নীল বাড়ি যাবে ।। দুই দিন পর তার বোনের বিয়ে কিন্তু কাজের চাপ থাকার জন্য দুই দিন আগে যেতে হচ্ছে ।। তারাতারি করে রেডি হয়ে ৯ টার মধ্যে বাস স্টান্ডে গেলো ।। আর কিছু সময় পর বাস ছেড়ে দিবে তাই নীল বাসে উঠে নিজের সিটে বসতে যাবে এখন দেখে তার সিটে অচেনা একটা মেয়ে বসে আছে,,
– হ্যালো সিট টা আমার ।।
– জ্বী আমি জানি ।।
– ওও জানেন তো বসছেন কেন ???
– না আমার একটু সমস্যা আছে তো তাই আপনার সিটে বসছি ।।
– সমস্যা তো আমারও আপনার একার না । ( মুখ বাকা করে)
– এমন করে বলছেন কেন ?? আপনার সিট তো কি হয়ছে ?? আমি উঠতে পারব না ।। (রেগে)
– আমার সিটে বসে আমার আমাকে বড় বড় কথা শুনাচ্ছেন ।।
– দেখুন আমার সমস্যা তাই আপনার সিটে বসছি ।।
– আমার সিটে আমি বসবো ।।
– মেয়েটা মন খারাপ করে বলল ,, ঠিক আছে বসেন ।।
– নীলের তখন খারাপ লাগলো তাই নীল বলল না আপনি আমার সিটেই বসুন ।। আমি এখানে বসবো ।।
– ধন্যবাদ ।।
নীল ব্যাগ রেখে বসলো ।। বাস ছেড়ে দিলো ।। নীলের গরম লাগছে তাই বলল,,
– আমার গরম লাগছে জানালাটা খুলে দেন।।
– পারবো না ।। রোদ লাগে ।।
– নীল কিছু বলে না ।। কারন মেয়েটা খুব সুন্দর আর মায়াবী চেহারা ।। নীল মনে মনে বলছে বালিকা তোমার ১২ টা আজ আমি বাজাবো ।।
– দয়া করে সিটে বসতে দিলাম তার আবার এত গরম ।। নিজের সিট হলে না জানি কি হতো ।। (আস্তে আস্তে)
– এই কি বললেন ।। আপনি দয়া করছেন ??
– হুম ।। দয়া করছি বলেই তো আপনি জানালার পাসে বসতে পেরেছেন ।।
– আপনি দয়া করার কে ??? সিটে বসতে দিয়ে কি ভাব ।।
– হুম তাই তো ।।
মেয়েটা আর কিছু বলে না চুপ থাকে ।। আর নীল ভাবছে না মেয়েটার সাথে বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে তাই সরি বলার দরকার ,, কিন্তু মেয়েটার নাম জানা হলো না,,
– আপনার নাম টা জানতে পারি ??
– আমার নাম জানি না ।। (রেগে)
– বাহ খুব সুন্দর নাম তো আপনার ।। তো জানি না আপনি জাবেন কোথায় ???
– জাহান্নামে ।।
– আরে আমিও তো যাবো চলেন এক সাথে যাই ।।
– ওই আপনিনিনিনি ……।।।
– জানি জানি কি বলবেন ।। তবে আপনার নাম এন্গী বার্ড হলে ভাল হতো ।।
– আমার ভাল খারাপ আপনে দেখার কে ??
– না ।। এত ভাল একটা নাম দিলাম আপনাকে একটা ধন্যবাদ দেওয়া উচিৎ ছিলো ।।
– আমার ধন্যবাদের দাম আছে ।। আপনাকে দিয়ে সেই দামটা কমাতে চাই না ।।
– ও আচ্ছা ।। তা কত দাম আপনার ধন্যবাদের ?? আমি একটা ধন্যবাদ কিনে নিতাম ।।।
– এই আপনি চুপ করবেন ???
– ওকে চুপ ।।
তারপর নীল আর কথা বল না ।। মনে মনে হাসতে থাকে ।। এই রকম একটা এন্গী বার্ড পেলে তো ভালই হয় ।। যদি একে পাই তাহলে আরো ভাল হয় ।। নীল হাসে আর চিন্তা করে ।।
তবে নীলের মেয়েটাকে রাগাতে ভালই লাগছে ।।।
এই সব ভাবতে ভাবতে নীল যে কখন ঘুমিয়ে গেছে বুঝতেই পারে নাই ।। তারপর হটাৎ করে ঘুম ভেঙে যায় নীলের ।। তাকিয়ে দেখে মেয়েটা নীলের কাদে ঘুমাচ্ছে ।। ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েটাকে অসাধারন লাগেছে ।। জানালা দিয়ে আলো পরছে মুখে মনে হচ্ছে কোনো এক মায়াবী রাজকন্য এসে তার কাধে ঘুমাচ্ছে ।। নীল আর মেয়েটাকে জাগালো না কারন নীলের খুব ভাল লাগছে ।। নীল মনে মনে ভাবছে যদি সারা জীবন এই ভাবে কাধে ঘুমাতে তাহলে খুব ভাল হতো ।। হটাৎ করে আমার ফোন চলে আসে সাথে সাথে মেয়েটার ঘুম ভেঙে যায় ।। মেয়েটা সব কিছু বুঝতে পারে তাই একটু চুপ হয়ে যায় ।।
নীল ফোনটা বের করে দেখে তার বোন রিছিভ করে,,
– এই তুই ফোন দেওয়ার সময় পেলি না ??
– কেন ?? তুই কোথায় আগে তাই বল ??
– আমি চলে আসছি প্রায় ।। তুই এখন রাখ ।।
– ওকে তারাতারি আয়।।
ফোন কেটে দেয় নীল ।।
মেয়েটা কি বলবে বুঝতে পারছে না ।।
– দেখুন আমি বুঝতে পারি নাই।। সরি !!
– ওকে ।। ঘুমানোর সময় মনে থাকে না ??
– আরে ভুল করে হয়ে হয়ে গেছ ।। সরি বললাম তো ।।
– হয়েছে ।। সিট টা তো প্রথমেই নিয়েছেন ।। সাথে কাধটা এখন নিলেন ( দুষ্টুমির ছলে)
– এই যে মিঃ এত লাফান কেন ?? আপনি মানুষ নাকি ??
– আমি না আপনি লাফাচ্ছেন ।।
– ডং দেখে বাচি না ।।
– এন্গী বার্ড ।।
– আল্লাহ কেন যে আপনার সাথে দেখা করায়ে দিলো ।।
– ওরি বাবা ।।
– দয়া করে চুপ করুন ।।
সারা রাস্তা প্রায় এই ভাবে রাগাতে রাগাতে আসলো নীল ।। মেয়েটা রেগে লাল হয়ে আছে ।। কিছু সময় পর নীল নেমে গেলো আর বলল বাই এন্গী বার্ড ।। মেয়েটা চোখ বড় বড় করে তাকালো ।। নীল আর কিছু বল নাহ ।। মেয়েটা চলে যায় ।। আর নীল কিছু কেনাকাটার জন্য বাজারে যায় ।। নীল সব কাজ শেষ করতে করতে সন্ধার আগে বাড়ি পৌছালো ।। বাড়িতে অনেক মানুষ।। নীলের সব রিলেটিভ চলে এসেছে ।
নীল ব্যাগ রেখে ফ্রেস হয় বসে আছে আর মেয়েটার কথা চিন্তা করছে ।। মেয়েটাকে ভালবেসে ফেলে নীল । কিন্তু কি ভাবে খুজে বের করবে । না আছে তার ঠিকানা না আছে ফোন নাম্বার ।। এই সব ভাবতে ভাবতে নীলের ছোট বোন খাবার জন্য ডাকলো।। নীল খাবার টেবিলে বসবে তখন নীল সামনে তাকিয়ে অবাক,
– আরে আপনি এখনে ???!!!!
– আমারও তো একই প্রশ্ন ????!!!!
– নীলের বোন বলছে,, কিরে নীল ভাই তুই ওকে চিনিস ??
– মেয়েটা তখন বলল, কি এই লোক তোর ভাই ।।
– হুম ।। আজকে যা করেছে তা আমি জীবনেও ভুলব না ।।
– নীল বলছে,, এই তোর কি হয় ??
– ভাইয়া বসো, আমি সব বলছি ,, ও আমার বন্ধু নীলা ।।
– ওওও।।
– কিন্তু তোরা একে অপরকে চিনিস কি ভাবে ???
– আজ ওর সাথে আমি বাসে আসলাম ।। বাকিটা পরে বলবো ।।
রাতের খাওয়া শেষ করে নীল ছাদে যায় গিটার নিয়ে আর গান গাচ্ছে ।। তার কিছুক্ষন পর রিমি আসলো ।। রিমি আমার ছোট বোন দুই দিন পর ওরই বিয়ে ।।
– কিরে এসেই গিটার নিয়ে বসে গিছিস ??
– হুম ।। কি করব ভাল লাগছে না তো ।।
– আচ্ছা তুই নীলাকে কি ভাবে চিনিস ??
– তারপর নীল সব বলল ।। আর রিমি শুনে হাসতে লাগলো ।। পিছন থেকে নীলা মুখ চেপে ধরে ।।
– নীল আরো বলে জানিস আমি নীলা কে ভালবেসে ফেলছি ।।
– নীলা বলে মরে গেলেও রাজি হব না ।।
তারপর সবাই ছাদ থেকে নেমে আসে ।।
দেখতে দেখতে দুই দিন পার হয়ে গেলো।। আজ বিয়ে বর পক্ষ চলে এসেছে ।। আর কিছু সময় পর রিমিকে নিয়ে যাবে ।। নীলের ভাল লাগছে না ।। বোনটা আজ চলে যাচ্ছে ।। কিন্তু এটাই নিময়, নিজেকে শক্ত করে রিমিকে গাড়িতে তুলে দিলো নীল ।। তার দুই দিন পর নীলা চলে যায় ।। নীলের খুব খারাপ লাগেছে ।। নীল আর থাকতে পারছি না ।। অবশেষে রিমি কে বললো আর রিমি তার বাবা মাকে বলল ।। বাবা মা রাজি হলো,, কয়েকদিন পর নীলার বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে গেলো ,, নীলার পরিবার রাজি হয় কিন্তু নীলা রাজি হয় না ।। পরে রিমি কে সব বলে নীল ।।।
রিমি ফোন দেয় নীলাকে,,
– নীলা আমি তোকে কিছু কথা বলবো ।।
– বল।।
– দেখ নীলা ভাই তোকে বিয়ে করতে চায়।। ভাই তোকে সত্যি ভালবাসে বলে সরাসরি তোর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তব দেছে ।। তুই যদি ভুল বুঝিস তাহলে কিছু করার না ।।
– আচ্ছা আমি ভেবে দেখবো ।।
ফোনটা কেটে দিয়ে নীলা ভাবে না রিমি তো ঠিকই বলছে তারপর নীলা রাজি হয়।। কয়েক দিন পর তাদের বিয়েও হয়। বাসর রাতে নীলা শুয়ে আছে ।।
– এই যে কোল বালিশ পার হবে না ।।
– বলো কি !!!
– হুম।। যদি পার হও তাহলে খবর আছে
– ওরে আমার এন্গী বার্ড দাড়াও দেখাচ্ছি মজা ।। তারপর নীল নীলাকে জরিয়ে ধরে ।। আর বলে বাসর ঘরে এন্গী বার্ড নিরুপায়।।।