-কেনো ডেকেছেন এখানে। (জয়)
-কেনো ডেকেছি সেটা তো জানবেন
কিছুক্ষনের মধ্যেই।(অনু)
আপনার নামটা জয় না।
-হ্যাঁ।
-আপনার সাথেই তাহলে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।
(অনু)
-হ্যাঁ।
-আপনার মতন ছেলের সাথে বাবা কেনো যে আমার বিয়ে ঠিক করল জানিনা । আপনার মতন ছেলেরা এমনি ভালো সুন্দর মেয়েদেরকে বিয়ে করার জন্য কুকুরের মতন লেগে থাকেন। বাবা মাকে কোনরকম সাঁতপাঁচ বুঝিয়ে আমাদের মতন মেয়েকে বিয়ে করে সব কিছুর মালিক হবার চিন্তা করেন।
-এসব কি বলছেন আপনি। (জয়)
-যেটা সত্য আমি ওটাই বলছি।
আপনি কি আমার যোগ্য বর।
-ওহ তার মানে আমাকে আপনার পছন্দ হয় নি। এটা সহজে বলে ফেললেই পারতেন। এতো অপমান করার কি আছে। আমি আপনার বাবাকে না করে দিবো বিয়েতে।
-ধন্যবাদ আপনাকে।
-আপনার মতন মেয়ের মুখে ধন্যবাদ শব্দটা মানাই না। আর কি বলছেন আপনি অনেক সুন্দরী। আয়নাতে নিজের চেহারাটা দেখেছেন কখনো। আপনার পেছনে এখন দশটি ছেলে ঘুরে, কারন আপনার শরিরটাকে ভোগ করার জন্য। সবাই লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আপনার দিকে। এতে করেই ভেবে নিয়েছেন আপনি কতমহামুল্যবান জিনিষ। আরে দশ বছর পর আপনার দিকে কেউ তাকাবে না। তখন সবাই নতুনের দিকে তাঁকাবে। তখন মনে পড়বে আপনার সোন্দর্যের কথা। আর টাকা পয়সার কথা বলছেন,টাকা আজ আছে কাল নেই। সেইজন্য বলে গেলাম রুপ যৌবন আর টাকা পয়সা নিয়ে কখনো অহংকার বা গর্ব করবেন না। যখন আপনার বয়স ৫০ বছর হবে তখন আপনার শরিরের চামড়া হয়ে যাবে ঢিলে ঢালা। তখন আপনার কাছের লোকও আপনাকে আর ভালোবাসবে না। ছিঃ ছিঃ করবে। সেইসময় আপনার স্বামীই আপনাকে ভালোবাসবে। আপনাকে অনেক কিছু বলে ফেলেছি। আর হ্যাঁ আমি আজকেই না বলে দিবো আপনার বাবাকে। আমাদের মতন কালো মুর্খ গরীবদের ভেবে চিন্তে বিয়ে করা উচিত। আমাদের বামন হয়ে চাঁদ ধরতে যাওয়া ঠিক না।
কথাগুলো বলে সেখান থেকে চলে আসলাম। মেয়েটির ভাব দেখে মনে হচ্ছিলো একটা ঠাপ্পর মেরে দিই।
কিন্তু প্রথমবার বলে দিলাম না।
-সেদিন অনুর বাবার সাথে দেখা করলাম।
-আমি আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে পারবোনা। (আমি)
-কেনো কিহয়েছে বাবা, কোন ঝামেলা হয়েছে নাকি।
-জ্বী না তেমন কিছুই হয় নি আমি অনুর জন্য যোগ্য পাত্র না। অামার চেয়েও ভালো পাত্র তার দরকার।
-এসব কি বলছো জয়।
-হ্যাঁ ঠিকি বলছি। তবে কথাগুলো অনুই আমাকে বলেছে। আর বাকিটুকু অনুর কাছে থেকে শুনে নিবেন। আর হ্যাঁ বিয়েটা ক্যান্সিল।
-অনুর বাবাকে একটা ভালো শিক্ষা দিলাম। মেয়েকে শাষন করতে পারেনা সে কি করে বাবা হয়।
সেদিনের পর থেকে আর অনুর বাবার সামনে যায় নি। তিনি আমাকে দেখা করার জন্য অনেক বলেছেন।
তবুও কোন লাভ হয় নি তার।
-কিরে জয় কি শুনছি এসব। (বাবা)
-কি শুনেছো।
-তুই নাকি বিয়ে করবি না।
-হ্যাঁ তবে অনুকে না। অনুকে বাদ দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবো।
কেনো।
-অনুর অহংকার বেশি।
-তাহলে এখন কি করবি।
-নতুন মেয়ে দেখে বিয়ে করবো।
তবে মেয়েটা জেনো গ্রামের মেয়ে হয়।
পনেরো দিনের মাথাই জয় বিয়ে করেছে। শহর ছেড়ে গ্রামের ভিতরে। জয়ের ইচ্ছাতেই বিয়েটা হয়েছে।
জয়ের এখনকার স্ত্রীর টাকা পয়সার রুপের কোন অহংকার নেই। সহজ সরল মেয়ে। জয় এখন অনেক খুশি এমন বউ পেয়ে।
-আজকে অফিসে যাবেন (রুহি) (ওহ জয়ের নতুন বউয়ের নাম রুহি)
-হ্যাঁ কেনো।
-যদি সময় করে বাজারটা করে দিতেন।(রুহি)
-কি কি লাগবে বলো আমি করে এনে দিচ্ছি। রুহি একটা লিষ্ট করে দিলো আমি সেই অনুযায়ী বাজার করে নিয়ে আসলাম।
-আজকে অফিস বন্ধ। সকাল বেলাতে ঘুমের কারনে উঠতে ভালো লাগছিলো না তাই আর উঠিনি । দুপুরের দিকে রুহিই ঘুম থেকে ডেকে তুলে দিয়ে গোসল করতে বলে গেলো। গোসল করে এসে বাবা মা রুহি সবাই মিলে একসাথে খেলাম। বিয়ের পরে একদিনও রুহিকে নিয়ে বেড়াতে যায় নি তবুও রুহির কোন অভিযোগ নেই আমার উপর। ভাবছি আজকেই রুহিকে নিয়ে বেড়াতে যাবো। এমন স্ত্রীই দরকার যেসব স্ত্রীর চাওয়া গুলো হবে খুব ছোট যে গুলো পূরন করার ক্ষমতা আছে তার স্বামীর। এমন মেয়ে বিয়ে করা উচিত না যেসব মেয়ে হিজাব পড়তে চাই না, বিয়ের পরেও অনেক রাত করে বাড়ি ফেরে, বাবা মাকে অসম্মান করে। এমন মেয়ে প্রয়োজন যেসব মেয়ে কালো হলেও নিজের মাঝে আত্তসম্মানবোধ আছে ।
রুপ সৌন্দর্য টাকা দিয়ে কি হবে এগুলো তো আর সারাজীবন থাকে না ।
জয় যেমন টা করেছে ওসব মেয়েদেরকে এমনি করা উচিত, কিন্তু বর্তমানে মানুষ এসব না দেখে টাকার লোভে ওদেরকে বিয়ে করছে। বুঝবে একদিন,তবে যেদিন বুঝবে সেদিন কিছুই করার থাকবে না।