ভাইয়া তুই যে প্রেম করিস, তখন কোন সমস্যা নেই। যখন আমি প্রেম করব তখন কিন্তু তুই কিছু বলতে পারবিনা। আর যদি কিছু বলিস তাহলে তোর কিন্তু প্রেমের বারোটা বাজাবো? এই সকাল সকাল আমার ঘুমটা ভাঙতে তুকে কে বলছে? আর আমি প্রেম করলে তোর সমস্যা কোথায়? কে আর বলবে? আমি নিজেই ভাঙছি। আমার তো কোন সমস্যা নেই, তবে আমি প্রেম করলে তখন কিন্তু তুই কিছু বলতে পারবিনা। আচ্ছা এখন বল তুই কলেজে যাবি কখন? আজ কলেজে যাবনা, আর গেলে তুকে সাথে নেবনা। কারন তোর জন্য একটা মেয়ে আমার দিকে ভয়ে তাকায়না।তাতে তোর জন্য ভালোই হয়। সবাই আমাকে ভয় করে।
তোকে ভয় করলে আমার কি লাব? লাব আছে তো, কারন সব মেয়েরা তোর দিকে কুনজর দিবেনা। আচ্ছা যা ভাই আমি আজ তোর জন্য একটা রাজকন্য খুঝে দিব। সত্যি বলছিস, খুঝে দিবি? হ্যা সত্যিই বলছি খু্ঝে দেব। এখন তারা তারি করে রেডি হয়ে নিছে আয়। তানা হলে আজও ম্যাডামের কাছে বকা শুনতে হবে। তোর এই টুকু শরিলে বকা লাগে? আর তোর এই ভাইটার জন্য একটু বকা শুনলে কি হয়? ভাই আমার লক্ষী সোনা, তারা তারি করে রেডি হয়ে নে। আচ্ছা ঠিক আছে তুই আমার ব্যাগটা গুচিয়েদে। আমি ফ্রেসহয়ে আসছি। এই তোর ব্যাগ তুই নিজে গুচিয়েছিস কোন দিন। যেদিন আমি থাকবনা, সেদিন তুর ব্যাগটা কে গুচাবে। আমার রাজকন্যা এসে গুচিয়ে দিবে। বলে আমি ফ্রেসহতে গেলাম, একটু পরিচয়টা দিয়ে নেই। আমি শ্রাবন ইসলাম, এতক্ষন যার সাথে কথা বলছি, সে হচ্ছে আমার ছোট বোন তিসা, ওর বয়স (৮)আট বছর এভার ক্লাস তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ে। আমরা দুই ভাই বোন, আব্বুর নিজের ব্যাবসা আছে, আর আম্মু বাড়ীতে থাকে। আমি এভার অনার্স দ্বীতীয় বর্ষে পড়ি।
আমার একটা গ্রালফ্রেন্ড আছে নাম তার ফুল, তবে একদম ফুলের মত নরম নয় কিন্তু। তবে আমি বাড়ীতে থাকলে ফোন করেনা, কারনটা একটু পর ওর মুখ থেকে শুনে নিয়েন। যাক আমি ফ্রেসহয়ে এসে দেখি, তিসা আমার সব কিছু গুচিয়ে দিয়ে গেছে। আমি রেডি হয়ে নিছে গিয়ে নাস্তা করতেছি। আর তিসা বসে বসে আমার উপড় মেজাজ গরম করছে, কিরে আর কতক্ষন লাগবে তোর? আম্মু তুমি ওকে কিছু বলনা কেন? আজ বাদে কাল ওর বউ আসবে, তখন দেখবে তোমার মান সম্মান সব প্লাষ্টিক করবে। তুই আমার নামে আম্মুর কাছে নালিশ করছিস। দ্বাড়া আজ তোকে নিয়ে বিক্রি করে দিবো পাগলটার কাছে। আমাকে বিক্রয় করতে পারবিনা, বরং আমি তুকে বিয়ে করিয়ে দিব দিনা আন্টির মেয়েটার সাথে। এইনা এই মেয়ে যে মোটা আমার শরিরের উপড় পড়লে আমি শেষ। এখন তোদরের ঝগড়া শেষ হয়ছে? আম্মু হ্যা হয়ছে (তিসা) আমি চল সারপোকা, (আমি) ভাইয়া একটু শোন,(তিসা) আবার কি হল?(আমি) একটু বস এখানে, আমি বসতে ওর চোখ থেকে কাজল এনে আমার কপালে হালকা করে লাগিয়ে দিয়ে বলে, কোন বদ নজর জেন না লাগে।(তিসা) ওর এমন কান্ড নতুন নয় কেন? আম্মু আমাদের দুষ্টমি গুলো দেখে অনেক আনন্দ পায়।
এভার ঠিক আছে মহারানি চলেন, যাওয়া যাক।(আমি) তারপর তিসাকে বাইকে বসিয়ে ওর মাথায় হ্যামলেট পড়িয়ে আমি নিজে পড়ে বাইক চালিয়ে যাচ্ছি। তারপর তিসাকে স্কুলে নামিয়ে দিলাম, আমি চলে আসছি একটু খানি তখনি। ভাইয়া তুই আজও ভূলে গেলি(তিসা) আমি সরি বোন আমার, এই কান ধরলাম, আর ভূল হবেনা, এই নে উম্মা, পাগলিটাকে একটু আদর করে দিয়ে আমি কলেজে চলে এলাম। এসে দেখি ফুল রেগে বেগে আমার দিকে আসতেছে। এসে আমাকে বলতেছে,, তোমার মোবাইলটা কে রিসিব করে প্রতিদিন? (ফুল) এইটা নতুন মনে হচ্ছে কেও রিসিব করছে? এর আগে মনে হয় কেও রিসিব করেনি কেও?( আমি) না তারপরও তোমার বোন আজকে আমাকে কি বলছে জানো? (ফুল) না বললে কি করে জানবো?(আমি) বলছে তোমার জন্য নাকি রাজকন্যা খুঝে আনবে, আর আমি যদি আর কোন দিন ফোন করি, তাহলে আমার ভাইয়ে নাম্বারটা জেন আগে ওকে দেয়।(ফুল) মানে তোমার ভাইয়ে নাম্বার তিসা চাইছে কেন?( আমি)
বলছে আমার ভাইয়ের সাথে তোমার বোন প্রেম করবে, তারপর তোমার সাথে আমাকে প্রেম করতে দিবে। (ফুল)
আসলে ও একটা মেয়েকে আমার জন্য পসন্দ করছে, মেয়েটাকে তিসা রাজকন্যা বলে ডাকে, আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। কিন্তু আমি দেখা করতে যাইনা, তাই আমার মোবাইলে যে মেয়ে কল করে তাকে বলে ওর ভাইয়ের নাম্বার দিতে। তুমি এই নিয়ে কিছু মনে করোনা, আসলে তিসা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমার এক মাত্র রাজকন্যা বোন বলতে পারও।(আমি) আমি জানি তিসা তোমাকে খুব ভালোবাসে, আর তার জন্য আমি তোমাকে ফোন কম দেয়।(ফুল) এবার আপনারা বুঝতে পারছেনত কেন ফুল আমাকে ফোন কম করে। ঠিক আছে চলো ফুল ক্লাসে যায়? তারপর আমরা ক্লাস করতে গেলাম, সবগুলো ক্লাস করে, ফুলের সাথে একটু গুড়ে, তিসাকে নিতে ওর স্কুলের সামনে এলাম। গিয়ে দেখি তিসা একটা ছোট ছেলের সাথে কথা বলছে বেঞ্চে বসে। কাছে যেতেই,, ভাইয়া তুই একদিন যদি সময় মত আমাকে নিতে আসতি তাহলে আমি ধন্য হতাম। তারপর ঐ ছেলেটার কাছে গিয়ে কানে কানে কি জেন বলল।
তিসা ছেলেটা কে?(আমি) ও আমার ক্লাসমেট আবার বুন্ধ(তিসা) ঠিক আছে চল, তারপর তিসাকে বাইকে ওঠিয়ে নিয়ে বাড়ীতে এলাম। তিসাকে নামিয়ে বাইকটা রেখে, আমি বাসায় গিয়ে ফ্রেসহয়ে নিলাম। এভাবে চলছে আমাদের ভাই বোনের দুষ্টমি, আজ শুক্কুরবার কলেজ বন্ধ মনের সূখে ঘুমায়তাছি। হঠাত করে কানের কাছে এসে আসতে আসতে করে বলছে। ভাইয়া ওঠ আজ তোকে নিয়ে আমি একটু গুড়তে বের হবো। (তিসা) সারপোকা তুই ধুরে যা, আমাকে একটু ঘুমাতেদে।(আমি) প্লিজ ভাই আমার সাথে আজকে একটু চল? আর বলবনা।(তিসা)তুই এমন করে বলছিস কেন? ঠিক আছে, আমি রেডি হয়ে আসছি। তারা তারি করে রেডি হয়ে নিছে গেলাম, ভাইয়া তুই আজ নেবি ব্লু স্যাটটা পড়। (তিসা) আবার কাপড় চেন্জ করব, বলে গিয়ে স্যাটটা পড়ে এলাম। আমার মোবাইলটা নিয়ে একটু পর পর কাকে জেন ফোন করে বলছে তারা তারি আসতে। তুই কাকে আসতে বলছিস?(আমি) যাকে খুশি তাকে, তুই তারা তারি করে শিশু পার্কে চল।(তিসা)
যাচ্ছি তো, তারপর তারা তারি করে শিশু পার্কে গেলাম। তারপর শিশু পার্কে ভীতরে ডোকলাম। আমি একটু ভীতরে তাকিয়ে দেখি ফুল পার্কে এসেছে। ফুলের সাথে ছোট একটা ছেলেও আছে। তখনি,, তিসা তারা তারি চল, আমরা এখান থেকে বেরিয়ে যায়। আমি তাকিয়ে দেখি তিসা এখানে নেই, তিসাকে খুঝতে লাগলাম। তখনি,, ভাইয়া আমি এখানে আছি এদিকে আয়। (তিসা) আরে তিসা ফুলের কাছে গেছে কেন? আমি কাছে যেতেই। ভাইয়া তুই এই রাজকন্যার সাথে প্রেম করবি? আমি তোর জন্য এই রাজকন্যাকে ঠিক করেছি। ফুল তুমি তিসাকে আগে থেকে চিনো? হ্যা কিন্তু তোমার বোন যে আমি জানতামনা। ভাইয়া তুই আগেই রাজকন্যা আপুকে চিনতি? (তিসা) হ্যা আমি তো ফুলকে ভালোবাসি। তুই সত্যিই অনেক ভালরে,উম্মা, ভাই আগে আমার কথাটা শোন, তারপর এত খুশি হইবি। হ্যা বল, আমি তোর একার জন্য পসন্দ করিনি। আমারটা পসন্দ করেছি, এই রিয়াজ এদিকে আয়, আমার বড় ভাই ওনাকে সালাম দে।
আস্সালামু আলাইকুম (রিয়াজ) সালামের উত্তর নিয়ে, আমি তিসাকে বলছি এই জন্য তুই আমার রাজকন্যা পসন্দ করেছিস। (আমি) ঠিক তানা, আগে তোর জন্য আপুটাকে পসন্দ করছি, তাপর রিয়াজকে পটায়ছি, কারন আপুটা যদি তুকে কষ্ট দেয় তাহলে আমি রিয়াজকে কষ্ট দেব। তাহলে আর আপুটা তোকে কষ্ট দিতে পারবেনা। আর যদি আপুটা তোকে ছেরে চলে যায় তাহলে আমিও রিয়াজকে ছেরে চলে যাবো। তুই যতটা কষ্ট পাবি ঠিক রিয়াজও ওতটা কষ্ট পাবে। (তিসা) আমি তিসার কথা গুলো শোনে চোখ দিয়ে পানি চলে আয়ছে, তিসাকে বুকে জড়িয়ে অনেক আদর করে দিলাম। ফুল ওর কথা গুলো শোনে অবাক হয়ে আছে। তারপর, রিয়াজ শোন আমাকে অনেক ভালোবাসবি কিন্তু। অন্য মেয়ের দিকে তাকালে চোখ তুলে ফেলব। রিয়াজ ছোট ছেলে হয়ে ওর দিকে এমন ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে বলে ঠিক আছে তাকাবোনা।
ফুল আপু তোমাকে বলি, আমার ভাইয়া অনেক ভালো তবে, একটু অলস তাছারা অনেক ভালো। আমার ভাইয়াকে একটু কষ্ট দিলে আমি কিন্ত রিয়াজকে দ্বীগুন কষ্ট দেবো। আর শোন ভাইয়া তোরা দুজনে কোথাও গুড়তে গেলে আমাদের সাথে করে নিয়ে যাবি। আর ফুল আপু তোমাকে আমি এখন থেকে ভাবি বলে ডাকবো। আর আমি কিন্তু তোমার ননদ নয় শুধু ছোট ভাইয়ের বউ কিন্তু। সুতুরাং আমাকে সব কিছু শিখাই দিবে। হইছে বুড়ি এখন চলেন বাড়ীতে যায়। আগে আরেকটা কাজ কর। (তিসা) আমি কি কাজ বাকি আছে? (আমি) তুই ফুল আপুকে একবার জড়িয়ে ধর আমি রিয়াজকে নিয়ে একটু ঐদিকে তাকায়। (তিসা)
এভার আমি আর ফুল দুজনে অবাক। কি আর করার অবশেষে ফুলকে জড়িয়ে ধরলাম। এভাবে চলছে আমাদের ভাই বোনের মিষ্টি ভালোবাসা। আমি দুই মিনিট ফুলের সাথে কথা বললে তিসা রিয়াজের সাথে দুই মিনিট কথা বলে। ওর কান্ড দেখে আমার অনেক হাসি পায়। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব ভাই বোনের ভালোবাসা। আর এভাবে কাটুক ওদের জীবন।