–এই ছেলে তোমার মত বখাটে ছেলের এখানে কি ।তোমাকে ঢুকতে দিলো কে?।চাচা ‘এই চাচা তুমি এমন এই গুন্ডা বখাটেদের বাড়িতে ঢুকতে দেও কেনো? তোমায় না বলেছি এদের বাড়িতে ঢুকতে দেখলে ই একদম ঘাড় ধরে বের করে দেবে।তাহলে এই কুকুর টা বাসায় এলো কি ভাবে হুম্’।যাও ওকে এখুনি আমাদের বাসা থেকে একে বের করে দেও ।পুরা পার্টি টাই নষ্ট করে দিল জানোয়ার টা।এখুনি বিদেয় করো এটাকে। . উপরের কথা গুলি যে বললো ওর নাম হলো ফারিয়া । অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী সে..। বাবা মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান ..॥
সে যাকে কথা গুলো শুনালো ওই ছেলেটা কে সে একদম দেকতেই পারে না।ওর মতে ছেলেটা একটা গুন্ডা ‘বখাটে ছেলে ।যার কাজই হলো শুধু মারপিট করা। কেনোনা ও যখনি ছেলে টা কে দেখেছে ‘তখনি ছেলেটা কথাও কারো না কারো সাথে মারপিট শুরু করেছে । তাই ফারিয়া ওকে দুই চক্ষে একদম দেখতেই পারে না।
এদিকে এতোক্ষণ ধরে যে ছেলেটা ফারিয়ার অপমান জনক কথা গুলি শুনলো ‘সেই ছেলেটার নাম সাকিল। সে একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের এতিম অনার্থ ছেলে। ছোটো বেলায় ওর মা- বাবাকে একটা এক্সিডেন্টে চিরো দিনের জন্য হারিয়ে ফেলে..। তারপর অনেক কষ্ট ওর একটা দুর সম্পর্কের মামির কাছে বড় হয়..॥ সেও ফারিয়ার মতো অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র ..॥
আর ও যে এতোক্ষণ চুপচাপ ফারিয়ার অপমান জনক কথা গুলি শুনলো তার একটি কারণ আছে। কারণটা সাকিল ফারিয়া কে ভালোবাসে”শুধু ভালোবাসে না অনেক বেশীই ভালোবাসে সে ফারিয়া কে।অার তাই আজ সে এসেছিলো ফারিয়া কে ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা যানাতে ।সাথে করে একটা উপহারও নিয়ে এসেছিলো ফারিয়াকে দেয়ার জন্য কিন্তু সেটা আর হলো কই। সে যখন ফারিয়াকে উপহার টা দিতে যায় ‘তখন ফারিয়া ওর বান্ধবীদের সাথে কথা বলছিলো।সাকিল যখন উপহার টা নিয়ে ফারিয়ার সামনে যায় ‘ তখন ফারিয়া সাকিলকে দেখে সাথে সাথে অনেক রেগে যায়..। রেগে গিয়ে তখন উপরের কথা গুলি সাকিলকে বলে ফেলে। পরিচয় পর্ব শেষ এখোন বাস্তবে ফেরা যাক।
–কি হলো চাচা আপনাকে আমি কি বললাম? বললাম না একে বাড়ি থেকে ঘাড় ধরে বের করে দিতে ।সে টা না করে আপনি এখনো দারিয়ে আছেন কেনো । এই গুন্ডাটাকে তারাতারি এখান থেকে বের করেন..॥
— আমি পারবো না ফারিয়া ম্যাডাম ..॥ আমি এই ছেলেকে বের করে দিতে পারবো না…॥
— দেখো চাচা তুমি যদি এখন এই গুন্ডাটাকে বাসা থেকে বের না করে দেও তাহলে আমি কিন্তু তোমার চাকরিটা আর রাখবো না বলে দিলাম… ॥ তাছাড়া এই বখাটেটার জন্য আপনার এতো কিসের মায়া শুনি…। যার জন্য আপনি আমার কথা মানছেন না…॥
— দেখেন ম্যাডাম ‘আমি আবারো বলছি আমি সাকিলকে ঘাড় ধরে বের করে দিতে পারবো না..॥ আপনি চাইলেই আমার চাকরীটা শেষ করে দিতে পারেন এতে আমার কোনো আপত্তি নেই’কিন্তু তাও আমি আপনার কথা এখন মানতে পারবো না..।
— কি এমন সম্পর্ক এই বখাটে টার সাথে তোমার যে নিজের চাকরীর যাওয়ার চিন্তাও করছো না..। কি এমন মহত কোজ করেছে এই গুন্ডাটা শুনি…॥
— করেছে ম্যাডাম ‘অনেক বড় মহত কাজ করেছে এই ছেলেটা আপনি চাইলে আপনার আম্মু অথবা আব্বুর কাছ থেকে জেনে নিয়েন…। যানেন এই বখাটে ছেলেটা আপনার জন্য কি করেছে..। জানেন কি করেছে সে আপনার জন্য ( রহিমকে ওর কথা শেষ না করতে দিয়েই সাকিল বলে উঠে…)
— রহিম চাচা থামুন আপনি..॥ আপনাকে কিছু বলতে হবে না ..॥
স্যরি ফারিয়া ..। আসলে আমি দুঃখিত ..। আমার জন্য তোমার এতো সুন্দর পার্টি টাই নষ্ট হয়ে গেলো…॥
আমরা গরীব ‘গুন্ডা বখাটে দের একটাই দোশ জানেন তো..। আমরা না বিনা দাওয়াতেই সবার বাসায় ঢুকে পড়ি..॥
তবে আপনি চিন্তা করবেন না আমি এখুনি চলে যাচ্ছি..। আর আপনার কাছে আমার একটাই অনুরোধ এই গরীব রহিম চাচার চাকরীটা দয়া করে শেষ করে দিয়েন না..।
এই অবুঝ লোকটার না আসলে তেমন কোনো দোশ নেই ..। রহিম চাচা খুব নরম মনের মানুষ তাই আমাকে তোমাদের বাসায় এই পার্টিতে ঢুকতে দিয়েছে…॥
আমি এখুনি চলে যাচ্ছি তোবে যাওয়ার আগে শেষ বারের মতো এই বখাটে টার পক্ষ থেকে আনা আমার এই ছোট্ট উপহার টা যদি গ্রহণ করতেন তাহলে আমি অনেক খুশী হতাম…॥
আপনাকে আমি কথা দিচ্ছি আমি আর আমার এই মুখ কখনো কোনোদিন আর আপনার সামনে নিয়ে আসবো না …। তাই প্লিজ না করবেন না…॥ (এই বলে সাকিল একটা ছোট্ট গিফট বক্স ফারিয়ার দিকে বারিয়ে দেয়..। আর ফারিয়া সাথে সাথে সেটা হাতে নিয়ে দুরে কোথায় ছুড়ে ফেলে দেয়) তারপর…
— শোন তুই ভাবলি কি করে তোর মতো গুন্ডার কাছথেকে আমি আমার জন্মদিনে কোনো উপহার নেবো..। আর অনেক বলেছিস এখন যদি তুই এই মুহুর্তে এখান থেকে বের হয়ে না যাস তাহলে এবার সত্যি ‘সত্যি আমি নিজেই তোকে ঘাড় ধরে বের করে দেবো বলেদিলাম ..।সো তোর যদি চক্ষু লজ্জা বলতে কিছু থাকে তাহলে এখনু চলে যা আমার সামনে থেকে..॥ (সাকিল ফারিয়ার কথা গুলো শুনে শুধু একটু হাসলো..। )
তারপর…
— ঠিক ,আছে ফারিয়া আমি চলে যাচ্ছি….। তবে একটা ব্যাপার ভাবতেই অবাক লাগে যে তুমি আমাকে না বুঝেই গুন্ডা ‘বখার্টে নাম দিয়ে দিলে..। আচ্ছা ওসব কথা থাক ‘আমার জন্য আপনাদের সবার আজকের এই সুন্দর পার্টিটা নষ্ট হয়ে গেলো তার জন্য আমি আপনাদের সবার কাছে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি..। পারলে আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন …।
ও আরেকটা কথা শুভ জন্মদিন ফারিয়া ..। আচ্ছা আমি এখন চলি …॥ এই বলে সাকিল শুধু সেখান থেকে চলে আসতে যাবে ঠিক সেই সময় সামনে সে ফারিয়ার ‘আব্ব-আম্মুকে আসতে দেখে..। তাই সে সাথে সাথেই নিজের হাত দিয়ে চক্ষের পানি গুলি মুছে ফেলে…॥
তারপর তাদের সামনে যায় …॥
— আরে বাবা সাকিল’..॥ তুমি কখন এলে ..!! আর কোথায় যাচ্ছ তুমি এখন…!!! আরে’একি তোমার চক্ষে পানি কেনো ..। কি হয়েছে বাবা..!!! কেউ কি তোমাকে কিছু বলেছে..!! কি হলো বাবা জবাব দেও…॥(ফারিয়ার আম্মু)
— আরে’নাহ ,আন্টি তেমন কোনো ব্যাপার না..। আসলে আমার একটু জরুরী কাজ পরে গেছে তো তাই ‘তারাহুরার মধ্য দিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎ চক্ষে একটা পোকা পড়ে যায়..। আর তার জন্যই চক্ষ দিয়ে হালকা পানি পরছে..। ওসব কোনো ব্যাপার না ..। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে…॥ আচ্ছা আন্টি আমি এখন চলি আমার একটু তারাআছে…॥
— সে কি কথা সাকিল’..॥ তুমি আমাদের এতো বড় উপকার করলে ..। আমাদের জীবন কে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিলে..। এখন তুমি আমার বাসায় আমার মেয়ের জন্মদিনে এসে কিছু না খেয়েই চলে যাচ্ছ..। সেটা কি করে হয় বাবা..॥(ফারিয়ার বাবা)
— নাহ্ আঙ্কেল ‘অন্য কোনো আরেক দিন হবে…। আজকে আমার একটু তারা আছে আঙ্কেল ..। আমাকে এখুনি যেতে হবে ..। আমাকে ক্ষমা করবেন আঙ্কেল আমি এখন আপনার কথা রাখতে পারলাম না…। চলি আঙ্কেল ‘আসি আন্টি..॥ এই বলে সাকিল সেখান থেকে সাথে সাথে বাইরে চলে আসে..। আর এসেই পেটের কাছে শার্টটা সরিয়ে দেখে যে সেখান থেকে সমানে অনেক রক্ত গরিয়ে পরছে…॥ তাই সাথে সাথে সে সেই জায়গাটা হাত দিয়ে চেপে ধরে আর মনে মনে শুধু হাসে বলে হায়রে মানুষ ‘আমার ভালোবাসাটাকে বুঝলো না…॥তারপর হঠাৎ মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে..॥
এদিকে সাকিল চলে গেলে ফারিয়ার বাবা- মা ফারিয়ার কাছে যায় ..।