নিলাম্বরীর মায়াজালে

নিলাম্বরীর মায়াজালে

মা,রিমি কেউ একজন আমার কাপড় বিছানার উপর রেখে দিয়ো।আমি শাওয়ার নিতে যাচ্ছি(চিৎকার করে বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম)।
আমার পরিচয় দিয়ে নেই,আমি আবির।একটি প্রাইভেট ব্যাংকের সাব ম্যানেজার।আমার একটা গুণের কথা জানিয়ে রাখি তা হল আমি আবার খুব ভাল বাথরুম সিঙ্গার।বাথরুমে গেলে এড শিরান,আরিজিৎ সিং সবাইকে টক্কর দেওয়া তখন আমার বা হাতের বিষয়।বাথরুমে শাওয়ার নিতে গেলেই আমার এই গুণ বের হয়।অফিস থেকে ফিরেই শাওয়ার নেয়া আমার রুটিনের প্রধান কাজ।
আজকে ভালভাবে সঙ্গীতচচর্া করলাম।এখন বের হওয়ার পালা।
-এই আ…পপপ….নি কে?আমার রুমে কেন ঢুকেছেন?লজ্জা করে না পর পুরুষের ঘরে ঢুকতে?(আমি)
-আপনার লজ্জা করে না মেয়েদের সামনে এত ছোট কাপড় পরে থাকতে?(মেয়েটি)
-আমি তো আমার রুমে ছিলাম।আপনি আমার রুমে কি করছিলেন?(আমি)
-আপনার রুম আর আপনার রুম থাকবে না।আজকাল নিজের জিনিষপত্র,নিজের রুম অন্যের ভাবতে শিখুন।(মেয়েটি)
-আসছে আমার পন্ডিত রে!নিজের জিনিষরে নিজের বলবো না তো কি অন্যের জিনিষকে নিজের বলে দাবি করব?(আমি)
-অন্যের জিনিষকে বলা লাগবে না।শুধু আমার সব কিছুই আপনার(মেয়েটি)।
-এই মেয়ে আমি এত সময় ধরে তোমার সাথে কথা বলছি কেন?মা,রিমি তোমরা কই?(আমি সবাইকে চিৎকার দিয়ে ডাক দিলাম)
-এই ছেলে বড় হবি কবে?এখন মা,বোনের আঁচল ধরে থাকার বয়স আছে নাকি?তোমার পরিবারের কেউ বাসায় নাই।সবাই বিয়ে বাড়ি গেছে।রেডি হয়ে নাও আমিও তোমার সাথে যাব।(মেয়েটি)
-এহহ।শখ দেখে বাঁচি না!তোমারে আমি চিনি না।আর তাই তোমারে আমি আমার সাথে নিব না।(আমি)
-থাপ্পর খাওয়ার খুব ইচ্ছে জাগছে মনে,না?(মেয়ে)
-এই মেয়ে তুমি এত বেয়াদব কেন?দাঁড়াও আমি মাকে ফোন করছি।তুমি সহ তোমার পুরো গুষ্টির খবর পেয়ে যাব।কিন্তু আমার মোবাইলটা কোথায়?(আমি)
-আপনার বিয়ে করে ফেলা উচিৎ।তাহলে আপনার মার কষ্ট টা কমে যাবে।(মেয়েটি)
-আমার বিয়ে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না(বলেই আমি মাকে ফোন লাগালাম)।
আমি:মা তোমরা আমায় রেখে বিয়েতে চলে গেলে কেন?
মা:নেহা আছে তো।তর যা প্রয়োজন ওকে বললেই হবে।
আমি:মা,নেহাটা কে?
মা:তর এত কিছু না জানলেও চলবে।তুই গাড়ি করে নেহাকে সাথে করে নিয়ে আয়।আর যদি না আনিস তাহলে তর দুটো পা ভেঙ্গে দিব(রেগে গিয়ে)।
আমি:আচ্ছা ঠিকাছে।রাখছি এখন(করুণ কণ্ঠে)।
আমি:তোমার নাম নিহা?
নিহা:আমাকে বললে আমি এমনিতেই নাম বলে দিতাম।তখন এত বকা খেয়ে নাম জানা লাগতে না।
আমি:শোন মেয়ে আমাকে বকা দেয়ার মত কোন মানুষ এখনও জন্ম নেয়নি।
নিহা:তা মুখটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।
আমি:মা বলেছে তুমি যেন বিয়েতে আগে চলে যাও।ওখানে সবাই তোমার জন্য ওয়েট করছে।
নিহা:তা মি.বাটপার,বাটপারি রাখেন আর রেডি হয়ে আমায় নিয়ে চলেন।অলরেডি অনেক লেট হয়ে গিয়েছে।
আমি:এই যে আমি বাটপার নাহ।মেয়ে বলে শুধু নিয়ে যাচ্ছি।
নেহা:এই তো বাছা লাইনে আসছো।এখন শুধু জলদি রেডি হয়ে নাও।
উফ্ফও কি জালায় না পরলাম।এমনিই আমি কোন মেয়ের ধারেকাছে যাই না।আর আজকে এক মেয়ে আমার বাসায়,আমার রুমে এসে আমাকে ধমকাচ্ছে!!!
অবশ্য মেয়েটা অনেক সুন্দর।আমার কিন্তু সুন্দর মেয়েদের তেমন পছন্দ হয় না।কারণ,এরা সবসময় অহঙ্কারি হয়।নিহাও খুব সুন্দর মেয়েদের দলে পরে।মেয়েটার দিকে একবার তাকালেই কেউ প্রেমে পরবে।নিহাকে দেখে আজ বুঝে গিয়েছিলাম নীল রং কেন সবার কাছে প্রীয়।নীল রংয়ের চুরি আর নীল রংয়ের শাড়িতে তাকে অপরূপ লাগছিল।তবে এসব কিছু ছাপিয়ে নিহার ঠোঁটের কাছে থাকা তিলটা হল মায়াবী।ওই তিলটা তার সৌন্দর্য্যতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
রেডি হওয়া শেষ কিন্তু এক ঝামেলায় পরলাম।আমি আবার টাই বাঁধতে পারি না।আসলে সবসময় মা নাহলে ছোট বোনটা টাই বেধেঁ দেয়।সিদ্ধান্ত নিলাম টাই হাতে নিয়ে বিয়ের সেন্টারে যাব আর ওখানে বাবাকে দিয়ে টাই বাধিঁয়ে নিব।
রেডি হওয়ার পর…
আমি:আপনি নিচে নেমে পরুন।আমি দরজা লক করে আসছি।
নেহা:কিন্তু আপনি তো পুরোপুরি রেডি হননি।আর টাই হাতে কেন?
আমি:আসলে আমি টাই বাঁধতে পারি না।
নেহা:তাহলে অফিসে যাওয়ার সময় কে বেধেঁ দেয়?
আমি:মা নাহলে রিমি।
নেহা:আমি বেধেঁ দেই?
আমি:আপনি পারেন?
নেহা:হুম।
আমি:তাহলে এই নিন(বলেই মেয়েটির হাতে টাইটা তুলে দিলাম)।
কিন্তু আমি একট লম্বা বলে মেয়েটার অসুবিধা হচ্ছে।তাই নেহা নিজে থেকে আমার দুই পায়ের উপর পা রেখে টাই বেধেঁ দিচ্ছে।আমার একটু অস্বস্থি লাগছিল।কিন্তু ফাজিলটারে দেখলাম মুচকি মুচকি হাসতেছে।

গল্পের বিষয়:
শিক্ষনীয় গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত