সেদিন ও বৃষ্টি ছিল। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই বাসায় চলে আসল শান্ত। এসেই প্রতিদিনের মত ইশিতাকে দেখে সে।চোখের উপরের পাপড়িগুল জমে যেন শক্ত হয়ে আছে, এখনো মায়াময় চোখে শান্তর দিকে।ইশিতার মুখে এক সাগর ভয়।চোখের পাপড়ি,চাহনীর মায়া যেমন শান্তর মনে রোমান্টিকতার ঝড় বইয়ে দেয়,ঠিক তেমনি ঐ ভয় পাওয়া মুখটা দেখে একটা তীব্র ঘৃনা কাজ করে শান্তর মনে।
শান্ত, শুধু নামেই শান্ত নয়,ছেলেটা আসোলেই শান্ত। যেদিন সে জন্ম নেয়, সেদিন সে খুব শান্ত ছিল,কান্না করেনি। নার্সরা দেখে খুব ই অবাক হয়েছিল। এটা দেখেই হয়ত তার নাম শান্ত রাখা হয়েছিল।বরাবরের মতই শান্ত, শান্ত ছিলো তখনও, যেদিন তার ৫ বছরের ছোট একটা ভাই কে রেখে বাবা মা একসাথে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা যান।
১৫ বছর বয়সী শান্ত ভাইকে কোলে নিয়ে শহরতলী চলে আসে।মনের ভিতর খুব নিরিবিলি ভাব রেখেই সে সব দায়িত্ব নিয়ে ছোট ভাইকে বড় করার দায়িত্ব নিজের কাধে নেয়। টোকাই এর কাজ থেকে শুরু করে বাসের হেল্পার,চালক এবং সময়ের আবর্তনে সে একটা বড় শো রুমের সেলস ম্যান হিসেবে কাজ পায়।জীবনের প্রথম দিকে রাস্তায় কাটানো, তারপর মগবাজারের বস্তির খুপড়ি,সাভারের কম দামী অস্বাস্থ্যকর বাসা এবং তারপর আস্তে আস্তে তাদের নিবাস এখন ১৫ হাজার টাকার একটা মোটামুটি ভাল ফ্লাটে। জীবন এত দিনে গতি পেয়েছে।
জীবনের চাকাটাও তখন অনেক দূর গড়িয়েছে। ১৫ বছরের শান্ত এখন ২৭ বছর বয়সী।ছোট ভাই ১৭ বছরের। এবার এস এস সি পরীক্ষা দিবে। ভাইয়ের লেখাপড়ায় যেনো কোন খুঁত না থাকে, তাই শান্তর সারাদিনের পরিশ্রম করা আর রাতে এসে ভাইয়ের পড়ালেখা দেখাই যেনো তার জীবনের সব কিছু। এমন সময় ইশিতাকে পায় শান্ত। অগোছালো দুটা জীবনকে গুছিয়ে দেয়ার প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারের ইশিতা যৌতুক ছাড়াই শান্তর বাসায় আসে বৌ হয়ে।
তারপর কেটে যায় আরো তিনটি বছর।জীবন রঙ বদলায়। শান্ত এখন শো রুমের ম্যানেজার। বয়স ৩০, ভাইয়ের বয়স ২০, এইচ এস সি শেষ করল মাত্রই। শান্তর ভাই,গোবরে পদ্মফুল না। এস এস সি তে ভাল রেজাল্ট ছিল না। তাই উদ্বিগ্ন এইচ এস সি এর রেসাল্ট নিয়েও। শক্ত হাতে হাল ধরে রাখা শান্তর জীবনে এখন সাহায্যরূপ ইশিতার আবির্ভাব রাতে খেয়েদেয়ে সুখের একটা ঢেকুর তুলতে সাহায্য করে।
বর্ষাকাল……
তুমুল ঝড় তুফানে আগেই দোকান বন্ধ হয় শান্তর।সি এনজি করে বাড়ি ফিরে সে,নকল চাবি থাকায় ডাকতে হয়নি কাউকে বাইরে ঝড় বৃষ্টি তাই শব্দ ও হয়নি দরজা খোলার।তবে শান্ত ঠিকই শব্দ পেয়েছিল।ইশিতার খুব ঘনিষ্ঠ থাকার শব্দ।কৌতুহলী পায়ে সামনে এগিয়ে যায় সে।তারপর যা দেখে,তাতে সে এক মুহূর্তের জন্য থমকে যায়।তারই নিজের ভাই, ইশিতার সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় বিছানায় কাতরাচ্ছে,দুজনের ই চোখ বন্ধ। এরপর সে অশান্ত হয়ে উঠতে পারত।। কিন্তু সে তার নামের মূল্যায়ন করে, শান্ত ভাবেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যায়।বাসায় ফেরে পরদিন সকালে,মুখে হাসি নিয়ে,বরাবরের মতই ইশিতা দরজায় ছুটে এসে জড়িয়ে ধরে বলে কোথায় ছিলে সারা রাত??
