একজন নেককার স্ত্রী বড় নিয়ামত

একজন নেককার স্ত্রী বড় নিয়ামত

এটা কি বানিয়েছিস তোর মাথা? ( স্বামী) চিনি কি বেশি হয়ছে? (স্ত্রী) তুই জানিস না, চিনি বেশি না কম তোর বাবা মা জীবনে চা বানানোও শিখায় নাই? বলেই চায়ের কাপটা ছুড়ে মারে স্ত্রী গায়ে। স্ত্রী নিস্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে কোন কথা নেই যা আমার চোঁখের সামনে থেকে দূর হ। আমাকে মাফ করে দিন, এর পর থেকে আর ভুল হবে। এখান থেকে যেতে বলছি তোকে। স্ত্রী স্বামীর চোঁখের দিকে তাকিয়ে রুম থেকে চলে আসলো। স্বামি ছোটখাট একটা চাকরি করে।

তার ইচ্ছে ছিলো মর্ডান একটা মেয়ে বিয়ে করার, যে সুন্দর করে সাজবে, বাইরে ঘুরতে যাবে পার্টিতে যাবে, কিন্তু কপালে যা থাকে আরকি তার বাবা মা একজন পর্দাশীল মেয়েকে বউ করে আনলো, দেখতে যে খারাপ তা নয় সুন্দরীদের চাইতেও সুন্দর কিন্তু তাতেও স্বামীর কোন আদর ভালোবাসা পায় নাই স্ত্রী, কিন্তু তাতেও তার কোন আপসোস নেই। শুধু চায় একটু ভালো কথা ভালো ব্যবহার। স্ত্রীর দোষ এখানেই, কোথাও বের হলে পর্দা করে বের হয়, বেশি সময় বাইরে থাকে না, কোন পার্টির আয়োজন হলে পার্টিতে সবার স্ত্রী আসে কিন্তু ও যেতে চায় না।

স্বামী দেখে কত স্বামি স্ত্রী প্রেমিক প্রেমিকা পার্কে আড্ডা দেয়, বাইকে করে ঘুরে, স্বামীর ও ইচ্ছে হয় কিন্তু তার স্ত্রী বেশি সময় থাকে না আর যেতেও চায় না। এখানেই তার জিদ। তাই সব সময় স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার করে। স্ত্রীকে একদম সহ্য করে না। এখানে সিগারেটা না খেলে হয় না? তোর টাকায় সিগারেট খাই, না তোর বাপের টাকায়। আমি কি না খাওয়ার কথা বলছি, আমি সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারি না, সে জন্য বলছি বাইরে থেকে খেয়ে আসলে ভালো হতো। না সহ্য হলে রুম থেকে চলে যা, বেশি কথা বলবি না। স্ত্রী চুপচাপ শুয়ে থাকে, সিগারেটের পচা গন্ধ সহ্য করেও স্বামীর সাথেই থাকে। রাতে হটাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় স্ত্রী, পাশে ফিরে দেখে স্বামী নাই, মনে হটাৎ ধুক করে উঠে, স্ত্রী উঠে বারান্দায় গিয়ে দেখে কার সাথে কথা বলে ফোনে।

কার সাথে কথা বলো? স্বামি কিছুটা হকচকিয়ে গেলো, পিছনে ফিরে দিকে স্ত্রী দেখে মেজাজ ঘরম করে বলবো। তোকে আমি বলতে বাধ্য নই যে আমি কার সাথে কথা বলি, বলতে বাধ্য কারন আমি তোমার স্ত্রী, দেখি কার সাথে কথা বলছো? যখন মোবাইলটা নিতে যাবে তখন স্বামি সজোরে একটা চড় বসিয়ে দিলো। তারপর চলে এলো রুমে। স্ত্রী বাকিটা রাত বারান্দায় কাটিয়ে দিলো। পরদিন অফিস থেকে এসে খুব ক্ষিদে পেলো, টেবিলে গিয়ে দেখে খাবার রাখা আছে কিন্তু খাবার মুখে দেওয়ার পর প্লেটটা ছুড়ে মারলো স্ত্রী গায়ে, তোর মাথা রান্না করছিস না তোর বাপের মাথা। স্ত্রী মুখে নিয়ে দেখলো তরকারিতে লবন বেশি। তখন নিজকেই দোষ দিতে লাগলো সারাদিন অফিস করে এসেও খাইতে পারলো না। পরদিন স্বামী অফিস থেকে এসে বললো। কালকে আমার কিছু শার্ট ,লুঙ্গি, আমার প্রয়োজনীয় সব কিছু ব্যাগে ভর্তি করে রাখতে হবে। কোই যাবা? অফিস থেকে তিনদিনের জামাতে যেতে। অনেক খুশি হয়ে, হাসি মুখে তুমিও যাবা? হ্যা এখানে হাসার কি আছে। পরদিন সব কিছু সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যাগে করে দিলো।

আচ্ছা শুন গো। কি? এই পাঞ্জাবিটা গায়ে দেও, না এটা দেও, না না এটা দেও। একটা গায়ে দিলেই হয়। তোমাদের যে আমির থাকবে তার কথা মনযোগদিয়ে শুনবা। তারা ১২ জন একটা মসজিদে গেলো জামাতে গেলে কিন্তু একজনের এক বেলা পাক করার দায়িত্ব পরে। তো আজকে উনার পরলো। পারে না তারপরেও করলো, যখন খেতে যাবে তখন খাবার মুখে দিয়ে দেখলো, লবন এত্তো বেশি যে খাবার অযোগ্য, সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো সবাই আপন মনে খাচ্ছে। কেউ কিছু বললো না। তার মনে পরলো একটু লবন বেশি হওয়াতে প্লেট ছুড়ে মারছিলো স্ত্রীকে। কিন্তু আজ সবাই নিশ্চুপ ভাবে খেয়ে যাচ্ছে।

ভাবতেই তার চোঁখে পানি চলে আসে তখন বুঝতে পারে আসলে তার স্ত্রী কতটা দামি, আর সে কি ব্যবহারটাই না করতো, তখন নিজেই নিজকে ঘৃনা করলো। তাদের আমির বয়ানে বলছিলো একজন নেককার স্ত্রী ১০০ জন শহীদের সমান, যার ঘরে নেককার স্ত্রী আছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা থাকে। আরো বিভিন্ন ওয়াজ শুনলো তিন দিন পর বাসায় আসলো দরজা নক করাতেই দরজা খুলে গেলো। আজকে আসবা সে জন্য সকাল থেকেই দরজায় দাড়িয়ে ছিলাম। স্বামি ব্যাগটা রেখেই স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে দিলো। স্বামীর কান্নাতে স্ত্রীর চোঁখেও পানি চলে আসলো।

তুমি আমাকে মাফ করে দেও। তুমি তো কিছুই করো নাই মাফ করবো কেন। আমি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করছি, আমি তো কিছু মনে করি নাই, স্বামী কখনো স্ত্রীর কাছে মাফ চায় বোকা। আচ্ছা তুমি ওই দিন রাতে কার সাথে কথা বলছো ওহ ওইটা আমার একাটা ফ্রেন্ড সিঙ্গাপুর থাকে। তখন স্ত্রী স্বামী একটা চিমটি কাটা এটা আমাকে কষ্ট দেওয়া আর সারারাত কাদানোর জন্য। তারপর দুজনেই একসাথে হেসে ফেলে। আবার জড়িয়ে ধরে

গল্পের বিষয়:
ধর্মীয়
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত