-দোস্ত তুই একবার প্রপোজ করে দেখ।আমাদের মনে হয় তোর মনের কথা জানানো দরকার।+ ( বন্ধুরা)
– রাজি হবে না বোধয়।(আমি)
– ধূর শালা ।তুই করে দেখ একবার।
-থাপ্পর দিলে কি তোরা হজম করবি?
সবাই চুপ।
– -দোস্ত। আমাদের মনে হচ্ছে তুই অনেক বড় ভুল করে ফেলছিস।একবার ভেবে দেখিস।
সাহস করে বললাম ” ঠিক আছে কাল করব ”
– রাজি হলে ট্রিট দিবি কিন্তু…
– ok, done.
আমি শিহাব। এতক্ষণ আমি আমার বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলাম রিমাকে প্রোপোজ করা নিয়ে।রিমা আমাদের কলেজে নতুন ভর্তি হয়ে সেকেন্ড ইয়ারে।প্রথম তাকে দেখেই আসি ক্রাশ খাই।২ মাসে ওর প্রতি প্রচন্ড রকমের ভালো লাগা সৃষ্টি হয়েছে।নিজের অজান্তেই মনের মধ্যে বসিয়ে ফেলি ওকে।
কিন্তু প্রোপোজ করার সাহস ও যোগ্যতা আমার আছে কিনা জানি না। কারন ঐ হলো কলেজের স্টার খ্যাত ভালো স্টুডেন্ট আর আমি স্টার খ্যাত বাজে স্টুডেন্ট। কই আমি কই ও।আকাশ পাতাল ব্যবধান। আমার ভবিষ্যৎ অনেকটা অন্ধকারময় বলা চলে।তাই প্রোপোজ এর কথা বলাটা আমার সাজে কি না সেটাও একটা ব্যাপার।
যাহোক, কাল সকালে ওকে প্রোপোজ করব।ইন্টারনেট গেটে কিছু শিখার চেষ্টা করলাম যেহেতু এটাই ফাস্ট কাউকে প্রোপোজ করা।
সকালে আল্লাহ নাম নিয়া পার্ক থেকে একটা গোলাপ নিয়া কলেজে রওনা হলাম।কলেজে বন্ধুদের শর্তাদি দিলাম যাই হোক ওরা যেন চুপ থাকে।সবাই মেনে নিল।
দূপুরে ক্যান্টিনে সবাই সেই সুযোগে রিমাকে প্রোপোজ করলাম।চোখ বুজে রইলাম প্রক্রিয়া না জানি কেমন।
জোরে আমার বুকে নিক্ষেপ করল ফুলটা।
– কি মনে কর নিজেকে?
সিনেমানাটকের হিরো !
– ভালোবাসি তোমাকে( অনেক কষ্টে বললাম)
– এসব সস্তা ভালোবাসার কোন দাম নেই আমার কাছে ( রিমা)
বলেই চলে গেল।
বন্ধুরা আসল।
সিফাত- -দোস্ত শিক্ষা দিয়ে দেমাকি মেয়েটাকে।
রাফি- শিহাব তুই থাক আমি দেখছি।
আমি একদম না করলাম যাতে কোন গন্ডগোল না পাকাই।
বুকটা ভেঙ্গে সাগর হয়ে গেল।
৫ বছর পর।
রিমিকে এখনো ভুলতে পারি নি।
শুনেছি ওর নাকি বিয়ে হয়ে গেছো।
আর এখন আমি একটা কোম্পানি বস।
আমার অফিসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলাম। সবার ভাইবা আমি নিচ্ছিলাম।
হঠাত দেখলাম রিমা এসেছে ভাইবা দিতে।নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারলাম না।
তুমি????
কোন কথা না বলে লজ্জায় দ্রুত চলে গেল ।
আমি ওকেই চাকরিটা দিলাম।পরদিন রিমা জয়েন দিতে আসল।
আমাকে সালাম দিলো।
উত্তর দিলাম।
কাল কথা না বলে চলে গেলেন যে?
চুপ।
রিমা কে নিয়ে কফি খেতে গেলাম যদিও সে নিমরাজি ছিল।
– তুমি এভাবে চাকরিতে বিশ্বাস ররতে পারছি না।তাও আবার আমার কোম্পানি তে।
-আমি জানতাম না এটা আপনার কোম্পানি?
– তুমার এ অবস্থা কি করে হলো। তোমার বর কই?
– চুপ।
– কি হলো বলো?
অনেক অনুরোধ করাতে রাজি হলো।
– ( রিমা) বিয়ের সাতদিন পরে তার স্বামী মারা যায়।তারপর বাধ্য হয়ে ও নিজের বাড়িতে চলে যায়।বাবার পেনশনের টাকা দিয়া আর চলে না।তাছাড়া বাবা অসুস্থ। ছোট ভায়ের লেখাপড়া বন্ধ হবার উপক্রম। তাই অনেক দিন যাবত একটা চাকরির পিছনে ঘুরছি।
– আজ পেয়ে খুশি হয়েছ।
– হুম।
– আজ যদি আবার প্রোপোজ করি। আবার রাগ দেখাবে?
– চুপ।
আবারো প্রোপোজ করলাম।অশ্রু চোখে হেসে দিলো।
আলতো করে বুকে জড়িয়ে নিলাম।
ও কক্ষমা চাইল সেদিনের ব্যবহারের জন্য।
– আমি বললাম সেটাতো তুমার দেওয়া উতসাহ ছিল পাগলি।
আমার বুকে মুখ লুকিয়ে হু হু করে কাদতে লাগলো।
এ যেন কান্না নয় জমা ভালোবাসার বার্তা। আমিও সুখি ভালোবাসার মানুষটাকে পেয়ে।