আকাশ ফুঁড়ে নিত্য নামছে কর্কশ রোদ
কখনো-বা ক্লান্তিহীন স্বচ্ছ বৃষ্টি!
আমি উৎসুক হয়ে দেখি রেললাইনের পাশে সেই খুপরিটা,
এক টুকরো ছেঁড়া মলিন আঁচলে জড়োসড়ো
কৌতূহলী এক-জোড়া ঘুমকাতুরে চোখ
তেজপাতার মতো স্তনে মুখ গুঁজে দিয়ে
কি নিশ্চিত নিমগ্নতায় ডুবে আছে
এর চেয়ে নিবিড় পবিত্র আর কি হতে পারে!
আমার দিকে তার চেয়ে বেশি উৎসুক হয়ে দেখে লোক
ফিসফিস করে, বিদ্রুপের স্বরে কখনো সখনো
দু’চার কথা শোনায়!
করুণার দৃষ্টি নিয়ে ওরা আমায় নুনের ছিটাও দেয়!
আমি সংযম দেখাতে গিয়ে অতি মাত্রায় বিনয়ী হই
ততোটুকু বিনয়, যতটুকুতে নিজেকে মনে হয় সত্যি কোনো মানুষ নই!
আচ্ছা খুপরি’র ঘরের সেই রমণীকে কোনো ক্লেশ স্পর্শ করে কি?
অভাবের ক্লেশ, ক্ষুধার ক্লেশ!
নিশ্চয়ই তার ক্লেশগুলো আমার জীবনের ক্লেশের চেয়ে
অনেক বেশি স্বস্তিকর! ভাবছি,
কি গভীর মাতৃত্বের পূর্ণতায় আচ্ছাদিত হলে
অমন শ্রীহীন ঘর থেকেও ভেসে আসে সুখের বিচ্ছুরিত আলো!
যে “পুরুষ” বাবা হতে পারবেনা জেনেও
তাকে আগলে রাখি ছায়ার মতোন! সকল গঞ্জনা মাথা পেতে নেই!
কেউ জানেনা, জানবেনা কোনোদিন- শুধু অভিশপ্ত এই আমি
দীর্ঘশ্বাসের মালা জপে বাতাসের কানে মুখ রেখে বলবো,
“আহা আমার যদি সেই রমণী’র মতো একটা জীবন থাকতো!”