ঝগড়াটে

ঝগড়াটে

– ফাজিল কেমন আছো?

– এক মিনিট এক মিনিট। তুমি আমাকে ফাজিল বললে কেন?

– হা হা ফাজিল কে কি বলবো?

– আমি যে ফাজিল এটা কেন মনে হলো?

– তুমি কলেজের নাম দেখে।

– মানে কি কলেজের নামের সাথে আমাকে ফাজিল বলতে হলো?

– হলো তো।

– আচ্ছা তোমার সকালে টয়লেট ক্লিয়ার হয় না?

– হয় তো আর না হলে ম্যাগশিয়াম তো আছেই খেলেই সব ক্লিয়ার।

– না না আমার তো হয় তোমার পেট কামড়াচ্ছে। আর পেটের কামড়ানি সহ্য না করতে পেরে আসছো আমার সাথে ঝগড়া করতে।

– আজব তো সত্য কথা বলতে দোষ কি?

– ও তার মানে তুমি সিওর যে আমি ফাজিল?

– শুধু সিওর না তো ওভার সিওর।

– আমিও সিওর যে তোমার পেট কামড়ানি আছে। ঝগড়াটে ছেলে।

– ওই আমাকে ঝগড়াটে বললে কেন হুমমমম? মার একটাও মাটিতে পড়বে না।

– ও তার মানে তুমি আমাকে মারবে আর আমার হাত নেই?

– কেন হাত থাকলে কি হবে?

– কানের ঠিক নিচে চড় দিবো।

– আসো একবার দেখি কে কাকে দেয় ঝগড়াটে মেয়ে একটা।

– এই যে আমি ঝগড়া করতে আসি নি হু।

– তো কি করতে আসছো প্রেম করতে?

– এই এই তোমার মত একটা ঝগড়াটের সাথে প্রেম? ভাবলেই পেটটা কেমন করছে।

– দেরি করো না টয়লেটে যাও।

– না না তখন বুঝতে পারি নি তো এখন বুঝলাম আমার পেট না হাতটা কেমন করছে।

– ও নিশ্চয় জড়িয়ে ধরতে তাই না?

– হুমমম ধরতে তো মন চায় তবে জড়িয়ে না গলাটা টিপে ধরতে। আচ্ছা তোমার মাকে কি তুমি সন্তান হারা করতে চাও?

– না তো।

– তাইলে চুপ করে কেটে পড়ো বলে দিলাম। মাথা গরম হলে কখন যে মেরে দিবো বুঝতেই পারবা না।

– কি গুন্ডা মেয়েরে বাবা।

– এই যে বাংলা ব্যকরন পড়েন না?

– পড়ি তো

– তাইলে লিঙ্গ ঠিক করেন।

– মাআআআআনে কিইইইই বলতে চাচ্ছে?

– মানে ওটা গুন্ডা হবে না গুন্ডি হবে।

– ও আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম।

– মারার আগেই ভয় তাইলে ভেবে দেখো মারলে কি হবে। তাই ভালোই ভালোই বলছি দেহে প্রান থাকতে আর ঝগড়া করতে আসবে না। আর যদি আসো তাইলে তোমার বাবা মা এক টা ছেলেকে হারাবে।

– কাকে হারাবে? – স্বয়ং তোমাকে।

– আচ্ছা মিষ্টি করে কথা বলতে পারো না?

– না তো আমার জন্মের সময় মুখে মধু না দিয়ে ঝাল দিছিলো। মাথা গরম হওয়ার আগে চোখের সামনে থেকে যাও বলে দিলাম।

– বাহ্ তোমাকে রাগলে দারুন লাগে আগে তো লক্ষ করি নি।

– এখন তো করলে দুর হও। – না না এই রুপটা একটু দেখবো।

– যাবে নাকি আম্মমমমমমমম্মমমমমমমমমমমু

– আরে আরে এখানে আম্মুকে কই পাইলা? – আচ্ছা চলো।

– কোথায়? – আমাদের কলেজের ছাদে যাবো।

– কেন এখানে কথা বলতে বুঝি লজ্জা করছে? – নাহ্ আসলে তা না তোমাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে ধাক্কা নিচে ফেলে দিবো।

– কি? অার তুমি কি মনে করছো আমি যাবো?

