এক অন্য শৈশব

এক অন্য শৈশব

ছোট্ট -ছোট্ট বাচ্চা গুলো পার্কে খেলাধুলা করছে..আর ওদের মায়েরা তাদের বিভিন্ন ভঙ্গির ছবি মোবাইল বন্দি করছে.. আর তার সাথেই চলছে নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা-ও পিএনপিসি।
কোথাথেকে একটি ময়লা -কাঁধ ছেঁড়া জামা পরা আট-নয় বছরের রুগ্ন মেয়ে ওদের সামনে এসে হাত পেতে বলে…”দুটো পয়সা দেবেন সকাল থেকে কিছু খায়নি।”আর এতেই যেন ছন্দপতন হল।
রেগে আগুন হয়ে উঠলো কেউ-কেউ .. কেউ বলল..”এ এক নতুন বিজনেস..বিনা পুঁজির বিজনেস “। কেউ আবার”যা..ভাগ এখান থেকে যত সব উৎপাত..যেই দেখল অনেক লোকজন..ওমনি হাত পেতে চলে এল”।
ইরা একটু বিরক্ত হয়ে সবাইকে চুপ করতে বলল..”দেখুন মেয়েটার চোখে জল,প্লিজ একটু চুপ করুন আপনারা”।
ইরার এই বাচ্চা মেয়েটি কে দেখে কষ্ট হল..ওর হাতে দশটা টাকা দিয়ে বলল “কাঁদিস না এইনে..কিছু কিনে খাস।”মেয়েটি চোখের জল মুছতে-মুছতে চলে গেল।
একটু অন্যমনস্ক হয়ে ইরা দাঁড়িয়ে ছিল..ওরনায় একটা টান অনুভব করতেই পিছু ফিরে দেখে সেই মেয়েটি।একটু অবাক হয়ে ইরা জিজ্ঞেস করে..”কিরে ফিরে এলি যে… কিছু বলবি তুই?কী নাম তোর?”
আপ্লুত হয়ে মেয়েটি বলে ওকে সবাই টগর বলে ডাকে। টগর ইরার কাছে জানতে চাই..”তোমরা ওদের এত ছবি তুলছ কেন?”
মিসেস সেন শুনেই বলেন..”নাও এবার জবাব দাও… কেন তুলছ…এত্ত সাহস…এদের মুখ দিলেই মাথায় চড়ে বসে।” ইরা ওনার কথায় কান না দিয়ে ওকে বলল”ফেসবুকে দেব ওদের ছবি,তাই তুলছি”।
টগর..’ও… ‘কিছু না বুঝেই টগর বলে..”ওই ফেজবুখে দিয়ে কি হবে?”
ইরা..”সবাই ওদের ছবি দেখতে পাবে..কতো কিছু বলবে…এই জন্যই দেব রে..যারা অানেক দূরে রয়েছেন ওদের সামনে থেকে দেখতে পাচ্ছেনা ওরা ওদের ছবি দেখবে।”
টগর..”যারা দূরে থাকে ওরাও দেখতে পাবে!!!!”
টগরের চোখ দুটো চকচক করে উঠলো…”আমার একটা ছবি তুলে ওই ফেজবুখে দিবা মাসি..?”
মিসেস সেনরা হোহো করে হেসে উঠলো..ইরা না হেসেই জানতে চাইল ,”কেনরে টগর…..?”
টগর..”ওই ফেজবুখে আমার ছবি দেখে যদি আমার বাপ-মায়ের আমার কথা মনে পড়ে.. আমাকে ঘরে লিয়ে যায়।”
(কিছুটা উড়ে আসা আর বাকিটা নিজের ভাষা)

গল্পের বিষয়:
অন্যান্য
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত