কাজটা কি ঠিক করলে , আদনান ?
-কেন ? কি ভুল করেছি ?
-তুমি আমায় জোর করে বিয়ে করছো । আবার কিছুক্ষণ আগে অনুমতি না নিয়ে কিস করলে । আর বলছো কি ভুল করছি ?
-কেন ? আমি কি খুব অন্যায় করে ফেলেছি ?
-হ্যা করেছোই তো । আমি কারো করুণা প্রার্থী হয়ে বেঁচে থাকতে চাই না । কালকে আমাকে ডিভোর্স দিবে । নতুবা আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবো । বলেই মীম কান্না করতে করতে ছাদে চলে যায় ।
আদনান খুবই মিশুক ছেলে । যদিও আদনানের জন্ম গরীব পরিবারে কিন্তু আদনান ছোটবেলা হতেই বাবা , মা ও বড় ভাইয়ের খুব আদরেই বড় হয়েছে । তাই দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহন করেও অভাবের মুখ দেখে নাই ।
আদনান খুব মেধবী ছাত্র হওয়ার সুবিধার্থে বগুড়া কলেজে চান্স পায় । তাই খুব সহজেই কয়েকটা টিউশনি করিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে থাকে । কিন্তু জীবনে খুব একা অনুভব করতে থাকে । কারণ গুটি কয় বন্ধু তাও তারা সারারাত গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে মেতে থাকে ।
তাই আদনানও গার্ল ফ্রেন্ড খুজতে থাকে । কিন্তু গার্ল ফ্রেন্ড তো ছেলের হাতে মওয়া না যে চাইলাম আর পেয়ে গেলাম । তাই আদনান চিন্তা করতে থাকে কিভাবে গার্ল ফ্রেন্ড পাওয়া যায় । অবশেষে পেয়েও যায় একটা উপায় । আদনান চিন্তা করে কাল কলেজে যে প্রথম আসবে তার নাম দিয়ে ফেসবুকে সার্চ দিব যে মেযে প্রথম আসবে তার সাথেই প্রেম করবে । এইসব ভাবতে ভাবতে আদনান কখন যে ঘুমিয়ে যায় ।
আদনান পর দিন কলেজে যেয়েই দেখে লামিম কলেজে আসছে । আর তখন আদনানের খেয়ালও হয় যে তাদের কলেজে কোনো মেয়ে নেই । এতে আদনানের মন খারাপ হয়ে যায় । কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার মন ভালো হয়ে যায় । কারণ লামিমের নামে মধ্যে মেয়ের নাম আছে আর তা হল “মীম”
কলেজ থেকে ফিরেই আদনান মীম নাম সার্চ দেয় এবং প্রথম ফুল হাতে দাড়িয়ে থাকা একটা আইডি আসে । আদনান মেয়েটিকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠায় । কিন্তু না মেয়েটি আদনানের রিকুয়েস্ট অ্যাকসেপট করে না । অবশেষে আদনান মেসেজ দেয় মীমকে ।
-আই লাভ ইউ ।
-সরি ।
-ফাস্ট সাইড অফ লাভ ।
-কি যা তা বলছেন ? ব্লক করে দিবো কিন্তু ।
-দেন । তবুও ভালোবাসি ।
-…………( সিন কিন্তু নো রিপ্লাই )
এভাবে প্রত্যেকদিন আদনান মেসেজ করতে থাকে কিন্তু মীম সিন করলেও উত্তর দেই না । অবশেষে একমাস পরে মীম টুকটাক কথা বলতে থাকে । কিন্তু মীম আদনানের প্রস্তাবে রাজি হয় না । কিন্তু আদনানের সাথে ফ্রেন্ডশীপ করতে রাজি হয় । কিন্তু আদনান সুযোগ পেলেই মীমকে ভালোবাসার কখা বলত । আর মীমের কাছে না বাক্য আরও একবার শুনত । আদনানও কম কিসে ? সে প্রায় মীমকে বলত “আমি তোমাকে জোর করে হলেও বিয়ে করব” । মীম কিছু বলত না শুধু হাসতো । হয়ত মীমও আদনানকে পছন্দ করত ।
চার বছর পর আজ মীম ও আদনান দেখা করতে চলেছে । যদিও মীম আদনানের ছবি দেখেছে কিন্তু আদনান মীমের ছবি দেখে নাই । সেই সকাল থেকে আদনান বসে আছে । কিন্তু মীমের আসার কোনো নাম গন্ধ নাই । আদনান মীমের ফোনে ফোন দিচ্ছে কিন্তু ফোন যাচ্ছে না । ও আপনাদের তো বলাই হয় নি এই চার বছরের মধ্যে মীম ও আদনান মধ্যে তাদের নাম্বার আদান প্রদান হয়ে গেছে ।
কিন্তু মীম আসছে না আবার মীমের ফোনও বন্ধ । আদনানের চিন্তা বেড়েই চলেছে । বিকালের দিকে আদনানের ফোনে ফোন আসে মীমের ফোন থেকে । আদনান ফোন ধরতেই একটা লোক বলে উঠলো “ এই মেয়েটির কল লিস্টে আপনার নাম্বার আছে তাই আপনাকেই বলছি । এই মেয়েটিকে এসিড মারা হয়েছে । আপনি তাড়াতাড়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজে চলে আসুন । এই কথা শোনা মাত্র আদনান তাড়াতাড়ি করে হাসপাতে পৌছায় । গিয়ে দেখে একটা মেয়ে বেডে শুয়ে আছে দেখতে খুব ফর্সা কিন্তু মুখটি কালো । মেয়েটি অথ্যাৎ মীমের এখনও জ্ঞান ফিরে নাই । একটুপর ডাক্তার কাছে গিয়ে আদনান দাড়াতেই ডাক্তার আদনানকে জানায় “মীমকে প্রথমে অজ্ঞান করে রেফ করা হয় । তারপর মুখে এসিড মেরে ফেলে দেওয়া হয় ” । এই কথা শোনার পর আদনান স্তদ্ভ হয়ে যায় কিছুক্ষণের জন্য ।
.
আদনান মীমের বাবাকে ফোন দেয় । মীমের বাবা-মা এসে , মীমকে দেখে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে । তারপর তারা মীমের চিকিৎসার জন্য মীমকে দেশের বাহিরে পাঠায় ।
চিকিৎসার পর মীম সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসে । কিন্তু আদনানের সাথে আর তেমন কথা বলে না । বরং আদনানকে খুব অ্যাভোয়েট করতে শুরু করে । আদনান মীমের কাছে কারণ জানতে চাইলে মীম পরিষ্কার ভাবে আদনানকে জানায় , সে আর আদনানকে ভালোবাসে না । আদনান মীমকে ফোন করলে মীম নানা রকম বাজে কথা শুনাত । কিন্তু তবুও আদনান মীমকে নিয়মিত ফোন করত ।
এইভাবে আরও দুইবছর চলে যায় । আদনান একটা ভালো চাকরি পায় । আদনান বাবা-মাকে নিয়ে শহরে থাকতে শুরু করে । বাবা-মা বিয়ের কথা বললে আদনান মীমের কথা তাদের খুলে বলে । আদনানের বাবা-মা সব শুনার পর তারা রাজি হয় ।
তারপর দিন আদনানের বাবা-মা মীমের পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় । মীমের বাবা-মা রাজি হলেও মীম আদনানের বাবা-মাকে খুব অপমান করে , বাড়ি থেকে বের করে দেয় ।
তাই তো আজ আদনান জোড় করে মীমকে কাজি অফিসে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করছে । বাড়িতে আনার পথে মীমকে কিস করে । তাই তো মীম আদনানকে এই হুমকি দিল ।
আদনানও ছাদে গেল । হাতে একটা ছুরি । গিয়ে মীমের হাত ধরে মীমকে জিজ্ঞেস করে
-মীম , আমায় তুমি ভালোবাসো ?
-না ।
-আমি তোমার অমতে বিয়ে করছি ?
-হুম
“মীম হুম বলার সাথে সাথে আদনান ছুরি দিয়ে আদনানের হাত কেটে ফেলে ” । মীম চিৎকার দিয়ে আদনানের কাছে যায় কিন্তু আদনান মীমকে দুরে সরিযে দেয় । আর বলে
-মীম তুমি আমাকে টাচ করবে না ।
-তোমার রক্ত পড়ছে ।
-পড়ুক । তাতে তোমার কি ? তুমি তো আর আমাকে ভালোবাসা না । রক্ত পড়ছে পড়ুক ।
-প্লিজ আদনান এমন করো না ।
-এমন করার আর দেখেছো কি ? এখন তোমাকে সিধান্ত নিতে হবে । যদি তুমি আমাকে না ভালোবাসো তাহলে নিচে চলে যাও । আর শুন তুমি নিচে নামার আগেই আমি ছাঁদ থেকে ঝাপ দিব । তোমার ভালোবাসা না পেলে আমি বেঁচে থেকে কি করব ?
-প্লিজ আদনান পাগলামি করো না । আমার কাছে কিছুই নাই তোমাকে দেবার । তাই আমি তোমাকে আমি দূরে রাখতে চাইছি ।
-আমার তোমার দেহ নয় । তোমাকে চাই । আর না হলে……
“মীম আদনানকে আর কিছু বলতে না দিয়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলে , তুমি সত্যি আমায় জোড় করে বিয়ে করলেই।