গিরিধি আরামপুরী, দেহ মন চিৎপাত,
 খেয়ে শুয়ে হু হু করে কেটে যায় দিনরাত;
 হৈ চৈ হাঙ্গামা হুড়োতাড়া হেথা নাই;
 মাস বার তারিখের কোন কিছু ল্যাঠা নেই;
 খিদে পেলে তেড়ে খাও, ঘুম পেলে ঘুমিও-
 মোট কথা, কি আরাম, বুঝলে না তুমিও !
 ভুলেই গেছিনু কোথা এই ধরা মাঝেতে
 আছে যে শহর এক কলকাতা নামেতে-
 হেন কালে চেয়ে দেখি চিঠি এক সমুখে,
 চায়েতে অমুক দিন ভোজ দেয় অমুকে ।
 ‘কোথায়? কোথায়?’ বলে মন ওঠে লাফিয়ে
 তাড়াতাড়ি চিঠিখানা তেড়ে ধরি চাপিয়ে,
 ঠিকানাটা চেয়ে দেখি নীচু পানে ওধারে
 লেখা আছে ‘কলিকাতা’ – সে আবার কোথারে !
 স্মৃতি কয় ‘কলিকাতা ‘ রোস দেখি; তাই ত ,
 কোথায় শুনেছি যেন , মনে ঠিক নাই ত,
 বেগতিক শুধালেম সাধুরাম ধোপারে ;
 সে কহিল, হলে হবে উশ্রীর ওপারে।
 ওপারের জেলেবুড়ো মাথা নেড়ে কয় সে ,
 ‘হেন নাম শুনি নাই আমার এ বয়সে ।’
 তারপরে পুছিলাম সরকারী মজুরে
 তামাম মুলুক সে ত বাৎলায় ‘হুজুরে’
 বেঙাবাদ বরাকর , ইদিকে পচম্বা ,
 উদিকে পরেশনাথ ,পাড়ি দাও লম্বা ;
 সব তার সড়গড় নেই কোন ভুল তায় –
 ‘কুলিকাতা কাঁহা’ বলি সেও মাথা চুলকায় !
 অবশেষে নিরুপায় মাথা যায় ঘুলিয়ে ‘
 ‘টাইম টেবিল’ খুলি দেখি চোখ বুলয়ে ।
 সেথায় পাটনা পুরী গয়া গোমো মাল্দ
 বজবজ দমদম হাওড়া ও শ্যালদ –
 ইত্যাদি কত নাম চেয়ে দেখি সামনেই
 তার মাঝে কোন খানে কলিকাতা নাম নেই !!
 -সব ফাঁকি বুজ্রুকী রসিকতা -চেষ্টা !
 উদ্দেশে ‘শালা ‘ বলি গাল দিনু শেষটা।-
 সহসা স্মৃতিতে যেন লাগিল কি ফুৎকার
 উদিল কুমড়া হেন চাঁদপানা মুখ কার!
 আশে পাশে ঢিপি ঢুপি পাহাড়ে পুঞ্জ,
 মুখ চাঁচা ময়দান, মাঝে কিবা কুঞ্জ !
 সে শোভা স্মরণে ঝরে নয়নের ঝরনা ;
 গৃহিনীরে কহি ‘প্রিয়ে !মারা যাই ধর না ।
 তার পরে দেখি ঘরে অতি ঘোর অনাচার –
 রাখে না কো কেউ কোন তারিখের সমাচার !
 তখনি আনিয়া পাঁজি দেখা গেল গণিয়া,
 চায়ের সময় এল একেবারে ঘনিয়া !
 হায়রে সময় নেই, মন কাদে হতাশে-
 কোথায় চায়ের মেলা! মুখশশী কোথা সে !
 স্বপন শূকায়ে যায় আধারিয়া নয়নে ,
 কবিতায় গলি তাই গাহি শোক শয়নে।
 
  
 Loading...
Loading...













