“মা প্লিজ আমাকে জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বিয়ে দিও না।জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বিয়ের পর অনেক সমস্যা হয়।পারলে একমাত্র ছেলে খুঁজে বের কর”। মিথিলা খুব বিরক্তি নিয়ে কথা গুলো বললো।
” ফালতু কথা বলবি না একদম। ফ্যামিলি পাওয়াটাও একটা ভাগ্যের ব্যাপার।এখান থেকে বাবা মা ভাই বোন ছেড়ে যাবি,সেখানে নতুন করে বাবা মা ভাই বোন পাবি।তোর ভালো লাগবে।তাছাড়া জামাই অফিসে থাকলে তোর একাকী লাগবে না”।
“তুমি জ্যোতির কথা ভুলে গেছ মা?ওকে জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বিয়ে দেয়ার পর কি কষ্টই না করতে হয়েছিলো। রাত দিন কাজের মেয়ের মত খাটিয়েছে।প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ও ঠিক মত খেতে পর্যন্ত দিতো না।শেষ মেস ডিভোর্সই হয়ে গেলো “।
” সবাই এক রকম হয় না রে।এরা অনেক ভালো মানুষ। শিক্ষিত পরিবার। ছেলের বাবা রিটায়ার্ড করা সরকারি কর্মকর্তা। মা ও মাষ্টার্স শেষ করেছেন।দুই ভাই বড় বড় জায়গায় জব করছে।তাছাড়া ছেলে ঢাকা মেডিকেল থেকে এমবিবিএস শেষ করেছে।কত ব্রাইট একটা ছেলে।ফ্যামিলি প্রোফাইল কত ভালো। এমন একটা সমন্ধ শুধু মাত্র যৌথ পরিবার এই ফল্ট ধরে মানা করে দিবো?এটা কোনো ফল্ট তুই বল”?
মিথিলা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো “আমি কিছু বলতে চাই না মা।যা বলার আগেই বলে বলেছি”।
” শোন, তারা যদি ভালো না হতেন,তাহলে ছেলের বড় ভাইয়ের বউরা বাচ্চা নিয়ে এক সাথে থাকতে পারতো না।কি সুন্দর একটা পারিবার। তুই রাজি হয়ে যা মা”।
“তুমি বুঝতে পারছ না মা।সবাই মিলে থাকতে গেলে অনেক সমস্যা হয়।অনেক কিছু ভালো না লাগলেও মেনে নিতে হয়।নিজের স্বাধীনতা বলে কিছু থাকে না।তাদের এক রকম পছন্দ হবে,আমার আরেক রকম পছন্দ থাকবে। কিন্তু বাধ্য হয়ে আমার তাদের কথাই মেনে চলতে হবে।ভেবে দেখেছো নিজের ব্যাক্তিত্ব বলে কিছু থাকবে কিনা”।
” দেখ মা,মানিয়ে চলা মানেই কিন্তু ব্যাক্তিত্ব বিসর্জন দেয়া না।এডজাস্টমেন্ট মানে হচ্ছে সবাইকে নিয়ে সুন্দর ভাবে বাচা।তুই আর কথা বলিস না।আমি তাদের কথা দিয়ে দিয়েছি।তোর বাবাও অনেক পছন্দ করেছে।সামনের মাসেই বিয়ের তারিখ ঠিক করে ফেলবো “।
” করো,তোমার যা খুশি করো।পরে যদি আমার অবস্থা জ্যোতির মত হয় তখন কাদতেঁ পারবা না বলে দিলাম।আর মনে করো না এমন কিছু ঘটলে আমি তোমার কাছে ফিরে আসবো “।রাগ করে কথা গুলো বলে মিথিলা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো।
জাহানারা বেগম মিথিলার কথাকে পাত্তা দিলেন না।সে জানে সে মেয়েকে খারাপ কোনো জায়গায় দিচ্ছেন না।পুরোদমে বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন।
মিথিলা মন খারাপ করে বসে আছে।হবু বর অভিকে তার ভালো লেগেছে,কিন্তু এত বড় পরিবারে, সবাইকে নিয়ে একসাথে চলতে হবে ব্যাপারটা সে মেনে নিতে পারছে না।তার বান্ধুবির কি অবস্থা হয়েছিলো সে দেখেছে।মাকে কোনো ভাবেই সে বুঝাতে পারছেনা বিষয়টা।মিথিলা অনিচ্ছা সত্ত্বেও মায়ের পছন্দে বিয়ে করে নিলো।
শশুড়বাড়িতে আজ তার প্রথম সকাল।ঘুম ভাংগার পর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো নয়টা বাজে।পাশে অভি অঘোরে ঘুমাচ্ছে।মিথিলা ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গেল। মা বলে দিয়েছে সকালে উঠেই কিচেনে গিয়ে দেখতে।এমনকি একটু আগে ফোন পর্যন্ত করে বললো ” এত বেলা করে ঘুমাচ্ছিস,যা উঠ এক্ষুনি। কিচেনে গিয়ে হেল্প কর শাশুড়িকে।” ধুর বিয়ের পরও আম্মুর বকুনি কমলো না।
কিচেনে গিয়ে দেখে বড় ভাবি পরোটা বানাচ্ছে আর মেজো ভাবি সবজি রান্না করছে।তাকে কিচেনে দেখে শাশুড়ি হায় হায় করে উঠলেন “আরে তুমি এত সকাল সকাল উঠেছো কেন?আরেকটু ঘুমিয়ে নিতে”।
” না আন্টি,সরি মা, সমস্যা নেই।আপনাদের হেল্প করতে এলাম”।মিথিলা মুখে হাসি টেনে বললো।
বড় ভাবি পরোটা তেলে দিতে দিতে বললেন “আরে তুমি তো নতুন বউ।কি হেল্প করবে।তাছাড়া সবার ছোট মানে সবার আদরের।কিচ্ছু করা লাগবে না তোমার।তবে হেল্প যদি করতেই চাও তো যাও,তোমার ছোট যে ননদিনী আছে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলো গিয়ে।এই কঠিন কাজটা করতে পারলে আমরা বড়ই উপকৃত হবো”।
বড় ভাবির কথার ধরনে সবাই হেসে ফেললো।
মিথিলা লাবনীর ঘরে গেলো ঘুম থেকে ডেকে তুলার জন্য।তারা বলেছিলো কঠিন কাজ,তবে মিথিলার এক ডাকেই লাবনী লাফিয়ে উঠলো।
” ইশ ভাবী। তুমি আমার ঘুম থেকে উঠার পর সেই বাজে ফেস দেখে ফেললা”।বলে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
মিথিলা লাবনীর কান্ড দেখে হাসতে লাগলো।
খাবার টেবিলে সবাই নাশতা করতে বসেছে।লাবনীকে মা খাইয়ে দিচ্ছে।এই দৃশ্য দেখে মিথিলার মায়ের কথা খুব মনে পড়ে গেলো। সে ও সকালের নাশতা নিয়ে বায়না করতো।খেতে চাইতো না।মা হাতে তুলে জোর করে খাইয়ে দিতেন।এসব ভেবে মিথিলার চোখে পানি চলে এলো। পাছে কেউ চোখের পানি দেখে ফেলে, তাই সে দূরে চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু শাশুড়ি ডাক দিলেন।
“মিথিলা এসো,লাবনীর খাওয়া হয়ে গেছে।এখন তুমি এই চেয়ারটায় বসো।আমি খাইয়ে দিচ্ছি”।
মিথিলা বিশ্বাস করতে পারছিলো না কথা টা তাকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে।অবাক হয়ে শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে রইলো।
” কি হলো? এসে বসো”।শাশুড়ি তাগাদা দিলো।
মিথিলা খাচ্ছে। মায়ের হাতে খাচ্ছে।তার মায়ের মত করে শাশুড়ি তাকে খাইয়ে দিচ্ছে।মিথিলার চোখটা বার বার ভিজে উঠেছে।
শশুড়বাড়িতে মিথিলার দিন ভালোই কাটছে।তার শাশুড়ি জায়েরা ক্রিটিকাল বাঙালি শাশুড়ি জাদের মত আচরন করে না।শাশুড়ি মা বউদের নিজের মেয়ের মত দেখে আর বউরাও তাকে মায়ের চেয়ে কম মনে করে না।
অভি একবার মিথিলাকে জিজ্ঞেস করেছিলো,
“আমাদের পরিবারটা কেমন লাগছে তোমার”?
জবাবে মিথিলা বলেছিলো ” শশুড়বাড়ি যে এতটা সুন্দর হতে পারে,তোমার পরিবারে না এলে বুঝতাম না”।
বিয়ের পর অভি মিথিলার হানিমুনের কথা উঠলো। কক্সবাজারের জন্য ফ্লাইটে টিকেট কেটেছে।কিন্তু মিথিলা যাবে না।পরিবারের সবাই গেলে তবেই যাবে।
মেজো ভাবী শুনে চোখ কপালে তুলে বললেন,”হানিমুনে যাবে তোমরা।আমরা ভাই কেন কাবাব মে হাড্ডি হতে যাবো”।
“সমস্যা নেই ভাবী,গনবিবাহ দেখেছেন না?এবার গনহানিমুন দেখবেন”। মিথিলার কথায় সবাই হেসে উঠলো।অগ্যতা বাধ্য হয়ে সবাই এক সাথে গেলো কক্সবাজার।
দেখতে দেখতে রমযান মাস চলে এলো।অভিরা চিটাগাং বিভাগের মানুষ। মিথিলা জানে চিটাগাংয়ের কালচার ছেলের শশুড়বাড়ি থেকে বাহারি ইফতার পাঠাতে হবে।সেটা নিয়ে মিথিলার টেনশনের শেষ নেই।বাবা রিটায়ার্ড করেছেন।এখন ইফতার পাঠাতে গেলে কত খরচ হবে কে জানে।টেনশনে মিথিলার ঠিক মত ঘুম হচ্ছিলো না।কিন্তু ভাবীদের কারো বাপের বাড়ি থেকেই ইফতার আসছে না কেন?মিথিলা বুঝতে পারছে না।বড় ভাবীকে একদিন জিজ্ঞেস করলো ভয়ে ভয়ে।
” ভাবী,আপনার বাবার বাড়ি থেকে কবে ইফতার পাঠাচ্ছে”?
“কিসের ইফতার “? ভাবী অবাক হয়ে জানতে চাইলো।
” না বলছিলাম, অভিরা তো চিটাগাংয়ের মানুষ। আর সেখানকার কালচার তো মেয়ের শশুর বাড়িতে রমযানে ইফতার, কোরবানিতে গরু এসব দিতে হয়”।
“ও আচ্ছা এই কথা”। ভাবী হেসে জানালেন ” তারা কোনো ছেলের শশুড়বাড়ি থেকেই ইফতারি নেয় না।প্রথম প্রথম আমিও বিষয়টা নিয়ে ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু মা বাবা দুজনেই চিটাগাংয়ের হলেও তারা এই কালচারটা খুব অপছন্দ করেন।ছেলেদের শশুড়বাড়ি থেকে নিবে তো দূরে থাক,নিজেরাই প্রচুর পরিমাণ ইফতারি ছেলেদের শশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেন।এই হচ্ছেন আমাদের শশুর শাশুড়ি “।
দুদিন পর মিথিলা অবাক হয়ে দেখলো,তার শশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বাহারি ইফতার পাঠানো হচ্ছে।এত ভালো একটা পরিবারে মা তাকে বিয়ে দিয়েছে দেখে মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে গেলো।
আজকে মিথিলার মন খারাপ। মন খারাপ হওয়ার কারন আজকে তার জন্মদিন, আর এই কথাটা কারো মনে নেই।অভি সকালে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মিথিলা ইচ্ছে করে জিজ্ঞেস করলো ” আজ কত তারিখ গো”?
