপ করে দাঁড়াই থাকো।
– হ্যালো বাবা….
তুমি আমাকে ভালবাসো।
– হুমমমম মা অনেক।
– আমি একজনকে ভালবাসি
তাঁর কোন কিছু নেই…. সে আমাকে
ভালবাসে আমি ওকে ভালবাসি।
তার পরে আমি নীলাকে যা যা
বলছি সে সব ওর বাবা বলল।
– ওর বাবা হাঁসছে… লাউডস্পিকার
দেওয়া ছিলো তাই আমি ও শুনছিলাম।
– ওমন কিচ্ছু হবে না সোনামণি..
আমার মেয়ের আমি কিচ্ছু হতে
দিবো না….. সব বাবা
অমন না মা ।
– ওকে লাউ ইউ বাবা।
আমি সাহরিয়া কে না পেলে
মরেই যাবো।
– ঠিক আছে মা সাহরিয়া কেই
এনে দিবো… এবার একটু হাঁসো।
– ঠিক আছে বাবা রাখছি।
আবার এসে জরিয়ে ধরলো….
মনে মনে ভালবছি আসলেই
মেয়েটা পাগলি…
আন্টি বলছিল মা ও নাকি এমন
ছিলো…..
নীলার মধ্যেই হয়তো আল্লাহ্ মা কে
পাঠিয়েছে…
তা না হলে এত্ত ভালোবাসে কেনো।।
– ঐ এবার তো জরিয়ে ধরো।
– হুমমমম….।
– সব সময় জরিয়ে ধরে থাকবা এমন।
– হি হি হি ওকে পাগলি।
– হা হা হা ঠিক আছে পাগল।।।
>>সমাপ্ত<<
>>The End<<