বিড়ালের গলায় ঘণ্টা

বিড়ালের গলায় ঘণ্টা

এককালে এক গুহায় একদল ইঁদুর বাস করত। একদিন এক হুলো বিড়াল তাদের সন্ধান পেল। সঙ্গে সঙ্গে তার চোখমুখ চকচক করে ওঠে। জিবে দিয়ে লাল ঝরে। ‘যাক, অনেক দিন পরে আজ কিছু সুস্বাদু আমিষ ভোজন করা যাবে!’ মোচ নাড়ায় আর মনে মনে কথা বলে হুলো বিড়াল।

ওদিকে ইঁদুরগুলো প্রাণ হাতে করে থাকতে থাকতে আধমরা। বারবার খালি মিটিংসিটিং করে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রাণ রক্ষার উপায় খোঁজে। উপায় আর মেলে না। গুহা ছেড়ে যে পালিয়ে যাবে, তারও উপায় নেই। বিড়ালটা যে গুহার মুখেই শুয়ে থাকে! খিদে লাগলে একটা-দুইটা ইঁদুর ধরে মজা করে খায়।

‘কী যে বিপদ হল! আমরা কি নির্বংশ হব?’ বিড়ালদের গা কাঁপে। কথাও বলতে পারে না ঠিকমত।

তরুণ ইঁদুরগুলো একেকজন একেকটা পরামর্শ দেয়। সেসব শেষ পর্যন্ত কোনো কাজে লাগে না।

‘পেয়েছি! পেয়েছি!’ অনেক দিন পরে একদিন হঠাৎ বলে উঠল এক মধ্যবয়স্ক এক ইঁদুর, ‘একটা সত্যিকার উপায় পেয়ে গেছি!’ বুদ্ধিমান বলে এই ইঁদুরটার খুব খ্যাতি ছিল। ফলে সবার চোখ চকচক করে উঠল।

‘উপায়টা হচ্ছে ওই বিড়ালটার গলায় একটা ঘণ্টা বেঁধে দিতে হবে।’

‘হুররেএএএ!’ হইচই করে চিল্লিয়ে উঠল প্রায় সব বিড়াল। মধ্যবয়স্ক বিড়ালের খ্যাতি বেড়ে গেল আরও অনেক।

‘কিন্তু এটা তো করা যাবে না!’ দলপতি বলল, ‘আমাদের অন্য কোনো উপায় খুঁজতে হবে।’

সবাই হতাশ। এর-ওর মুখের দিকে তাকাতে লাগল। একজন শেষ পর্যন্ত বলে উঠল, ‘কেন আমাদের অন্য উপায় খুঁজতে হবে? ঘণ্টা বাঁধলেই তো উত্তম হয়। ঘণ্টার আওয়াজ শুনে আমরা সবাই পলাতে পারব!’

‘তা পারব। কিন্তু ইঁদুরের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে?’

সবাই চুপসে গেল। নতুন চিন্তা-ভাবনা শুরু করল।

সারকথা: বাস্তবায়ন করতে হলে নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে হয়। না জানলে সেটা হয় অবাস্তব চিন্তা।

গল্পের বিষয়:
শিক্ষনীয় গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত