“আমার দুই হাতে ছয়টা করে মোট বারটা আঙ্গুল।”, নিজের হাতের দিকে ইশারা করে বললো পাঁচ বছরের ছেলেটি।
চোখ বড় বড় করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে ক্যাথেরিন। যেন বিশ্বাস করতে পারছে না।
“দেখি, তোমার হাতদুটো সোয়েটারের ভেতর থেকে বের করো তো।”, ক্যাথেরিন মুখে বিষ্ময় ধরে রেখে বললো।
ছেলেটি তাকে প্রতিনিয়ত অবাক করে দিচ্ছে। মাত্র একদিন হলো হাসপাতালে এসেছে ছেলেটি, সাথে আর কেউ আসেনি। প্রথমদিন শেষের আধঘন্টা ডিউটির সময় ছেলেটি বলেছিলো ও আমেরিকা যেতে চায়। ওখানে নাকি তার বাবা-মা আছে। ক্যাথেরিন তখন ওর কথাটা কানে নেয়নি। আজ আবার বললো ওর নাকি দুইহাতে বারটা আঙ্গুল। অবাক করার মতোই ঘটনা, তাই সে দেখতে চায়। ছেলেটা কতটুকু সত্যবাদী?
ছেলেটা কিছুক্ষণ ইতস্তত করলো। সে তার হাতদুটো ক্যাথেরিনকে দেখাতে চাইছে না। বারবার পেছনদিকে সরিয়ে নিচ্ছে। ক্যাথেরিন জোর করে হাতদুটো নিজের কাছে টেনে নিলো। ছেলেটা শেষমেশ হাতদুটো স্থির করেছে। সোয়েটার টেনে সরাতেই ব্যান্ডেজে বাঁধা হাত দুটি দেখা গেল। দুটি হাতই কব্জি থেকে বিচ্ছিন্ন। ক্যাথেরিন ছেলেটির দিকে তাকালো। ছেলেটি বললো, “ছিলো, এখন নেই।”
ক্যাথেরিন টেবিল থেকে পেশেন্ট ফাইলটি বের করলো। ছেলেটির নাম আয়মান। বোমার আঘাতে দুটো হাতই উড়ে গেছে। একবার আয়মানের মায়াবী চোখদুটোর দিকে তাকিয়ে আবার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। হাঁটতে হাঁটতে চলে এলো জানালার সামনে। রোদ উঠেছে অনেক আগেই। ফিলিস্তিনের আজকের সকালটা খুব সুন্দর।