আমি বুঝি তোমাকে মিস করি না……. শান্ত ইশিতার কপালে আলতো করে চুমু খায়। শান্ত টেবিলের উপর বসে আছে। দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গিয়েছে শান্তর ছোট ভাই ও ইশিতা।ঘুমের ঔষধ কাজ করেছে।অজ্ঞানের মত ঘুমাচ্ছে তারা। সাথে করে আনা ধারালো ছুড়িটার ধার পরীক্ষা করার জন্য জিহ্বায় আলতো করে ছোঁয়ায় ছুড়ির ডগা,সাথে সাথে রক্তে তার মুখ ভর্তি হয়ে যায়।মুচকি হাসে সে। আস্তে আস্তে ছোট ভাইয়ের রুমে যায় শান্ত।ছোট ভাইয়ের গলবিল বরাবর ছুরির ডগা ঢুকিয়ে দেয় সে।কয়েকটা মোচড় মারে তার ভাইয়ের অজ্ঞানপ্রায় দেহ,এরপর বামপাশের স্তনের নিচে ছুড়ি মারতেই রক্তের ঝর্না শুরু হয়,যাতে ভেসে যায় শান্তর নাকমুখ। কয়েক ঘন্টা পর আলমারি থেকে হ্যাংগার নামায় সে। প্রায় ৭ টা হ্যাংগার এর ভিতরের অংশে ছোট ভাইয়ের মাথা ঢুকিয়ে আলমারি তে ঝুলিয়ে দেয় শান্ত। এরপর চাদর,দেয়াল ফ্লোর থেকে রক্ত পরিষ্কার এর কাজ টা ভালোভাবে শেষ করে। ক্ষুধার জ্বালায়, এবং মাংস রান্নার তীব্র গন্ধে ৪৮ ঘন্টা পর ঘুম ভাংগে ইশিতার। ইশিতা উঠে টলতে টলতে রান্নাঘর এ যায়। শান্ত ইশিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায়,ও বলে,।ইশিতা ফ্রেশ হও,রান্না হয়ে গেল প্রায়,আজ আমার রান্না খাবে তুমি। ইশিতাও ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে। দুজনের ভিতর একটা রোমান্টিকতা ভাব এনে দেয় শান্তর একটা মৃদু হাসি। ইশিতা শান্তর প্রশংসা না করে পারে না।
খাওয়া শেষ এ শান্তকে বলে,বাহ এত ভালো লাগল কেন তোমার রান্না?? হ্যা?? শান্ত উত্তর দেয়,কারন তুমি তোমার প্রিয় অংশ টা খেয়েছ,তাই, ইশিতা বলে মানে?? শান্ত হাসতে হাসতে বলে আমার ছোট ভাইয়ের যেই অংগ টা তোমার প্রিয় ছিল,সেটাই তো তোমাকে কেটে কুটে খাওয়ালাম। ইশিতার আর বুঝতে বাকি রইল না কিছু, বেসিনে দৌড়ে গিয়ে বমি করল।তারপর একটা চিৎকার দিল,কিন্তু না,চিৎকার বের হল না মুখ দিয়ে,শক্ত কিছু তার গলায় পেঁচিয়ে ধরা হয়েছে। …………
বিছানায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে ইশিতা, মুখের ভিতর নোংরা, গন্ধযুক্ত মোজা ঢুকিয়ে আওয়াজ বন্ধ করার ব্যাবস্থা করা হয়েছে, আলমারি থেকে অর্ধপাচিত লাশ কাঁধে করে নিয়ে এসে ইশিতার সামনেই বটি স্লাইড করতে থাকে,হাত পা কলিজা মাথা এগুল খটাস খটাস করে কাঁটতে থাকে,বলতে থাকে,গায়ের রক্ত পানি করে ভাইকে বড় করেছি।এই শরীরটা আমি এত বড় করেছি এক টা অংশ ও ফেলব না,সব খেয়ে ফেলব।তোমাকেও এভাবে কাটব ইশিতা,কিন্তু তোমাকে খাব না।ফ্রীজে রেখে দিব।প্রতিদিন তোমার কাটা মাথা দেখব।হাহাহা ভাই কে কাটা শেষ না করতেই অজ্ঞান হয়ে যায় ইশিতা। ডিপ ফ্রিজে ভাইয়ের সব মাংস রেখে ইশিতার জ্ঞান ফেরানোয় ব্যাস্ত হয় শান্ত। তারপর ছুড়িটা আগুনে গরম করে আনে।লাল ছুড়িটা আজ শান্তর মনে আনন্দের জোগান দিচ্ছে।শান্ত বলে প্রিয় ইশিতা,তুমি আমার ভাই এর ওটা তো খেয়ে ফেলেছ,এখন তোমার সুখ মিটাবে কি করে??
এই দেখ তোমার জন্য আমি ব্যবস্থা করে রেখেছি।বলেই শান্ত আগুনে গরম হওয়া লাল ছুড়িটা চালায় ইশিতার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার স্থানে।টপ টপ করে ইশিতার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরে।ব্যাথায় সে নিজের ঠোঁটে এত জোরে কামড় দেয় যে দাঁত ফুটে মুখ ও রক্তে ভিজে যায়। চিৎকার গোংরানি হয়ে বাইরে আসে। হাত পা ছুড়তে ছুড়তে খাট এক রকম প্রায় ভেংগেই ফেলে।শান্তর ও একটু মায়া লাগে।সে আর কষ্ট দিতে চায় না। ইশিতাকে।ধারালো ছুড়ি দিয়ে গলাটায় পোঁচ মারে অনবরত।চামড়া মাংস হাড় এবং এক পর্যায়ে গলবিল ভেদ করে ছুড়ি চলতে থাকে গলা বিচ্ছিন্ন করার আশায়।
শান্ত রক্তে মাখামাখি হয়ে লাল পুনশ্চ: ____ ছোট ভাইয়ের ঘিলু আর নারকোলের ভাজি খাওয়ার সাথে সাথে শান্ত তার ভাইকে সব টুকুই খেয়ে ফেলেছে ডিনারে এখন সময় হয়েছে পুলিশকে ফোন দিয়ে সব স্বীকার করার। ____ ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছে শান্ত।তার বুকে কোন ধুকপুক নেই,মনে উৎকন্ঠা নেই,আজকেও সে সেই আগের মতই শান্ত।কারণ মানুষের কোন অধিকার নেই শান্তর হাহাকার শোনার।????