হাসির মুখে হাসি নাই। সে মন খারাপ করে পুকুরপাড়েবসে আছে। তার বন্ধু রানীমাছ আর তার কাছে আসে না। গল্প করে না।
শুধু রানীমাছ কেন, পোনা মাছগুলোও ছুটে আসে না। খেলাকরে না। বড় মাছগুলো ঝুপঝাপ করে লাফ দেয় না।
কাঁকড়াগুলো গুটি গুটি পায়ে পাড় ঘেঁষে হাঁটে না।
ব্যাঙগুলোও ঝুপঝাপ লাফ দেয় না। ছোট ছোট পোকা-মাকড় ধরে খায় না। ঐ কোণায় শাপলা ফুল আর ফোটে না।
হঠাৎ একটা রানীমাছকে দেখে হাসি খুব খুশি হয়।
হাসিবলে, তোমরা এখন আস না কেন? গল্প কর না কেন?
রানীমাছ বলে, তুমি হয়তো আমাদের কাউকেই আরদেখতে পাবে না। তোমরা আমাদের শেষ করে দিচ্ছ।
হাসি বলে, কেন, আমরা তোমদের কী ক্ষতি করলাম?
রানীমাছ বলে, পানিতে আমাদের জীবন। মাছ, কাঁকড়া,ব্যাঙ- এ রকম অনেক কিছু পানিতে বাঁচে। পানিতে ডিমপাড়ে।
ডিম থেকে বাচ্চা হয়।
তোমরা সেই পানি নষ্ট করেফেলেছ।
রানীমাছ আরো বলে, তোমরা এই পানিতে ময়লা অবর্জনাফেল।
চিপস, চানাচুর, আচারের প্যাকেট ও নানা রকমপলিথিনের ব্যাগ ফেল।
কপড়ধোয়া সাবান পানিতে মেশে। পুকুরপাড়ে গরুছাগলকে গোসল করাও। এতে ময়লা-গোবর পানিতেমেশে।
পাশের ক্ষেতে সার আর পোকা-মাকড় মারতে কীটনাশকদাও। এগুলোতে বিষ থাকে। এ বিষ বৃষ্টির পানিতে ভেসেপুকুরে পড়ে।
পোকামাকড় মেরে ফেলায় আমরা খাবারপাই না।
রানী বলে, দেখ, পুকুরের পানি এখন সাদা টলটলে নয়। নোংরা আর কী বিশ্রী গন্ধ।
ফলে মাছ ও অন্যান্য জলজপ্রানী মারা পড়ছে। ডিম ফোটাতে পারছে না।
শুধু আমরা কেন, এই পানি ব্যবহার করে তোমাদেরঅসুখবিসুখ সহ কত ক্ষতি হচ্ছে ভেবে দেখেছ?
কথাগুলো বলেই রানীমাছ চলে যায়। হাসি কাঁদতে থাকে। হঠাৎ বাবা পেছন থেকে এসে তার মাথায় হাত রাখেন।
বাবা বললেন, মা, আমি তোর মনের কথা বুঝি। ভাবিস না, আমি কাল থেকেই পুকুর পরিষ্কারের ববস্থা করছি।
আরযাতে পুকুরের পানি নষ্ট না হয় সেজন্য সকল ব্যবস্থা নিচ্ছি
হাসি খুশি হয়ে বাবার দিকে তাকায়। হাসির মুখে দেখা দেয়হাসি।