“কেন?বারো নভেম্বর। ফোনে ডেট দেখাচ্ছেনা তোমার”?অভি টাই ঠিক করতে করতে উত্তর দিলো।
মিথিলা আর কিছু বললো না।বিয়ের পর প্রথম জন্মদিন তার,আর তার জামাই সেটাও ভুলে গেছে।মা ও একটা বার ফোন করে উইশ করলো না।কে জানে মাও হয়তো ভুলে গেছে।ভাবীদের আর কি দোষ দিবো?
ফেসবুকে তো নোটিফিকেশন ও আসার কথা যে তার আজ জন্মদিন। সেটাও কি কেউ দেখেনি?
ধুর,কেউ একটা উইশ ও করলো না।
সারাটা দিন মিথিলার মন খারাপ থাকলো। দুপুরের পর অভির ফোন এলো,
” মিথিলা একটু রেডি হও তো।তোমাকে নিয়ে শপিংয়ে যাবো “।
” হঠাৎ শপিং কি জন্য”?মিথিলা মনে মনে খুশী হলো।অভির কি তাহলে মনে পড়েছে?
“আজকে আমাদের এক কলিগের বউয়ের জন্মদিন। ইনভাইট করেছে।তাই তার জন্য গিফট কিনবো। তোমাকে সাথে নিয়ে যাচ্ছি,তুমি মেয়েদের জিনিস ভালো বুঝবে “।
মিথিলার আবার মন খারাপ হলো। কলিগের বউয়ের জন্মদিনের গিফট কিনবে।অথচ নিজের বউয়ের জন্মদিনটা মনে নেই।
মিথিলা অভির সাথে শপিংয়ে গেলো। মন খারাপ ভাব টা বুঝতে দিলো না।নীল জমিনের উপর সোনালী পাড়ের একটা খুব সুন্দর কাতান শাড়ী কিনলো।
বাসায় ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো তাদের।বাসায় ঢুকে মিথিলা অবাক!
পুরো বাসা বেলুন দিয়ে সাজানো। তাকে ঢুকতে দেখে সবাই এক সাথে ” হ্যাপি বার্থডে ” বলে চিৎকার দিলো।আরে বাবা মাও আছে যে।অভির দিকে তাকিয়ে দেখলো মিচকা শয়তানের হাসি দিচ্ছে!
তার মানে সবাই জানতো আজ তার জন্মদিন।
“সারপ্রাইজ কেমন লাগলো “? বড় ভাবীর মুখেও হাসি।
” আপনাদের মনে ছিলো আজকে আমার জন্মদিন?”মিথিলার অবাক হওয়ার রেশ এখনো যায়নি।
“মনে ছিলো না মানে,আমরা তো এক সপ্তাহ আগে থেকে
প্ল্যানিং করে চলছি”।
” ভাবী জানো”লাবনী বলা শুরু করলো “সবচেয়ে কঠিন বিষয়টা ছিলো তোমার থেকে লুকানোর ব্যাপারটা। আর পুরোটা ই কিন্তু ভাইয়ার প্ল্যান”।
মিথিলা অভির দিকে তাকালো।অভি শাড়ীর প্যাকেটটা মিথিলার হাতে দিয়ে বললো, এটা কিন্তু তোমারই গিফট।
” মা তুমিও কিছু বলো নি”।মিথিলা অভিযোগের সুরে বললো।
“কিভাবে বলবো বল?সবাই মানা করে দিয়েছিলো তোকে
জানাতে”। মিথিলার মা বললো।
মিথিলা কেক কেটে সবাইকে খাইয়ে দিলো।
তার আজ নিজেকে পৃথিবীর সেরা সুখি মানুষ মনে হচ্ছে।যার এত সুন্দর একটা পারিবার এত ভালো একটা হাসবেন্ড আছে,সে তো সুখিই আসলে।
মিথিলা প্রেগন্যান্ট। খবরটা শুনে সবাই কি যে খুশী হয়েছে।সবাই খুব কেয়ার নিচ্ছে তার।যে যখন পারছে এটা সেটা মুখের সামনে নিয়ে খাওয়াচ্ছে।অনিচ্ছা সত্ত্বেও মিথিলার সব খেতে হচ্ছে।
