নেশাখোরের স্বীকারোক্তি

নেশাখোরের স্বীকারোক্তি

সিগারেট ছোঁননি শ্রীরামচন্দ্র, হজরত মহম্মদ
ব্যাপারটা জানতেনই না
যিশুখ্রিস্ট কিংবা তাঁর বড়দা বুদ্ধ চালিয়ে গেলেন পান-তামাক বিনা
শেক্সপিয়ারকে ফুক ফুক টানা ধরাতে পারলেন না
স্যার ওয়ালটার র‍্যালে
ধোঁয়ার নেশায় যে কী তরিবৎ তা কেউ জানতই না কালিদাসের কালে
মাইকেল চমকিয়ে দিলেন সারা দেশটা, ঠোঁটে সিগারেট, স্বামী বিবেকানন্দর
আঙুলে চুরুট, যুব সমাজ ধোঁয়ার নেশায় কুপোকাৎ
দাদারা ধরলেন, খুড়তুতো ভাইদের হাতেও নল-সটকা
টললেন না তবু রবীন্দ্রনাথ!

আমার বাবার ছিল নস্যির নেশা, জ্যাঠামশাই থাকতেন গা বাঁচিয়ে
অনেক দূরে বসে
বাবা না জ্যাঠা, কাকে যে অনুসরণ করি, বুঝতাম না সেই বয়েসে।
তারপর বন্ধুবান্ধবদের পাল্লায় দিনকাল, শক্তিই প্রথম হাতে তুলে দিয়ে
বলল, দিয়েই দেখো না একটান
ক্রমে ক্রমে জমল বেশ নেশাটা, যখন শূন্য পকেট, শরীর ছটফট
দেখি যে সবাই দিয়েছে পিঠটান।
এখন আর আমি সিগারেট খাই না, প্রতিদিন সিগারেটই
কুরে কুরে আমাকে খায়
ডাক্তাররা বারণ করে খুব, তারপর ড্রয়ার খুলে বলে, খাও না একটা
আপাতত, কী আসে যায়
অন্ধকার ছাদে বসে আছি, বুকে চিনচিনে ব্যথা, কিছুতেই টানব না
সিগারেট, দেখি কী হয়
আকাশ দেখছি না, প্রেমেও মন নেই, শুধু সিগারেট-ভাবনায় বয়ে যাচ্ছে সুসময়।
মদের নেশা যখন তখন ছাড়তে পারি, বোতল রয়েছে তবু দু’দিন খেলাম না
সিগারেট জড়িয়ে ধরল ধোঁয়ার ফাঁসে, এ যেন মাকড়সার জাল,
এ জীবনে ছাড়া পেলাম না!

যারা কখনও বিড়ি-সিগারেট-চুরুট ফোঁকেনি, লিখেছে সাংঘাতিক কবিতা,
তাদের পায়ে শত শত কোটি প্রণাম
ধোঁয়া ও নেশামুক্ত কবিতা, নির্দোষ ও ডেটলে শুদ্ধ, সহস্ৰায়ু হও, মুছে
যাক আমার মতন পাপিষ্ঠের নাম!

গল্পের বিষয়:
কবিতা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত