শলোমন যখন রাজা হন, তখন সে কিশোরবয়সি। সে যিহোবাকে ভালোবাসে আর সেইসমস্ত ভালো উপদেশ মেনে চলে, যেগুলো
তার বাবা দায়ূদ তাকে দিয়েছেন। যিহোবা শলোমনের ওপর খুবই খুশি হন আর তাই এক রাতে স্বপ্নে তিনি তাকে বলেন: ‘শলোমন,
তুমি আমার কাছে কী চাও?’
তা শুনে শলোমন উত্তর দেয়: ‘হে আমার ঈশ্বর যিহোবা, আমি খুবই ছোটো আর আমি জানি না, কীভাবে শাসন করতে হয়। তাই,
আমাকে তোমার লোকেদের ওপর সঠিক উপায়ে শাসন করার জন্য জ্ঞানবুদ্ধি দাও।’
যিহোবা, শলোমন যা চেয়েছেন, তাতে খুবই খুশি হন। তাই তিনি বলেন: ‘যেহেতু তুমি দীর্ঘায়ু বা ধনসম্পদ না চেয়ে জ্ঞানবুদ্ধি
চেয়েছ, তাই আমি তোমাকে এমন জ্ঞানবুদ্ধি দেব, যেমনটা আর কারো কখনো ছিল না। কিন্তু, তুমি যা চাওনি, সেগুলোও অর্থাৎ
ধনসম্পদ ও গৌরব, উভয়ই আমি তোমাকে দেব।’
এর অল্পসময় পর, দু-জন মহিলা শলোমনের কাছে একটা কঠিন সমস্যা নিয়ে আসে। ‘ওই মহিলা ও আমি একই ঘরে থাকি,’
তাদের মধ্যে একজন বলে। ‘আমার একটি ছেলে হয়েছে আর এর দু-দিন পরে তারও একটি ছেলে হয়েছে। তারপর, এক রাতে
তার ছেলেটি মারা যায়। কিন্তু, আমি যখন ঘুমিয়েছিলাম, তখন সে তার মৃত বাচ্চাটি আমার পাশে শুইয়ে রেখে আমার বাচ্চা নিয়ে
নেয়। আমি যখন জেগে উঠে মৃত বাচ্চাটির দিকে তাকাই, তখন আমি বুঝতে পারি যে, সে আমার বাচ্চা নয়।’
তখন অন্য মহিলা বলে ওঠেন: ‘না! জীবিত বাচ্চাটি আমার আর মৃত বাচ্চাটি তার!’ তখন প্রথম মহিলা উত্তর দেয়: ‘না, না! মৃত
বাচ্চাটি তোমার আর জীবিত বাচ্চাটি আমার!’ এভাবে সেই দুই মহিলা তর্ক করতে থাকে। শলোমন কী করবেন?
তিনি একটা খড়্গ আনতে পাঠান আর যখন তা আনা হয়, তখন তিনি বলেন: ‘এই বাচ্চাটিকে দু-টুকরো করে দু-জন মহিলাকে
অর্ধেক অর্ধেক করে দিয়ে দাও।’
‘না, না!’ আসল মা কেঁদে ওঠেন। ‘দয়া করে বাচ্চাটিকে মেরে ফেলবেন না। বাচ্চাটি ওকেই দিয়ে দিন!’ কিন্তু, অন্য মহিলা বলে
ওঠে: ‘আমাদের কাউকেই বাচ্চা দেওয়ার দরকার নেই; একে দু-টুকরোই করে ফেলুন।’
অবশেষে শলোমন এই কথা বলেন: ‘বাচ্চাটিকে মেরো না! ওই প্রথম মহিলাকে বাচ্চাটি দিয়ে দাও। তিনিই আসল মা।’ শলোমন তা
বুঝতে পারেন কারণ বাচ্চাটির আসল মা তাকে এতটাই ভালোবাসেন যে, বাচ্চাটির জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি তাকে অন্য
মহিলাটির কাছে দিয়ে দিতে চান। লোকেরা যখন শুনতে পারে যে, শলোমন কীভাবে সমস্যাটার সমাধান করেছেন, তখন তাকে
রাজা হিসেবে পেয়ে তারা খুবই আনন্দিত হয়।
শলোমনের শাসনকালে, ঈশ্বর লোকেদের আশীর্বাদ করেন আর এর ফলে জমিতে প্রচুর গম, যব, আঙুর, ডুমুর ও অন্যান্য
খাদ্যশস্য উৎপন্ন হয়। লোকেরা ভালো ভালো পোশাক-আশাক পরে এবং ভালো বাড়িতে বসবাস করে। সকলের জন্য প্রয়োজনীয়
বিষয়গুলো যথেষ্ট পরিমাণে ছিল।