ফিহা ক্লাস ১০ এ পড়ে। তারা একটা সুন্দর বাসায় ভাড়া থাকে। তাদের বাসার অনেক গুলা মেয়েদের সাথেই সে মজা, দুস্টুমি করে।
সেগুলা কিছু ছোট কিছু আবার একটু বড়।
আর তাদের এই গ্রুপের সবচাইতে বড় হলো তাদের বাড়িওয়ালার মেয়ে “টিনা আপু”.. সবাই বলে তার নাকি বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে।
টিনা আপু নাকি নিজে থেকেই তার বিয়ের ঘর আসলে ভেংগে দেয়।
.
একদিন রাতে হঠাত কারেন্ট চলে গেছে। সব সময় কারেন্ট চলে গেলে বাড়ির সব মেয়েরা উঠানে বসে “গানের কলি” নামের একটা খেলা খেলে।
ফিহা সেখানে গিয়ে দেখে “টিনা আপু” নেই।
টিনা আপুর রুমে গিয়ে ফিহা অবাক।
টিনা কাদছে।
ফিহা:: আপু তুমি কাদছো কেন?
টিনা:: কিছু না রে এমনি।
ফিহা:: চলো খেলবা না??
টিনা:: না রে আজকে ভালো লাগছে না
ফিহা:: আপু একটা কথা বলি??
টিনা:: বল
ফিহা:: অনেক দিন যাবত বলবো বলে ভাবছিলাম। আপু তুমি কেন তুমার বিয়ে ভেংগে দাও??
টিনা:: পিচ্চি পিচ্চির মত থাক।যা বাহিরে গিয়ে খেল।
ফিহা:: আপু বলো না আমাকে।
টিনা:: তুই শুনে কি করবি??
ফিহা:: হয়তো তুমি যেই ভুলটা করেছো সেটা থেকে আমি সাবধান থাকবো।
টিনা:: আচ্ছা তাহলে শোন।
.
আমি তখন সবে মাত্র কলেজ যাচ্ছি। রাস্তা দিয়ে হেটেই যেতাম। রাস্তায় দেখতাম একটা ছেলে প্রতিদিন ফলো করতো।
প্রথমে ভাবতাম খারাপ ছেলে।তাই এড়িয়ে যেতাম।একদিন যানতে পারলাম ছেলেটার নাম “রিপন” এবং আমারি একটি কলেজ বান্ধবীর ভাই।
সেই বান্ধবী আমার সাথে এসে পরিচিত হয়ে তার ভাইয়ের সম্পরকে সব বললো। সব শুনে দেখলাম ছেলেটা খুব ভালো।
তারপর সে রাস্তায় অনেক ধরনের সারপ্রাইজ দিত। তবুও আমি রাজি হই নি। আমার বান্ধবীটা আমাদের মাঝে চিঠি আনা নেয়া করতেন।
তারপর একদিন রিপন আমার পথ আগলে দাঁড়ালো।
রিপন:: আমি এত ভালোবাসি। কোনো দাম নেই??
টিনা:: আমার পরিবার এসব মানবে না।
রিপন:: আমি মানাবো। দরকার হলে মরে যাবো। তবুও তোমাকে চাই।
টিনা:: এসব সিনেমার ডায়লগ সিনেমায়ই ভালো লাগে।
.
তারপর রিপন পকেট থেকে একটা ব্লেড বের করে।এবং হাতে আছর মারা শুরু করলো। এবং আমি চিতকার করা শুরু করলাম।
কিছুক্ষনের মাঝে রিপন অজ্ঞান হয়ে গেলো। এবং রাস্তার মানুষ রিপনকে নিয়ে হাসপাতালে গেলো। আমিও সাথে গেলাম। রিপনের ট্রিটমেন্টের পর।
ও সুস্থ হওয়ার পর আমি দেখা করতে গেলাম।
.
রিপন:: ভালবাসবা??
টিনা:: জোর করে রাজি করাবেন??
রিপন:: তুমি আমাকে ভালোবাসো।তা না হলে গত ৩দিন কেদেছো কেন??
টিনা:: শয়তান। এসব কেন করেছো তুমি??
রিপন:: এই হাসি মুখটা দেখার জন্য।
টিনা:: পাগল একটা।
.
এভাবেই শুরু হয়েছিলো আমাদের ভালোবাসা।তারপর প্রতিদিন দেখা করা। রিকশাতে ঘুরতে যাওয়া। অনেক মজা।
আমাদের খুব ভালোই কাটছিলো দিন কাল। আমরা দুজন দুজনকে কথা দিয়েছিলাম “আমরা আমাদের ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করবো না”.
রিলেশন ছিল ১০ মাস। এই ১০ মাসে আমাদের ৪বার শারীরিক সম্পর্ক হয়।
তারপর একদিন জানতে পারি। রিপনের আরও অনেক গার্লফ্রেন্ড আছে। অনেক খারাপ কাজ করে।অনেক খারাপ জিনিস খায়।
সেদিন থেকেই সে আমার সাথে আর যোগাযোগ করে না। আমি তাকে কথা দিয়েছি তাই তাকে ছাড়া আমি আর কাউকেই বিয়ে করতে পারবো না।
এবং আমি তাকে এখনো ভালোবাসি।
.
ফিহা;:: কিন্তু আপু এটা তো তুমার ভুল ধারনা।
টিনা:: না
ফিহা:: দেখো গিয়ে সেই কুকুরটা বিয়ে করে সুখে আছে।
টিনা:: গালি দিস না।
ফিহা:: আপু এটা তুমার ভুল ধারনা।আমি তোমাকে আমাদের আরবি আন্টির কাছে নিয়ে যাবো।
.
তারপর একদিন ফিহা টিনাকে তাদের আরবি আন্টির কাছে নিয়ে যায়।
তখন তাদের আরবি আন্টি বলে “দেখো অনেকে তো ফোনে দুস্টুমি করে কবুল বলে কিন্তু তাই বলে কি বিয়ে হয়ে যায়?? সেরকমি। এটা তুমার ভুল ধারনা”
.
তারপর ফিহা তার মন পালটে ফেলে। মনকে শক্ত করে।
এবং ফিহার খালাতো ভাই “মিরাজের” সাথে টিনার বিয়ে হয়। টিনা খুব সুখেই আছে। মিরাজ খুব ভালো ছেলে।
খুব আনন্দেই তাদের দিন কাটে। অনেক দিন পর তাদের একটা বাচ্চা হয়। তারা খুব ভালই থাকতে থাকে।