ফেসবুক চালাতে চালাতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম। হঠাৎ একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম। মেয়েটা আমার দিকে তাঁকিয়ে বললো-
-এ মিস্টার চোখে দেখন না? চোখ কি আকাশে তুলে রাখছেন না কি?
-আমি না হয় চোখ আকাশে তুলে রাখছি। আপনার চোখ তো আছে। আপনি দেখেন নাই কেন?
-ধাক্কা দিয়ে আবার তর্ক করতেছেন।
-আপনার গায়ে যেমন ব্যাথা লাগছে আমার গায়ে তেমন ব্যাথা লাগছে। এখানে দুজনেরই আপরাধ আছে।
-আমি আপনার মতো মোবাইল চালাতে চালাতে হাঁটছি না।একথা বলে চলে গেলো। আমি আমার মতো করে চলে গেলাম। অন্য আরেক দিন বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গেলাম। সেখানে মেয়েটিকে দেখতে পেলাম। আমি একটা চেয়ারে বসতে যাব মেয়েটি এসে হাজির।মেয়েটি এসে বললো-
-এ মিস্টার চেয়ার টি আমার।
-কোথাও তো নাম লেখা আছে কি?আর কিছু না বলে চলে গেলো। কিছুক্ষন পর এক গ্লাস পানি আমার মাথায় ডেলে দিলো। মেজাজটা গরম হয়ে গেলো, একটা থাপ্পর বসিয়ে দিলাম গালে। তারপর অনুষ্ঠান থেকে চলে আসলাম। বাড়িতে আসারপর বুঝতে পারলাম কাজটা করা আমার ঠিক হয় নাই। আবার দেখা হলে সরি বলে নেবো। পরদিন রাস্তা দিয়ে আসার সময় মেয়েটিকে দেখতে পেলাম। মেয়েটির সামনে গিয়ে বললাম-
-সরি।মেয়েটি কোন কথা না বলে চলে গেলো। পরদিন আমি ফেসবুক চালাতে চালাতে রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম।মেয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়াদতে তার মাথার সাথে এক ঠুসা খেলাম। তাঁকাতে দেখলাম সেই মেয়েটি। আমি বললাম-
-আপনি?
-আপনি রাস্তা দেখে চলতে পারেন না?
-না পারি না, আপনি আমার পিচে লাগছেন কেন?
-আমি কোথাই পিচনে লাগলাম, আমি তো আপনার সামনে আছি।
-কি সমস্যা তোমার ভাই?
-আমি ভাই হতে যাবো কেন? আমার ভাই আছে ।
– স্বামি লাগবে কি?
-হবে না কি স্বামি?
-তুমি কি?
-আমি তোমার বউ।
-দ্যাত।এ কথা বলে চলে আসলাম। এরপর থেকে ও আমাকে দেখলে স্বামি স্বামি বলে পিছু নেয়। এরপর থেকে ওকে দেখলে পালিয়ে পালিয়ে থাকতাম। কিছুদিন পর ও আমার সামনে এসে হাজির। সে আমাকেবললো-
-তোমাকে না মোবাইল চালিয়ে হাঁটতে না করছি?-তোমার সমস্যা কি?
-তুমি আমার স্বামি, তুমি মারা গেলে আমি বিধবা হয়ে যাবো।
-তোমার পাজলামি রাখবে?-রাখবো, তবে তুমি আমাকে ফ্রেন্ড হিসাবে গ্রহনকরতে হবে।
-করতে পারি তবে,শর্ত আছে।
-কি শর্ত?
-তুমি আমাকে স্বামি স্বামি করতে পারবে না, আর শুধু ফ্রেন্ড এর বেশি কিছু হবে না।
-ওকে, তোমার মোবাইলটা দাও।
-কেন?
-তোমার নাম্বার নেয়ার জন্য। এটা আমার নাম্বার সেভ করে নাও।
-তোমার নাম ও তো জানি না, কি দিয়ে সেভ করবো?
-আমি নিলিমা।
-আমি আরিফ।
-আমি জানি তো।আরিফ ও নিলিমার মাঝে ফোনে কথা বার্তা হয়। মাঝে মাঝে ঘুরতে যায়। কিছু দিনের মাঝে তাদের মাঝে ভালো একটা সম্পক হয়ে গেলো। একদিন নিলিমা বললো-
-আমি তোমার শর্ত রাখতে পারবো না।
-মানে?
-আমি তোমাকে ভালোবাসি।
-মজা করবে না?
-মজা না, সত্য। মজা করতে করতে কখন যে তোমাকে ভালোবেসে পেলেছি। আমি নিজে ও জানি না। তুমি আমাকে ভালোবাস কিনা সেটা বলো।
-ভালোবাসি, কিন্তু এভাবে বলবে আশা করি নাই। এই অল্প কয়দিনে তোমার প্রতি আমার মায়া জন্মে গেছে।এভাবে তাদের ভালোবাসা শুরু হয়। একদিন নিলিমাতার বাবার কাছে তাদের সম্পকের কথা বলে। তার বাবা মেয়ের খুশিতে খুশি তাই রাজি হয়ে গেলো। কিছুদিন যাওয়ার পর তাদের পরিবারের মতে তাদেরবিয়ের ঠিক হয়। নিধারিত তারিখে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের দিন রাতে আরিফ বাসরঘরে ডুকতে নিলিমা উঠে এসে সালাম করলো। আরিফ নিলিমাকে উঠিয়ে খাটে বসায়। আরিফ নিলিমাকে বলে-
-আমি তোমাকে কিছু কথা বলবো আশা করি মনোযোগ দিয়ে শুনবে। তুমি তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছতোমার যোগ্য মনে করে । তোমাকে ভালোবাসার জন্য আমাকে যারা যোগ্য করে তুলেছে তারা আমার বাবা মা। তাদেরকে সম্মান করবে ও ভালোবাসবে। তাদের কে তোমার মা বাবার মতো ভালোবাসলে তারা ও তোমাকে মেয়ের মতো ভালোবাসবে। তুমি যদি কোন ভুল করো মা তোমাকে রাগ করে বকতে পারে। তুমি যদি তার রাগের সময় কোন কথার উত্তর না দাও, এর মানে এটা তোমার হার না। এতে তাদের কাছে তোমারসম্মান আরো বাড়বে। তোমার যদি কোন ভুল না হয় তারপর ও প্রতিবাদ করবে না। মা যখন তোমার সাথেভালো থাকবে বুঝিয়ে বলবে। এতে মায়ের ভুল বুঝতে পারবে। রান্না না পাড়লে মাকে শিখিয়ে দিতে বলবে। তাতে মা খুশি হবে।তোমার রুপ যৌবন শুধু আমার জন্য বাইরে দেখানোর জন্য না,বাইরে চলাফের করার সময় সংযত হয়ে চলবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বে।তারপর তারদিকে তাঁকাতে দেখলাম চোখ দিয়ে পানিপড়ছে। তারপর তার চোখ মুছেদিয়ে জরিয়ে দরলাম। তারপর ফজরের আজান দিয়ে দিলো। ঘুম ভাঙতে দেখি পাশে বউ নাই। তারপর মনে হলো আমি তো বিয়ে করি নাই বউ আসবে কোথাই থেকে। তার মানে আমি স্বপ্ন দেখ ছিলাম। তারপর উঠে নামজ পড়তে চলে গেলাম।