– আরে চলো তো কিছু হবে না।

– নাহ্ আসলে আমার কাজ আছে তো আমি যাই আবার কালকে দেখা হবে।

– দোয়া করি কালকে যেন আর না হয় তোমারে সহ্য করতে পারি না একদম।

– এখন থেকেই সহ্য করো পরে একসাথে ঘর করতে সমস্যা হবে না।

– কিইইই? – না না আমি গেলাম। বাচলাম। কি মেয়েরে বাবা দিন দুপুরে মানুষ খুনের হুমকি? বলে কি না ছাদে চলো ধাক্কা মেরে ফেলে দিবো। আচ্ছা একটা জিনিস ভেবে পাই না যে,সুন্দরী মেয়ে হলেই কি এমন রগচোটা হতে হবে? যত্তসব। বাসাতে আসলাম। বাসাতে আসতেই মা বললো, – কি রে বাবা তোর পেটের সমস্যা হলো কবে থেকে? আমাকে তো বলিস নি? কথাটা শুনেই আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম।

– আমার? কি বলো আবল তাবল?

– একটা মেয়ে এসে তো তাই বললো।

– কি বললো? – বললো যে তোর পেটের সমস্যা আছে আর কাচা কলার ভর্তা যেন খাই।

– আবল তাবল কথা বাদ দেও তো তাড়াতাড়ি খেতে দেও।

– আচ্ছা তুই বস। তাই তো মাকে কথাটা কে বললো? ওরে কি মেয়েরে? ওর ছাড়া কারও কাজ না এটা। ইশ রে সেইদিন বাসাটা যে কেন দেখিয়ে দিয়েছিলাম। মা খাবার আনলো। প্লেটটা উল্টাতেই মাথা গরম।

– মা ও মা মা – কি হলো আবার? – এটা কি?

– কেন কাচা কলার বর্তা।

– মানে কি এটার?

– আরে ওই মেয়েটা তো বললো যে পেটের সমস্যা তোর।

– মা তাই বলে তুমি আমার জন্য এটা আনবে? – কি করবো বল এতো করে বললো তাই ভাবলাম।

– ভাবো আরও ভাবো আমার থেকে ওই মেয়েটাই আপন হলো আমার থেকে?

– আচ্ছা ওই মেয়েটা কে?

– কই কোন মেয়েটা? – ওই যে যে মেয়েটা বলে গেলো।

– দেখি কি করা যায়। কি আর করার খেয়ে দেয়ে উঠলাম। কালকে সকালে যা একটা হবে। আমার বাড়িতে এসে আবল তাবল বলা? সকালে ঠিক জায়গায় দাড়িয়ে আছি। না একটু পর আসবে। আসুক না একবার আজকে সাইক্লোন হবে। ওই যে মেয়েটা আসছে ওইটাই সেই মেয়েটা না? হুমমমম ওইটাই তো। আয় না বাবা একটু কাছে। কাছে আসতেই

– এই যে শোনো।

– আজকে আবার কি হলো? পেট ক্লিয়ার হয় নি নাকি?

– মার খাইছো জীবনে? বাসায় কি বলছো হুমমম?

– কেন বলে নি কি বলছি?

– আমার পেটের সমস্যা?

– হুমমমম তাই তো খুব ভালো একটা বুদ্ধিও দিলাম।

– আপনি মানুষী হবে না? – হা হা হা মানুষ বলতে পারো মানুষ উভয় লিঙ্গ।

– রাখো তোমার লিঙ্গ।

– আচ্ছা তোমার মতলব কি বলো তো? প্রেম টেম করার ইচ্ছা নাই তো?

– সুযোগ পেলে তো করতামই।

– বাবা মাকে কাদাতে চাও? – না তো কেন?

– দাড়াও। বলেই ব্যাগ থেকে ছোট ছুরি বের করলো।

– একি এটা কেন? – সোজা পেটে ডুকে দিবো। – এই সব আবার কি দরকার প্রেম করলেই তো হয়ে যায়।

– এই যাও তো বেশি কথা বললে পরে আবার ড্রেমে সরি প্রেমে পড়ে যাবো তখন তোমার কপাল খারাপ আছে আর আমি চাই না এটা। – আমি তো এইটাই চাই (একটু আস্তেই বললাম)

– কি? – কই কিছু না তো। – আচ্ছা প্রেম যে করবো কি কি পারো?

– ঘুমাতে, খেতে, গান গাইতে, নাচতে, পড়তে, খেলতে – এই সব তো একটা গরুও পারে।

– কি বলো এটা? কোন গরুকে গান গাইতে,নাচতে,পড়তে,খেলতে দেখেছো?

– কেন তুমি কি নিজেকে মানুষ মনে করো? – মানে কি হু? আমি মানুষ না?

– কই না তো। – এই যাও তো তোমাকে দেখলেই মাথা গরম হয়। – কেন প্রেম করবা না?

– রাখো তোমার প্রেম। শালা মাথাটাই গরম করে দিলো! এই মেয়ের সাথে প্রেম করবো কেমনে? আমি গরু? ধেৎ সকাল সকাল দিলো মাথাটা গরম করে। চলে আসছি। পিছনে ঘুরে বললাম,

– এই যে শোন। – আবার কি হলো পেট কি আবার খারাপ করছে?

– আমার বাসাতে কে যেতে বলেছে? – ওই দিক দিয়েই যাচ্ছিলাম তাই ভাবলাম আপনার বাসাতে কথা জানাই।

– ভালো। আর কি বললে আমি গরু? – কেন কোন সন্দেহ?

– ওকে আমি গরু এবার হইছে?

– হইছে। হাটা শুরু করলাম। ঠিকই তো আমিই বা কেন যাই কথা বলতে? আর যাবো না। ৭দিন গেলাম না ওর কাছে। খুব মিস করলাম। বার বার ইচ্ছা হলো যেতে তবুও গেলাম না। ৭ দিনে বুঝলাম ঝগড়াটে মেয়েটাকে খুব বেশিই ভালো বেসে ফেলেছি। নাহ্ আর থাকতে পারলাম না। ৮ দিনের দিন হাটি হাটি করে আবার দাড়ালাম সেই জায়গাতে। দেখলাম একটা মেয়ে আসছে। হুমমমমম এই সেই মেয়ে। আমাকে দেখেই থমকে দাড়ালো। নাহ্ আমি কথা বলবো না সে বললে বলবো না হলে নাই।

– এই কয় দিন এলে না যে? ওর চোখের দিকে তাকালাম। চোখটা বসে গেছে চেহারাতেও একটা ঘুমহীন ভাব।

– এমনিই। – কেন আর পেট কামড়ায় না?

– গরু তো আমি।কেন মিস করছে নাকি?

– না তো গরুকে কেন মিস করবো? – একটা কথা বলতে আসলাম।

– কি কথা? ভালোবাসো এটা? – হুমমমম – ও আচ্ছা।

– দেখো উওরটা এখন দিতে হবে না সময় দিলাম কালকে এই সময় এসে উওরটা নিবো।

– সাত দিনে ভেবেছি। – কি? – উওরটা। – তাইলে বলো। – আগে গরুকে মানুষ করবো তারপর অন্য কিছু।

– মানে? – জানি তো উওরটা বুঝবে না তাই তো আগে মানুষ করতে হবে। বলেই হাটা শুরু করলো।

– কিন্তু আমার উওরটা? – ওই যে গরুকে বোঝানো যাবে না।

– আমার উওরটা চাই। – প্রতিদিন দাড়িয়ে থাকবে আর বেশি বেশি ঝগড়া করবে। – কেন?

– শুনেছি ঝগড়াতে নাকি ভালোবাসা দৃঢ় হয়। – তার মানে?

– বুঝে নেও। আর হ্যা একটা কথা।

– কি? – বলবো কেন বুঝে নেও।০১৭৫১২১৮৫** রাতে ফোন দিও সারারাত প্রেম করবো।

ওরে আল্লাহ আমার তো।দেখি প্রেমটা হয়ে গেছে। এই খুশি কই রাখমু? ওরে কে কোথায় একটা বস্তা আন।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত