অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক ছোট্ট ছেলে সবুজ বনের ভেতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলো।
অনেক দূর হেঁটে বনের প্রায় মধ্যখানে সে এসে দাঁড়ালো। একটা গাছের ডালে দেখলো একটা লাল কাগজের টুকরো ঝোলানো। তাতে লেখা, ‘আমি হলাম জাদুর গাছ। বিশ্বাস হচ্ছে না! কিছু বলেই দেখো তাহলে বুঝতে পারবে।’
ছোট্ট ছেলে ভাবতে লাগলো, কী বলা যায়? জাদুর গাছের কাছে কিছু বলতে হলে তো যেনতেন কিছু বলা যাবে না, জাদুর ভাষাতেই কিছু বলতে হবে!
অনেক ভেবেচিন্তে ছেলেটা বললো, ‘এব্রাকাডেব্রা…এব্রাকাডেব্রা…’
কিন্তু এ কথায় জাদুর গাছের কিছুই হলো না।
ছেলেটা বললো, ‘টেন-টা-রা… টেন-টা-রা…’
না, জাদুর গাছের এবারও কিছু হলো না।
তারপর ছোট্ট ছেলে জাপানি ভাষায় বললো, ‘কি কো হিরাকো!’
চীনা ভাষায় বললো, ‘দাকাই শু!’
আরবিতে বললো, ‘ফাত আলসাজারা!’
ফরাসি ভাষায় বললো, ‘ওভরি লারব্রি!’
না, জাদুর গাছের কোন সাড়াশব্দ নেই। এতো চেষ্টার পর একটা পাতাও নড়লো না।
এবার ছোট্ট ছেলে ইংরেজিতে বললো, ‘ম্যাজিক ট্রি, কাম অন…ওপেন!’
না, এবারও কিছু হলো না। পৃথিবীর কোনো ভাষাতেই জাদুর গাছ কাজ করছে না।
বনের মধ্যে ছোট্ট ছেলে ক্লান্ত হয়ে গেলো। চোখের কোণে একটু পানিও জমা হয়েছে। টলটল করছে, এই সেরেছে কেঁদে ফেললো বলে!
তারপর ছেলেটা কান্না জড়ানো গলায় জাদুর গাছকে বাংলায় বললো, ‘প্রিয় গাছ! দয়া করে খোলো।’
বলতে না বলতে গাছের গুঁড়ি থেকে একটা দরজা খুলে বের হয়ে আসলো। কিন্তু ভেতরে সবকিছু অন্ধকার। শুধু একটা অলৌকিক কথা ভেসে এলো, ‘ছোট্ট ছেলে, তোমার জাদুর ভাষা বলতে থাকো।’
ছোট্ট ছেলে উত্তর দিলো, ‘ধন্যবাদ জাদুর গাছ।’
ধন্যবাদ দিতেই গাছের গুঁড়ির ভেতর গুহায় আলো জ্বলতে লাগলো। তার ভেতর পথ দেখাতে লাগলো। ছোট্ট ছেলে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো আর জাদুর জগতে চলে গেলো। সেখানে সে অনেক খেলনা আর চকোলেট পেলো।
বাড়ি ফিরে এসে ছোট্ট ছেলে তার সব বন্ধুদের ডাকলো। পুরো কাহিনী খুলে বললো। তারপর তাদের নিয়ে জাদুর গাছের তলে জাদুর রাজ্যে গেলো।
সেই থেকে মানুষ তার দু’টি জাদুর ভাষা শিখে গেলো। সেগুলো হলো- ‘দয়া করে’ ও ‘ধন্যবাদ’।