অর্ধ পৃথিবীর শাসক হযরত উমর (রাঃ)এর খিলাফতের প্রথম দিকে হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) তখন রাষ্ট্রীয় কোষাগার দেখাশুনা করতেন। মানে, অর্থমন্ত্রী ছিলেন হজরত আবু উবাইদা (রাঃ)। ঈদের আগের দিন খলীফার স্ত্রী খলিফাকে বললেন – ‘আমাদের জন্য ঈদের নতুন কাপড় না হলেও চলবে। কিন্তু ছোট বাচ্চাটি ঈদের নতুন কাপড়ের জন্য কাঁদছে’। খলীফা বললেন,- ‘আমার তো নতুন কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই!’ পরে খলীফা উমর (রাঃ) বায়তুল মাল (অর্থবিভাগের প্রধান) হযরত আবু উবাইদাকে এক মাসের অগ্রিম বেতন দেয়ার জন্য চিঠি পাঠালেন। সমগ্র মুসলিম জাহানের খলীফা যিনি, যিনি অর্ধ পৃথিবী শাসন করছেন, তাঁর এ ধরনের চিঠি পাঠ করে হযরত আবু উবাইদার চোখে পানি এসে গেল।
উম্মতে আমীন হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) বাহককে টাকা না দিয়ে চিঠির উত্তরে লিখলেন – ‘আমীরুল মুমিনীন! অগ্রিম বেতন বরাদ্দের জন্য দুটি বিষয়ে আপনাকে ফয়সালা দিতে হবে। প্রথমত, আগামী মাস পর্যন্ত আপনি বেঁচে থাকবেন কি না? দ্বিতীয়ত, বেঁচে থাকলেও মুসলমানেরা আপনাকে খিলাফতের দায়িত্বে বহাল রাখবে কিনা?’ চিঠি পাঠ করে হযরত উমর (রাঃ) কোন প্রতি উত্তর তো করলেনই না, বরং এত কেঁদেছেন যে তাঁর চোখের পানিতে দাঁড়ি ভিজে গেল । আর হাত তুলে হযরত আবু উবাইদার জন্য দোয়া করলেন-
‘হে আল্লাহ! আবু উবাইদার উপর রহম কর, তাঁকে হায়াত দাও।’ উল্লেখ্য: খলীফার আর পরিবারের জন্য ঈদের নতুন জামাকাপড় কেনা হয়নি। – ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ ইবনে কাসীর (রহঃ) অবলম্বনে।