ঐ অর্নব এইদিকে আয়…
কিছু বলবি?
– ঐ গাধা বলার জন্য ই তো ডাকলাম।
– হুম কি বলবি বল।
– আচ্ছা তুই ক্লাশে আমার দিকে ওভাবে হা করে তাকিয়ে থাকিস ক্যান? জানিস তর জন্য আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে।
তর দিকে তাকাই? কবে? কখন? আমিতো সব সময় চুপ করে বসেই থাকি তাহলে আবার তর দিকে তাকালাম কখন?
– হইছে হইছে আর ন্যাকামো করতে হবে না, শোন কাল থেকে তো কলেজ বন্ধ ভাবছি মামার বাড়ি বেড়াতে যাবো নিশু ও যাবে ভাবছি তোকে ও নিয়ে যাবো বল যাবি? অর্নব আগে থেকেই অবনীকে ভালোবাসে.. তাই কিছুদিনের জন্য দুরে থাকবে এটা সে চায়না.. এসব ভেবে বললো তুই নিতে পারলে আমি যেতে পারবো না ক্যান? আমি ও যাবো তোদের সাথে… এসব বলেই অর্নব আর অবনী ক্লাশে চলে গেলো অর্নব মনে মনে ভাবছে গাধী টা ও মনে হয় আমাকে ভালোবাসে হইতো কিছু বুঝতে দেয়না… এসব ভাবতে ভাবতে ছুটির ঘন্টা বেজে উঠলো সবাই যার যার মত বাসায় চলে আসলো.. ঐ অর্নব গাধা টা বাসায় এসে তো মহা খুসি কারন অবনী কে ও ভালোবাসে আর ওর সাথেই কাল বেড়াতে যাবে.. এসব ভাবতে ভাবতে ছাগল টা গোসল করলো তারপর খেয়ে দেয়ে দিনের বেলা ই ঘুমিয়ে পরলো… রাত কাটার পর সেই সুন্দরতম সকাল টা চলে আসলো ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ১০:২৫ বাজে সেই মুহুর্তে অবনীর কল।
– কিরে রাতে কি ঘুমাস না তুই?
– হুম ঘুমাই তো।
– হুম বুঝছি… আধঘন্টার মধ্যে চলে আয় নিশু তো চলে আসছে ।
– এই দেখ আমি আইসা পরছি। এসব বলেই হুট করে রেডি হয়ে বাসা থেকে বিদায় নিলো অর্নব গিয়ে দেখে ওরা দুজন এই মাত্র বের হলো।
– এত তারাতারি এলি যে?
– প্রিয় মানুষের কাছে তো তারাতারি ই আসতে হয়।
– মানে?
বুঝবি না এবার চল তো… অতঃপর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এর দিকে যেতে লাগলো অনেক্ষন বাসে থাকার পর অবশেষে পৌছে গেলো চট্টগ্রামে… গাড়ি থেকে নামার পর ই ফোন আসলো নিশুর বাবা অসুস্থ হয়ে গেছে মেডিকেলে নিবে.. তখন নিশু বাড়ির দিকে রউনা দিলো.. এখন ওরা দুজন অর্নব আর অবনী অর্নব গাধা টা বেশ খুশি নিশু চলে যাওয়া তে কারন এখন রাতের পর রাত দিনের পর দিন অবনীর সাথে আলাপ করতে পারবে… অবশেষে দুজনে মামার বাড়ি গিয়ে উঠলো মামা মামি তো বেশ খুশি অবনী কে দেখে উনারা খুব আদর করে অবনী কে… যাই হোক দুজনে ফ্রেস হয়ে সন্ধাবেলা চারজনে গল্পের আসরে বসলো গল্প করতে করতে একসময় অবনীর মামি অর্নব কে জিজ্ঞেস করলো “” আচ্ছা অর্নব তোমাদের দুজনের নাম তো বেশ মিল আছে তুমি কি ওকে ভালোবাসো?
– না মানে…. ইয়ে…. “” হুম বুঝে গেছি আর বলতে হবেনা। তারপর তারা চলে অন্য কথায়.. এভাবে গল্প করতে করতে রাত অনেক হয়ে গেলো তারপর খেয়ে দেয়ে যে যার মত ঘুমাতে চলে গেলো অর্নব গাধাটার তো আর ঘুম আসেনা একাকীত্ব হয়ে ছটফট করতে থাকে… ওদিকে ঐ অবনীর ও এক অবস্থা ওরা দুজন দুজন কে ভালোবাসে কিন্তু অবনী কখনো বুঝতে দেইনি আর অর্নব গাধা লজ্জায় তা বলতে পারেনি একসময় অর্নব অবনী কে ফোন দেয়
– কিরে এত রাতেও ঘুমাস নি?
-তোকে ছাড়া আমার যে ঘুম আসে না।
– মানে কি?
-মানে কি শুনবি?
– হুম বল।
-শুনতে হলে ছাদে আসতে হবে।
– হুম এত রাতেই।
-হ্যা এত রাতেই।
– দেখি মামা মামি কে ফাকি দিয়ে আসতে পারি কিনা যদি যেতে পারি তাহলে তোকে ফোন দিবো তখন তুই চলে আসবি কেমন?
– আচ্ছা পাঁচ মিনিট পর অবনীর ফোন।
– চুপ করে চলে আয় কেউ জানি টের না পায়।
– আচ্ছা একসময় ছাদে হাজির হলো এবং পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো কানের কাছে গিয়ে ফিস ফিস করে বলে দিলো I Love You Gadha এই সেই কথা যা বলার জন্য কত পাগল হয়ে ছিলাম অবনী কোনোমতে ওর কাছ থেকে ছোটে ঠাষ করে গালে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
– এই ফালতু কথার জন্য ছাদে ডেকে আনলি যত্যসব ফালতু আরো কিছুক্ষন বক বক করলো অর্নব তা আশা করেনি (হ্যা অবনী ও ওকে ভালোবাসে ওকে একটু পরিক্ষা করার জন্য এমন টা করছে… এসব বলার জন্যই ওকে চট্টগ্রাম এনেছে) অর্নব কিছু না বলে অভিমান করে রুমে চলে গেলো.. মিনিট পাঁচেক পর.. অবনী অর্নব এর রুমের কাছে গিয়ে দরজায় নক করলো তখন বিদ্যুৎ ছিলো না তাই লাইট সব বন্ধ তাই কিছু দেখা যাচ্ছিলো না দরজা খুলে।
– কে?
– তর জান..গাধা কোথাকার… ঠিক অর্নব এর মতই জড়িয়ে ধরে বলে দিলো I Love You Too Gadha… যেই গাধাটা যাকে নিয়ে এত সপ্ন দেখেছিলো সেই আজ মুখ ফুটে বলে দিলো তাকে সে ভালোবাসে.. সেদিন তাদের আর ঘুম হলোনা সারারাত খোলা আকাশের নিচে বসে বসে গল্প করলো।