বেশ কিছুদিন আগে আমাদের বাড়িতে শিমের বীজ বোনা হয়েছিল। সেই বীজ থেকে চারা গজিয়েছে। চারা গাছ বড় হয়ে এখন শিম ধরাও শুরু করেছে। আমার মা শিম গাছগুলোর জন্য উঠানে মাচা করে দিয়েছেন। মাঝে মাঝে তিনি গাছগুলোর গোড়ায় জৈব সার দেন।
ঠিকমতো পরিচর্যার কারণে শিমের ফলনও অনেক ভালো হয়েছে।অনেকগুলো শিমের বীজ বোনা হয়েছিল। কিন্তু সব বীজ থেকে চারা গজায়নি। আবার যে বীজগুলো থেকে চারা গজিয়েছিল, সেই চারাগুলোর অধিকাংশই বড় হতে পারেনি। কোনো চারা ছাগলে খেয়ে ফেলেছে, আবার কোনো চারা এমনিতেই মরে গেছে। তারপরেও যেগুলো বড় হতে পেরেছে, সেই গাছগুলোর ফলনেই এখন শিমের বীজ বোনা সার্থক মনে হচ্ছে।
একজন মানুষ জীবনে অনেক স্বপ্ন দেখে। মানুষের স্বপ্নগুলোর সাথে শিমগাছের জীবনচক্রের অনেক মিল। বলা যায়, স্বপ্নগুলো অনেকটা শিমের বীজের মতোই! সব বীজ থেকে যেমন চারা গজায় না, তেমনি সব স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় না। আবার কোনো স্বপ্ন ক্ষণিকের জন্য বাস্তবরূপ দেওয়া গেলেও তাকে সফলতার পূর্ণরূপে দাঁড় করানো যায় না।কোনো স্বপ্নকে সফলতার পূর্ণরূপ দিতে গেলে অনেক বাধা আসে। মাঝে মাঝে অর্থকষ্ট জীবনকে থামিয়ে দিতে চায়। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। মনোবল হারিয়ে হতাশা গ্রাস করে জীবনকে। তবে এত কিছুর পরেও আশার কথা হলো, তীব্র বাধা আসলেই কেবল স্বপ্নের বাস্তবরূপ স্থায়িত্ব লাভ করে।
যারা গ্রামে বাস করেছেন, তারা সবাই স্যালোমেশিন দেখেছেন। স্যালোমেশিন যখন স্টার্ট দেওয়া হয়, তখন পানি বের হওয়া নলের মুখ কোনো বস্তু ও কাদামাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা এজন্যই করা হয়, যেন প্রথমে পানি বের হতে বাধার সৃষ্টি হতে পারে। কারণ, প্রথমে বাধা সৃষ্টি না করলে স্যালোমেশিনের নল দিয়ে পরিপূর্ণভাবে পানি বের হওয়া সম্ভব নয়।
স্বপ্নপূরণের পথে বাধা আসবেই। আসুক না! যত আসবে আসুক! বাধা আসলে স্যালোমেশিন কিংবা শিম গাছ থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজব। ইনশাআল্লাহ স্বপ্নপূরণ হবেই