ফিরে আসা

ফিরে আসা

বন্ধুরা সবাই মিলে নদীর পাড়ে বসে আছি।
আমি- কিরে খেলার রেজাল্ট কি?
রাব্বি- বাংলাদেশ ৩/১২০
আমি- ও ভালো।
।।
এভাবে আমরা গল্প করতে লাগলাম।
হাসান- আজ অনেক কড়া রোদ তাই না রে? আর বাতাস ও নাই।
আমি- কালকে তাও বিকেলে বাতাস ছিল। আল্লাহ্ আমাদের রহমত করুক।
।।
আমি- তুই রোজা করিস না কেন রে? তোর সাথে কথা বলায় উচিৎ না।
রিয়াদ- আমি না খেয়ে থাকতে পারি না রে।
আমি- তোর স্বাস্থ্য তো আমার থেকেও অনেক ভালো। আমার তো শরীর এর হাড় গোনা যায়, তাও আমি রোজা করছি,

আমি যেহেতু মরিনি তোর ও কিছু হবে না।
রিয়াদ- হা হা হা।
আমি- তোর সাথে কথা বলায় উচিৎ না, তুই দিনে আমাদের সাথে দেখা করবি না। এলাকার সবাই রোজা করে, তুই কোন মুনাফিক?

এমনি দিন তো নামায পড়িস না। যাক আল্লাহ্র রহমত যে এখন মাঝে মাঝে নামাযে যাচ্ছিস, ভালো কথা।
।।
আমারাও যে একবারে দুধে ধুয়া তুলসী সেটা বলছি না। পাপ আমারাও অনেক করি। কিন্তু ভালো কিছুর ও চেষ্টা করি।

আর পাপ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করি।
তুই জানিস নামাযের পর রোজার স্থান। গত শুক্রবার হুজুর কি বলল শুনিস নি?
শুনবি কীভাবে? যাবি তো নামাযের ২ মিনিট আগে, না জানি বাড়ীতে কতো কাজ।
হুজুর বলছিল, রোজা সে দিন ঢাল হয়ে দাঁড়াবে। কোন দিন বুঝেছিস? যে দিন আমাদের সবার হিসাব হবে?

যদি এতটুকু বিশ্বাস থাকে যে মরার পর তোর সব কিছুর হিসাব আল্লাহ্ নিবে তবে এখন থেকে রোজা করিস।
।।
পরের দিন বিকেলে আমারা আবার ও নদীর পাড়ে বসে আছি, আজ আরও গরম। আর রোদ।
কিছুক্ষণ পর রিয়াদ আমাদের পাশে আসলো। কিন্তু সে এসে মন মরা হয়ে বসে পড়লো।
আমি- কিবে শালা! বউ মরে গেছে নাকি? এভাবে বসে আছিস কেন?
রিয়াদ- কাল রাতে আমি একটা স্বপ্ন দেখলাম, আমি তপ্ত মরুভূমির মধ্যে দিয়ে হাঁটছি। আমার অনেক ক্ষুদা আর পানির পিপাসা লেগেছে,

মনে হয় আমি কয়েক দিন যাবত কিছুই খায় নি। আমার চলাচলের আর কোন শক্তি নাই। তখন দূরে দেখলাম, কিছু গাছ।
।।
কাছে গিয়ে দেখলাম, এটা একটা বাগান। আর তোরা ওর মধ্যে বসে বিভিন্ন ফল খাচ্ছিস। আমি ভাবলাম, তোরা যখন আছিস, তখন আমিও খেতে পাবো।
আমি তোদের ডাক দিলাম, কিন্তু তোরা শুনতে পালি না। অবশেষে তুই শুনলি,
আমার জন্য একটা থালাতে কিছু খাবার নিয়ে আসলি।
কিন্তু আমি যেই বাগানের দেওয়ালে হাত দিলাম তখন ই একটা শক খেয়ে দূরে ছিটকে পড়ে গেলাম, তারপর আর মনে নাই।
।।
এরপর আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।
আমি বুঝে যায় এটা কোন দুঃস্বপ্ন না। এটা আল্লাহ্ আমাকে একটা সুযোগ দিলো নিজেকে পাপ থেকে মুক্ত করার, তওবা করে আল্লাহ্র পথে ফিরে আসার!
।।
কিন্তু আমি যখন খেতে যাবো, আজান দিয়ে দিলো। তাই এক গ্লাস পানি খেয়েই রোজা আছি।
।।
আমারা এতক্ষণ সবাই হাসছিলাম, কিন্তু ওর কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলাম।
আমি- এই তোরা ঐ দিক থেকে সরে বস, একটু বাতাস আসতে দে। ভাই(রিয়াদ) তুই চুপ করে বসে থাক! আল্লাহ্ তোর ওপর রহমত করুক।

আজ তোর প্রথম রোজা তো তার ওপর কিছু খেতে পাস নি। একটু কষ্ট তো হবে।
রিয়াদ- আজ কষ্ট হলেও মনের দিক থেকে অনেক শান্তিতে আছি রে। আজ থেকে আমিও রোজাদার।

গল্পের বিষয়:
শিক্ষনীয় গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত