মেঘ-বৃষ্টিতে আল্লাহর পরিচয়

মেঘ-বৃষ্টিতে আল্লাহর পরিচয়

আসসালামু আলাইকুম।।।

আল্লাহ বলেছেন —

অর্থাৎ, “তিনিই তোমাদেরকে বিদ্যুৎ দেখান ভয় ও আশার জন্যে এবং তিনি উন্নিত করেন ঘন মেঘমালা। সভয়ে তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতাগণ।তিনি বজ্রপাত করেন,অতঃপর যাকে ইচ্ছা তা দ্বারা আঘাত করেন,তবুও তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে।অথচ তিনি মহাপরাক্রমশালী ক্ষমতাবান।”
(সূরা রাদ,আয়াত ১২-১৩)

আল্লাহ আরও বলেছেন —
অর্থাৎ, “আল্লাহই বায়ু প্রবাহিত করেন এবং সে বায়ু মেঘমালা সঞ্চালিত করে।অতঃপর আমি তা মৃত ভূখণ্ডে পরিচালিত করি, অতঃপর তা দ্বারা সে মৃত ভূখণ্ডকে তার মৃত্যুর পর সঞ্জীবিত করে দেই।এমনিভাবে হবে পুরুত্থান।”
(সূরা ফাতির,আয়াত-৯)।

বর্ণিত আয়াতসমূহে আল্লাহ পাক বায়ু প্রবাহ, মেঘ সৃষ্টি ও বৃষ্টি বর্ষণ সম্পর্কে আলোকপাত করছেন। প্রখর সূর্য কিরণে নদী-নালা,, খাল-বিল,সাগর মহাসাগরের উপরিভাগ থেকে পানি বাষ্প হয়ে মহাকাশে চলে যায় এবং সেখানে বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন স্তরে অবস্থান করে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এ জলীয়বাষ্প কণা ঘনীভূত ও শীতল হয় এবং তা শিশির -কুয়াশা, মেঘ-বৃষ্টি ও বরফে পরিণত হয়। অধিক তাপের কারণে দিনের বেলায় বাতাসের এ জলীয়বাষ্প খুব শুস্ক৷ থাকে। জলীয়বাষ্প বাতাসের চেয়ে হালকা, তাই তা উপরের দিকে ধাবিত হয়। রাতে ভূ-পৃষ্ঠে ও তার উপরের বৃক্ষরাজিতে তাপ বিকিরণ করে। ফলে সেগুলো শীতল হয় এবং বায়ুমণ্ডলের উত্তাপের নীচে নেমে আসে। বাতাস এগুলোর সংস্পর্শে এসে জলীয়বাষ্পে পরিণত হয়।বাতাস এ ভারী ভারী বিন্দুকে ধরে রাখতে পারে না।তাই শিশির আকারে এখানে সেখানে ঠান্ডা বস্তুর দেহে দেখায় যায়।ঠিক এইভাবেই মেঘের সৃষ্টি হয়।তবে এ মেঘ পৃথিবীর নিকটে নয়,বহুদূরে এক হাজার হতে পঁচিশ হাজার ফুট উপরে বিচরণ করে।বর্ণিত আয়াতে আল্লাহ মেঘ সৃষ্টি ও তা থেকে বৃষ্টি বর্ষণের কথা বলেছেন। এর মাঝে গবেষণা করলে আমরা দেখতে পাই,যে পানি আমাদের সব সময়৷প্রয়োজন সে পানির মূল উপাদান হল হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন। প্রথমটি হল নেগেটিভ জাতীয় আর দ্বিতীয়টি পজেটিভ জাতীয়। এ দু’টি মিলেই পানির সৃষ্টি। আর এ দুটির মাঝে অনাবিল আকর্ষণ বিদ্যমান।তাই এ পানি বাষ্পাকারে শূন্যে চলে যায় এবং সেখানে গিয়ে তার শক্তি বিলীন না হয়ে নতুন আরেকটি জড়বস্তু সৃষ্টি করে,, যার নাম হল মেঘ।এ মেঘের কিছুটা হল নেগেটিভ আর কিছুটা হল পজেটিভ। এ দুটির মাঝে প্রবল আকর্ষণ বিদ্যমান থাকে, যার ফলে যে প্রচন্ড সংঘাতের সৃষ্টি হয় তাতেই হয় বিদ্যুতের সৃষ্টি।

আল্লাহ তায়ালা তাঁর কালামে পাকে বর্ননা করেছেন-
অর্থাৎ, “আকাশ হতে বৃষ্টি বর্ষনের ন্যায় যাতে রয়েছে অন্ধকার, গর্জন ও বিদ্যুৎ চমক।” (সূরা বাকারা,আয়াত-১৯)আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন এ বিদ্যুতের মাঝে আমাদের আশার বস্তু রয়েছে। আর তা হল,আকাশে যদি বিদুতের স্ফুরণ না হত তাহলে বীজ থেকেই অংকুর উদগম হত না।কারণ এ বিদ্যুৎ এর স্প্রাকিং এর কারণে বিপুল পরিমাণ নাইট্রজেন নর্গত হয়। এ নাইট্রজেন বৃষ্টির পানির সাথে মিশে ভূমিতে হয় এবং তা ভূমির বিভিন্ন ধাতবপদার্থের সাথে মিশে কার্জকর সারের সৃষ্টি করে।এ সারই বীজকে সতেজ করে,সুপ্ত ও লুপ্ত প্রাণ সজীব করে তোলে।এর পর আল্লাহ পাক যে ব্জ্রপাতের কথা বলেছেন, তা হয় বিপরীতধর্মী দু’টি মেঘের সংঘর্ষের ফলে।যদিও আমাদের ভীতির কারণ, তবুও তার মাঝে অনেক আশার বানীও রয়েছে।। কারণ বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন যে, বিশ্বের যাবতীয় সার কারখানায় যে পরিমাণ নাইট্রজেন সার উৎপাদন হয়, একবাট বজ্রপাতের কারণে তার চেয়ে ১৬ লক্ষগুণ বেশী সার ভূমিতে সৃষ্টি হয়।

গল্পের বিষয়:
ধর্মীয়
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত