যিষ্রিয়েল রাজা আহাবের রাজপ্রাসাদের পাশেই একটি আঙ্গুর বাগান ছিল। বাগানটির মালিক ছিল নাবোত নামে এক লোক।
রাজা ভাবলেন, ‘এই আঙ্গুর বাগানটি একটি ভাল সবজি বাগান হতে পারে।’
তিনি নাবোতকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন ঐ জমিটি সে রাজার কাছে বেঁচবে কিনা। অথবা সে যদি রাজি হয় তাহলে অন্য আঙ্গুর বাগানের সঙ্গে তা বদলও করতে পারে। কিন্তু নাবেত তাতে রাজি হল না। সে বলল, ‘এই জমিটি সবসময়ই আমাদের বাবার বংশের ছিল। আমার মরার পরে আমার ছেলেকে তা দিতে চাই। এছাড়া, ঈশ্বরের আইন আামাকে এটি অন্যের কাছে বিক্রি করতে নিষেধ করে।’
রাজা আহাব সাধারণত তার নিজের ইচ্ছামতই কাজ করতেন। লোকেরা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ‘না’ বলতে সাহস পেত না। তাই নাবোতের উত্তরে রাজা ভীষন ভাবে ক্ষেপে গেলেন।
তার মেজাজ খুব খারাপ দেখে রাণী ঈষেবল জিজ্ঞেস করল, ‘কি হয়েছে?’
রাজা সবকিছু খুলে বললে পর রাণী তাকে বলল, ‘তুমি কি রাজা নও? তুমি অবশ্যই সেই আঙ্গুর বাগানটি পাবে। ব্যাপারটা তুমি সম্পূর্ণ আমার হাতে ছেড়ে দাও।’
রাণী ঈষেবল যা চাইত তা-ই করত। তাতে কারও ক্ষতি হল কিনা সে বিষয়ে সে মোটেই ভাবত না।
রাণী নাবোতকে ঈশ্বর-নিন্দায় দোষী সাব্যস্ত করে লোকদের দিয়ে পাথর মেরে তাকে হত্যা করল, কিন্তু নাবোত ছিল সম্পূর্ণ নির্দোষ। তারপর রাণী রাজার কাছে গিয়ে বলল, ‘নাবোত মারা গেছে, এখন আঙ্গুর বাগানটি দখলে নিতে কেউ তোমাকে বাধা দেবে না।’
পরদিন সকালে রাজা সেই আঙ্গুর বাগানে গেলে নবী এলিয় তার সঙ্গে দেখা করতে সেখানে এলেন।
তিনি রাজাকে বললেন, ‘ঈশ্বর বলেছেন, যেহেতু আপনি নাবোতের রক্ত ঝরিয়েছেন তাই আপনারও রক্ত ঝরবে। ঈষেবল এই যিষ্রিয়েলে মারা যাবে এবং আপনার সমস্ত পরিবার একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে।’
নবী এলিয়ের কথায় রাজা আহাব ভীষণ ভয় পেলেন। কিছুদিনের জন্য তিনি খারাপ পথ ত্যাগ করলেন বটে কিন্তু তা বেশী দিনের জন্য নয়।
তিন বছর পরে রাজা আহাবের সৈন্য ও যিহূদার রাজা যিহোশাফটের সৈন্য মিলে সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল। রামোৎ-গিলিয়ত এলাকায় ভীষণ যুদ্ধ হল।
যিহোশাফট তার রাজ-পোশাক পরেই যুদ্ধে গেলেন কিন্তু আহাব চালাকি করে একজন সাধারণ সৈন্যের পোশাক পরেই যুদ্ধ করতে গেলেন। এদিকে শত্রুপক্ষের একজন সৈন্য তার তীরধনুক দিয়ে আহাবের বুক ও পেটের মাঝখানে বিঁধে দিল। তাতে আহাব সেই রথের মধ্যেই মারা গেলেন।
ঈশ্বরের কথামতই সব হল। তার পরিবারের সবাই ধ্বংস হয়ে গেল।