রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) সম্পর্কে বলেছেনঃ ‘যে ব্যক্তি বিশুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করে আনন্দ পেতে চায়, যেমন তা অবতীর্ণ হয়েছে- সে যেন ইবনে উম্মু আবদের পাঠের অনসরণে কুরআন পাঠ করে ।’
এটা সেই সময়ের কথা যখন তিনি একজন কিশোর মাত্র, তখনও যৌবনে পদার্পণ করেনি । কুরাইশ গোত্রের এক সর্দার ‘উকবা ইবন আবু মু’ইতের একপাল ছাগল নিয়ে তিনি মক্কার গিরিপথগুলোতে চরিয়ে বেড়াতেন । লোকে তাঁকে ‘ইবন উম্মু আবদ’ বলে ডাকতো । তবে তাঁর নাম আবদুল্লাহ, পিতার নাম মাসউদ, কুনিয়াত আবু আবদির রহমান এবং মাতার নাম উম্মু আবদ ।
তাঁর গোত্রে যে একজন নবীর আবির্ভাব ঘটেছে, সে সম্পর্কে নানা খবর এ কিশোর ছেলে সবসময় শুনতেন । তবে অল্প বয়স এবং বেশীরভাগ সময় মক্কার সমাজ জীবন থেকে দূর অবস্থানের কারণে সে সম্পর্কে তিনি গুরুত্ব দিতেন না । নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন সকালে উঠে উকবার ছাগলের পাল নিয়ে বের হয়ে যেতেন আর সন্ধ্যায় ফিরতেন ।
একদিন এ কিশোর ছেলেটি দেখতে পেলেন, দু’জন বয়স্ক চেহারায় আত্মমর্যাদার ছাপ বিরাজমান, দূর থেকে তাঁর দিকেই এগিয়ে আসছেন । তাঁরা ছিলেন এত পরিশ্রান্ত ও পিপাসার্ত যে, তাঁদের ঠোট ও গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল । নিকটে এসে লোক দু’টি সালাম জানিয়ে বললেন, ‘বৎস! এ ছাগলগুলি থেকে কিছু দুধ দুইয়ে আমাদেরকে দাও । আমরা পান করে পিপাসা নিবৃত্ত করি এবং আমাদের শুকনা গলা একটু ভিজিয়ে নেই ।
-ছেলেটি বললেনঃ ‘এ আমার দ্বারা সম্ভব নয় । ছাগলগুলি তো আমার নয় । আমি তাদের মুখ মন্ডলে এক উৎফুল্লতার ছাপ ফুটে উঠলো ।
-তাদের একজন আবার বললেনঃ ‘তাহলে এমন একটি ছাগী আমাকে দাও যা এখনও পাঠার সংস্পর্শে আসেনি ।’ ছেলেটি নিকটেই দাঁড়িয়ে থাকা একটি ছোট্র ছাগীর দিকে ইশারা করে দেখিয়ে দিলেন । লোকটি ধরে তার ওলান মলতে লাগলেন । অবাক বিস্ময়ে ছেলেটি এ দৃশ্য দেখে মনে মনে বললেনঃ কখনও পাঠার সংস্পর্শে আসেনি এমন ছোট ছাগী কি দুধ দেয়? কিন্তু কি আশ্চর্য! কিছুক্ষনের মধ্যেই ছাগীর ওলানটি ফুলে উঠে এবং প্রচুর পরিমাণ দুধ বের হতে থাকে । দ্বিতীয় লোকটি গর্তবিশিষ্ট পাথর উঠিয়ে নিয়ে বাঁটের নীচে ধরে তাতে দুধ ভর্তি করেন । তারপর তাঁরা উভয়ে পান করেন এবং ছেলেটিকেও তাদের সাথে পান করালেন ।
-ইবস মাসউদ বলেনঃ আমি যা দেখেছিলাম তা সবই আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল । আমরা সবাই যখন পরিতৃপ্ত হলাম তখন সেই পুণ্যবান লোকটি ছাগীর ওলানটি লক্ষ্য করে বললেনঃ চুপসে যাও । আর অমনি সেটি পূর্বের ন্যায় চুপসে গেল । তারপর আমি সেই পুণ্যবান লোকটিকে অনুরোধ করলামঃ ‘আপনি যে কথাগুলি উচ্চারণ করলেন, তা আমাকে শিখিয়ে দিন । বললেন, তুমি তো শিক্ষাপ্রাপ্ত বালক ।
ইসলামের সাথে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদের পরিচিতির এটাই হলো প্রথম কাহিনী । এ মহাপুণ্যবান ব্যক্তিটি আর কেউ নন, তিনি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আর তাঁর সংগীটি ছিলেন হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাঃ) । কুরাইশদের অত্যাচার উৎপীড়ন থেকে বাচাঁর জন্য এ সময় তাঁরা মক্কার নির্জন গিরিপথ সমূহে আশ্রয় নিয়েছিলেন । রাসূল (সাঃ) ও তাঁর সংগীকে যেমন ছেলেটির ভালো লেগেছিল তেমনি তাঁদের কাছেও ছেলেটির আচরণ, আমানতদারী ও বিচক্ষণতা খুব চমৎকার মনে হয়েছিল । তাঁরা ছেলেটির মধ্যে কল্যাণ ও মংগলের শুভলক্ষণ প্রত্যক্ষ করেছিলেন ।
এ ঘটনার অল্পকিছুদিন পর আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ ইসলাম গ্রহণ করেন এবং নিজেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন খাদিম হিসাবে উৎসর্গ করেন । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাকে খাদিম হিসাবে নিয়োগ করেন । সেইদিন থেকে এ সৌভাগ্যবান বালক ছাগলের রাখালী থেকে সৃষ্টিজড়তের শ্রেষ্ঠতম মানুষের খাদিমে পরিণত হন ।
আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ নবী-গৃহে প্রতিপালিত হন, তাঁকে অনুসরণ করেন এবং তাঁরই মত আচার-আচারণ, ও চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের অধীকারী হন । এ কারণে তাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘হিদায়াত প্রাপ্তি, আটার-আচরণ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে তিনিই হচ্ছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিকট উত্তম ব্যক্তি ।’
ইবনে মাসউদ খোদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষালয়ে শিক্ষালাভ করেন । তাই সাহাবীদের মধ্যে যারা কুরআনের সবচেয়ে ভালো পাঠক, তার ভাব ও অর্থের সবচেয়ে বেশী সমঝতার এবং আল্লাহর আইন ও বিধি-বিধানের সবচেয়ে বেশী অভিজ্ঞ, তিনি ছিলেন তাঁদেরই একজন ।
একবার হযরত উমার (রাঃ) আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেছিলেন । এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললোঃ আমীরুল মুমিনীন! আমি কুফা থেকে এসেছি । সেখানে আমি দেখে এসেছি, এক ব্যক্তি নিজের স্মৃতি থেকেই মানুষকে কুরআন শিখাচ্ছেন ।’ এ কথা শুনে তিনি এত রাগান্বিত হলেন যে, সচরাচর তাঁকে তেমন রাগ করতে দেখা যায় না । তিনি উটের হাওদার অভ্যন্তরে রাগে ফুলতে থাকেন । তারপর প্রশ্ন করেন- তোমার ধ্বংস হোক! কে সে লোকটি?’
-আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ ।’
জ্বলন্ত আগুনে পানি ঢেলে দিলে যে অবস্থা হয়, ইবন মাসউদের নাম শুনে তাঁরও সে অবস্থা হলো । তার রাগ পড়ে গেল । তিনি স্বাভাবিক । অবস্থা ফিরে পেলেন । তারপর বললেনঃ তোমার ধ্বংস হোক! আল্লাহর কসম, এ কাজের জন্য তাঁর চেয়ে অধিক যোগ্য কোন ব্যক্তি বেঁচে আছে কিনা আমি জানি না । এ ব্যপারে তোমাকে আমি একটি ঘটনা বলছি ।’
উমার (রাঃ) বলতে লাগলেন- “একদিন রাতের বেলা রাসূল (সাঃ) আবু বকরের সাথে কথাবার্তা বলছিলেন । তাঁরা মুসলমানদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলেন । আমিও তাঁদের সাথে ছিলাম । কিছু সময় পর রাসূল (সাঃ) বের হলেন, আমরাও তাঁর সাথে বেরুলাম । বেরিয়েই আমরা দেখতে পেলাম, এক ব্যক্তি মসজিদে নামাযে দাঁড়িয়ে; কিন্তু আমরা তাঁকে চিনতে পালাম না । রাসূল (সাঃ) দাড়িয়ে কিছুক্ষণ তাঁর কুরআন তিলাওয়াত শুনলেন । তারপর আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ সে যেন ইবন উম্মু আবদের পাঠের অনুরূপ কুরআন পাঠ করে ।’ এরপর আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ বসে দু’আ শুরু করলেন । রাসূল (সাঃ) আস্তে আস্তে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেনঃ ‘চাও, দেওয়া হবে, চাও দেওয়া হবে ।’
নিজের সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ যে কথাটি বলেছেন তাতে অতিরন্জন নেই । এ সম্পর্কে একটি ঘটনা পাঠকদের কাছে তুলে ধরা সমীচীন বলে মনে করি । একবার হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কোন এক সফরে রাত্রিবেলা একটি অপরিচিত কাফিলার সাক্ষাত লাভ করেন । রাতের ঘোর অন্ধকারে কাফিলার কোন লোকজনকে দেখা যাচ্ছিল না । ঘটনাক্রমে সেই কাফিলায় আবদুল্লাহ ইবন মাসউদও ছিলেন; কিন্তু উমার (রাঃ) তা জানতেন না । উমার (রাঃ) একজন লোককে তাদেরকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে বললেন, কাফিলা কোথা থেকে আসছে? অন্য কাফিলা থেকে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ জবাব দিলেন-
-আমীক উপত্যকা থেকে ।
-কোথায় যাচ্ছে?
-ইলাল বাইতিল আতীক-বাইতুল আতীকে (অর্থাৎ কাবা শরীফে) ।; জবাব শুনে উমার (রাঃ) বললেনঃ ‘নিশ্চয় তাদের মধ্যে কোন আলিম ব্যক্তি আছেন ।’ তিনি আবার জিজ্ঞেস করতে বললেন, ‘কুরআনের শ্রেষ্ঠতম আয়াত কোনটি?’
-আল্লাহু লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম, লা তাখুজুহু সিনাতুন ওয়ালা নাওম-সেই চিরন্তন চিরঞ্জীব সত্তা আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই । তন্দ্রাও তাকে স্পর্শ করেনা এবং নিদ্রাও তাঁকে পায় না ।’
-‘সর্বাধিক ব্যাপক অর্থবোধক আয়াত কোনটি?’
-ফার্মাই ইয়া’মাল মিসকালা জাররাতিন খাইরাই য়ারাহ্, ওয়ামাই ইয়া’মাল মিসকালা জাররাতিন শাররাই য়ারাহ- যে ব্যক্তি এক বিন্দু পরিমাণ সৎকাজ করবে সে তার বিনিময় লাভ করবে, তেমনিভাবে যে ব্যক্তি এক বিন্দু পরিমাণ অসৎকাজ করবে তার বিনিময় সে লাভ করবে ।
-সর্বাধিক ভীতিপ্রদ আয়াত কোনটি?
-লাইসা বিআমানিয়্যিকুম ওয়ালা আমানিয়্যি আহলিল কিতাবি মান ই’মাল সূআন ইউজযা বিহি ওয়ালা ইয়াজিদ লাহু মিন দুনিল্লাহ ওয়ালিয়্যান ওয়ালা নাসীরান’-‘না তোমাদের আশা-আকাঙ্খা অনুযায়ী, আর না আহলি কিতাবদের কামনা-বাসনা অনুযায়ী সবকিছু হবে । যে ব্যক্তি খারাপ কাজ করবে তাঁকে তাঁর প্রতিফল ভোগ করতে হবে । আর আল্লাহ ছাড়া তার জন্য কোন অীভভাবকও পাবে না এবং কোন সাহায্যকারীও না ।
সর্বাধিক আশার সঞ্চারকারী আয়াত কোনটি?
-কুল ইয়া ‘ইবাদিল্লাজীনা আসরাফু আলা আনফুসিহিম লা-তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ ইন্নাল্লাহা ইয়াগফিরজ্জুনুবা জামীয়া । ইন্নাহ হুয়াল গাফুরুর রাহীম’- ‘হে নবী আপনি বলুন । হে আমার বান্দারা, যারা নিজের ওপর বাড়াবাড়ি করছো, আল্লাহর রহমত ও করুণা থেকে নিরাশা হয়োনা । নিশ্চয় আল্লাহ সব পাপই ক্ষমা করে দেবেন । তিনিই তো গাফুরুর রাহীম ।
-আচ্ছা আপনাদের মাঝে কি আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ আছে?’
-হ্যাঁ ।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ কেবল একজন ভালো ক্বারী, আলিম, আবিদ ও যাহিদই ছিলেন না, সেই সাথে তিনি ছিলেন একজন কর্মঠ ও বিচক্ষণ ব্যক্তি এবং কঠিন বিপদ মুহূর্তে অগ্রগামী একজন মুজাহিদ । তাঁর জন্য এ গৌরবটুকুই যথেষ্ট যে, রাসূল (সাঃ) পর তিনিই ভূ-পৃষ্ঠের প্রথম মুসলিম যিনি প্রকাশ্যে কুরাইশদের মাঝে কুরআন পাঠ করেছিলেন ।
হিজরী ২০ সনে খলীফা উমার (রাঃ) তাঁকে কুফার কাজী নিয়োগ করেন । কাজীর দায়িত্ব ছাড়াও বায়তুল মাল, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবয় কুফার ওয়ালীর উযীরের দায়িত্বও তাঁর ওপর ন্যস্ত করা হয় ।
পুরো দশ বছর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এতগুলি দায়িত্ব তিনি পালন করেন । এ দীর্ঘ সময়ে খলীফা উমারের (রাঃ) শাহাদাত বরণ, হযরত উসমানের খিলাফতের দায়িত্বভার গ্রহণসহ কুফার ওয়ালীরও রদবদল হয়েছে, কিন্তু আবদতুল্লাহ বিন মাসউদ স্বীয় পদে বহাল থাকেন । খলীফা উসমানের খিলাফতের শেষ পর্বে আবদুল্লাহ তার দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয় । তিনি সংগীসাথী ও পরিবার পরিজনসহ কুফা থেকে হিজাযের দিকে যাত্রা করেন । পথে মরুভূমিতে ‘রাবজা’ নামক স্থানে পৌছে জানতে পারেন প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবু যার গিফার (রাঃ) সেখানে অন্তিম শয্যায় । তাঁর পৌঁছার অল্পক্ষণ পরেই আবু যার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, আবদুল্লাহ বিন মাসউদ তাঁর জানাযার নামাযে ইমামতি করেন এবং কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করেন । সেখান থেকে তিনি মক্কা চলে যান এবং উমরা আদায় করে মদীনায় পৌঁছেন । বাকী জীবন মদীনায় চুপচাপ কাটিয়ে দেন ।
হিজরী ৩২ সনে আবদুল্লাহর বয়স যখন ষাট বছরের ওপরে, হঠাৎ একদিন এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বলতে লাগলো, ‘আল্লাহ আমাকে আপনার জানাযা থেকে বঞ্চিত না করুন । গতরাতে আমি স্বপ্নে দেখেছি, রাসূল (সাঃ) একটি মিম্বরের ওপর আর আপনি তাঁর সামনে । তিনি আপনাকে বলছেন, ‘ইবন মাসউদ, আমার পরে তোমাকে ভীষণ কষ্ট দেওয়া হয়েছে । এস, আমার কাছে চলে এস । এ স্বপ্ন সত্যে পরিণত হল । এর অল্প কিছুদিন পরেই তিনি রোগে আক্রন্ত হয়ে মারা যান ।
হযরত উসমানের (রাঃ) খিলাফতের পর্যন্ত তিনি জীবিত ছিলেন । তিনি যখন অন্তিম রোগ শয্যায়, তখন উসমান (রাঃ) একদিন তাঁকে দেখতে গেলেন । তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ
– ‘আপনার অভিযোগ কিসের বিরুদ্ধে?’
– ‘আমার পাপের বিরুদ্ধে ।’
– ‘আপনার চাওয়ার কিছু আছে কি?’
– ‘আমার রবের রহমত বা করুণা ।’
– ‘বহু বছর যাবৎ আপনার ভাতা নিচ্ছেন না, তাকি আবার দেয়ার নির্দেশ দেব?’
– আমার কোন প্রয়োজন নেই ।’
– ‘আপনার মৃত্যুর পর আপনার কন্যাদের প্রয়োজনে আসবে ।’
– ‘আপনি কি আমার কন্যাদের দারিদ্রের ব্যাপারে বীত হচ্ছেন? আমি তো তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা যেন প্রত্যেক রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে । কারণ আমি রাসূলকে শুনেছিঃ ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে সূরা আল-ওয়াকিয়া পাঠ করবে, কখনও দারিদ্র তাকে স্পর্শ করবে না ।’
দিনশেষে রাত্রি নেমে এলো, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ তাঁর রফীকে ‘আলা-শ্রেষ্ঠতম বন্ধুর সাথে মিলিত হলেন । খলীফা উসমান তাঁর জানাযার নামায পড়ান এবং হযরত উসমান ইবন মাজউনের (রাঃ) পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয় ।