আলাদিন ছিল খুব দরিদ্র। খাবার কেনার মতো কোনো টাকা পয়সা তার ছিল না।
রাস্তার পাশের কল থেকে সে ঢকঢক করে পানি খেয়ে চিত্রনায়ক জসিমের মতো খিদা মেটাতো। যদিও তাতে তার খিদা মিটতো না।
আলাদিন রাতের বেলা ফুটপাতে ঘুমাতো। তার বিছানা ছিল মিনিকেট চালের চটের বস্তা।
কিন্তু চটের বস্তাতে শুয়েই সে অনেক ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখতো। স্বপ্নটা চাগিয়ে উঠতো যখন জেসিকা
আসতো বেলকনিতে। আলাদিন যেখানে ঘুমাতো তার উল্টো দিকেই ছিল জেসিকাদের ডুপ্লেক্স বাড়ি।
বাড়ির রঙ আর জেসিকার গায়ের রঙ ছিল প্রায় একই রকম- চাঁদের আলোর মতো রূপামাখা।
জেসিকা প্রতি রাতে সিগারেট খেতে বেলকনিতে আসতো। জেসিকা সিগারেটে টান দিত, ওদিকে আলাদিনের
হৃদয় পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে যেতো। আলাদিন ভাবতো, একদিন তার অনেক টাকা হবে- তখন সে জেসিকার মতো
একটা লাল গাড়ি কিনবে। তারপর জেসিকাকে নিয়ে সিনেমাতে যেমন হয় তেমন সমুদ্র আর পাহাড়ে ঘুরতে যাবে।
শাকিব খানের মতো কোমর দুলিয়ে নাচবে। চুলে অনেক শ্যাম্পু করে মাথা ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে গান করবে।
আলাদিনের রাতগুলো অদ্ভুত রূপালি খোয়াবে কেটে যেত।
ঠিক এ রকম সময়ে পার্কে পুরনো বোতল কুড়াতে গিয়ে একটা প্রদীপ কুড়িয়ে পায় আলাদিন।
পুরনো ট্যাপসা টুপসা প্রদীপ- জং ধরা। দেখতেও ভালো না। তাছাড়া প্রদীপ নিয়ে সে কীইবা করবে! সোডিয়াম আলোতেই তার রাত কেটে যায়।
আলাদিন তাই ভাঙারির দোকানে প্রদীপটা বিক্রি করে দেয়। দাম পায় চল্লিশ টাকা। চল্লিশ টাকা দিয়ে সে তেহারি কিনে খায়।
ভরপেট হওয়ায় সে রাতে তার খুব ভালো ঘুম হয়। স্বপ্নে সে জেসিকার সাথে নাচ গান করে। সে ভাবে, একদিন তার অনেক টাকা পয়সা হবে।
আলাদিন রূপকথা পড়ে নি। পড়লে জানতো, সে সুযোগ তার চলে গেছে।