বাঙ্গালি মেয়ের প্রেমে

বাঙ্গালি মেয়ের প্রেমে

বিমানের ভিতর বসে বসে আছি , পাশের সিটে মা,সামনে বাবা, যাচ্ছি বংলাদেশ , আমার নিজের দেশ , যদিও জন্মভূমি নয় তবুও নিজের দেশ তো, সেই ছোটবেলা ১ বার গিয়েছিলাম , তা এখন মনে নেই , ভাবতেও অবাক লাগে ১৭ বছর পর বাংলাদেশে যাচ্ছি, 

ওহ্ হ্যা আপনাদের সাথে পরিচয় করে নেওয়া যাক,

আমার নাম প্রতিক , থাকি USA 🇺🇸  তে , বাবার ব্যাবসা আছে ওখানে , আমার জন্মভূমি ও 🇺🇸 USA তে , এখন যাচ্ছি বাংলাদেশে তাও ১৭ বছর পর, যাবার কারন হচ্ছে আমার বিয়ে , অবাক হচ্ছেন তাই না!? আমিও প্রথম শুনে অবাক হয়েছিলাম, বাবার নাকি কোন বাল্য বন্ধুর মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করা অনেক বছর আগে থেকে। কিন্তু আমি বেচারা বিয়ে করতে চাই না, বিয়ে যতসব যামেলা , জীবন টাকে উপভোগ করার আগেই যেন সব শেষ হয়ে গেল, কিচ্ছু করতে ও পারবো না, বাবা মার একমাত্র সন্তান কখনো তাদের কথার অবাদ্য হই নি , তাই চুপ করে সব মেনে নিলেও ভিথর থেকে মানতে পারছি না , চিনি না জানি না কখলো দেখি নি সেই মেয়ের সাথে নাকি আমার বিয়ে !! 

তো বাংলাদেশে এসে পরেছি, অতিব সুন্দর একটি দেশ, কল্পনার রাজ্য মনে হচ্ছিল, যার সুন্দর্য ভাষার প্রকাশ করা যায় না । তো আমারা বাসায় চলে আসলাম, 

অনেক আত্মীয়-স্বজন এসেছেন বাসায় তো সবার সাথে কথা বলতে বলতে অনেক সময় কেটে গেল , ফ্রেস হয়ে রুমে সুয়ে আছি ,দরজায় ঠক ঠক শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো , 

চেয়ে পুরো টাসকি খেয়ে গেলাম, মনে হচ্ছে কোন নীল পরি আমার সামনে দারিয়ে আছে , লাফ দিয়ে বিছানা থেকে উঠতে গিয়ে পরে গেলাম,!! 

মেয়ে টা সেই কি হাসি! আমিও অবাক হয়ে এর হাসি দেখছি , কেন জানি না রাগ হবার পরিবর্তে আমার ভালো লাগছে ,! মেয়ে দি এগিয়ে এসে হাত বারলো , আমিও ওর হাত ধরে উপরে উঠলাম, মনে হচ্ছে আমি যেনও নেশার মধ্যে আছি , মেয়েটি হাসতে হাসতে বল্লো 

একটু দেখে শুনে চলা ফেরা করবেন কেমন? তার কথায় বাস্তবে আসলাম, একটু রাগ দেখিয়ে বল্লাম আপনি কে আর আপনি আমার ঘরে না আসলে আমি এভাবে পরতাম না দোষ করেছেন আবার হাসছেন ও ?

:দেখেন এইটা শুধু আপনার না আমার ও ঘর !আর আমার ঘরে আমি আসতেই পারি!! (মেয়েটি) 

:আ আ আপনারররর ঘরর মানে ?? (আমি) 

:সময় আসলে বুজবেন এখন তৈরি হন বাইরে যাব? (মেয়েটি) 

:এমনি তেই অনেক রাগ হচ্ছে তার উপর মেয়েটি আমায় আদেশ করছে , আমি রাগ করে বল্লাম পারবো না , 

:মেয়েটি আমার কলার চেপে ধরে বলে : কি তুই পারবি না আবার বলতো, ?? 

আমার তো ভয়ে অবস্থা খারাপ এ কেমন মেয়ে রে বাবা আপনি থেকে তুই তে চলে আসছে , এ ঈশ্বর এ কার পাল্লায় পরলাম বাচাও আমায়, মেয়েটি আবার বল্লো কি হলো? আমি: না পারবো , কেন পারবো না ১০০ বার পারবো আপনি একটু দারান , বলে দোরে মায়ের কাছে আসলাম , আমার কথা শুনে মাও হাসছেন , সত্যিই আমি বুজতে পারছি না কি হচ্ছে আমার সাথে,তারপর মা বল্লেন যে প্রতিক ওর নাম নীলাঞ্জনা , তুমার হবু অর্ধাঙ্গিনি , কথা টা শুনার পর মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পরেছে মনে হলো!এমন একটা গুন্ডি টাইপের মেয়ে হবে আমার বউ ভাবা যায় , মা-বাবা কেনও আমার সাথে এমন করলো ?? কি আর করার দু:খ ভারকান্ত মন নিয়ে চল্লাম মরারানী কে শপিং করাতে , গাড়ি চালাচ্ছি উনি আমার পাশে বসে আছেন !! হঠাৎ উনি মানে নীলাঞ্জনা আমার হাত ধরলো, আমি একঝটকায় হাত সরিয়ে নিয়ে বল্লাম :কি কি করছেন আপনি ? 

:বাড়ে! আমি আমার স্বামীর হাত ধরছি আপনার কি তাতে?? (নীলাঞ্জনা) 

:দেখেন আমি আপনাকে ভালোবাসি না ! আপনি অনেক সুন্দর অনেক ভালো , অনেক ভালো ছেলে পাবেন , please আমায় ভুলে যান , সুধু সুধু কষ্ট পাবেন , আমি আপনার ভালবাসার যোগ্য নই !!(আমি) 

আমার কথা শেক্ষ করবার আগেই মেয়েটি কান্না দেখে কষ্ট লাগছিলো !! আসলে সত্যই কাদলে মেয়েদের অনেক সুন্দর লাগে , মজার ব্যাপার হচ্ছে ও কাদলে ওর নাক দিয়ে ও জ্বল পরে , 

:গাড়ি থামান!(নীলাঞ্জনা)

:কেনও? কি হয়েছে? 

:বল্লাম না গাড়ি থামাতে ! থামান না হয় লাফ দিব! 

:আরে!আরে! করছেন কি? দাড়ান! ( আমি গাড়ি থামিয়ে নিচে নামলাম) 

:কি হয়েছে আপনার ??(আমি) 

:তুমি এমন কেন? (নীলাঞ্জনা) 

:আমি কেমন ?? 

: আচ্চা! তুমি কি আধোও বুজো না আমি তুমাকে কতো টা ভালবাসি, সেই ছোট বেলা থেকে তুমায় নিয়ে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম , জানো অনেক ছেলেই আমায় প্রেম প্রস্থাব দিত , কিন্তু আমি ভালবাসতাম তুমায় , প্রতিদিন মনে হতো তুমায় নিয়ে ঘুরবো, তুমার হাতে হাত ধরে বৃষ্টিতে ভিজবো, তুমার সাথে ফুচকা খাবো, তুমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাবো , পূর্নিমার রাতে এক সাথে চাঁদ দেখবো, আরো অনেক অনেক কিছু !!! 

আমি আসলে হতভম্ব হয়ে গেছি মেয়েটির কথা শুনে ,, তারওপর ওর চোখ দুটো কেদে কেদে লাল করে ফেলেছে ,

নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে , কোন কথা না বলে ওর হাত ধরে সরাসরি বাসায় চলে আসলাম ,, কোন ভনিতা না করে বাবা কে বল্লাম আমি বিয়ের জন্য রাজি , ৪,৫ দিনের মধ্য বিয়ে করতে চাই !! আমার বাবা ,মা, নীলাঞ্জনার বাবা মা যতটা না অবাক হয়েছেন তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছে নীলাঞ্জনা মেয়েটি , আসলে সত্যি বলতে ওকে প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায়, তারপরও যখন বল্লো ও আমায় কতে টা ভালোবাসে আর ওর কান্না দেখে বুকের বাম পাশে চিন চিন একটা ব্যথা অনুভব হয়ে ছিলো ,,একেই বুজি ভালোবাসা বলে ??বাবা বল্লেন ঠিক আছে আমরা সব ব্যবস্থা করছি !! 

আমি নীলাঞ্জনার হাত ধরে ওকে ছাদে নিয়ে আসলাম , মেয়েটি কিছু বলছে না হয়তো ঘোরের মধ্য আছে ,,

ওকে কাছে টেনে আনলাম তারপর ওর হাতে হাত রেখে বল্লাম সত্যি ভালোবাসতো আমায় ?? 

:হুম,,! 

:সারাজীবন বাসবে তো? 

:যদি সুযোগ দাও 🙂

:দিলাম তো! 

:ভালবাসি তো ! (জরিয়ে ধরে ) 

তার পর চলতে লাগতো আমাদের প্রেম , ওর সাথে সারাদিন ঘুরা, ওর রাগ, ওর caring,ওর দুষ্টুমি , ভালো লাগতো অনেক , 

আজ আমাদের বিয়ে অনেক সুন্দর লাগছে আমার পাগলি টাকে , যত দেখছি মুগ্ধ হচ্ছি , অবশেষে ওর সাথে বিয়ে টা হয়ে গেলো :))

৩ বছর পর ,,,

আমার পাগলি টা আজ মা হবে:) হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো ওকে ভাবছি যে পাগলিটা কোন কষ্ট সহ্যকরতে পারে না সে আজ হাসি মুখে সন্তান প্রসবের ব্যথা মেনে নিচ্ছে সত্যই মেয়ে রা মহান , ডাক্তার এসে বল্লেন আমাদের মেয়ে হয়েছে , কথাটা শুনে আমার চোখ দিয়ে দু ফোটা জল আসলো , এটা হয়তো খুশির অশ্রু , 

আমি,পাগলি ,আর আমাদের ভালবাসার প্রতিক আমাদের মেয়ে নীলা, অনেক সুখী পরিবার ।

আর এভাবেই পূর্ন পেল কোন এক অগুছালো  ছেলের  ভালবাসা পাবার গল্প 🙂 

সমাপ্ত 

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত