কেমন আছো অভি? (অবন্তিকা)
আমি কেমন আছি সেটা জেনে আপনার কি কোনো লাভ আছে? (আমি)
প্লিজ একবার বলো তুমি কেমন আছো?(অবন্তিকা)
আলহামদুলিল্লাহ অনেক অনেক ভালো আছি এখন (আমি)
সত্যি কী ভালো আছো তুমি? (অবন্তিকা)
হ্যাঁ সত্যি ভালো আছি। আর আমার ভালো থাকা নিয়ে যদি সত্যিই আপনার এত চিন্তা থাকতো তাহলে আমার সাথে এমন করতেন না। (আমি)
তুমি কী আমাকে এখনো ক্ষমা করতে পারো নী? (অবন্তিকা)
আপনাকে তো আমি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি। (আমি)
তাহলে প্লিজ একবার বলো ভালোবাসো আমায়। (অবন্তিকা)
দুঃখিত সেটা আমার পক্ষে সেটা আর সম্ভব না। (আমি)
কেনো সম্ভব না? আমরা কী সবকিছু আবার আগের মতো করে নিতে পারি না? (অবন্তিকা)
না পারি না কারন আপনার শরীরে এখন অন্য কারো ছোঁয়া। (আমি)
অভি প্লিজ আমাকে শুধু একটা সুযোগ দাও আমি সব আগের মতো করে দিব। (অবন্তিকা)
ওহ তাই নাকি? তা পরবেন নাকি আপনার শরীর থেকে অন্য কারো ছোঁয় মুছে দিতে?(আমি)
না সেটা আমি পারবো না। আমি জানি অভি সব ভুল আমার। প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দাও।
আবগে আমার পুরো জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। যার কারণে আজ হারিয়েছি তোমাকে। (অবন্তিকা)
দুঃখিত আমি আর কোনো সুযোগ দিতে পারব না।
আর হ্যাঁ দয়া করে আমাকে আর কখনো ফোন,এসএমএস বা আমার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করার চেস্টা করবেন না। (আমি)
ওকে ভালো থেকো। একদিন তুমি ও আমাকে অনেক মিস করবে । যেমনটা আজ আমি তোমায় মিস করছি। (অবন্তিকা)
সেটা পরে দেখা যাবে। প্লিজ লিভ মি (আমি)
— হাই আমি অভি। আর এতখন যার সাথে কথা বলছিলম সে হল আমার সে ছিল আমার ভালোবাসার মানুষ।
খুব ভালোবাসতাম ওকে। ও হয়তো আমাকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু কী থকে যে কী হল বুঝতেই পারলাম।
একবছর আগে আমাদের ব্রেকআপ হয়ে গেছে।
.. সময়টা ছিল 2013 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে। সবে মাত্র জিএসসি পরীক্ষা দিয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তির হয়েছি।
আর হ্যাঁ আমি আমার গ্রামের স্কুল থেকে জি এস সি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। রেজাল্ট ও মোটামুটি ভালো হয়েছিল।
তাই মা বাবার মনে হল যে আমাকে শহরের স্কুলে ভর্তি করানো দরকার তাই তাদের আদেশ ক্রমে আমি শহরের স্কুলেই ভর্তি হই।
তবে অবন্তিকা ছিল শহরের মেয়ে। তারা অনেক আগে থেকে শহরে বসবাস করে।
অবন্তিকা ছিল আমার ক্লাসমেট।
নতুন স্কুলে যাওয়ার পর আমার অবন্তিকার সাথে মোটামুটি ভালোই বন্ধুত্ব হয়ে যায়।
একদিন ক্লাস রুমে দাঁড়িয়ে থেকে আমি আর অবন্তিকা কথা বলছিলাম ।
তো অবন্তিকা হঠাৎ করে বলল অভি তুমি প্রেম করো না?
আমি উত্তর এ বলেছিলাম না।
আমার উত্তর শুনে অবন্তিকা খুব হেসেছিল সেদিন।
তার কিছু দিন পর আমি কেন জানি না অবন্তিকা কে নিয়ে একটু বেশিই ভাবতে শুরু করলাম।
তো আমার দুইজন বান্ধবী কে বললম ব্যপার টা।
তখন তারা বলল প্রেম করবি অবন্তিকার সাথে?
আমি বললাম আচ্ছা তোরা বলে দেখ ও কী বলে?
তো আমার বান্ধবী অবন্তিকা কে বিষয়টা জানিয়ে ছিল।
তার পর কেমন করে যে আমার আর অবন্তিকার মাঝে ভালোবাসার সম্পর্কটা হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।
যেহেতু আমার একই স্কুলে একই ক্লাসে পড়তাম তাই আমাদের যোগাযোগের কোনো সমস্যা হতো না। আমরা প্রাইভেট ও একই জায়গায় পড়তাম।
রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে প্রাইভেটে যেতাম।
আয সেখানেই আমাদের দেখা হতো।
প্রাইভেট শেষ করে আবার একসাথে স্কুলে যেতাম।
প্রত্যেক দিন আমাদের মাঝে কথা হতো। তবে খুব অল্প। কার সবাই যেন বুঝতে না পারে যে আমাদের মাঝে রিলেশন আছে।
একদিন আমার মনটা একটু খারাপ ছিল কারন আমার বাড়িতে একটু সমস্যা ছিল তাই।
অবন্তিকা বুঝতে পেরেছে ব্যাপারটা।
অভি কি হয়েছে তোমার? (অবন্তিকা)
কই কিছু না তো । (আমি)
শুনো আমায় মিথ্যা কথা বলবা না। আমার মন বলছে তোমর কিছু হয়েছে। (অবন্তিকা)
তার পর আমি অবন্তিকাকে সব খুলে বললাম।
অবন্তিকা বলল সবঠিক হয়ে যাবে।
পরের দিন….
কেমন আছো অভি? (অবন্তিকা)
ভালো আছি, তুমি কেমন আছো? (আমি)
আমি ভালো আছি। (অবন্তিকা)
আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে নাতো? (আমি)
না জান তোমকে কখনো ছেড়ে যাবো না সারাজীন তোমার পাশে থাকব। (অবন্তিকা)
সত্যি বলছো তো? (আমি)
হ্যাঁ সোনা সত্যি বলছি। কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবা না তো? (অবন্তিকা)
না জান আমিও তোমাকে ছেড়ে কখনো যাবো না। (আমি)
হুম সোনা। ও জান জান একবার বলোনা প্লিজ। (অবন্তিকা)
কি বলবো? (আমি)
থাক যা কুত্তা বলতে হবে না তোকে। আমার সাথে আর কথা বলবি না। (অবন্তিকা)
ওরে অমার সোনা রে । রাগ করে না ।
বলছি তো আই লাভ ইউ। (আমি)
দরকার নাই আমার যা আমার সামনে থেকে। (অবন্তিকা)
আচ্ছা থাকো তুমি, চলে যাচ্ছি। (আমি)
ওই দাড়াও কোথায় যাচ্ছো হ্যাঁ? (অবন্তিকা)
তুমি তো বললা তোমার সামনে থেকে চলে যেতে তাই চলে যাচ্ছি। (আমি)
আমি বললেই চলে যাবা হ্যাঁ?
সরি সোনা। আই লাভ ইউ। (অবন্তিকা)
হুম আই লাভ ইউ টু (আমি)
আল্লহার রহমতে খুব ভালোই চলছিল আমাদের দিন।
একদিন হঠাৎ করে আবন্তিকার বাড়ি থেকে আমাকে কল দেয় এবং আমাকে অবন্তিকার বাড়িতে যেতে বলে।
সেইদিন আমি খুব ভয়ে পেয়েছিলাম।
কী করব বুঝতে পারছিলাম না।
অবশেষে অনেক ভেবে চিন্তে আমি ওদের বাড়িতে চলে যাই।
ওদের বাড়িতে যাওয়ার পর প্রথমে আমার অবন্তিকার মায়ের সাথে কথা হয়।
অবন্তিকার মা সেদিন কী বলেছিল জানেন?
ওহ তাহলে তুই সেই অভি।
তুই কী ভেবেছিস তোর সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিব?
তুই তো একটা ফালতু ছেলে।
আমার মেয়ের জন্য অনেক ভালো ভালো ঘর থেকে বিয়ের কথা এসেছিল। এমনকি ছেলে ডাক্তার ও ছিল।তবুও আমি আমার মেয়ের বিয়ে দেই নাই।
আর তোর সাথে দিব মেয়ের বিয়ে?
শোন যা হয়েছে হয়েছে ভুলে যা আমার মেয়েকে। যদি ভালো চাস।
অবন্তিকার মায়ের কথা গুলো শোনার পর মনে হচ্ছে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি গুলো সরে যাচ্ছে।
তার একটু পর অবন্তিকার বাবা এলেন এবং তিনিও আমাকে অনেক হুমকি আর আমার বাড়িতে এইসব কথা গুলো বলে দিবে বলে আমাকে অনেক ভয় দেখালেন।
আমি চাইনি যে আমার বাড়িতে ঘটনা গুলো জানুক।
তাই সেদিন তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছিলাম। ভুল হয়ছে আমার মাফ করে দেন। পরর্বতীতে আর এ রকম হবে না।
এই সব বলে আমি বাড়িতে চলে এসেছিলাম।
সেদিন নিজেকে অনেক অসহায় মনে হয়েছিল।আর ভিবছিলাম যে অবন্তিকা এখন কোন অবস্থায় আছে কে জানে।
আমাদের গল্পটা এখানে শেষ হয়ে গেলেও পারতো তবে না এখানে শেষ হয় নি।
তার পর কিছুদিন আমার আর অবন্তিকার মাঝে কোনো যোগাযোগ ছিল না।
তবে অবন্তিকার ভুলের কারণেই আমাদের এই রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল।
আর আমি সব সময় ভাবতাম যে আমাদের ভালোবাসা এতটা ঠুন্ক যে এত্ত সহজে শেষ হয়ে যাবে?
না এটা হতে দেওয়া যাবে না।
তবে ঘটোনা টা ঘটেছিল আমরা কলেজে ভর্তি হওয়ার পর।
যাই হোক অনেক ভেবে চিন্তে যে কোনো মাধ্যেমেই হোক অবন্তিকার সাথে আবার যোগাযোগ শুরু করি।
আবার শুরু হয় আমাদের প্রেম।
তবে বেশকিছু দিন পর পর আমাদের কথা হতো।
সব সময় শুধু ওর একটা এসএমএস এর জন্য বুকের মধ্যে হা হা কার করত।
যখনি ফোনে কোনো এসএমএস আসতো মনে হতো এই বুঝি আমার অবন্তিকা এসএমএস করেছে।
একদিন রাতে শুয়ে আছি।
হঠাৎ একটা মেসেজ আসলো।
কেমন আছো অভি? (অবন্তিকা)
ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? (আমি)
আমি ভালো আছি। কি করছো (অবন্তিকা)
শুয়ে আছি। তুমি? (আমি)
আমি শুয়ে আছি। (অবন্তিকা)
এভাবেই কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে যেতো।
তার পর ঘুমিয়ে পড়া।
এভাবে খুব ভালোই চলছিল আমাদের দিন।
মাঝে মাঝে দেখাও করতাম আমারা।
অবন্তিকা বারবার দেখা করার জন্য জোর করত কিন্তু আমি করতাম না।
কি করব বলেন দ্বিতীয় বার যেন ওর বাড়ির মানুষ জানতে না পারে যে আমাদের এখনো রিলেশন আছে।তাই একটু সবধান এ চলতাম।
এভাবেই চলছিল আর কি।
মাঝে মাঝে ওর কিছু ফ্রেন্ড আমাকে বলতো যে ও নাকি ঠিক মতো পড়াশোনা করে না। কলেজে আসে কিন্তু ক্লাস করে না।
সব সময় আড্ডা দেয়। এসব আরকি…
আমি যখন ওকে জিঙ্গাসা করতাম তখন ও বলতো ওসব মিথ্যা তুমি মানুষের কথায় কান দিয়োনা।
আমি ওকে খুব বিশ্বাস করতাম তাই আর ওসব বিষয় নিয়ে ভাবতাম না।
একদিন ওর এক ফ্রেন্ড আমাকে এসএমএস করে বলে বলে যে ভাইয়া অবন্তিকা তো এখন অন্য ছেলের সাথে প্রেম করে।
আরো অনেক কিছু।
আমি যখন অবন্তিকা কে জিঙ্গাসা করি তখন অবন্তিকা বলে,…
আমার ওই বান্ধবি চায় না যে তোমার আর আমার মিল হোক তাই তোমকে ওসব কথা বলেছে।তুমি একদম বিশ্বাস করবে না।
আমিও খুব বোকা ছিলাম তাই অবন্তিকার মন ভুলানো কথা গুলো বিশ্বাস করতাম।
এভবেই চলছিল আমাদের দিন।
তবে কষ্টের বিষয়টা কী জানেন?
ও আমাকে অনেক স্বপ্ন দেখিয়েছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত ও আমার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে।
আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমাকে একদিন জানায় যে ও নাকি অন্য ছেলের সাথে প্রেম করে।এবং তার সাথে ঘোরাফেরা করে । আরো অনেক কিছু।
কথা গুলো শোনার পর অনেক কষ্ট হচ্ছিল।
আমি যখন অবন্তিকা কে বললম কথা গুলো তখন ও আর কোনো রাস্তা না পেয়ে আমার কাছে সব স্বীকার করে।
আর তার একদিন পর আমি সিদ্ধান্ত নিই যে ব্রেকআপ করবো।
অবশেষে ব্রেকআপটা করেই ফেলি।
জানেন অবন্তিকা আমার সাথে এমন ভাবে কথা বলত যে আমার মনে হতো যে ও সত্যিই আমাকে অনেক ভালোবাসে।
আমার সাথে রিলেশন থাকা কালিন আর দুইটা ছেলের সাথে ও রিলেশন করত।কিন্তু আমি বুঝিনি তার অভিনয়।
বেশি বিশ্বাস করতাম বলেই ঠেকেছি।
এখন ও আমায় বলে যে আবেগের বশে পরে সবকিছু করেছে।আমাকে মাফ করে দাও আমি তোমার কাছে ফিরে আসতে চাই।
তোমায় খুব মিস করি।
খুব ভালোভাবে ও আমার বিশ্বাস অর্জন করে সেটা ভেঙ্গে দিয়েছে।তাই আর দ্বিতীয়বার বিশ্বাস করিনি।আর ফিরিয়েও নেইনি ওকে।
এভাবেই শেষ হয়েছিল আমার তিন বছরের ভালোবাসা।……