নীলপদ্ম

নীলপদ্ম

“স্যার ম্যাডাম কি আপনাকে চ্যাকা দিয়েছে?” এ কথা বলে আমার ছাত্র টা গণিত খাতার দিকে চেয়ে চেয়ে মুচকি মুচকি হাসতে তাকল।
আপনারা একবার ভাবেন তো কি বেয়াদব ছাত্র। আমরা যখন নাইন টেনে পড়ছি তখন স্যারদের কে কত সম্মান করছি। স্যার কে আসতে দেখলে ক্লাস রুমে দৌড় দিয়ে ঢুকছি। কিন্তু এখনের ছাত্ররা তা করবে দূরের কথা শার্টের কলার সোজা করে আমাদের দেখিয়ে দেখিয়ে হাঁটে।
ছাত্র এ কথা বলার পর আমি কিছু বললাম না। কিন্তু ছাত্র টা শুধু মুচকি হাসি দিয়ে ওই চলেছে।
” তোমার সমস্যা কি? ” আমি এ কথা বলে হাতে লাঠি টা নিলাম। ছাত্র পরে আর কিছু বলল না। হাসি টাও বন্ধ করে দিল। আমার পড়াতে ভালো লাগছে না। কিছু সময় পড়িয়ে চলে আসলাম। রাস্তা দিয়ে হাঁটছি সোনিয়ার কথা ভাবছি। আমাকে সোনিয়া এ কি বলল? আমি কি সত্যি ভিতু? ধ্যাত ভালো লাগছে না। আমি এমন ভিতুর কি করলাম?
দেখি প্যান্টের পকেটে মোবাইল টা বেজে চলেছে। হাতে নিয়ে দেখি সোনিয়া ফোন করেছে।
>> আমার কথা কি তোমার কানে যায় না? তুমি এতো অসহ্য কেন? শুনো আজ বাবার সাথে তুমি দেখা করবা।
>> সোনিয়া একটু বুঝার চেষ্টা করো।
>> আর কত বুঝবো। গত ২ বছর ধরে একি কথা বলে আসছ।
>> একটা চাকরি পাই। তারপর তোমার বাবার কাছে যাব।
>> তুমি চাকরি পেতে পেতে আমার মাথার চুল সাদা হয়ে যাবে। তবুও তুমি চাকরি পাবে না। তার চাইতে বরং তুমি বাবার কাছে যাও।
>> আমাকে তুমি যদি না বুঝ। তাইলে কে বুঝবে ? বলো তুমি।
>> বুঝি বলেই তো ভালবেসে ছিলাম। কিন্তু এখন আমি বুঝতাছি। একটা অপদার্থ কে ভালোবেসে ছিলাম। তুমি একটা অপদার্থ হাদারাম।
>> এভাবে বলো না। খুব অসহায় লাগে।
>> তুমি কাল নদীর পাড়ে সকাল বেলা আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমি সেখানে যাব।
>> সকালবেলা থাকতে হবে?
>> না। তোমার যখন ইচ্ছা তখন এসো। আমি সকালবেলা সেখানে গিয়ে বসে থাকবো। তোমাকে নিয়ে আমি আর পারছি না।
(২)
সকাল বেলা ঘুমিয়ে আছি। এমন সময় দেখি মা চেঁচামেচি করছে। ঘুম থেকে উঠে দেখি পাশের বাসার আন্টির সাথে আমার ব্যাপারে কি যেন আলাফ করছে। আমি সেদিকে খেয়াল না করে সোনিয়ার কথা মতো নদীর পাড়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে লাগলাম। গায়ে পারফিউম দেওয়ার জন্য পারফিউম টা হাতে নিলাম। গায়ের মধ্যে দিতেই দেখি পারফিউম বের হচ্ছে না। রাগের মাথায় বাহিরে ফেলে দিলাম। কিন্তু কুকুর টা ঘেউ ঘেউ করছে। বঝুতে পারছি কুকুরের উপর ফেলে দিয়েছি।
নদীর পাড়ে আসলাম। এসে দেখি সোনিয়া গালে হাত দিয়ে বসে আছে। মুখে হালকা কিছু মেকাপ করেছে। কপালে কালো টিপ। সোনিয়া কে খুব অপূর্ব লাগছে । মনে হচ্ছে রাতের আধার থেকে চলে এসে এখানে বসে আছে। কোনো রাজকুমারের অপেক্ষায়। সে রাজকুমার টা কে তো আপনারা জানেন ওই। তবুও বলি সেটা হলো আমি। আমি রাজকুমার ভাবতেই অবাক লাগে। আমার মধ্যে কোনো গুণ নেই। তবে একটা গুণ আছে সে গুণ টা হলো আমি একটা অপদার্থ হাদারাম। মা বলে। সোনিয়া বলে। বন্ধু-বান্ধব সবাই বলে।
>> এভাবে বসে আছ যে?
>> আমি কি এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মশা মারব। যে এখানের লোকজন আমাকে মশা মারার চাকরি দিয়েছে।
>> এভাবে বলছ কেন?
>> তো কিভাবে বলবো?
>> একটু আদর করে ওত বলা যায়।
>> শুনো এতো আদর করে বলতে আমার বয়ে গেছে। সারাদিন তো পাড়ার ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াও। কিছু একটা করলে কি হয়।
>> আমি পাড়ার ছেলেদের সাথে ঘুরে বেড়াই মানে?
>> পকেটে কত টাকা আছে?
>> কত টাকা আছে সেটা দিয়ে তুমি কি করবে?
>> লজ্জা করে না। এই কথা যে বলো? তোমার বয়সের ছেলেরা চাকরি করে মা-বাবা কে লালন-পালন করে। আর তুমি মা-বাবার টাকা নষ্ট করছ।
>> শুনো। আচ্ছা তুমি যে আমাকে এই কথা গুলো বলছ। তোমার মা-বাবা টাকায় পড়ছ না?
>> হ্যাঁ পড়ছি। তোমাকে আমি আজাইরা অপদার্থ বলি না। আমি একটা মেয়ে। আমি পড়তেই পারি।
>> তো। আমিও একটা ছেলে আমিও পড়তে পারি।
>> ধ্যাত। তোমার লেখাপড়া শেষ। এখন তুমি একটা চাকরি করতে হবে।
>> চাকরির জন্য তো আমি বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছি। চাকরি হচ্ছে না।
>> তুমি যেভাবে পারো চাকরি যোগাড় করো। তারপর আমার বাবার কাছে যাও।
>> আচ্ছা কাল যাব।
>> সত্যি বলছ তো।
>> হ্যাঁ সত্যি।
>> চলো বাদাম খাই।
>> চলো।
(৩)
আমি একটা ফুল বাগানের এক পাশে বসে আছি। এমন সময় সোনিয়া কোথায় থেকে এসে আমাকে বলতে লাগলো –
>> গাদা একটা কাল বাবার সাথে দেখা করলে না কেন?
>> শুনো আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু উনাকে পাই নি।
>> মিথ্যা বলার আর জায়গা পাও না। বাবা কাল সারাদিন অফিসে ছিলেন।
>> কই নাতো।
>> আমাকে কি তোমার বাকী ৭-৮ টা বোকা মেয়ের মতো মনে হয়। বাবা নিজে আমাকে এসে বলছেন তুমি যাও নি।
কেন তুমি আমার সাথে এমন করছ?
আমি তোমাকে ভালবাসি বলে আমাকে এভাবে তিলেতিলে মারতাছ।
.
তারপর সোনিয়া কেঁদে দিল। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমার হৃদয় টা কেঁদে উঠেছে। কি করে আমি সোনিয়া কে বুঝাই। সোনিয়ার বাবা আমাকে মেনে নিবে না। কারণ আমি বেকার। আমি কিছু করি না । চাকরির জন্য তো অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু চাকরি হচ্ছে না । বেকার জামাই কেউ পছন্দ করে না। সোনিয়ার কাছে ওই আমার কোনো মূল নেই তার বাবার কাছে আমার মূল থাকবে কি করে? আপনারা ওই বলেন। কিন্তু সোনিয়া কে বুঝাব কি করে। সে চায় আমি তার বাবার কাছে গিয়ে সোনিয়া কে বিয়ে করার কথা বলি। আমি কোন মুখে বলবো। আমি নিজে ওই জানি না। তবুও সোনিয়ার কথা আজ রাখতে হবে। আর মিথ্যা কথা বলতে ভালো লাগছে না। আজ যা হবার হবে। আমি সোনিয়ার বাবার কাছে যাব।
(৪)
সোনিয়ার বাবা কে অফিসে এসেই দেখতে পেলাম। খুব রাগি মুখ নিয়ে বসে আছেন। মনে হচ্ছে আমাকে সে রাগটা দেখাবেন। আমি ভয় ভয় কন্ঠ নিয়ে সালাম দিলাম। উনি আমাকে দেখে মুখ টা কি রকম করে ফেললেন। মনে হচ্ছে তিতা খেয়ে মুখ টা আর তিতা করে ফেলেছেন। এখন যদি মুখে মিষ্টি দেওয়া হয় সে মিষ্টি টাও তিতা হয়ে যাবে।
” তোমার সব কথা সোনিয়া আমাকে বলেছে। তুমি বেকার। লেখাপড়া করেও কোনো চাকরি পাচ্ছ না। মা-বাবার কোলে বসে বসে খাচ্ছ।” সোনিয়ার বাবা এ কথা গুলো বলে টেবিল থেকে একটা কাগজ বের করলেন। আমি লজ্জায় কি বলব।
সোনিয়ার বাবা একটা কাগজ বের করে আমার দিকে দিলেন। এই কাগজ টা নেও। আর আমার মেয়ের পিছন পিছন ঘুরাঘুরি বন্ধ করে দেও।
আমি আমতা আমতা করে বললাম ” এইটা কিসের কাগজ?”
সোনিয়ার বাবা রাগি মুখ নিয়ে বললেন ” তোমার চাকরির হয়ে গেছে। আর তার প্রমাণ এই কাগজ।”
আমি খুশি গলায় বললাম ” সত্যি স্যার।”
>> খুশি হওয়ার কিছু নাই। এই চাকরির বিনিময়ে আমার মেয়ে কে তুমি ভুলে যেতে হবে।
>> স্যার এইটা কি করে সম্ভব। আমি পারব না।
>> তোমাকে পারতে হবে। তুমি ভাবলে কি করে তোমার মতো অপদার্থ ছেলের হাতে আমার মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিব।
>> স্যার সোনিয়া আমাকে অনেক ভালবাসে। অনেক বিশ্বাস করে।
>> তার সুখের জন্য। তোমার উপর যে বিশ্বাস টা আছে সেটা ভাঙতে হবে।
>> দেখেন স্যার। আমি চাকরি করব না। আমি পারব না। সোনিয়া কে কষ্ট দিতে।
.
এই বলে চলে আসলাম। কি করব। আমার তো কোনো কিছু করার নাই। সোনিয়া যদি শুনে। আমি চাকরি পেয়ে সোনিয়া কে ভুলে গেছি। তাইলে সে অনেক কষ্ট পাবে। আর আমি কিছুতেই চাইব না। সোনিয়া আমার জন্য কষ্ট পেতে।
(৫)
একটা বন্ধুর ধারে বসে মোবাইলে লুডু খেলছি। এমন সময় সোনিয়া আসলো। এসেই আমাকে একটা চড় মারল।
>> তুমি বাবার দেওয়া চাকরি টা নাকি করবে না?
>> হ্যাঁ। আমি করব না।
>> কেন করবে না?
>> সেটা আমি বলবো না।
>> তুমি বলতে হবে না। তোমার মতো ছেলের সাথে আমার সম্পর্ক করা টা অনেক বড় ভুল হয়েছে। তোমরা শুধু পারো মেয়েদের কান্না করাতে। তুমি আমাকে আর কোনো দিন ফোন দিবে না।
>> এতো রাগ করছ কেন?
আচ্ছা আমি বলছি। তোমার বাবা আমাকে কি বলেছেন।
>> তোমার প্রতি আমার অনেক
ঘৃণা হচ্ছে।
>> সোনিয়া প্লিজ আমার কথা টা শুনার চেষ্টা করো।
.
সোনিয়া কোনো কথা ওই শুনলো না। চলে গেল। আমার কি দোষ?
সোনিয়া আমাকে ভুল বুঝলো। ঠিক আছে। আমি সোনিয়ার সামনে যাব না। এমন কি সোনিয়ার সাথে কথা ও বলবো না।
(৬)
সোনিয়ার বাবা খাবার টেবিলে বসে ভাত খেতে খেতে বললেন ” সোনিয়া একটা কথা বলবো?”
>> কোন বিষয়ে বাবা?
>> কোন বিষয় নয় মা। হিমুর ব্যাপারে।
>> বাবা প্লিজ হিমু নিয়ে কোনো কথা বল না।
>> মা রে ছেলে টা কে তুই ভুল বুঝিস না। ছেলে টা অনেক ভালো। একটুও লোভী না। আর তোকে অনেক ভালবাসে।
জানিস আমি ছেলেটা কে কি বলে ছিলাম?
>> কি বাবা?
>> আমি বলেছিলাম। তোমাকে আমি চাকরি দিব কিন্তু তুমি সোনিয়া কে ভুলে যেতে হবে। ছেলেটা চাকরি করবে না বলে দেয়। তোকে কষ্ট দিতে চায় না।
>> কি বলছ এসব বাবা?
>> যা বলছি সব সত্যি বলছি।
.
সোনিয়া অনেক চিন্তায় পড়ে গেল। সোনিয়া রাগের মাথায় কি বলল এসব। সোনিয়া ভাবতে লাগলো কাল সকাল বেলা আমার কাছে যাবে। কিন্তু সোনিয়া তো আমাকে পাবে না। আমি সেদিন রাগ করে সিলেট থেকে ঢাকায় চলে আসি। অনেক অভিমান করে চলে আসি। এমন কি সিম টাও চেঞ্জ করে ফেলি।
(৭)
আজ দুই বছর হলো। আমি ঢাকা থেকে সিলেট আসলাম। অনেক সময় সোনিয়ার কথা মনে পড়েছে। কিন্তু মন দিয়ে ভুলার চেষ্টা করেছি।
মন টা অনেক খারাপ লাগছে। তাই কিছু সময় বাহিরে ঘুরাঘুরি করার জন্য বের হলাম। একটা সিএনজি তে উঠলাম।
“তুমি?” সোনিয়া এ কথা বলে অনেক অবাক হলো। আমি সোনিয়া কে প্রথম দেখে নি। যখন সোনিয়া এ কথা বলল তখন দেখতে পাই। আমি সোনিয়া কে দুই চোখ দিয়ে মন ভরে দেখতে লাগলাম। সোনিয়া আগ থেকে অনেক সুন্দর হয়েছে। আমি কিছু বললাম না। মাথা নিচু করে বসে থাকলাম। সোনিয়া আমাকে একের পর এক প্রশ্ন করে ওই চলেছে। আমি কি বলব? আমার কিছু বলার নাই। সেদিন তো আমাকে খুব বকা দিয়েছিল।
আমি সোনিয়া কে জিজ্ঞাস করলাম ” বিয়ে করেছ?”
>> বিয়ে করেছি মানে কি?
বিয়ে ২ টা করেছি। তুমি কি ভাবছ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবো।
>> তাও ঠিক।
>> তুমি অনেক বদলে গেছে। কেমন যেন পর পর হয়ে গেছ। আমাকে বুঝার চেষ্টা একটু করছ না। সেদিন না হয় আমি ভুল করেছিলাম। ভুল শুধরানোর একটু সময় দেওয়া যেত না?
>> দিয়েছিলাম তো। তুমি তো সময় কাজে লাগাতে চাও নি। তাই জোর করে নি।
>> ক্ষমা করা যায় না?
>> আমি তো সেদিন ওই ক্ষমা করে দিয়েছিলাম।
>> জানো। সেদিন আমি তোমার বাসায় যাই। বাসায় গিয়ে দেখি তুমি বাসায় নেই। আন্টিকে গিয়ে জিজ্ঞাস করলাম। তুমি কোথায়?
আন্টি বলেন। তুমি নাকি ঢাকায় চলে আসো। তারপর তোমাকে ফোন দেই। কিন্তু তোমার ফোন বন্ধ। তুমি কেন আমাকে এভাবে কষ্ট দিছ?
>> আমি কষ্ট দেওয়ার কে?
>> আমি জানি তুমি আমার উপর অনেক রেগে আছ। প্লিজ রেগে থেকো না।
>> তুমি কোথায় যাবে?
>> এক জায়গায় যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে আর যাব না। আমি তোমার সাথে যাব।
>> মানে?
>> দেখো। হিমু। এতো রাগ করার কিছু নাই। তুমি আমার ভালবাসা।
>> এখন আর সেটা নেই।
>> কি?
তুমি আমাকে ভালবাস না?
>> এক সময় ভালবাসতাম।
>> আর এখন?
.
