তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম কোন এক রোদেলা দুপুরে,
অস্থির পদচারীতায় ছিলে তুমি ভীষণ মুখরা।
ঘোর লাগা চোখে, যেন এক পূর্ণিমা চাঁদ,
খোলা চুলের উদ্দাম নৃত্য যেন এখনো লেগে আছে চোখে।
আমার সামনে দিয়ে তোমার বারবার যাওয়া আসা
রক্তের গতি বাড়িয়ে দিত। আমি অস্থির হয়ে
তোমার কাছে ছুটতে চাইতাম। কিন্তু দুরন্ত যৌবনের
সেই গতি বারবার থেমে যেত লোকলজ্জার ভয়ে,
পাছে কেউ দেখে ফেলে।
তবু সময়ের চেরী তোমার হাতে ঠিকই তুলে দিয়েছিলাম,
চিরকুটে তোমায় একলাটি ডেকেছিলাম হিজলতলে।
তুমি আসনি।
শ্রাবণের কালো মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ,
ঘোর অমানিশা গ্রাস করে জলন্ত সূর্যের আলোয়,
অপেক্ষায় থাকি, তুমি আসবে, কিন্তু তোমার আর আসা হয়না।
আমার আবেগ তোমাকে ছুঁয়ে যাক বা না যাক,
তোমাকে তো জানতেই হতো ,কেউ একজন তোমাকে কিছুবলতে চায়,
কেউ একজন তোমাকে বলতে চায়,
“তৃণলতা, তোমাকে ভালবাসি ঠিক গোধুলীর রঙছটার মতো,
কাছে পেতে চাই, স্পর্শের সূতোয় গাঁথতে চাই, একবার
যদি দাও সাড়া।“
না তুমি আর সাড়া দাওনি। আমি ফিরে গেছি
বিষন্ন আষাঢ়ে হতাশার চাদর মুড়ি দিয়ে,
না বলা কষ্টে হাহাকার করেছি একাকী রাতদুপুর।
তবু অপেক্ষায় ছিলাম। তারপর হয়তো স্থিমিত সময়ের
কাঁধে চড়ে হেটেছি অন্যপথে,ভুলেছি বেখেয়ালে
বাস্তবতার নির্মমতায়।
শুনেছি তোমার ঘর হয়েছিলো, সংসারী হয়েছিলে,
অথচ সুখ হয়নি,ব্যর্থ মনোরথে ফিরে আসতে হলো তোমায়।
এমনটি চাইনি,কারো জন্যেই এমন কামনা করিনি কখনো
হয়তো তোমার চোখে এখন ঘোলাটে জল, ধুসর স্বপ্নগুলো সুদুর তল্লাটে।
আমি সেদিনের মতো আবারও অপেক্ষায় আছি,মুছে যাক তোমার
চোখের জল, কেটে যাক আঁধার চাঁদোয়া রাত্রি এসে ।
উদয়ের আলোয় উদ্ভাসিত হোক তোমার আগামী ভোর,
নতুন কোন স্বপ্নে তুমি স্বপ্নালু হও,
শিহরিত স্পর্শে সুখী হও অনাগত দিনে।