একবার মুখ ফসকে বলেছিলো,বগুড়ার দই খেতে ইচ্ছে করছে”।
তার পরদিনই বড় ভাইয়া বগুড়া থেকে দই নিয়ে এসেছেন।এখন তাকে সকাল বিকেল বগুড়ার দই খেতে দেয়া হচ্ছে।
বড় ভাবী পুডিং বানিয়েছিলো একদিন।খেয়ে খুব মজা পেয়েছিলো মিথিলা।সেটা বলার পর একদিন পর পরই
পুডিং বানিয়ে খাওয়াচ্ছে তাকে।এখন ভয়ে মিথিলা কোনো খাবারের নাম মুখেও নেয় না আর কোন কিছুকে
মজাও বলে না।
পাচঁ মাসের সময় জানতে পারলো মিথিলার পেটে একটা টিউমার আছে।বাচ্চার সাথে সাথে সেটাও বড় হচ্ছে।খবরটা শুনার পর সবাই খুব ঘাবড়ে গেলো। আজকাল সবাই খুব টেনশনে থাকে মিথিলাকে নিয়ে।
দেখতে দেখতে ডেলিভারির ডেট চলে আসে।ডাক্তার জানায় সিজার করতে হবে।সিজারের সময়ই টিউমারটা ফেলে দিতে হবে।কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রচুর ব্লিডিং হবার সম্ভাবনা আছে।এমনকি মৃত্যুর ও ঝুকি আছে।
অপারেশনের দিন।সবাই খুব টেনশনে আছে।মিথিলাকে ওটিতে নেয়া হয়েছে তিন ঘন্টা হলো।
এদিকে অভি অস্থির হয়ে পায়চারি করছে।মিথিলার মা আর শাশুড়ী দোয়া পড়ে যাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার জানালেন মেয়ে হয়েছে।
অভি উদ্ধিগ্ন মুখে জিজ্ঞেস করলো ” মিথিলা কেমন আছে”??
“মা মেয়ে দুজনেই সুস্থ আছে।কেবিনে দেয়ার পর আপনারা দেখা করতে পারবেন”।
স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো সবাই।কেবিনে নেয়া হলো।মিথিলার ক্লান্ত মুখ আনন্দে ঝলমল করছে।বাচ্চাটাকে পেয়ে সবাই যেনো পুতুল পেয়েছে,এমন ভাবে আদর করছে।অভির কোলে দেয়া হলে সে খুশীতে কেদেঁ ফেললো। বাবা হওয়ার অনুভুতিটা সত্যি অসাধারণ!
মিথিলার নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে।এত সুন্দর একটা পারিবার তাকে আল্লাহ দিয়েছেন।যৌথ পরিবারের প্রতি তার ধারণা ই পালটে গেছে এই পরিবারে এসে।যৌথ পরিবার গুলো সত্যি খুব সুন্দর হয়।
যেকোনো হাসি কান্না আনন্দ দুঃখ সব ভাগাভাগি করে নেয়া যায়।মিথিলার চোখের কোনে পানি চিক চিক করতে থাকে।অথচ মুখে হাসি।
মুখে হাসি চোখে জল,দৃশ্যটা সত্যি অসাধারন।
(কিছু মানুষ আছে যারা বউদের কাজের মেয়ে মনে করে।তাদের নিয়েই বেশী লিখা লিখি হয়।তবে সমাজে কিছু ভালো পরিবার ও আছে,যারা বউদের নিজের মেয়ের মত দেখে।আমি সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছি।যৌথ পরিবারের আনন্দের মুহুর্ত গুলো ফুটিয়ে তুলার এক ব্যর্থ চেস্টা)