একটা সীমানাহীন ধূ ধূ গেরুয়া রঙের প্রান্তরে, একা, খুব একা
শীতে কালো রঙের চাদর মুড়িসুড়ি দিয়ে বসে আছে আমার কৈশোর
তার ওষ্ঠে লেগে আছে ব্যর্থ প্রেমের বিষাদ, চোখ দুটি ঈষৎ ঝাপসা
দিগন্ত জোড়া আকাশে আকাশে ছড়িয়ে আছে তার অভিমানের
লাবণ্যময় আভা
এই সুন্দর ছবিটি আমি দেখছি দূর থেকে, বহু বছর পেরিয়ে
বুকে ব্যথা হয় না, এখন অনায়াসে কৌতুক করা যায়
ব্যর্থ প্রেমের আগে সত্যিই কি প্রেম ছিল? সেই বয়ঃসন্ধির সময়ে
আগুন জ্বলত অনবরত, কাঠকুটোর অভাবে আমি নিজেই কি
একদিন আহুতি দিইনি এক কিশোরীকে?
অসংখ্য চিঠির প্রতিটি শব্দই কি আসলে অস্ত্রে শান দেওয়া নয়?
অথচ নিজেও তো হাত পুড়িয়েছি বারবার, সেই কিশোরীটির জন্য
হৃৎপিণ্ড উপড়ে দিতেও রাজি ছিলাম না?
তবু কোথায় যেন ছিল সার্থকতার চেয়ে ব্যর্থতার প্রতি তীব্র টান
এক নদীর কথা মনে পড়ে, বারবার ফিরে আসে কবিতায়, তবু
সেই নদীকেও তো অনায়াসে ছেড়ে এসেছি
নদীকে এত ভালোবাসতাম, তার জলে শরীর মিশিয়ে তো থাকতে
চাইনি সারা জীবন!
ব্যর্থ প্রেম কি তবে নিজেরই অজান্তে এক গোপন স্বার্থপরতা?
দূর থেকে সেই কৈশোরের ছবিটি দেখি, হঠাৎ শুনতে পাই
পাহাড় কাঁপানো এক নিদারুণ হাহাকার
অমনি আর সবকিছু তুচ্ছ হয়ে যায়, আমার হাত থেকে
খসে পড়ল কলম।