কিছু বললাম না। সিনএনজি থেকে নেমে আসলাম। সোনিয়া মন মরা হয়ে বসে থাকলো। থাকুক তাতে কার কি। আমি কেন তার কথা ভাববো। তার এখন পরিবার আছে। অবশ্য সুখে ওই আছে।
(৮)
মা কে দেখতে পেলাম রান্না ঘরে কি করছেন। আমাকে দেখে কাছে আসলেন। “সোনিয়ার সাথে কথা হয়েছে?”
>> হয়েছে।
>> সোনিয়া তোকে অনেক ভালবাসে। তোর কথা প্রতিদিন আমাকে জিজ্ঞাস করত।
>> দেখো মা। অন্য কোনো কথা হলে আমাকে বলো।
>> মেয়েটার উপর এতো অভিমান করে কেন আছত। মেয়েটা আমাকে সব বলেছে।
>> সোনিয়া তোমাকে কি বলেছে মা আমি জানি না। কিন্তু প্লিজ মা আর সোনিয়ার কথা আমার কাছে বলো না। ভালো লাগছে না।
>> তুই আমাকে কি বলতে চাস? তোর বউ হিসাবে আমি সোনিয়া কে মেনে নিব। অন্য কোনো মেয়ে কে আমি মেনে নিব না।
>> মা সোনিয়ার সংসার আছে। ওর নাকি দুই টা বিয়ে হয়েছে।
>> চুপ। ও কেন বিয়ে করবে। ও তোকে ওই ভালবাসে।
>> ও বিয়ে করে নি?
>> না।
(৯)
আজ সোনিয়া কে ইচ্ছামত বকবো। কেন সোনিয়া আমাকে মিথ্যা কথা বলেছে। সোনিয়া বিয়ে করে নি। অথচ আমাকে বলেছে সোনিয়া বিয়ে করেছে। সোনিয়া কে তাদের বাসার পিছনের দিক থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে খুঁজতে লাগলাম। কিন্তু কোথাও দেখতে পাচ্ছি না।
ও মা গো বলে একটা চিল্লানী দিলাম। কে আমার চুলে ধরে একটা টান দিল। তা দেখতে পিছনে তাকালাম। দেখি সোনিয়া।
>> আমাদের বাগানে কি চুরি করার জন্য আসলে?
>> তুমি আমাকে মিথ্যা বললে কেন?
>> আমি কি মিথ্যা বললাম?
>> ওই যে তুমি বলেছিলে। তোমার দুই টা বিয়ে হয়েছে।
>> ও। এই কথা। হয়েছে তো। সেটা তো তোমার সাথে স্বপ্নে।
>> স্বপ্নে হয়েছে।
>> জ্বী হয়েছে। এবার চলো গাছতলায় বসি।
>> তুমি তো সেদিন অনেক রাগ করেছিলে?
>> করেছিলাম। কিন্তু রাগ তো আর ভাঙাতে আসো নি। চলে গিয়েছিলে চুরের মতো।
>> ওই আমি চুর না।
>> জানি। তুমি একটা হাদারাম।
এখানে বসো।
>> একটা কথা বলি। আমি যদি আর আসতাম না। তুমি কি করতে?
>> চির কুমারী হয়ে থাকতাম।
>> হিহিহি।
>> একদম হাসবে না। আমি চির কুমারী হয়ে থাকলে তোমার কি?
>> আমার কি হতে যাবে মানে। সব কিছু তো আমার উপর এসে পড়তো। একটা কুমারী কে নিয়ে জীবনযাপন পরে করতে হতো।
>> আরে গাধা। বিয়ে হয়ে গেলে কেউ কি কুমারী থাকে।
>> তাও ঠিক । আমার তো মনে ছিল না।
>> তোমার কি মনে থাকে। সব কিছু তো ভুলে যাও।
>> সব সময় ভুলে যাই না। কোনো সময় কারো মায়ায় ভুলে যাই।
>> তাই।
>> চলো হাঁটি।
>> কোথায় হাঁটবো?
এখন ওই তো বসলাম।
>> আমি বলছি হাঁটতে।
>> আমি হাঁটতে পারব না। আমাকে কোলে তুলে নিয়ে যাও।
>> মানুষ কি বলবে?
>> মানুষ কিছু বলবে না।
>> আমি পারব না। তুমি এখানে বসে থাকো। আমি চললাম।
>> আরে কোথায় যাও। আমাকে নিয়ে যাও।
>> আমি পারব না।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত