সবটাই সত্য
বসন্তের এক সকালে
বসন্তি বাতাসে ডুবে থেকে
আকেশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি
অজস্র তারা ঝলমল করছে
মৌমাছিরা ফুল থেকে আহরণ করছে
ফোঁটা ফোঁটা রক্ত
বাঘেরা লালন পালন করছে
হরিণের পাল।
মানুষের মাঝে তাকিয়ে দেখি ,
অনেক অনেক শয়তান চিৎকার করছে ।
কবিরা কলম ভুলে যেয়ে
ডাক দিচ্ছে যুদ্ধের।
মানব শিশুরা পিঁপড়ার খাবার হচ্ছে
কুকুরের বলছে -পৃথিবীটা তাদের।
আমার মন
কালো সব কিছু পছন্দ করে যা,
তা আমার মন।
কালো চাদরের কালো পাথরে
কালো রক্তের এক ফোঁটা চাপ
বিশাল হয়ে হানা দেয় তা
কালো কাফনের একটি লাশ।
অবাস্তব কালোর মনের মানুষ
ছুঁয়ে যায় তা অন্যের হাত
পাশে থেকে আমি জেগে উঠে বলি
শেষ হক তোমার চিরন্তন কালো কাহিনী।
আমার মন!
খারাপ ভাবনা
আমার ভাল লাগে না, খারাপ ভাবনা খেতে
নষ্ট বাতাসের মনে, নষ্ট খাবারের আভাস।
সবার অলক্ষ্যে আমি ভাবি সবাই মৃত
আমার দ্বারা।
আহ্ কি মজা, কি কষ্টকর মজা।
কষ্টকর নষ্ট ভাবনা আমার মনে থাকে
আর আমি ভাবি খারাপ ভাবনা।
ভাবনা সব অসীম ও অশেষ
কি নষ্ট!
তারপর বিরক্তকর ডাকে আমার
খারাপ ভাবনা কাটে।
অভ্যর্থনা
পাখির দুটি চোখ মায়াবী দৃষ্টি মেলে আকাশের
দিকে উড়ে যায়
নীল আকাশে বিলীন হয়ে যায় তা
এক সময় আবার হয়ত ফিরে আসে
কিন্তু মায়াবী দৃষ্টি আর থাকে না,
তা হিংস্র দৃষ্টি হয়ে হানা দেয়।
হানা দিয়ে মায়ের মুখের হাসি
কেড়ে নেয়
তারা কি আর ফিরে পাবে না
মায়াবী দৃষ্টি।
ফিরে পেলে বল,তাদের জন্য
অভ্যর্থনা।
আর্তনাদ
পৃথিবী আজ কর্দমাক্ত
আর্তনাদে কাঁদা হয়ে গেছে পৃথিবীর
মাটি।
আর্তনাদ।
শোনা যায় সেই ছয়শ কিশোরীর আর্তনাদ
যারা হত্যা হয়েছিল
একজনের স্বার্থে।
আর্তনাদে পৃথিবী আজ নোংরা।
একটু অন্ধকারাচ্ছন্ন।
মানুষ বর্বর,
অন্য কিছু নয়।
মানুষ মানুষকে কাটে ও খায়
অদৃশ্য কাউ নয়।
যাদের কাটা হয় তারা আর্তনাদ করে,
সে সব শোনা যায়
ইতিহাস ঘাটলে।
ইতিহাস পড়ার দরকার নাই
আশেপাশে তাকাও
শুনতে পাবে আর্তনাদ।
আর্তনাদ শেষ হয়ে যায় না
তারা আকাশে ভাসে
ঠিক কালো মেঘের মতো,
তারপর গর্জন হয়ে বেড়িয়ে আসে
আর্তনাদ
মানুশের,অন্য কারও না।
কাক ডাকা রাত
রাত। তা গভীর।
হঠাৎ ঘুম ভাঙে পাখির শব্দে।
দেখা যায় কাকের ডাক
শোনা যায় কাক।
অবাস্তব চিন্তা।
কিন্তু তা সত্য!
কাক ডাকা রাত!
অন্তর কেঁপে উঠে নোংরা আহ্বানে
ঠিক ডাস্টবিনে বসে থাকা কাকের মতন।
চলে যায় দূরে দৃষ্টির অগোচরে
ভাল মানুষটি।
যা থাকে তা অমানুষ
অনেকটা হ্রিংস্র আর কাকের পায়ের মতো
বিশ্রি কালো।
তাই মানুষটি
ভাল মানুষটি ফিরে আসতে লজ্জা পায়
আর শুনতে পায় কাকের ডাক।
কাক ডাকা রাত।
কষ্ট
যখন হারিয়ে যায় কান্নার কষ্ট
ভাঙা বুকে ,তবু তাকে ভঙ্গুর বলা যায় না,
নিশীথ রজনী ,শূন্য মানুষের শূন্য অন্তর
বেহেশত সম আনন্দ, তা তুচ্ছ হয়ে যায়।
থাকবেই বা কেন?
তা তো সব শূন্য অন্তর।
তোমরা কি বুঝ, অন্তরের অন্তরফল
হিংস্র মানুষেরও অন্তর থাকে
থাকে না শুধু আমার
চারিদিকে তাকাই, সব হাহাকার।
গৃহদাহ তবু থামে না।
যেখানে সবকিছু একাকার
দূর আকাশের বিশাল প্রান্তরে,
আমার ও তোমাদের মন কাড়ে
বিশাল ডানার মন পাখিটি,
এখানে সবার মন একাকার।
মন পাখিরা ডানামেলে বেড়ায় আকাশে
ধূসর পাখি বাতাসে বিলি কাটে
মাথার ভিতর ব্যথা করে
তাই হারিয়ে যায় মন পাখি।
সেই ব্যাথা সহ্য করে, আমি যাই ভবিষ্যতে।
বাস্তবতাই অদ্ভুত
অর্ধেক শতাব্দী নেশাগ্রস্ত ছিলাম,
আমার বাস্তবতাই আমার কল্পনা।
অথচ এখন নেশা ছেড়ে জেগে দেখি,
মানুষ সব কল্পনার।
আমার কল্পনাই আমার বাস্তবতাই।
ভালোবাসা ধূলি
মানুষ মরে যায়,ভালোবাসা রেখে যায়।
ভালোবাসা সব ধূলি হয়ে উড়ে যায়।
মানুষ আবারো ভালোবাসাহীন।
কিন্তু সেটা মিথ্যা।
নতুন হয়ে যায়, নতুন সবাই
ভালবাসাও তাই নতুন।
নতুন শুরে,নতুন নাচে
ভালোবাসা তাই ছেলেখেলাময়।
আবারও কমে ভালোবাসা
নিচ থেকে নিচে আরও নিচে
ভালোবাসা তাই কঠিন হয়ে যায়।
চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া ভালোবাসা
কিন্তু তা মিষ্টি থেকে লোনা হয়ে যায়।
আবারো মানুষ মরে যায়।
ভালোবাসা ধূলি হয়ে যায়।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়,যখন আবেগ নষ্ট করে মাথা,
দুঃখিত,ভুল হতে পারে।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় একটি কান
যে কানে শুধুই শোনা যায় অম্ললিলার আহ্বান।
আবারও
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় মন
থেকে ছুটে আসা কালো বুলেট সাদা মন
কালো করে ছুটে চলে খারাপের দিকে।
মানুষ।
শুধু ছুটে চলে অমানুষ হওয়ার আশায়,
সে আশা সত্য কিন্তু বৃথা হয়।
তাই কেউ পারে না অমানুষ হতে
তারা ফিরে পায় বাড়ি
স্নিগ্ধ সাদা মন।
কিন্তু সাদা মন ক্ষণিকের পথিক হতে চায়।
স্মৃতির স্পর্শ
মাঝরাত বেড়ে যায় কারা যেন কথা বলে
অস্পষ্ট স্বরে, অথবা বিকট চিৎকারে।
এসব কি কল্পনা?
হোক সব কল্পনা, তবে রাত কিন্তু বেড়ে যায়।
সেই রাতের ফাঁকে আঁধারে
কিছু না বলা মানুষ স্পর্শ দিয়ে যায়,
শীতল কিংবা বাতাসে।
যারা আজ নেই, হয়তো থাকবেও না।
তবে থেকে যায় স্মৃতি, তাদের।
সে সব হয়তো কাঁদায়
কিন্তু তা একবার।
তারপর
বাতাস হয়ে অদৃশ্য হয়ে স্পর্শ দেয়। মনে।
জ্বলন্ত মোমবাতির মানে
ওরা এসেছিল, ওরা এসেছিল
পিচ্ছিল কালো অন্ধকার থলি থেকে বেড়িয়ে
বন্য পশুর মত যাদের শরীরের গন্ধ
নীল আকাশের নিচের মানুষেরা এত বর্বর!
ওরা সবুজ দেশ বাংলাদেশের কলঙ্ক
শাস্তি দেও সর্বশ্রেষ্ট ওদের শাস্তি দেও।
ওরা যেন মানুষের সাথে মিশে থাকা শয়তানের দল
কোথায় যাবি এবার কালো ধেঁড়ে ইঁদুর
ইতিহাসের সাদা মোমবাতি সবাই জ্বালিয়ে রেখেছে
এতো আলো! এতো আলো!
এবার দেখলাম সত্যিকার স্বাধীন বাংলাদেশ
খুব শান্তি!!
অবাক!
মানুশের রক্তে আনন্দ, তোমাদের
জন্য কিছু অর্থহীন পিপাসা।
মাথা কাটা মানুষের গলিত রক্ত
বাতাসে লাল ধোঁয়া উড়ে যায়
শূন্যে ভেসে থাকে কবরের গন্ধ।
রাজনৈতিক অপদেবতার ঘুম নাই
সারাটা সময় শুধু রক্ত চায়
তাই মানুষ বলি হয়, পথে ঘাটে।
কুত্তারা মানুষের লাশ শুঁকে
মৃত লাশের নালা সৃষ্টি হয়
মানুষের মত আর কিছু আছে!
স্বাধীনতা পরে রইল কবিতায়।
জীবন কলঙ্ক
এ কেমন থাকা, যা বাঁচার জন্য নয়,
যেখানে মৃত্যু বাঞ্ছনিও নয়,
যা শুধু পরে থাকা বিতৃষ্ণার মাঝে,
তবুও কেন আবেগ নাই।
।।
আমিও বেঁচে আছি
অথচ তাকিয়ে দেখ আমি মৃত
আমি নিঃশেষ কিন্তু অসীম
এভাবেই চলে যায় সময়
আর চলার পথে মৃত্যু আসে
যা নিঃশেষের অসীম।
কান্নার প্রার্থনা
তোমার পায়ে আমার চুমুর উৎসর্গও,
হে দেবী আমাকে দেও কান্না।
আমি কেন কষ্ট পাই না,
যখন স্বপ্নগুলো থেমে থাকে,
হে দেবী আমাকে ফিরিয়ে দেও
পুরোনো চোখের পানি।
আমি চিৎকার করে কাঁদতে চাই।
বিস্ফোরিত কাব্যের
উচ্চারিত শব্দের আনন্দে বিভোর
হয়ে থাকা কাব্য মঞ্চে,
গ্রেনেডের মত,
বিস্ফোরিত কবিতার স্প্রিং
মস্তিষ্ক ছিদ্র করে-
উদ্রেগ করে কি উত্তপ্ত আনন্দের!-
যা প্রেমিকাহীনকে করে,
প্রেমিক।
বাস্তবের মৃত মূর্তিগুলো,
ফিরে পায় প্রাণ।
সময়ের দুঃখ-মৃত নদীগুলো,
সমুদ্রের গর্জন তোলে।
নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা,
নিঃসঙ্গ হয়ে পরে।
ভয় ভয়ংকরভাবে,
অদৃশ্যে চলে যায়।
বিধ্বস্ত মহাজগতে,
সৃষ্টি হয় নতুন পৃথিবীর।
অপেক্ষায় রইলাম বিস্ফোরণ তোমার,
আবার এবং আবার।
অচেনা
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
শত সহস্র কবিদের মাঝে
হারিয়ে যাওয়া একটি ফুলের ছবি
আমি যখন পেয়ে বসি
তখন তা ফিরিয়ে দেই আবার হারিয়ে যাওয়ায়।
তাই আমি বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
অনেক আশা নিয়ে বসে থাকি ছাদে
তুমি আসবে বলে প্রতীক্ষায়
কিন্তু তুমি এলে, আর আমি খুশি হলাম না।
কবি বলেছিলেন,বুঝেন না তিনি নারী মন
তা কিন্তু অনেক জটিল।
আমি বলি কবি,ভাবুন আর একটু বসে
কোন নদীর জল বিকাশের সামনে
মানুষ নিজেই নিজের অচেনা।
তাই আশেপাশে আমার অসহায় দৃষ্টি
কেউ নেই চেনা আজ,
আর আমি
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
বসে থাকি এক কাপ চা হাতে নিয়ে
কিংবা মাথায় হাত রেখে টেবিলে মুখ গুজে
অজস্র কল্পনা বিলাসে
অতল যা ভাবনার।
বিকেলের চাঁদ
বাতাসের তৃপ্তিকর ঢেউ এসে খেলা করে
আমার মুখে, চোখে ও মনে
বাতাসের স্নিগ্ধ ঘ্রান শুধু মন ছুঁয়ে দেয় না
ছুঁয়ে দেয় কল্পনার দেশ
দুটি চাঁদের দেশ,আলোর দেশ, আর গোলাপি রং এর দেশ।
সূর্যের আলো আর মেঘের ছায়ায় সৃষ্ট
স্মৃতির দৃশ্যপটের অমর গোলাপি রং
শুধু থেকে যায় না, মাঝেমাঝে চোখ ছুঁয়ে দেয়।
এভাবেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হয়।
বিকেলের চাঁদের হাসি মায়ের তৃপ্তির হাসিতে রূপ নেয়।
শয়তান
মাতৃগর্ভ হতে লালিত করে আসা ঘৃণা
মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
পৃথিবী যখন মাতৃ নাড়ির টান ছিঁড়ে
ছুটে এলো মহাশূন্যে
সেই সাথে আটকে রইল মানব দুটি মন
তখন মানব মনের বিপরীতে রইলাম আমি
শয়তান।
তারপর তারা দুইটি হতে অজস্র হল,
পৃথিবীকে লাল রক্তে ভিজিয়ে দিল।
আমিও বসে ছিলাম না
কিভাবে যেন বৃদ্ধি পেলাম
এক সময় মানবীর গর্ভে জন্ম হল রাশি রাশি
শয়তান পুত্র,
তারও এখন আমি।
আমি মনের ঘ্রাণ নেই ও হিংসায় জ্বলে উঠি
তারপর তা মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
আমি শয়তান।
যখন অন্ধ হতে চাই
দেখতে কি চাস, দেওয়ালের রং লাল,
শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকা ছিদ্র ছিদ্র মানুষ,
বিঁধে থাকা অসংখ্য উত্তপ্ত বুলেট,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অঙ্গ উপাঙ্গে
কিভাবে সৃষ্টি হয় আতঙ্কের রাত।
দেখতে কি চাস,রক্তের মধ্য রাত,
অপ্রস্তুত ভাবে বেড়িয়ে আসা কলিজা,
গোলার আঘাতে বিচ্ছিন্ন মানবতা,
লাশের উপর দৌড়ে, রক্তের পিচ্ছিলতায় আছড়ে
কিভাবে পালিয়ে বাঁচতে হয়।
দেখতে কি চাস,মানব সৃষ্ট উলঙ্গ কবরস্থান,
ফুটন্ত স্বপ্নে লজ্জার কালো দাগ,
সভ্যতার নগরে অশ্লীল মরণাস্ত্রের রাজত্ব
জাহান্নামের সন্তানের স্বাক্ষরিত
অপারেশন সার্চলাইট
কিভাবে নর্দমার গন্ধ ছড়ায়।
তবে তাকিয়ে দেখ শালা
২৫ মার্চের রাত তোর দরজার গোঁড়ায়।
জন্ম
পিছনে ফেলে আসা অবাক কোন মিলন,
স্মৃতির খেলা আয়নায়
যখন প্রতিফলিত হয়ে মস্তিষ্কে আঘাত হানে,
রক্তে রক্তে অবাঞ্ছিত আনন্দ বয়ে যায়
তা সত্যই অবাঞ্ছিত আনন্দ।
আধুনিকতার ছুড়িকাঘাতে সে ছুঁয়ে চলে গেল
উত্তাল করে দিল যৌবন।
এখন শুধু কষ্টের সময়,মিলন স্বপ্ন দেখার সময়
স্বপ্ন তা কিছু নিষিদ্ধ অনুভূতি দেয়
নেশা তুলে দেয় বলিষ্ঠ শরীরে
বলিষ্ঠ শরীর মিছে কষ্ট পায়, ছটফট করে লাফ দেয়
কল্পনায়।
কল্পনা নিষিদ্ধ সময়কে করে নেয় পবিত্র
মিলন তখন হয় পবিত্র আনন্দের।
পবিত্র আনন্দ মানব শিশুর জন্ম দেয়।
তবু কবিতা লিখি
কবিতার সংজ্ঞা জানি না আমি
তবু কবিতা লিখি,
গানের বাদ্য বুঝি না কিছুই
তবু বাদ্য আমি বাজাই,
আকাশ কি বুঝি না কিন্তু
আকাশের দিকে তাকাই,
মানুষকে আমি ভুলেও চিনি না
তবু মানুষের মাঝেই আছি,
নাচের দোলা জানি না তা
তবু পাখির শব্দে নাচি,
ভালবাসার হয়ত সংজ্ঞা নাই
তবু ভালবাসাতেই বাঁচি।
বৃষ্টি পাগল কোন কবি
বন্ধ করে রেখ না তুমি কবিতার খাতা,
অনেক বর্ষার অনেক স্মৃতি আছে আঁকা,
বৃষ্টির হাহাকার ও মন মাতানো ছন্দ
বাতাসে যেন মাটির অমৃত সুগন্ধ।
অনেক অজানা বিস্ময়ের শেষে
কালো কুচকুচে কড়ই গাছের গা ঘেঁষে,
যখন বৃষ্টির ফোঁটা দুপুরের অন্ধকারে
কোন পাহাড়ি ফুলের উপর নিঃশব্দে পরে,
মনে হয় দুপুরের এ যেন শিশির।
এভাবেই কবি আর বর্ষার মাখামাখি
নগরে হয়তো ভেজা কাকের নাচানাচি,
কিন্তু বর্ষা তুমি থেকো না বেশী
সৌন্দর্যে পূরণ চায় না সে, পাগল কবি।
জীবনের কষ্ট
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লাল গোলাপ হতে ঝড়ে পরে রক্ত
অমর ভালোবাসা ও তার টান,
প্রেমের আগুনে দোলানো কোন প্রেমিকার গান।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মাতৃহারা ও বেদনারত শিশুর হাসি
মা বলেছিল সোনামণি তোমায় বড় ভালবাসি।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লক্ষ মানুষের কষ্টের সাধনা
একটি স্বাধীন দেশে
স্বপ্নগুলোকে কুড়ে কুড়ে খায় কিছু, যারা নেকড়ের বেশে।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মুক্ত নারীর টানে ছুটে চলা কিছু যুবক
ভালোবাসা তাদের হিংস্রতায় পরিণত
মানবীয় ভালোবাসা হয়ে যায় খণ্ডিত।
স্বপ্নের কষ্ট কেনা
আমি হারিয়ে গেছি অনেক অতলে
যেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে ঝিঁঝিঁ পোকারা
নিস্তব্ধতা ভাঙে,আর জোনাকিরা
মিটমিট করে আলো দেয়,
কিন্তু সে আলো আমাকে ছুঁতে পারে না
সেই ঝিঁ ঝিঁ শব্দ আমাকে বিরক্ত করে না।
আমি আর জ্যোৎস্নার আলো দেখে
বিস্মিত হতে পারি না এবং আঁধার দেখে
ভয় পাই না, আমি ভালবাসতে পারি না।
আমি এখন দাঁড়িয়ে থাকি না, বসেও থাকি না।
অস্থির ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করতে থাকি।
আমি কেন যেন চিন্তার পর চিন্তা করি
সেগুলোর কোন বাড়ি নেই, গন্তব্য নেই
তাদের হয়ত কোন উৎপত্তিও নেই।
আমি আর ধুতরা ফুলে দেখার আশায়
পাহাড়ে যাই না,ভিজে বালুতে পা রাখি না।
আমি কিভাবে যেন হারিয়ে গেলাম অতলে
এখানে আকাশ কুসুম আশা নিয়ে কবিতা লিখি না,
নীল রঙা আকাশের মাঝে সাদা মেঘ দেখি না।
প্রেমিকার ঠোঁটের মত ঠাণ্ডা বৃষ্টিতে ভিজি না।
এখন শুধু ব্যর্থতার কষ্ট পাই,হেলাল হাফিজের
কষ্ট কিনি, কিনে ফেলি নিরাবতা।
জীবন থেকে নেয়া
মানুষ জন্মে বেঁচে থাকে তারা
এক সময় ক্যাকটাস কাঁটার খোঁচা খেয়ে হৃদয়ে জাগে সাড়া।
মন থেকে মন, মনের মানুষের কিছু আদর ও মিলন,
কবিদের কলম থেকে জন্ম নেয়া জীবনের প্রতিফলন।
মাঝে মাঝে কিছু মিথ্যে আবেগ ও ভালোবাসা
অসীম কষ্টে মরার সময়ও ধরে রাখি আশা।
কবিতার ছন্দের মতন সুন্দর করে, এ জীবন যেন আঁকা
আলোর মতন সোজা নয় যেন নদীর মত বাঁকা।
আসে সুখ এ জীবনে, ঘুমের মত গভীর হয়ে
দুঃখ যদিও ভেঙে দিয়ে যায়, গড়ি নতুন করে।
সুখে যদি হাসতে পারি, দুঃখের কান্নায় দোষ কি তাতে?
একটি মাত্র জীবনটাকে জড়িয়ে ধরি দু হাতে।
জীবনটা হয়তো শিশুর হাতের চকচকে ফুটবল,
কারো কারো কাছে জীবনের মানে রঙের ছিনেমা হল।
কবিদের কাছে হয়তো জীবন, শিশিরের হাসিতে
বাদকের জীবন নিহত রয়েছে একটি বাশের বাঁশিতে।
জীবন আসলে মাতৃগর্ভ হতে নিয়ে আসা
ভালবাসার টান।
ভুল প্রেম
আকাশের পশ্চিম কোনে যখন আগুনে উত্তপ্ত লাল
লোহার মত চাঁদ উঠে, আরো থাকে শান্তি প্রিয় দিঘীতে
গ্লাস ভাঙা কাঁচের টুকরর মত চকচকে তারার প্রতিফলন,
আমি তখন শরতের কাশ ফুলের কনার মত
ভেসে যাই সুখময় কল্পনায়, যেখানে শুধু
সুখ আর সুখ।
তুমি সেই চাঁদ দেখলে না
আর দেখলে না সূর্যমুখী ফুল।
তুমি আমাকে জীবন দেখাতে চেয়েছিলে
চেয়াছিলে লাল ইটের তৈরি সাদ বাড়ি।
আমি শুধু চেয়েছিলাম তোমাকে আরও চেয়েছিলাম
মায়ের আঁচলের মত আপন কোন কল্পনা
তুমি শুধু মিথ্যা যৌবন নিলে
নিলে না কোন ভালবাসা।
তবু আমার তেমন কষ্ট নেই, নেই কোন ঘৃণা।
আমি শুধু ঘুরে ফিরে কবিতার কাছে চলে আসি।
মানব
পৃথিবী-মানুষ-যুদ্ধ মাখা, অন্ধকারে রেখা আঁকা,
ভালবাসার বন্ধনে মাঝে মাঝে থাকে ঢাকা।
সৃষ্টির রহস্য তথ্য হতে নেওয়া রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ,
প্রকৃতির রূপ রসে মনবেরা হয় মুগ্ধ ।
যুদ্ধ না হলে শান্তির কি মর্ম,
আশান্তি সৃষ্টি তো মানবেরই কর্ম।
আকাশ যদি না থাকে তবে মাটির অস্তিত্ব বিলীন,
যৌবনের পরে তাই বার্ধক্য মলিন।
মৃত্যু যদি কষ্টের না হতো, থাকতাম না বেঁচে
তবু কেন যোদ্ধারা প্রাণ দেয় হেসে।
বর্ণমালার শান্তি
কি যে ভাবি! ভাবনার শেষে
তুমি কষ্ট করে এসে
শুধু জড়িয়ে ধর কবিতার বর্ণমালা দিয়ে।
এ কি! বাঁধন যেন আছড়ে পরে বুকে
কিছু কথা রয়ে যায় মুখে
বুকের লোমে নাক দিয়ে ঘুমালে তুমি
ঘন ঘন নিঃশ্বাসে ক্লান্ত আমি
সুখের কল্যাণে নিজের জগৎ হারাই
আর নয়, আর নয় এ দলাই-মারাই
তারপর শান্তির ঘুম শেষে
শার্টের বোতাম লাগিয়ে আমি
চলে যাই কবিতার পল্লিতে
স্নিগ্ধ হাসি, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বর্ণমালার শান্তি
দূর করে আমার লোমশ ক্লান্তি।
দানব
আমার ভাল লাগে শব্দটি,
‘দানব’।
যার হুঙ্কারে কালো পাথরের কালো দেয়াল
কেঁপে উঠে।
আমি দানব হতে চাই।
ভেঙে দিতে চাই আমিই আমার কষ্টকে।
সূর্য উঠার সাথে, উঠে আমার কষ্টগুলো জেগে,
আর আমি মানুষ, তা গ্রহণ করি দানব হয়ে।
তবু আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি,
ভালবাসি বন্ধুর মুখে শোনা বইমেলার কথা।
মাঝে মাঝে কষ্টগুলোকে দানব মনে হয়
সেই সাথে অর্ধ সৃষ্ট, অর্ধ পৃথিবীর
নিকৃষ্ট মানুষ, আমি, দানব হই।
কিছু অনুভূতি
আমি কি ভাবে প্রকাশ করি
আমার মনের এলানো অনুভূতির কথা
আমার রাত ও আমার দিন
কিছু অনুভূতির প্রতিদিন
আমাকে প্রকাশ করতে দেয় না তারা
আমার মনের সব শব্দমালা
কিঞ্চুলুক এঁকে বেঁকে যায় ও যাওয়ার মত
আমার মনে অনুভূতি কেটে যায়
তিক্ষ্ম ছুরি কিংবা চাকুর মত।
আমি রাতে শুনি খড়মের শব্দ ধ্বনি
তারা যে কিছু অনুভূতির যোগান
শব্দমালা আমার প্রকাশের কৃতান্ত।
কুঞ্চিকা হাতে আমি দাঁড়িয়ে পাশে
ছায়া অনুভূতি তা প্রকাশের শেষে।
মানবাত্মার জগৎ
সহস্র শতাব্দীর রহস্য আজো হল না উন্মোচন
মানব ইতিহাসে তার বিরল দৃষ্টান্ত
আমাদের আশেপাশে তারই অহামিকা
আমাদের তিনি স্রষ্টা হন।
অনেক আলো আর আলো, অন্ধকার রাজত্ব হারা।
সূক্ষ্ম আমারা, তা আমাদের আত্মারা
স্রষ্টার সম্মুখে হাজার হাজার মানবাত্মারা
সে কি আনন্দ এই সুখময় দর্শনে।
আমাদের মাঝে একটাই দায়িত্বের বোঝা
তিনি এক ও অদ্বিতীয় তা স্বীকার করা।
নিষ্ক্রিয় আবেগ
ক্ষমতা নাই জানি তবু চলে যেতে ইচ্ছে
হয়, আকাশের ভেতর দিয়ে বিশাল মহাশুন্যতায়
মিলিয়ে যেতে, সূর্যের তাপে পুকুরের পানির মত
হাওয়া হতে, আলোতে যেমন অন্ধকার
অন্ধকারে যেমন আলো নেই তেমন।
বার বার সাপ্তাহিকে পাঠানো
অপ্রকাশিত কবিতার কষ্ট,
ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়ার যন্ত্রণা,
মায়ের অসুখি মলিন মুখ,
গলা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ভালবাসাহীনতায়,
তিন বেলার ক্ষিধের গলা চিপে ধরা,
পৃথিবীটাকে মনে হয় দুর্ভেদ্য জেলখানা।
তাই মুক্তির ইচ্ছা প্রতিবার
জানান দেয় অক্ষমতা-
সব কিছু ভেঙে ফেলার
সীমাবদ্ধ দেহকে ফেলে দেওয়ার
অদ্ভুত সুন্দর আঁধারকে চুমু খাওয়ার
ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে দেওয়ার
সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন পিষে ফেলার
তরলের পাত্রে শেষবার চুমুক দেওয়ার
লাফ দিয়ে উঠে উড়ে যাওয়ার
নিশ্চিত তবু অনিশ্চিতের ঘুমকে জড়িয়ে নেওয়ার।
তাই যেতে পারি না,
বার বার ফিরে আসি
যন্ত্রণার কিছু কবিতাহীন
কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আশায়।
অবস্থা
মানবো না আর কনো কিছু
যখন মেনে নিয়েছি আমার জন্ম, আমার এই বেঁচে থাকা
মানুষের ভুল গন্দম ফল আমার অন্তর-আত্মা জ্বালিয়ে খায়
ছিলাম সম্মানিত ,পরম ক্ষমাশীল, সর্বজ্ঞ, প্রকৃত সত্ত্বার নিকটে
প্রবেশ হল মিথ্যে ধূলিময় জগতে, চির পবিত্র জগত হতে।
যন্ত্রণার কোন শেষ নেই।
সেই প্রেম
আমি সেই প্রেম চাই,
যা নদীর মত সমুদ্রে যেয়ে মিশবে না,
মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরাবে না,
ফুলকে ফল, ফলকে খাদ্য করবে না,
যা মাটিকে সোনা, হীরাকে বালি করবে না,
আমি আর আমাতে থাকব না।
আমি তাঁর প্রেম চাই,
যিনি সৃষ্টি করবেন মহাবিশ্ব, আর ধ্বংস করবেন নিমিষেই,
আমার তোমার অস্তিত্যের কোন অবস্থান নাই,
যিনি ভালকে করেন খারাপ, খারাপকে করেন ভাল,
যিনি অহঙ্কারের প্রকৃত ধারক,
যার ছোঁয়াতে বেহেস্ত, নরক, ঊর্ধ্ব , মর্ত্য,
একই বস্তুতে পরিণত হয়।
যে প্রেম, শুধু প্রেম। প্রেম…প্রেম। সেই প্রেম।
**************************সমাপ্ত******************
সবটাই সত্য
বসন্তের এক সকালে
বসন্তি বাতাসে ডুবে থেকে
আকেশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি
অজস্র তারা ঝলমল করছে
মৌমাছিরা ফুল থেকে আহরণ করছে
ফোঁটা ফোঁটা রক্ত
বাঘেরা লালন পালন করছে
হরিণের পাল।
মানুষের মাঝে তাকিয়ে দেখি ,
অনেক অনেক শয়তান চিৎকার করছে ।
কবিরা কলম ভুলে যেয়ে
ডাক দিচ্ছে যুদ্ধের।
মানব শিশুরা পিঁপড়ার খাবার হচ্ছে
কুকুরের বলছে -পৃথিবীটা তাদের।
আমার মন
কালো সব কিছু পছন্দ করে যা,
তা আমার মন।
কালো চাদরের কালো পাথরে
কালো রক্তের এক ফোঁটা চাপ
বিশাল হয়ে হানা দেয় তা
কালো কাফনের একটি লাশ।
অবাস্তব কালোর মনের মানুষ
ছুঁয়ে যায় তা অন্যের হাত
পাশে থেকে আমি জেগে উঠে বলি
শেষ হক তোমার চিরন্তন কালো কাহিনী।
আমার মন!
খারাপ ভাবনা
আমার ভাল লাগে না, খারাপ ভাবনা খেতে
নষ্ট বাতাসের মনে, নষ্ট খাবারের আভাস।
সবার অলক্ষ্যে আমি ভাবি সবাই মৃত
আমার দ্বারা।
আহ্ কি মজা, কি কষ্টকর মজা।
কষ্টকর নষ্ট ভাবনা আমার মনে থাকে
আর আমি ভাবি খারাপ ভাবনা।
ভাবনা সব অসীম ও অশেষ
কি নষ্ট!
তারপর বিরক্তকর ডাকে আমার
খারাপ ভাবনা কাটে।
অভ্যর্থনা
পাখির দুটি চোখ মায়াবী দৃষ্টি মেলে আকাশের
দিকে উড়ে যায়
নীল আকাশে বিলীন হয়ে যায় তা
এক সময় আবার হয়ত ফিরে আসে
কিন্তু মায়াবী দৃষ্টি আর থাকে না,
তা হিংস্র দৃষ্টি হয়ে হানা দেয়।
হানা দিয়ে মায়ের মুখের হাসি
কেড়ে নেয়
তারা কি আর ফিরে পাবে না
মায়াবী দৃষ্টি।
ফিরে পেলে বল,তাদের জন্য
অভ্যর্থনা।
আর্তনাদ
পৃথিবী আজ কর্দমাক্ত
আর্তনাদে কাঁদা হয়ে গেছে পৃথিবীর
মাটি।
আর্তনাদ।
শোনা যায় সেই ছয়শ কিশোরীর আর্তনাদ
যারা হত্যা হয়েছিল
একজনের স্বার্থে।
আর্তনাদে পৃথিবী আজ নোংরা।
একটু অন্ধকারাচ্ছন্ন।
মানুষ বর্বর,
অন্য কিছু নয়।
মানুষ মানুষকে কাটে ও খায়
অদৃশ্য কাউ নয়।
যাদের কাটা হয় তারা আর্তনাদ করে,
সে সব শোনা যায়
ইতিহাস ঘাটলে।
ইতিহাস পড়ার দরকার নাই
আশেপাশে তাকাও
শুনতে পাবে আর্তনাদ।
আর্তনাদ শেষ হয়ে যায় না
তারা আকাশে ভাসে
ঠিক কালো মেঘের মতো,
তারপর গর্জন হয়ে বেড়িয়ে আসে
আর্তনাদ
মানুশের,অন্য কারও না।
কাক ডাকা রাত
রাত। তা গভীর।
হঠাৎ ঘুম ভাঙে পাখির শব্দে।
দেখা যায় কাকের ডাক
শোনা যায় কাক।
অবাস্তব চিন্তা।
কিন্তু তা সত্য!
কাক ডাকা রাত!
অন্তর কেঁপে উঠে নোংরা আহ্বানে
ঠিক ডাস্টবিনে বসে থাকা কাকের মতন।
চলে যায় দূরে দৃষ্টির অগোচরে
ভাল মানুষটি।
যা থাকে তা অমানুষ
অনেকটা হ্রিংস্র আর কাকের পায়ের মতো
বিশ্রি কালো।
তাই মানুষটি
ভাল মানুষটি ফিরে আসতে লজ্জা পায়
আর শুনতে পায় কাকের ডাক।
কাক ডাকা রাত।
কষ্ট
যখন হারিয়ে যায় কান্নার কষ্ট
ভাঙা বুকে ,তবু তাকে ভঙ্গুর বলা যায় না,
নিশীথ রজনী ,শূন্য মানুষের শূন্য অন্তর
বেহেশত সম আনন্দ ,তা তুচ্ছ হয়ে যায়।
থাকবেই বা কেন?
তা তো সব শূন্য অন্তর।
তোমরা কি বুঝ ,অন্তরের অন্তরফল
হিংস্র মানুষেরও অন্তর থাকে
থাকে না শুধু আমার
চারিদিকে তাকাই ,সব হাহাকার।
গৃহদাহ তবু থামে না।
যেখানে সবকিছু একাকার
দূর আকাশের বিশাল প্রান্তরে,
আমার ও তোমাদের মন কাড়ে
বিশাল ডানার মন পাখিটি,
এখানে সবার মন একাকার।
মন পাখিরা ডানামেলে বেড়ায় আকাশে
ধূসর পাখি বাতাসে বিলি কাটে
মাথার ভিতর ব্যথা করে
তাই হারিয়ে যায় মন পাখি।
সেই ব্যাথা সহ্য করে, আমি যাই ভবিষ্যতে।
বাস্তবতাই অদ্ভুত
অর্ধেক শতাব্দী নেশাগ্রস্ত ছিলাম,
আমার বাস্তবতাই আমার কল্পনা।
অথচ এখন নেশা ছেড়ে জেগে দেখি,
মানুষ সব কল্পনার।
আমার কল্পনাই আমার বাস্তবতাই।
ভালোবাসা ধূলি
মানুষ মরে যায়,ভালোবাসা রেখে যায়।
ভালোবাসা সব ধূলি হয়ে উড়ে যায়।
মানুষ আবারো ভালোবাসাহীন।
কিন্তু সেটা মিথ্যা।
নতুন হয়ে যায়, নতুন সবাই
ভালবাসাও তাই নতুন।
নতুন শুরে,নতুন নাচে
ভালোবাসা তাই ছেলেখেলাময়।
আবারও কমে ভালোবাসা
নিচ থেকে নিচে আরও নিচে
ভালোবাসা তাই কঠিন হয়ে যায়।
চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া ভালোবাসা
কিন্তু তা মিষ্টি থেকে লোনা হয়ে যায়।
আবারো মানুষ মরে যায়।
ভালোবাসা ধূলি হয়ে যায়।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়,যখন আবেগ নষ্ট করে মাথা,
দুঃখিত,ভুল হতে পারে।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় একটি কান
যে কানে শুধুই শোনা যায় অম্ললিলার আহ্বান।
আবারও
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় মন
থেকে ছুটে আসা কালো বুলেট সাদা মন
কালো করে ছুটে চলে খারাপের দিকে।
মানুষ।
শুধু ছুটে চলে অমানুষ হওয়ার আশায়,
সে আশা সত্য কিন্তু বৃথা হয়।
তাই কেউ পারে না অমানুষ হতে
তারা ফিরে পায় বাড়ি
স্নিগ্ধ সাদা মন।
কিন্তু সাদা মন ক্ষণিকের পথিক হতে চায়।
স্মৃতির স্পর্শ
মাঝরাত বেড়ে যায় কারা যেন কথা বলে
অস্পষ্ট স্বরে, অথবা বিকট চিৎকারে।
এসব কি কল্পনা?
হোক সব কল্পনা, তবে রাত কিন্তু বেড়ে যায়।
সেই রাতের ফাঁকে আঁধারে
কিছু না বলা মানুষ স্পর্শ দিয়ে যায়,
শীতল কিংবা বাতাসে।
যারা আজ নেই, হয়তো থাকবেও না।
তবে থেকে যায় স্মৃতি, তাদের।
সে সব হয়তো কাঁদায়
কিন্তু তা একবার।
তারপর
বাতাস হয়ে অদৃশ্য হয়ে স্পর্শ দেয়। মনে।
জ্বলন্ত মোমবাতির মানে
ওরা এসেছিল, ওরা এসেছিল
পিচ্ছিল কালো অন্ধকার থলি থেকে বেড়িয়ে
বন্য পশুর মত যাদের শরীরের গন্ধ
নীল আকাশের নিচের মানুষেরা এত বর্বর!
ওরা সবুজ দেশ বাংলাদেশের কলঙ্ক
শাস্তি দেও সর্বশ্রেষ্ট ওদের শাস্তি দেও।
ওরা যেন মানুষের সাথে মিশে থাকা শয়তানের দল
কোথায় যাবি এবার কালো ধেঁড়ে ইঁদুর
ইতিহাসের সাদা মোমবাতি সবাই জ্বালিয়ে রেখেছে
এতো আলো! এতো আলো!
এবার দেখলাম সত্যিকার স্বাধীন বাংলাদেশ
খুব শান্তি!!
অবাক!
মানুশের রক্তে আনন্দ, তোমাদের
জন্য কিছু অর্থহীন পিপাসা।
মাথা কাটা মানুষের গলিত রক্ত
বাতাসে লাল ধোঁয়া উড়ে যায়
শূন্যে ভেসে থাকে কবরের গন্ধ।
রাজনৈতিক অপদেবতার ঘুম নাই
সারাটা সময় শুধু রক্ত চায়
তাই মানুষ বলি হয়, পথে ঘাটে।
কুত্তারা মানুষের লাশ শুঁকে
মৃত লাশের নালা সৃষ্টি হয়
মানুষের মত আর কিছু আছে!
স্বাধীনতা পরে রইল কবিতায়।
জীবন কলঙ্ক
এ কেমন থাকা, যা বাঁচার জন্য নয়,
যেখানে মৃত্যু বাঞ্ছনিও নয়,
যা শুধু পরে থাকা বিতৃষ্ণার মাঝে,
তবুও কেন আবেগ নাই।
।।
আমিও বেঁচে আছি
অথচ তাকিয়ে দেখ আমি মৃত
আমি নিঃশেষ কিন্তু অসীম
এভাবেই চলে যায় সময়
আর চলার পথে মৃত্যু আসে
যা নিঃশেষের অসীম।
কান্নার প্রার্থনা
তোমার পায়ে আমার চুমুর উৎসর্গও,
হে দেবী আমাকে দেও কান্না।
আমি কেন কষ্ট পাই না,
যখন স্বপ্নগুলো থেমে থাকে,
হে দেবী আমাকে ফিরিয়ে দেও
পুরোনো চোখের পানি।
আমি চিৎকার করে কাঁদতে চাই।
বিস্ফোরিত কাব্যের
উচ্চারিত শব্দের আনন্দে বিভোর
হয়ে থাকা কাব্য মঞ্চে,
গ্রেনেডের মত,
বিস্ফোরিত কবিতার স্প্রিং
মস্তিষ্ক ছিদ্র করে-
উদ্রেগ করে কি উত্তপ্ত আনন্দের!-
যা প্রেমিকাহীনকে করে,
প্রেমিক।
বাস্তবের মৃত মূর্তিগুলো,
ফিরে পায় প্রাণ।
সময়ের দুঃখ-মৃত নদীগুলো,
সমুদ্রের গর্জন তোলে।
নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা,
নিঃসঙ্গ হয়ে পরে।
ভয় ভয়ংকরভাবে,
অদৃশ্যে চলে যায়।
বিধ্বস্ত মহাজগতে,
সৃষ্টি হয় নতুন পৃথিবীর।
অপেক্ষায় রইলাম বিস্ফোরণ তোমার,
আবার এবং আবার।
অচেনা
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
শত সহস্র কবিদের মাঝে
হারিয়ে যাওয়া একটি ফুলের ছবি
আমি যখন পেয়ে বসি
তখন তা ফিরিয়ে দেই আবার হারিয়ে যাওয়ায়।
তাই আমি বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
অনেক আশা নিয়ে বসে থাকি ছাদে
তুমি আসবে বলে প্রতীক্ষায়
কিন্তু তুমি এলে, আর আমি খুশি হলাম না।
কবি বলেছিলেন,বুঝেন না তিনি নারী মন
তা কিন্তু অনেক জটিল।
আমি বলি কবি,ভাবুন আর একটু বসে
কোন নদীর জল বিকাশের সামনে
মানুষ নিজেই নিজের অচেনা।
তাই আশেপাশে আমার অসহায় দৃষ্টি
কেউ নেই চেনা আজ,
আর আমি
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
বসে থাকি এক কাপ চা হাতে নিয়ে
কিংবা মাথায় হাত রেখে টেবিলে মুখ গুজে
অজস্র কল্পনা বিলাসে
অতল যা ভাবনার।
বিকেলের চাঁদ
বাতাসের তৃপ্তিকর ঢেউ এসে খেলা করে
আমার মুখে, চোখে ও মনে
বাতাসের স্নিগ্ধ ঘ্রান শুধু মন ছুঁয়ে দেয় না
ছুঁয়ে দেয় কল্পনার দেশ
দুটি চাঁদের দেশ,আলোর দেশ, আর গোলাপি রং এর দেশ।
সূর্যের আলো আর মেঘের ছায়ায় সৃষ্ট
স্মৃতির দৃশ্যপটের অমর গোলাপি রং
শুধু থেকে যায় না, মাঝেমাঝে চোখ ছুঁয়ে দেয়।
এভাবেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হয়।
বিকেলের চাঁদের হাসি মায়ের তৃপ্তির হাসিতে রূপ নেয়।
শয়তান
মাতৃগর্ভ হতে লালিত করে আসা ঘৃণা
মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
পৃথিবী যখন মাতৃ নাড়ির টান ছিঁড়ে
ছুটে এলো মহাশূন্যে
সেই সাথে আটকে রইল মানব দুটি মন
তখন মানব মনের বিপরীতে রইলাম আমি
শয়তান।
তারপর তারা দুইটি হতে অজস্র হল,
পৃথিবীকে লাল রক্তে ভিজিয়ে দিল।
আমিও বসে ছিলাম না
কিভাবে যেন বৃদ্ধি পেলাম
এক সময় মানবীর গর্ভে জন্ম হল রাশি রাশি
শয়তান পুত্র,
তারও এখন আমি।
আমি মনের ঘ্রাণ নেই ও হিংসায় জ্বলে উঠি
তারপর তা মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
আমি শয়তান।
যখন অন্ধ হতে চাই
দেখতে কি চাস, দেওয়ালের রং লাল,
শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকা ছিদ্র ছিদ্র মানুষ,
বিঁধে থাকা অসংখ্য উত্তপ্ত বুলেট,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অঙ্গ উপাঙ্গে
কিভাবে সৃষ্টি হয় আতঙ্কের রাত।
দেখতে কি চাস,রক্তের মধ্য রাত,
অপ্রস্তুত ভাবে বেড়িয়ে আসা কলিজা,
গোলার আঘাতে বিচ্ছিন্ন মানবতা,
লাশের উপর দৌড়ে, রক্তের পিচ্ছিলতায় আছড়ে
কিভাবে পালিয়ে বাঁচতে হয়।
দেখতে কি চাস,মানব সৃষ্ট উলঙ্গ কবরস্থান,
ফুটন্ত স্বপ্নে লজ্জার কালো দাগ,
সভ্যতার নগরে অশ্লীল মরণাস্ত্রের রাজত্ব
জাহান্নামের সন্তানের স্বাক্ষরিত
অপারেশন সার্চলাইট
কিভাবে নর্দমার গন্ধ ছড়ায়।
তবে তাকিয়ে দেখ শালা
২৫ মার্চের রাত তোর দরজার গোঁড়ায়।
জন্ম
পিছনে ফেলে আসা অবাক কোন মিলন,
স্মৃতির খেলা আয়নায়
যখন প্রতিফলিত হয়ে মস্তিষ্কে আঘাত হানে,
রক্তে রক্তে অবাঞ্ছিত আনন্দ বয়ে যায়
তা সত্যই অবাঞ্ছিত আনন্দ।
আধুনিকতার ছুড়িকাঘাতে সে ছুঁয়ে চলে গেল
উত্তাল করে দিল যৌবন।
এখন শুধু কষ্টের সময়,মিলন স্বপ্ন দেখার সময়
স্বপ্ন তা কিছু নিষিদ্ধ অনুভূতি দেয়
নেশা তুলে দেয় বলিষ্ঠ শরীরে
বলিষ্ঠ শরীর মিছে কষ্ট পায়, ছটফট করে লাফ দেয়
কল্পনায়।
কল্পনা নিষিদ্ধ সময়কে করে নেয় পবিত্র
মিলন তখন হয় পবিত্র আনন্দের।
পবিত্র আনন্দ মানব শিশুর জন্ম দেয়।
তবু কবিতা লিখি
কবিতার সংজ্ঞা জানি না আমি
তবু কবিতা লিখি,
গানের বাদ্য বুঝি না কিছুই
তবু বাদ্য আমি বাজাই,
আকাশ কি বুঝি না কিন্তু
আকাশের দিকে তাকাই,
মানুষকে আমি ভুলেও চিনি না
তবু মানুষের মাঝেই আছি,
নাচের দোলা জানি না তা
তবু পাখির শব্দে নাচি,
ভালবাসার হয়ত সংজ্ঞা নাই
তবু ভালবাসাতেই বাঁচি।
বৃষ্টি পাগল কোন কবি
বন্ধ করে রেখ না তুমি কবিতার খাতা,
অনেক বর্ষার অনেক স্মৃতি আছে আঁকা,
বৃষ্টির হাহাকার ও মন মাতানো ছন্দ
বাতাসে যেন মাটির অমৃত সুগন্ধ।
অনেক অজানা বিস্ময়ের শেষে
কালো কুচকুচে কড়ই গাছের গা ঘেঁষে,
যখন বৃষ্টির ফোঁটা দুপুরের অন্ধকারে
কোন পাহাড়ি ফুলের উপর নিঃশব্দে পরে,
মনে হয় দুপুরের এ যেন শিশির।
এভাবেই কবি আর বর্ষার মাখামাখি
নগরে হয়তো ভেজা কাকের নাচানাচি,
কিন্তু বর্ষা তুমি থেকো না বেশী
সৌন্দর্যে পূরণ চায় না সে, পাগল কবি।
জীবনের কষ্ট
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লাল গোলাপ হতে ঝড়ে পরে রক্ত
অমর ভালোবাসা ও তার টান,
প্রেমের আগুনে দোলানো কোন প্রেমিকার গান।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মাতৃহারা ও বেদনারত শিশুর হাসি
মা বলেছিল সোনামণি তোমায় বড় ভালবাসি।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লক্ষ মানুষের কষ্টের সাধনা
একটি স্বাধীন দেশে
স্বপ্নগুলোকে কুড়ে কুড়ে খায় কিছু, যারা নেকড়ের বেশে।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মুক্ত নারীর টানে ছুটে চলা কিছু যুবক
ভালোবাসা তাদের হিংস্রতায় পরিণত
মানবীয় ভালোবাসা হয়ে যায় খণ্ডিত।
স্বপ্নের কষ্ট কেনা
আমি হারিয়ে গেছি অনেক অতলে
যেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে ঝিঁঝিঁ পোকারা
নিস্তব্ধতা ভাঙে,আর জোনাকিরা
মিটমিট করে আলো দেয়,
কিন্তু সে আলো আমাকে ছুঁতে পারে না
সেই ঝিঁ ঝিঁ শব্দ আমাকে বিরক্ত করে না।
আমি আর জ্যোৎস্নার আলো দেখে
বিস্মিত হতে পারি না এবং আঁধার দেখে
ভয় পাই না, আমি ভালবাসতে পারি না।
আমি এখন দাঁড়িয়ে থাকি না, বসেও থাকি না।
অস্থির ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করতে থাকি।
আমি কেন যেন চিন্তার পর চিন্তা করি
সেগুলোর কোন বাড়ি নেই, গন্তব্য নেই
তাদের হয়ত কোন উৎপত্তিও নেই।
আমি আর ধুতরা ফুলে দেখার আশায়
পাহাড়ে যাই না,ভিজে বালুতে পা রাখি না।
আমি কিভাবে যেন হারিয়ে গেলাম অতলে
এখানে আকাশ কুসুম আশা নিয়ে কবিতা লিখি না,
নীল রঙা আকাশের মাঝে সাদা মেঘ দেখি না।
প্রেমিকার ঠোঁটের মত ঠাণ্ডা বৃষ্টিতে ভিজি না।
এখন শুধু ব্যর্থতার কষ্ট পাই,হেলাল হাফিজের
কষ্ট কিনি, কিনে ফেলি নিরাবতা।
জীবন থেকে নেয়া
মানুষ জন্মে বেঁচে থাকে তারা
এক সময় ক্যাকটাস কাঁটার খোঁচা খেয়ে হৃদয়ে জাগে সাড়া।
মন থেকে মন, মনের মানুষের কিছু আদর ও মিলন,
কবিদের কলম থেকে জন্ম নেয়া জীবনের প্রতিফলন।
মাঝে মাঝে কিছু মিথ্যে আবেগ ও ভালোবাসা
অসীম কষ্টে মরার সময়ও ধরে রাখি আশা।
কবিতার ছন্দের মতন সুন্দর করে, এ জীবন যেন আঁকা
আলোর মতন সোজা নয় যেন নদীর মত বাঁকা।
আসে সুখ এ জীবনে, ঘুমের মত গভীর হয়ে
দুঃখ যদিও ভেঙে দিয়ে যায়, গড়ি নতুন করে।
সুখে যদি হাসতে পারি, দুঃখের কান্নায় দোষ কি তাতে?
একটি মাত্র জীবনটাকে জড়িয়ে ধরি দু হাতে।
জীবনটা হয়তো শিশুর হাতের চকচকে ফুটবল,
কারো কারো কাছে জীবনের মানে রঙের ছিনেমা হল।
কবিদের কাছে হয়তো জীবন, শিশিরের হাসিতে
বাদকের জীবন নিহত রয়েছে একটি বাশের বাঁশিতে।
জীবন আসলে মাতৃগর্ভ হতে নিয়ে আসা
ভালবাসার টান।
ভুল প্রেম
আকাশের পশ্চিম কোনে যখন আগুনে উত্তপ্ত লাল
লোহার মত চাঁদ উঠে, আরো থাকে শান্তি প্রিয় দিঘীতে
গ্লাস ভাঙা কাঁচের টুকরর মত চকচকে তারার প্রতিফলন,
আমি তখন শরতের কাশ ফুলের কনার মত
ভেসে যাই সুখময় কল্পনায়, যেখানে শুধু
সুখ আর সুখ।
তুমি সেই চাঁদ দেখলে না
আর দেখলে না সূর্যমুখী ফুল।
তুমি আমাকে জীবন দেখাতে চেয়েছিলে
চেয়াছিলে লাল ইটের তৈরি সাদ বাড়ি।
আমি শুধু চেয়েছিলাম তোমাকে আরও চেয়েছিলাম
মায়ের আঁচলের মত আপন কোন কল্পনা
তুমি শুধু মিথ্যা যৌবন নিলে
নিলে না কোন ভালবাসা।
তবু আমার তেমন কষ্ট নেই, নেই কোন ঘৃণা।
আমি শুধু ঘুরে ফিরে কবিতার কাছে চলে আসি।
মানব
পৃথিবী-মানুষ-যুদ্ধ মাখা, অন্ধকারে রেখা আঁকা,
ভালবাসার বন্ধনে মাঝে মাঝে থাকে ঢাকা।
সৃষ্টির রহস্য তথ্য হতে নেওয়া রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ,
প্রকৃতির রূপ রসে মনবেরা হয় মুগ্ধ ।
যুদ্ধ না হলে শান্তির কি মর্ম,
আশান্তি সৃষ্টি তো মানবেরই কর্ম।
আকাশ যদি না থাকে তবে মাটির অস্তিত্ব বিলীন,
যৌবনের পরে তাই বার্ধক্য মলিন।
মৃত্যু যদি কষ্টের না হতো, থাকতাম না বেঁচে
তবু কেন যোদ্ধারা প্রাণ দেয় হেসে।
বর্ণমালার শান্তি
কি যে ভাবি! ভাবনার শেষে
তুমি কষ্ট করে এসে
শুধু জড়িয়ে ধর কবিতার বর্ণমালা দিয়ে।
এ কি! বাঁধন যেন আছড়ে পরে বুকে
কিছু কথা রয়ে যায় মুখে
বুকের লোমে নাক দিয়ে ঘুমালে তুমি
ঘন ঘন নিঃশ্বাসে ক্লান্ত আমি
সুখের কল্যাণে নিজের জগৎ হারাই
আর নয়, আর নয় এ দলাই-মারাই
তারপর শান্তির ঘুম শেষে
শার্টের বোতাম লাগিয়ে আমি
চলে যাই কবিতার পল্লিতে
স্নিগ্ধ হাসি, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বর্ণমালার শান্তি
দূর করে আমার লোমশ ক্লান্তি।
দানব
আমার ভাল লাগে শব্দটি,
‘দানব’।
যার হুঙ্কারে কালো পাথরের কালো দেয়াল
কেঁপে উঠে।
আমি দানব হতে চাই।
ভেঙে দিতে চাই আমিই আমার কষ্টকে।
সূর্য উঠার সাথে, উঠে আমার কষ্টগুলো জেগে,
আর আমি মানুষ, তা গ্রহণ করি দানব হয়ে।
তবু আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি,
ভালবাসি বন্ধুর মুখে শোনা বইমেলার কথা।
মাঝে মাঝে কষ্টগুলোকে দানব মনে হয়
সেই সাথে অর্ধ সৃষ্ট, অর্ধ পৃথিবীর
নিকৃষ্ট মানুষ, আমি, দানব হই।
কিছু অনুভূতি
আমি কি ভাবে প্রকাশ করি
আমার মনের এলানো অনুভূতির কথা
আমার রাত ও আমার দিন
কিছু অনুভূতির প্রতিদিন
আমাকে প্রকাশ করতে দেয় না তারা
আমার মনের সব শব্দমালা
কিঞ্চুলুক এঁকে বেঁকে যায় ও যাওয়ার মত
আমার মনে অনুভূতি কেটে যায়
তিক্ষ্ম ছুরি কিংবা চাকুর মত।
আমি রাতে শুনি খড়মের শব্দ ধ্বনি
তারা যে কিছু অনুভূতির যোগান
শব্দমালা আমার প্রকাশের কৃতান্ত।
কুঞ্চিকা হাতে আমি দাঁড়িয়ে পাশে
ছায়া অনুভূতি তা প্রকাশের শেষে।
মানবাত্মার জগৎ
সহস্র শতাব্দীর রহস্য আজো হল না উন্মোচন
মানব ইতিহাসে তার বিরল দৃষ্টান্ত
আমাদের আশেপাশে তারই অহামিকা
আমাদের তিনি স্রষ্টা হন।
অনেক আলো আর আলো, অন্ধকার রাজত্ব হারা।
সূক্ষ্ম আমারা, তা আমাদের আত্মারা
স্রষ্টার সম্মুখে হাজার হাজার মানবাত্মারা
সে কি আনন্দ এই সুখময় দর্শনে।
আমাদের মাঝে একটাই দায়িত্বের বোঝা
তিনি এক ও অদ্বিতীয় তা স্বীকার করা।
নিষ্ক্রিয় আবেগ
ক্ষমতা নাই জানি তবু চলে যেতে ইচ্ছে
হয়, আকাশের ভেতর দিয়ে বিশাল মহাশুন্যতায়
মিলিয়ে যেতে, সূর্যের তাপে পুকুরের পানির মত
হাওয়া হতে, আলোতে যেমন অন্ধকার
অন্ধকারে যেমন আলো নেই তেমন।
বার বার সাপ্তাহিকে পাঠানো
অপ্রকাশিত কবিতার কষ্ট,
ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়ার যন্ত্রণা,
মায়ের অসুখি মলিন মুখ,
গলা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ভালবাসাহীনতায়,
তিন বেলার ক্ষিধের গলা চিপে ধরা,
পৃথিবীটাকে মনে হয় দুর্ভেদ্য জেলখানা।
তাই মুক্তির ইচ্ছা প্রতিবার
জানান দেয় অক্ষমতা-
সব কিছু ভেঙে ফেলার
সীমাবদ্ধ দেহকে ফেলে দেওয়ার
অদ্ভুত সুন্দর আঁধারকে চুমু খাওয়ার
ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে দেওয়ার
সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন পিষে ফেলার
তরলের পাত্রে শেষবার চুমুক দেওয়ার
লাফ দিয়ে উঠে উড়ে যাওয়ার
নিশ্চিত তবু অনিশ্চিতের ঘুমকে জড়িয়ে নেওয়ার।
তাই যেতে পারি না,
বার বার ফিরে আসি
যন্ত্রণার কিছু কবিতাহীন
কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আশায়।
অবস্থা
মানবো না আর কনো কিছু
যখন মেনে নিয়েছি আমার জন্ম, আমার এই বেঁচে থাকা
মানুষের ভুল গন্দম ফল আমার অন্তর-আত্মা জ্বালিয়ে খায়
ছিলাম সম্মানিত ,পরম ক্ষমাশীল, সর্বজ্ঞ, প্রকৃত সত্ত্বার নিকটে
প্রবেশ হল মিথ্যে ধূলিময় জগতে, চির পবিত্র জগত হতে।
যন্ত্রণার কোন শেষ নেই।
সেই প্রেম
আমি সেই প্রেম চাই,
যা নদীর মত সমুদ্রে যেয়ে মিশবে না,
মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরাবে না,
ফুলকে ফল, ফলকে খাদ্য করবে না,
যা মাটিকে সোনা, হীরাকে বালি করবে না,
আমি আর আমাতে থাকব না।
আমি তাঁর প্রেম চাই,
যিনি সৃষ্টি করবেন মহাবিশ্ব, আর ধ্বংস করবেন নিমিষেই,
আমার তোমার অস্তিত্যের কোন অবস্থান নাই,
যিনি ভালকে করেন খারাপ, খারাপকে করেন ভাল,
যিনি অহঙ্কারের প্রকৃত ধারক,
যার ছোঁয়াতে বেহেস্ত, নরক, ঊর্ধ্ব , মর্ত্য,
একই বস্তুতে পরিণত হয়।
যে প্রেম, শুধু প্রেম। প্রেম…প্রেম। সেই প্রেম।
**************************সমাপ্ত******************
সবটাই সত্য
বসন্তের এক সকালে
বসন্তি বাতাসে ডুবে থেকে
আকেশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি
অজস্র তারা ঝলমল করছে
মৌমাছিরা ফুল থেকে আহরণ করছে
ফোঁটা ফোঁটা রক্ত
বাঘেরা লালন পালন করছে
হরিণের পাল।
মানুষের মাঝে তাকিয়ে দেখি ,
অনেক অনেক শয়তান চিৎকার করছে ।
কবিরা কলম ভুলে যেয়ে
ডাক দিচ্ছে যুদ্ধের।
মানব শিশুরা পিঁপড়ার খাবার হচ্ছে
কুকুরের বলছে -পৃথিবীটা তাদের।
আমার মন
কালো সব কিছু পছন্দ করে যা,
তা আমার মন।
কালো চাদরের কালো পাথরে
কালো রক্তের এক ফোঁটা চাপ
বিশাল হয়ে হানা দেয় তা
কালো কাফনের একটি লাশ।
অবাস্তব কালোর মনের মানুষ
ছুঁয়ে যায় তা অন্যের হাত
পাশে থেকে আমি জেগে উঠে বলি
শেষ হক তোমার চিরন্তন কালো কাহিনী।
আমার মন!
খারাপ ভাবনা
আমার ভাল লাগে না, খারাপ ভাবনা খেতে
নষ্ট বাতাসের মনে, নষ্ট খাবারের আভাস।
সবার অলক্ষ্যে আমি ভাবি সবাই মৃত
আমার দ্বারা।
আহ্ কি মজা, কি কষ্টকর মজা।
কষ্টকর নষ্ট ভাবনা আমার মনে থাকে
আর আমি ভাবি খারাপ ভাবনা।
ভাবনা সব অসীম ও অশেষ
কি নষ্ট!
তারপর বিরক্তকর ডাকে আমার
খারাপ ভাবনা কাটে।
অভ্যর্থনা
পাখির দুটি চোখ মায়াবী দৃষ্টি মেলে আকাশের
দিকে উড়ে যায়
নীল আকাশে বিলীন হয়ে যায় তা
এক সময় আবার হয়ত ফিরে আসে
কিন্তু মায়াবী দৃষ্টি আর থাকে না,
তা হিংস্র দৃষ্টি হয়ে হানা দেয়।
হানা দিয়ে মায়ের মুখের হাসি
কেড়ে নেয়
তারা কি আর ফিরে পাবে না
মায়াবী দৃষ্টি।
ফিরে পেলে বল,তাদের জন্য
অভ্যর্থনা।
আর্তনাদ
পৃথিবী আজ কর্দমাক্ত
আর্তনাদে কাঁদা হয়ে গেছে পৃথিবীর
মাটি।
আর্তনাদ।
শোনা যায় সেই ছয়শ কিশোরীর আর্তনাদ
যারা হত্যা হয়েছিল
একজনের স্বার্থে।
আর্তনাদে পৃথিবী আজ নোংরা।
একটু অন্ধকারাচ্ছন্ন।
মানুষ বর্বর,
অন্য কিছু নয়।
মানুষ মানুষকে কাটে ও খায়
অদৃশ্য কাউ নয়।
যাদের কাটা হয় তারা আর্তনাদ করে,
সে সব শোনা যায়
ইতিহাস ঘাটলে।
ইতিহাস পড়ার দরকার নাই
আশেপাশে তাকাও
শুনতে পাবে আর্তনাদ।
আর্তনাদ শেষ হয়ে যায় না
তারা আকাশে ভাসে
ঠিক কালো মেঘের মতো,
তারপর গর্জন হয়ে বেড়িয়ে আসে
আর্তনাদ
মানুশের,অন্য কারও না।
কাক ডাকা রাত
রাত। তা গভীর।
হঠাৎ ঘুম ভাঙে পাখির শব্দে।
দেখা যায় কাকের ডাক
শোনা যায় কাক।
অবাস্তব চিন্তা।
কিন্তু তা সত্য!
কাক ডাকা রাত!
অন্তর কেঁপে উঠে নোংরা আহ্বানে
ঠিক ডাস্টবিনে বসে থাকা কাকের মতন।
চলে যায় দূরে দৃষ্টির অগোচরে
ভাল মানুষটি।
যা থাকে তা অমানুষ
অনেকটা হ্রিংস্র আর কাকের পায়ের মতো
বিশ্রি কালো।
তাই মানুষটি
ভাল মানুষটি ফিরে আসতে লজ্জা পায়
আর শুনতে পায় কাকের ডাক।
কাক ডাকা রাত।
কষ্ট
যখন হারিয়ে যায় কান্নার কষ্ট
ভাঙা বুকে ,তবু তাকে ভঙ্গুর বলা যায় না,
নিশীথ রজনী ,শূন্য মানুষের শূন্য অন্তর
বেহেশত সম আনন্দ ,তা তুচ্ছ হয়ে যায়।
থাকবেই বা কেন?
তা তো সব শূন্য অন্তর।
তোমরা কি বুঝ ,অন্তরের অন্তরফল
হিংস্র মানুষেরও অন্তর থাকে
থাকে না শুধু আমার
চারিদিকে তাকাই ,সব হাহাকার।
গৃহদাহ তবু থামে না।
যেখানে সবকিছু একাকার
দূর আকাশের বিশাল প্রান্তরে,
আমার ও তোমাদের মন কাড়ে
বিশাল ডানার মন পাখিটি,
এখানে সবার মন একাকার।
মন পাখিরা ডানামেলে বেড়ায় আকাশে
ধূসর পাখি বাতাসে বিলি কাটে
মাথার ভিতর ব্যথা করে
তাই হারিয়ে যায় মন পাখি।
সেই ব্যাথা সহ্য করে, আমি যাই ভবিষ্যতে।
বাস্তবতাই অদ্ভুত
অর্ধেক শতাব্দী নেশাগ্রস্ত ছিলাম,
আমার বাস্তবতাই আমার কল্পনা।
অথচ এখন নেশা ছেড়ে জেগে দেখি,
মানুষ সব কল্পনার।
আমার কল্পনাই আমার বাস্তবতাই।
ভালোবাসা ধূলি
মানুষ মরে যায়,ভালোবাসা রেখে যায়।
ভালোবাসা সব ধূলি হয়ে উড়ে যায়।
মানুষ আবারো ভালোবাসাহীন।
কিন্তু সেটা মিথ্যা।
নতুন হয়ে যায়, নতুন সবাই
ভালবাসাও তাই নতুন।
নতুন শুরে,নতুন নাচে
ভালোবাসা তাই ছেলেখেলাময়।
আবারও কমে ভালোবাসা
নিচ থেকে নিচে আরও নিচে
ভালোবাসা তাই কঠিন হয়ে যায়।
চায়ের কাপে চুমুক দেওয়া ভালোবাসা
কিন্তু তা মিষ্টি থেকে লোনা হয়ে যায়।
আবারো মানুষ মরে যায়।
ভালোবাসা ধূলি হয়ে যায়।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়,যখন আবেগ নষ্ট করে মাথা,
দুঃখিত,ভুল হতে পারে।
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় একটি কান
যে কানে শুধুই শোনা যায় অম্ললিলার আহ্বান।
আবারও
মানুষ অমানুষ হয়ে যায়, যখন দেখা যায় মন
থেকে ছুটে আসা কালো বুলেট সাদা মন
কালো করে ছুটে চলে খারাপের দিকে।
মানুষ।
শুধু ছুটে চলে অমানুষ হওয়ার আশায়,
সে আশা সত্য কিন্তু বৃথা হয়।
তাই কেউ পারে না অমানুষ হতে
তারা ফিরে পায় বাড়ি
স্নিগ্ধ সাদা মন।
কিন্তু সাদা মন ক্ষণিকের পথিক হতে চায়।
স্মৃতির স্পর্শ
মাঝরাত বেড়ে যায় কারা যেন কথা বলে
অস্পষ্ট স্বরে, অথবা বিকট চিৎকারে।
এসব কি কল্পনা?
হোক সব কল্পনা, তবে রাত কিন্তু বেড়ে যায়।
সেই রাতের ফাঁকে আঁধারে
কিছু না বলা মানুষ স্পর্শ দিয়ে যায়,
শীতল কিংবা বাতাসে।
যারা আজ নেই, হয়তো থাকবেও না।
তবে থেকে যায় স্মৃতি, তাদের।
সে সব হয়তো কাঁদায়
কিন্তু তা একবার।
তারপর
বাতাস হয়ে অদৃশ্য হয়ে স্পর্শ দেয়। মনে।
জ্বলন্ত মোমবাতির মানে
ওরা এসেছিল, ওরা এসেছিল
পিচ্ছিল কালো অন্ধকার থলি থেকে বেড়িয়ে
বন্য পশুর মত যাদের শরীরের গন্ধ
নীল আকাশের নিচের মানুষেরা এত বর্বর!
ওরা সবুজ দেশ বাংলাদেশের কলঙ্ক
শাস্তি দেও সর্বশ্রেষ্ট ওদের শাস্তি দেও।
ওরা যেন মানুষের সাথে মিশে থাকা শয়তানের দল
কোথায় যাবি এবার কালো ধেঁড়ে ইঁদুর
ইতিহাসের সাদা মোমবাতি সবাই জ্বালিয়ে রেখেছে
এতো আলো! এতো আলো!
এবার দেখলাম সত্যিকার স্বাধীন বাংলাদেশ
খুব শান্তি!!
অবাক!
মানুশের রক্তে আনন্দ, তোমাদের
জন্য কিছু অর্থহীন পিপাসা।
মাথা কাটা মানুষের গলিত রক্ত
বাতাসে লাল ধোঁয়া উড়ে যায়
শূন্যে ভেসে থাকে কবরের গন্ধ।
রাজনৈতিক অপদেবতার ঘুম নাই
সারাটা সময় শুধু রক্ত চায়
তাই মানুষ বলি হয়, পথে ঘাটে।
কুত্তারা মানুষের লাশ শুঁকে
মৃত লাশের নালা সৃষ্টি হয়
মানুষের মত আর কিছু আছে!
স্বাধীনতা পরে রইল কবিতায়।
জীবন কলঙ্ক
এ কেমন থাকা, যা বাঁচার জন্য নয়,
যেখানে মৃত্যু বাঞ্ছনিও নয়,
যা শুধু পরে থাকা বিতৃষ্ণার মাঝে,
তবুও কেন আবেগ নাই।
।।
আমিও বেঁচে আছি
অথচ তাকিয়ে দেখ আমি মৃত
আমি নিঃশেষ কিন্তু অসীম
এভাবেই চলে যায় সময়
আর চলার পথে মৃত্যু আসে
যা নিঃশেষের অসীম।
কান্নার প্রার্থনা
তোমার পায়ে আমার চুমুর উৎসর্গও,
হে দেবী আমাকে দেও কান্না।
আমি কেন কষ্ট পাই না,
যখন স্বপ্নগুলো থেমে থাকে,
হে দেবী আমাকে ফিরিয়ে দেও
পুরোনো চোখের পানি।
আমি চিৎকার করে কাঁদতে চাই।
বিস্ফোরিত কাব্যের
উচ্চারিত শব্দের আনন্দে বিভোর
হয়ে থাকা কাব্য মঞ্চে,
গ্রেনেডের মত,
বিস্ফোরিত কবিতার স্প্রিং
মস্তিষ্ক ছিদ্র করে-
উদ্রেগ করে কি উত্তপ্ত আনন্দের!-
যা প্রেমিকাহীনকে করে,
প্রেমিক।
বাস্তবের মৃত মূর্তিগুলো,
ফিরে পায় প্রাণ।
সময়ের দুঃখ-মৃত নদীগুলো,
সমুদ্রের গর্জন তোলে।
নিঃসঙ্গতার যন্ত্রণা,
নিঃসঙ্গ হয়ে পরে।
ভয় ভয়ংকরভাবে,
অদৃশ্যে চলে যায়।
বিধ্বস্ত মহাজগতে,
সৃষ্টি হয় নতুন পৃথিবীর।
অপেক্ষায় রইলাম বিস্ফোরণ তোমার,
আবার এবং আবার।
অচেনা
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
শত সহস্র কবিদের মাঝে
হারিয়ে যাওয়া একটি ফুলের ছবি
আমি যখন পেয়ে বসি
তখন তা ফিরিয়ে দেই আবার হারিয়ে যাওয়ায়।
তাই আমি বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
অনেক আশা নিয়ে বসে থাকি ছাদে
তুমি আসবে বলে প্রতীক্ষায়
কিন্তু তুমি এলে, আর আমি খুশি হলাম না।
কবি বলেছিলেন,বুঝেন না তিনি নারী মন
তা কিন্তু অনেক জটিল।
আমি বলি কবি,ভাবুন আর একটু বসে
কোন নদীর জল বিকাশের সামনে
মানুষ নিজেই নিজের অচেনা।
তাই আশেপাশে আমার অসহায় দৃষ্টি
কেউ নেই চেনা আজ,
আর আমি
বুঝি না যখন নিজেই নিজেকে
বসে থাকি এক কাপ চা হাতে নিয়ে
কিংবা মাথায় হাত রেখে টেবিলে মুখ গুজে
অজস্র কল্পনা বিলাসে
অতল যা ভাবনার।
বিকেলের চাঁদ
বাতাসের তৃপ্তিকর ঢেউ এসে খেলা করে
আমার মুখে, চোখে ও মনে
বাতাসের স্নিগ্ধ ঘ্রান শুধু মন ছুঁয়ে দেয় না
ছুঁয়ে দেয় কল্পনার দেশ
দুটি চাঁদের দেশ,আলোর দেশ, আর গোলাপি রং এর দেশ।
সূর্যের আলো আর মেঘের ছায়ায় সৃষ্ট
স্মৃতির দৃশ্যপটের অমর গোলাপি রং
শুধু থেকে যায় না, মাঝেমাঝে চোখ ছুঁয়ে দেয়।
এভাবেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা হয়।
বিকেলের চাঁদের হাসি মায়ের তৃপ্তির হাসিতে রূপ নেয়।
শয়তান
মাতৃগর্ভ হতে লালিত করে আসা ঘৃণা
মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
পৃথিবী যখন মাতৃ নাড়ির টান ছিঁড়ে
ছুটে এলো মহাশূন্যে
সেই সাথে আটকে রইল মানব দুটি মন
তখন মানব মনের বিপরীতে রইলাম আমি
শয়তান।
তারপর তারা দুইটি হতে অজস্র হল,
পৃথিবীকে লাল রক্তে ভিজিয়ে দিল।
আমিও বসে ছিলাম না
কিভাবে যেন বৃদ্ধি পেলাম
এক সময় মানবীর গর্ভে জন্ম হল রাশি রাশি
শয়তান পুত্র,
তারও এখন আমি।
আমি মনের ঘ্রাণ নেই ও হিংসায় জ্বলে উঠি
তারপর তা মানব মন হত্যায় রূপ নেয়।
আমি শয়তান।
যখন অন্ধ হতে চাই
দেখতে কি চাস, দেওয়ালের রং লাল,
শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকা ছিদ্র ছিদ্র মানুষ,
বিঁধে থাকা অসংখ্য উত্তপ্ত বুলেট,
ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অঙ্গ উপাঙ্গে
কিভাবে সৃষ্টি হয় আতঙ্কের রাত।
দেখতে কি চাস,রক্তের মধ্য রাত,
অপ্রস্তুত ভাবে বেড়িয়ে আসা কলিজা,
গোলার আঘাতে বিচ্ছিন্ন মানবতা,
লাশের উপর দৌড়ে, রক্তের পিচ্ছিলতায় আছড়ে
কিভাবে পালিয়ে বাঁচতে হয়।
দেখতে কি চাস,মানব সৃষ্ট উলঙ্গ কবরস্থান,
ফুটন্ত স্বপ্নে লজ্জার কালো দাগ,
সভ্যতার নগরে অশ্লীল মরণাস্ত্রের রাজত্ব
জাহান্নামের সন্তানের স্বাক্ষরিত
অপারেশন সার্চলাইট
কিভাবে নর্দমার গন্ধ ছড়ায়।
তবে তাকিয়ে দেখ শালা
২৫ মার্চের রাত তোর দরজার গোঁড়ায়।
জন্ম
পিছনে ফেলে আসা অবাক কোন মিলন,
স্মৃতির খেলা আয়নায়
যখন প্রতিফলিত হয়ে মস্তিষ্কে আঘাত হানে,
রক্তে রক্তে অবাঞ্ছিত আনন্দ বয়ে যায়
তা সত্যই অবাঞ্ছিত আনন্দ।
আধুনিকতার ছুড়িকাঘাতে সে ছুঁয়ে চলে গেল
উত্তাল করে দিল যৌবন।
এখন শুধু কষ্টের সময়,মিলন স্বপ্ন দেখার সময়
স্বপ্ন তা কিছু নিষিদ্ধ অনুভূতি দেয়
নেশা তুলে দেয় বলিষ্ঠ শরীরে
বলিষ্ঠ শরীর মিছে কষ্ট পায়, ছটফট করে লাফ দেয়
কল্পনায়।
কল্পনা নিষিদ্ধ সময়কে করে নেয় পবিত্র
মিলন তখন হয় পবিত্র আনন্দের।
পবিত্র আনন্দ মানব শিশুর জন্ম দেয়।
তবু কবিতা লিখি
কবিতার সংজ্ঞা জানি না আমি
তবু কবিতা লিখি,
গানের বাদ্য বুঝি না কিছুই
তবু বাদ্য আমি বাজাই,
আকাশ কি বুঝি না কিন্তু
আকাশের দিকে তাকাই,
মানুষকে আমি ভুলেও চিনি না
তবু মানুষের মাঝেই আছি,
নাচের দোলা জানি না তা
তবু পাখির শব্দে নাচি,
ভালবাসার হয়ত সংজ্ঞা নাই
তবু ভালবাসাতেই বাঁচি।
বৃষ্টি পাগল কোন কবি
বন্ধ করে রেখ না তুমি কবিতার খাতা,
অনেক বর্ষার অনেক স্মৃতি আছে আঁকা,
বৃষ্টির হাহাকার ও মন মাতানো ছন্দ
বাতাসে যেন মাটির অমৃত সুগন্ধ।
অনেক অজানা বিস্ময়ের শেষে
কালো কুচকুচে কড়ই গাছের গা ঘেঁষে,
যখন বৃষ্টির ফোঁটা দুপুরের অন্ধকারে
কোন পাহাড়ি ফুলের উপর নিঃশব্দে পরে,
মনে হয় দুপুরের এ যেন শিশির।
এভাবেই কবি আর বর্ষার মাখামাখি
নগরে হয়তো ভেজা কাকের নাচানাচি,
কিন্তু বর্ষা তুমি থেকো না বেশী
সৌন্দর্যে পূরণ চায় না সে, পাগল কবি।
জীবনের কষ্ট
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লাল গোলাপ হতে ঝড়ে পরে রক্ত
অমর ভালোবাসা ও তার টান,
প্রেমের আগুনে দোলানো কোন প্রেমিকার গান।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মাতৃহারা ও বেদনারত শিশুর হাসি
মা বলেছিল সোনামণি তোমায় বড় ভালবাসি।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
লক্ষ মানুষের কষ্টের সাধনা
একটি স্বাধীন দেশে
স্বপ্নগুলোকে কুড়ে কুড়ে খায় কিছু, যারা নেকড়ের বেশে।
এ কষ্ট জীবনের কষ্ট!
মুক্ত নারীর টানে ছুটে চলা কিছু যুবক
ভালোবাসা তাদের হিংস্রতায় পরিণত
মানবীয় ভালোবাসা হয়ে যায় খণ্ডিত।
স্বপ্নের কষ্ট কেনা
আমি হারিয়ে গেছি অনেক অতলে
যেখানে ঝাঁকে ঝাঁকে ঝিঁঝিঁ পোকারা
নিস্তব্ধতা ভাঙে,আর জোনাকিরা
মিটমিট করে আলো দেয়,
কিন্তু সে আলো আমাকে ছুঁতে পারে না
সেই ঝিঁ ঝিঁ শব্দ আমাকে বিরক্ত করে না।
আমি আর জ্যোৎস্নার আলো দেখে
বিস্মিত হতে পারি না এবং আঁধার দেখে
ভয় পাই না, আমি ভালবাসতে পারি না।
আমি এখন দাঁড়িয়ে থাকি না, বসেও থাকি না।
অস্থির ভঙ্গিতে হাঁটাচলা করতে থাকি।
আমি কেন যেন চিন্তার পর চিন্তা করি
সেগুলোর কোন বাড়ি নেই, গন্তব্য নেই
তাদের হয়ত কোন উৎপত্তিও নেই।
আমি আর ধুতরা ফুলে দেখার আশায়
পাহাড়ে যাই না,ভিজে বালুতে পা রাখি না।
আমি কিভাবে যেন হারিয়ে গেলাম অতলে
এখানে আকাশ কুসুম আশা নিয়ে কবিতা লিখি না,
নীল রঙা আকাশের মাঝে সাদা মেঘ দেখি না।
প্রেমিকার ঠোঁটের মত ঠাণ্ডা বৃষ্টিতে ভিজি না।
এখন শুধু ব্যর্থতার কষ্ট পাই,হেলাল হাফিজের
কষ্ট কিনি, কিনে ফেলি নিরাবতা।
জীবন থেকে নেয়া
মানুষ জন্মে বেঁচে থাকে তারা
এক সময় ক্যাকটাস কাঁটার খোঁচা খেয়ে হৃদয়ে জাগে সাড়া।
মন থেকে মন, মনের মানুষের কিছু আদর ও মিলন,
কবিদের কলম থেকে জন্ম নেয়া জীবনের প্রতিফলন।
মাঝে মাঝে কিছু মিথ্যে আবেগ ও ভালোবাসা
অসীম কষ্টে মরার সময়ও ধরে রাখি আশা।
কবিতার ছন্দের মতন সুন্দর করে, এ জীবন যেন আঁকা
আলোর মতন সোজা নয় যেন নদীর মত বাঁকা।
আসে সুখ এ জীবনে, ঘুমের মত গভীর হয়ে
দুঃখ যদিও ভেঙে দিয়ে যায়, গড়ি নতুন করে।
সুখে যদি হাসতে পারি, দুঃখের কান্নায় দোষ কি তাতে?
একটি মাত্র জীবনটাকে জড়িয়ে ধরি দু হাতে।
জীবনটা হয়তো শিশুর হাতের চকচকে ফুটবল,
কারো কারো কাছে জীবনের মানে রঙের ছিনেমা হল।
কবিদের কাছে হয়তো জীবন, শিশিরের হাসিতে
বাদকের জীবন নিহত রয়েছে একটি বাশের বাঁশিতে।
জীবন আসলে মাতৃগর্ভ হতে নিয়ে আসা
ভালবাসার টান।
ভুল প্রেম
আকাশের পশ্চিম কোনে যখন আগুনে উত্তপ্ত লাল
লোহার মত চাঁদ উঠে, আরো থাকে শান্তি প্রিয় দিঘীতে
গ্লাস ভাঙা কাঁচের টুকরর মত চকচকে তারার প্রতিফলন,
আমি তখন শরতের কাশ ফুলের কনার মত
ভেসে যাই সুখময় কল্পনায়, যেখানে শুধু
সুখ আর সুখ।
তুমি সেই চাঁদ দেখলে না
আর দেখলে না সূর্যমুখী ফুল।
তুমি আমাকে জীবন দেখাতে চেয়েছিলে
চেয়াছিলে লাল ইটের তৈরি সাদ বাড়ি।
আমি শুধু চেয়েছিলাম তোমাকে আরও চেয়েছিলাম
মায়ের আঁচলের মত আপন কোন কল্পনা
তুমি শুধু মিথ্যা যৌবন নিলে
নিলে না কোন ভালবাসা।
তবু আমার তেমন কষ্ট নেই, নেই কোন ঘৃণা।
আমি শুধু ঘুরে ফিরে কবিতার কাছে চলে আসি।
মানব
পৃথিবী-মানুষ-যুদ্ধ মাখা, অন্ধকারে রেখা আঁকা,
ভালবাসার বন্ধনে মাঝে মাঝে থাকে ঢাকা।
সৃষ্টির রহস্য তথ্য হতে নেওয়া রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ,
প্রকৃতির রূপ রসে মনবেরা হয় মুগ্ধ ।
যুদ্ধ না হলে শান্তির কি মর্ম,
আশান্তি সৃষ্টি তো মানবেরই কর্ম।
আকাশ যদি না থাকে তবে মাটির অস্তিত্ব বিলীন,
যৌবনের পরে তাই বার্ধক্য মলিন।
মৃত্যু যদি কষ্টের না হতো, থাকতাম না বেঁচে
তবু কেন যোদ্ধারা প্রাণ দেয় হেসে।
বর্ণমালার শান্তি
কি যে ভাবি! ভাবনার শেষে
তুমি কষ্ট করে এসে
শুধু জড়িয়ে ধর কবিতার বর্ণমালা দিয়ে।
এ কি! বাঁধন যেন আছড়ে পরে বুকে
কিছু কথা রয়ে যায় মুখে
বুকের লোমে নাক দিয়ে ঘুমালে তুমি
ঘন ঘন নিঃশ্বাসে ক্লান্ত আমি
সুখের কল্যাণে নিজের জগৎ হারাই
আর নয়, আর নয় এ দলাই-মারাই
তারপর শান্তির ঘুম শেষে
শার্টের বোতাম লাগিয়ে আমি
চলে যাই কবিতার পল্লিতে
স্নিগ্ধ হাসি, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বর্ণমালার শান্তি
দূর করে আমার লোমশ ক্লান্তি।
দানব
আমার ভাল লাগে শব্দটি,
‘দানব’।
যার হুঙ্কারে কালো পাথরের কালো দেয়াল
কেঁপে উঠে।
আমি দানব হতে চাই।
ভেঙে দিতে চাই আমিই আমার কষ্টকে।
সূর্য উঠার সাথে, উঠে আমার কষ্টগুলো জেগে,
আর আমি মানুষ, তা গ্রহণ করি দানব হয়ে।
তবু আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি,
ভালবাসি বন্ধুর মুখে শোনা বইমেলার কথা।
মাঝে মাঝে কষ্টগুলোকে দানব মনে হয়
সেই সাথে অর্ধ সৃষ্ট, অর্ধ পৃথিবীর
নিকৃষ্ট মানুষ, আমি, দানব হই।
কিছু অনুভূতি
আমি কি ভাবে প্রকাশ করি
আমার মনের এলানো অনুভূতির কথা
আমার রাত ও আমার দিন
কিছু অনুভূতির প্রতিদিন
আমাকে প্রকাশ করতে দেয় না তারা
আমার মনের সব শব্দমালা
কিঞ্চুলুক এঁকে বেঁকে যায় ও যাওয়ার মত
আমার মনে অনুভূতি কেটে যায়
তিক্ষ্ম ছুরি কিংবা চাকুর মত।
আমি রাতে শুনি খড়মের শব্দ ধ্বনি
তারা যে কিছু অনুভূতির যোগান
শব্দমালা আমার প্রকাশের কৃতান্ত।
কুঞ্চিকা হাতে আমি দাঁড়িয়ে পাশে
ছায়া অনুভূতি তা প্রকাশের শেষে।
মানবাত্মার জগৎ
সহস্র শতাব্দীর রহস্য আজো হল না উন্মোচন
মানব ইতিহাসে তার বিরল দৃষ্টান্ত
আমাদের আশেপাশে তারই অহামিকা
আমাদের তিনি স্রষ্টা হন।
অনেক আলো আর আলো, অন্ধকার রাজত্ব হারা।
সূক্ষ্ম আমারা, তা আমাদের আত্মারা
স্রষ্টার সম্মুখে হাজার হাজার মানবাত্মারা
সে কি আনন্দ এই সুখময় দর্শনে।
আমাদের মাঝে একটাই দায়িত্বের বোঝা
তিনি এক ও অদ্বিতীয় তা স্বীকার করা।
নিষ্ক্রিয় আবেগ
ক্ষমতা নাই জানি তবু চলে যেতে ইচ্ছে
হয়, আকাশের ভেতর দিয়ে বিশাল মহাশুন্যতায়
মিলিয়ে যেতে, সূর্যের তাপে পুকুরের পানির মত
হাওয়া হতে, আলোতে যেমন অন্ধকার
অন্ধকারে যেমন আলো নেই তেমন।
বার বার সাপ্তাহিকে পাঠানো
অপ্রকাশিত কবিতার কষ্ট,
ধীরে ধীরে নষ্ট হওয়ার যন্ত্রণা,
মায়ের অসুখি মলিন মুখ,
গলা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া ভালবাসাহীনতায়,
তিন বেলার ক্ষিধের গলা চিপে ধরা,
পৃথিবীটাকে মনে হয় দুর্ভেদ্য জেলখানা।
তাই মুক্তির ইচ্ছা প্রতিবার
জানান দেয় অক্ষমতা-
সব কিছু ভেঙে ফেলার
সীমাবদ্ধ দেহকে ফেলে দেওয়ার
অদ্ভুত সুন্দর আঁধারকে চুমু খাওয়ার
ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে দেওয়ার
সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন পিষে ফেলার
তরলের পাত্রে শেষবার চুমুক দেওয়ার
লাফ দিয়ে উঠে উড়ে যাওয়ার
নিশ্চিত তবু অনিশ্চিতের ঘুমকে জড়িয়ে নেওয়ার।
তাই যেতে পারি না,
বার বার ফিরে আসি
যন্ত্রণার কিছু কবিতাহীন
কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের আশায়।
অবস্থা
মানবো না আর কনো কিছু
যখন মেনে নিয়েছি আমার জন্ম, আমার এই বেঁচে থাকা
মানুষের ভুল গন্দম ফল আমার অন্তর-আত্মা জ্বালিয়ে খায়
ছিলাম সম্মানিত ,পরম ক্ষমাশীল, সর্বজ্ঞ, প্রকৃত সত্ত্বার নিকটে
প্রবেশ হল মিথ্যে ধূলিময় জগতে, চির পবিত্র জগত হতে।
যন্ত্রণার কোন শেষ নেই।
সেই প্রেম
আমি সেই প্রেম চাই,
যা নদীর মত সমুদ্রে যেয়ে মিশবে না,
মেঘ হতে বৃষ্টি ঝরাবে না,
ফুলকে ফল, ফলকে খাদ্য করবে না,
যা মাটিকে সোনা, হীরাকে বালি করবে না,
আমি আর আমাতে থাকব না।
আমি তাঁর প্রেম চাই,
যিনি সৃষ্টি করবেন মহাবিশ্ব, আর ধ্বংস করবেন নিমিষেই,
আমার তোমার অস্তিত্যের কোন অবস্থান নাই,
যিনি ভালকে করেন খারাপ, খারাপকে করেন ভাল,
যিনি অহঙ্কারের প্রকৃত ধারক,
যার ছোঁয়াতে বেহেস্ত, নরক, ঊর্ধ্ব , মর্ত্য,
একই বস্তুতে পরিণত হয়।
যে প্রেম, শুধু প্রেম। প্রেম…প্রেম। সেই প্রেম।
**************************সমাপ্ত******************
বসন্তের এক সকালে
বসন্তি বাতাসে ডুবে থেকে
আকেশের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি
অজস্র তারা ঝলমল করছে
মৌমাছিরা ফুল থেকে আহরণ করছে
ফোঁটা ফোঁটা রক্ত
বাঘেরা লালন পালন করছে
হরিণের পাল।
মানুষের মাঝে তাকিয়ে দেখি ,
অনেক অনেক শয়তান চিৎকার করছে ।
কবিরা কলম ভুলে যেয়ে
ডাক দিচ্ছে যুদ্ধের।
মানব শিশুরা পিঁপড়ার খাবার হচ্ছে
কুকুরের বলছে -পৃথিবীটা তাদের।