হ্যামেলিনের বাঁশি-ওয়ালা

হ্যামেলিনের বাঁশি-ওয়ালা

রূপকথার গল্পের নেপথ্য উপাখ্যান (সংগ্রহীত)

ছোটবেলায় পড়া অসংখ্য রূপকথার গল্পের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্প ছিল “হ্যামেলিনের বাঁশি-ওয়ালা” বা “পাইড পাইপার”৷ গ্রিম ভ্রাতৃদ্বয়ের (ইয়াকপ গ্রিম এবং ভিলহেল্ম গ্রিম) লেখা হৃদয়বিদারক গল্পটি নিছক রূপকথা হিসেবে বহুল প্রচলিত থাকলেও এই উপাখ্যানের নেপথ্যে রয়েছে ঐতিহাসিক কিছু ব্যাখ্যা৷ “যা রটে তার কিছু হলেও ঘটে” এমন যুক্তির উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নানা-জনের নানা মতবাদ৷ জার্মানির হ্যামেলিন শহরের গির্জায় আঁকা ছবি থেকেই প্রথম এ ঘটনার কথা জানতে পারে মানুষ।গল্পটি কমবেশি সবার জানা থাকলেও পটভূমি জানার আগে সংক্ষেপে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক –গল্পের প্রেক্ষাপট ১২৮৪ সালের জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের হামেলন/Hameln (জার্মান উচ্চারণ) বা হ্যামেলিন/Hamelin (ইংরেজি উচ্চারণ ) শহর৷ ঘটনার সূত্রপাত হয় ইঁদুরের অত্যাচার থেকে৷ হঠাৎ করেই গোটা শহরে ইঁদুর ছড়িয়ে পড়ায় প্লেগ রোগ প্রকোপ আকার ধারণ করে৷ উপায়ান্তর না দেখে শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা দেন, শহরকে ইঁদুরের হাত থেকে যে বাঁচাতে পারবে তাকে মোটা অঙ্কের টাকা পুরষ্কার দেওয়া হবে৷ সেই ঘোষণায় সাড়া দিয়ে শহরে এসে হাজির হয় রঙ-বেরঙের পোশাক পড়া রহস্যময় এক বাঁশি-ওয়ালা৷ মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বাঁশি-ওয়ালা কথা দেয় বাঁশির মায়াবী সুরে সে শহরকে ইঁদুর-মুক্ত করতে পারবে৷ কেউ বিশ্বাস না করলেও অগত্যা রাজি হয়৷ বাঁশি-ওয়ালা বাঁশি বাজাতে শুরু করলে সুরের মূর্ছনায় আকৃষ্ট হয়ে সব ইঁদুর গর্ত থেকে বের হয়ে আসে এবং তার পিছু পিছু ছুটতে থাকে৷ অতঃপর সে সব ইঁদুরকে নিয়ে গিয়ে ওয়েজার নদীতে ফেলে দেয়৷ খরস্রোতা নদীতে তলিয়ে যায় শহরের সব ইঁদুর৷ বিনিময়ে সে তাঁর প্রাপ্য টাকা দাবি করলে মুখ ফিরিয়ে নেয় শহরের মেয়র এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরা৷ প্রতারিত বাঁশি-ওয়ালা তখনকার মতো রেগে চলে গেলেও কিছুদিন পর সেন্ট জন-পল দিবসের (ধর্মীয় উৎসব) দিন ফিরে আসে আবার৷ এইদিন অবশ্য তার পরনে রঙ-বেরঙের কাপড় ছিল না৷ এসে আবার তাঁর মায়াবী সুরের জাদুর সৃষ্টি করে৷ তবে এবার বাঁশির সুরে বেরিয়ে আসে শহরের ছোট ছোট শিশুরা৷ ক্ষুব্ধ বাঁশি-ওয়ালার মোহনীয় বাঁশির টানে শহরের ছোট ছোট ১৩০ জন শিশু তার পিছনে ছুটতে ছুটতে একসময় হারিয়ে যায়৷ শিশুদের মধ্যে তিনজন দল থেকে পিছিয়ে পড়েছিল। তারাই নাকি ফিরে এসে এসব কথা জানায় শহরবাসীকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শিশু তিনটির একজন খোঁড়া, অন্যজন দৃষ্টিহীন এবং আরেকজন বধির হওয়ায় বাঁশিওয়ালার গন্তব্য সম্বন্ধে সঠিক তথ্য আর জানা যায়নি৷ মোটামুটিভাবে গল্পের সারমর্ম হচ্ছে এটাই৷এই ঘটনাটির সত্যতা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। অনেকে ঘটনাটিকে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন, অনেকেই যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করতে চান আবার একে নেহাতই গল্প বলে উড়িয়ে দেওয়ার লোকের সংখ্যাও কম নয়। মতভেদ আছে অনেক এই জার্মান রূপকথা নিয়ে৷ কেউ বলেন, শহরের বাইরে কোপেনবার্গ পর্বতের মাথার গুহায় ঢুকে গিয়েছিল সে। কেউ বলেন, ইঁদুরের মতো শিশুদেরও সলিলসমাধি হয় আরেকটি মতবাদ অনুসারে বাঁশিওয়ালা যখন শিশুদের নিয়ে রওনা দেয়, তখন শহরের কারোরই কিছু করার ছিল না। কারণ সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বাঁশির সুর শুনছিল। স্বয়ং মেয়রের মুগ্ধতাও বাঁশির সুরেই নিবিষ্ট ছিল। বাঁশিওয়ালা মায়াবী সুরের টানে বাঁশি বাজাতে বাজাতে এগিয়ে যাচ্ছিল আর শিশুরা তাঁকে অনুসরণ করছিল। একসময় বাঁশিওয়ালা শিশুদের নিয়ে হ্যামেলিন শহরের পাঁচিল বেয়ে একটা পাহাড়ের দিকে গেল। এরপর পাহাড়টি হঠাৎ দু’ভাগ হয়ে গেল। আর তখন সে ১৩০ জন শিশুদের নিয়ে আজীবনের জন্য সেই পাহাড়ের ভেতর অদৃশ্য হয়ে গেল। সেই রহস্যময় বাঁশিওয়ালাকে কিংবা শিশুদের কাউকে আর কখনোই দেখা যায়নি। কিন্তু সকল মতবাদই একটি বিষয়ে একমত হয় সেটি হচ্ছে ঘটনার সময়কাল৷ ১২৮৪ সালের ২৬ জুন এই মর্মস্পর্শী ঘটনার অবতারণা হয়৷১৩০০ সালের দিকে শহরের চার্চে স্টেইন্ড-গ্লাসের জানালায় ১২৮৪ সালের করুণ এই ঘটনা ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল৷ জানালাটি বানানোর উদ্দেশ্যই ছিল শিশুদের স্মরণ করা। ১৬৬০ সালে জানালাটি ধ্বংস হয়ে যায়৷ পরবর্তীতে ইতিহাসবিদ হ্যান্স ডবারটিন জানালাটির একটি আধুনিক রূপ দিয়ে পুনঃনির্মাণ করেন। সেখানে দেখা যায় রঙ-বেরঙের কাপড় পরিহিত বাঁশিওয়ালা আর সাদা পোশাকে শিশুদের ছবি৷ শহরে রক্ষিত ১৩৮৪ সালের প্রাচীন নথিতেও উল্লেখ আছে- “প্রায় ১০০ বছর হল আমাদের সন্তানেরা আমাদের ছেড়ে বিদায় নিয়েছে!দীর্ঘদিন অমীমাংসিত রহস্যের বিস্তর গবেষণা হয়েছে। এমনকি হ্যামেলিন শহরের পৌরসভায় রাখা কাগজপত্র তন্নতন্ন করে খোঁজা হয়েছে কোনো সত্যতা আছে কি-না তা জানার জন্য। কিন্তু সেখানে এরকম কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি৷ একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে এটি সত্যি কাহিনী হিসেবে দাবি করেন কেউ কেউ৷ কাহিনীটি হচ্ছে এরকম, জার্মানির হানোফার শহরের ৩০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত হ্যামেলিন শহরের ছেলেমেয়েদের ১২১২ সালে নিকোলাস নামক একজন ছেলে জেরুজালেম নিয়ে যাবার কথা বলে প্রলোভন দেখায়৷ জেরুজালেম হল পুণ্যভূমি। সে তাদের কাছে এক রহস্যময় বর্ণনা দিয়ে বলেছিল তারা যখন ভূমধ্যসাগরে পৌঁছুবে, তখন সাগর শুকিয়ে যাবে। তারা হেঁটে তা পাড়ি দিতে পারবে৷ এভাবে সে প্রচুর ছেলেমেয়েকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু পরে তাদের আর কোন হদিস পাওয়া যায়নি। গবেষকরা বলেন, নিকোলাস ছিল ছেলেধরার দলের চর। ঐ সমস্ত শিশুকে সে মধ্যপ্রাচ্যে বিক্রি করে দিয়েছিল। এই ঘটনার সাথেই রূপকথার গল্পটির মেলবন্ধন করার চেষ্টা করা হয়৷প্রাচীন গবেষণাপত্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য থেকে অনেকেই ধারনা করে কোন অজানা কারণে শহরের সমস্ত শিশু মৃত্যুবরণ করেছিল, হয়ত বা মরণব্যধি “ব্ল্যাক ডেথ” বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে-ভূমিধ্বস বা পাথর-ধ্বসে। অবশ্য পরে ব্ল্যাক ডেথের ধারনার অবসান ঘটে কারণ ইউরোপে ১৩৪৮ সালের দিকে প্লেগ মহামারী আকার ধারণ করে৷ আবার এমনও আশঙ্কা করা হয়, কোন পরিব্রজ্যা হয়তো ফুসলিয়ে কোমলমতি শিশুদের নিয়ে গিয়েছিল ধর্মযুদ্ধ ক্রুসেডে অংশ নেবার জন্য, আর ডোরাকাটা পোশাকের বাঁশিওয়ালা ছিল মৃত্যুর প্রতীক৷এই রকম একটি রহস্যময় ঘটনা ঘটেছিল ১৪৫৮ সালে। জার্মানির সোয়াভিয়া অঞ্চলের একটি শহরের নাম হাল। সেই শহরের ৮-১২ বছরের শিশুদের মধ্যে হঠাৎ করে এক ধরনের উন্মাদনা লক্ষ্য করা গেল। তারা হঠাৎ করেই দলে দলে তারা ফ্রান্সের মিশেল নামের এক তীর্থ স্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল৷ সেখানে আছে একটা মঠ। বয়স্করা এ ব্যাপারে বাধা দেবার চেষ্টা করলেন। এতে ছেলেমেয়েদের অধিকাংশ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন বাধ্য হয়ে শিশুদের এই মহাপ্রস্থান মেনে নেন অভিভাবকেরা। ১৫৫৬ সালে হঠাৎ শোনা যায়, বংশীবাদক আসলে ছিল স্বয়ং শয়তান। অন্য একটি গবেষণায় প্রকাশ পায় গল্পের আদিরূপে ইঁদুরের কোন অস্তিত্বই ছিল না, ১৫৫৯ সালে জনৈক ব্যক্তি গল্পে রঙ-চঙ মাখিয়ে এক নতুন মাত্রা দিতে এর সংযোজন ঘটায়৷ কালের বিবর্তনে আধুনিক যুগে এসে কেউ কেউ বলেছেন বাঁশিওয়ালা আসলে ছিল এলিয়েন, কোপেন পাহাড়ের আড়ালে রাখা মহাকাশযানে করে শিশুদের নিয়ে গিয়েছিল নিজের গ্রহে৷বর্তমানে হ্যামেলিন শহরে এ সংক্রান্ত একটি জাদুঘর রয়েছে। ওই জাদুঘরে সঞ্চিত পঞ্চদশ শতাব্দীতে লেখা কয়েকটি বইয়ে এ রহস্যময় কাহিনীর বর্ণনা রয়েছে। ফ্রাউ ভন লিউড নামের তেরো বছরের এক বালক নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে সেখানে বলে যে, লোকটির (বাঁশিওয়ালা) বয়স আনুমানিক ছিল ৩০। খুব সুদর্শন দেখতে। তার বাঁশিটি ছিল রুপোর তৈরি।হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালার গল্পে ইঁদুর দ্বারা আক্রান্ত শহরের কথা রয়েছে। মধ্যযুগে ইউরোপে বুবনিক প্লেগ-রোগ ভয়াবহরুপে দেখা দেয়। তখন ইঁদুর ধরার জন্য এক বিশেষ লোক দেখা যেত। অবশ্য তারা বাঁশি বাজিয়ে ইঁদুর ধরত নাকি, তা নিয়ে সন্দেহ আছে৷ বৈজ্ঞানিক ধারনা মতে, হাই ফ্রিকুয়েন্সির শব্দতরঙ্গ দিয়ে অবশ্য ইঁদুরকে আকৃষ্ট করা যায়৷হ্যামেলিনের জাদুঘরে একটি প্রাচীন টিনের বাঁশি রাখা আছে। প্রাচীনকালে ইঁদুর ধরিয়েরা এ ধরনের বাঁশি ব্যবহার করত।ইতিহাস থেকে আরও জানা যায়, ১২৮৪ সালে হ্যামেলিনে দুটি ঘটনা ঘটে। প্লেগ ছাড়াও অন্যটি হচ্ছে নাচুনে রোগ। এক বিশেষ ধরনের খাদ্যের বিষক্রিয়ায় এ রোগ দেখা দেয়। এতে রোগী ঘন্টার পর ঘন্টা নাচতে থাকে। লাল রঙ তাদের আকৃষ্ট করত খুব। সাধারণত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তখন লাল রংয়ের সঙ সেজে সেই বাঁশিওয়ালা এ সব রোগাক্রান্ত ছেলেমেয়েদের নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। মূলত এত এত মতবাদের পরও “হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা” রূপকথাটি কোন ঘটনার উপর ভিত্তি করে রচিত হয় তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া সম্ভব হয়নি৷তবে ইতিহাস যাই হোক, ৮৫১ খ্রিস্টাব্দে তৈরি এক ধর্মাশ্রমকে ঘিরে গড়ে ওঠা ছোট গ্রামই দ্বাদশ শতাব্দীতে এসে আস্তে আস্তে শহরে রূপ নেয়৷ প্রায় ৫৭ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে গড়ে উঠা বর্তমান হ্যামেলিন শহরটি পর্যটকদের এক অন্যতম আকর্ষণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে শুধুমাত্র রূপকথার বদৌলতেই৷ হ্যামেলিনে শহরে একটি স্থাপনা রয়েছে যার নাম “the rat catcher’s house” বা “ইঁদুর ধরা লোকের বাড়ি”। ১৬০২ সালে নির্মিত বাড়িটির দেয়ালে বিশ্ববিখ্যাত কাহিনীটির ছবি চমৎকারভাবে আঁকা আছে। শহরের একটি রাস্তার নামও রাখা হয়েছে বাঙ্গেলোসেন্ট্রাস যার অর্থ “street without drums.” বাংলায় বললে “বাজনা বিহীন রাস্তা”। এই রাস্তায় কোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা নাচ-গান করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ৷ রাস্তায় একটি কাঠের ফলকে খোদাই করা আছে ১২৮৪ সালের ২৬ জুন হ্যামেলিনের ১৩০ জন শিশুকে এক রংচঙা ব্যক্তি অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল যাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।তাছাড়া হ্যামেলিন শহরে বেড়াতে গেলেই নানা জায়গায় চোখে পড়বে বাঁশিওয়ালার ইঁদুর সমেত মূর্তি৷ আরও আছে পাইড পাইপার থিম রেস্তোরাঁ, পাইড পাইপার মনোপলি, আছে মুদ্রাও! হ্যামেলিন শহরের প্রতিটি রাস্তার মোড়েই দেখা যায় ‘স্যুভেনির’ বা স্মারকের দোকান। সেখানে সব রকম স্মারক অর্থাৎ কাপ, গ্লাস, টিশার্ট- সব কিছুর গায়েই রয়েছে বাঁশিওয়ালা গল্পের কোন না কোন চিহ্ন। ২০০৯ সালে শহরে এক ট্যুরিস্ট ফেস্ট আয়োজন করা হয় শিশুদের প্রস্থানের করুণ ঘটনার ৭২৫তম বার্ষিকীতে। প্রতি বছর ২৬ জুন পালন করা হয় “র্যাট ক্যাচার ডে!” কিন্তু রবার্ট ব্রাউনিং তাঁর “The Pied Piper of Hamelin” কবিতায় ঘটনার সময়কাল ১৩৭৬ সালের ২২ জুলাই উল্লেখ করায় আমেরিকায় ২২ জুলাই “র্যাট ক্যাচার ডে” পালন করা হয়৷ গ্রীষ্মের প্রতি সপ্তাহেই সেই রূপকথার উপর ভিত্তি করে মঞ্চনাটক অনুষ্ঠিত হয় শহরতলিতে৷ আর বিশেষ বিশেষ দিনে মনোরঞ্জনের জন্য শহরময় হেটে বেড়ায় রহস্যময় এক আগন্তুক, পরনে থাকে রংচঙে আলখেল্লা আর হাতে সেই সুপরিচিত বাঁশি। এছাড়াও “বিয়ে বাড়ি” নামে ঐতিহাসিক একটি বাড়ি রয়েছে৷ ইট আর বালু দিয়ে নির্মিত এই বাড়িতে একসময় হ্যামেলিনবাসীরা নানা উৎসবের আয়োজন করতো কিন্তু এখন এখানে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়৷ প্রতিদিন সকাল ৯ টা ৩০ মিনিটে বাঁশিওয়ালার বাঁশির সুরে ৩৭ বার ঘণ্টা বাজানো হয়৷ এমনকি শহরে প্রতিদিন তিন বেলা করে পুতুল নাচের মাধ্যমে বাঁশিওয়ালার গল্প প্রদর্শন করা হয়৷“হ্যামেলিনের বাঁশিওয়ালা” গল্পটি গ্রিম-ভ্রাতৃদ্বয় উপকথার উপর ভিত্তি করেই লিখেন৷ এছাড়াও রচিত হয় নানান দেশে নানান ভাষায় গল্প, কবিতা, উপন্যাস৷ রবার্টি ব্রাউনিং এর মতো বিখ্যাত আরও অনেক লেখকরাই “পাইড পাইপার” নিয়ে কাব্য রচনা করেন৷ এমনকি The Pied Piper of Hamelin নামে ১৯৫৭ সালে সিনেমাও নির্মিত হয়৷হ্যামেলিনের ইতিহাস অমীমাংসিত থাকলেও রূপকথার আদলে গল্পটি সমগ্র বিশ্বে শিশুদের কাছে রোমাঞ্চকর এক কাহিনী হিসেবে সমাদৃত হয়েছে , পাশাপাশি হ্যামেলিন শহরটির গ্রহণযোগ্যতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পর্যটকদের কাছে৷

গল্পের বিষয়:
উপন্যাস
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত