একটি ছেলে তার নিজের ফোনে অল্প টাকা রিচাজ করে , সবসময় একটি মেয়েটার ফোনে টাকা দেয়ার চেষ্টা করত , যাতে মেয়েটা ফেইসবুকে গিয়ে যাতে একটু মজা , একটু আনন্দ করতে পারে। তার মনটা যেন সর্বদা ফ্রেশ থাকে সেটাই ছেলেটির কাম্য ছিল। যেই ছেলেটা মেয়েটির একটা বাংলা এসএমএস পড়ার জন্য অনেক কষ্টে একটা মোবাইল কিনেছিল । জাস্ট মেয়েটির সাথে একটু চ্যাঁট , একটু কথা , একটু ভালোলাগার জন্য । সেই হতভাগা ছেলেটি মেয়েটির একটা ফোন , একটা এসএমএস , অথবা মিসকল না পেলে খুব কষ্ট পেত । এমনকি সারাদিন না খেয়ে থাকতো ।
ছেলেটির খুব ইচ্ছা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার , এবং এই জন্য ছেলেটি সব সময় চাইত মেয়েটা তাকে যেন অনুপ্রাণিত করে । মেয়েটি যদি ছেলেটি কে একবার পড়াশুনার কথা বললেই ছেলেটি সাথে সাথে বই নিয়ে বসে যেত । আজ সেই ছেলেটা এখন আর একদমই পড়ে না । শুধু মাত্র মেয়েটির অবহেলার জন্য । ছেলেটি সারাদিন ফেইসবুকে বসে থাকে । সর্বদা চ্যাঁট অপশন এর দিকে তাকিয়ে থাকে মেয়েটি কখন অনলাইনে আসবে । মেয়েটির ফেইসবুক ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে জানতে চাইত মেয়েটি কেমন আছে ?
কিছুটা সময় মেয়েটা ছেলেটার সাথে চ্যাঁট করত , তাতে ছেলেটির মন পূর্ণ হত না , মন চাইত আরও কিছুটা সময় দিতে । ছেলেটি নিয়মিত নামাজ পড়তো না , কিন্তু প্রতি রাতে মেয়েটির জন্য , ছেলেটির ভালোবাসার জন্য আল্লাহ্ তালার নিকট মন ভরে দোয়া করতো । আর একা একা নীরবে কান্না করতো । রাস্তাই যদি কোন ভিক্ষুক টাকা চাইতো ছেলেটির পকেটে যা থাকতো তাই ভিক্ষুক কে দান করতো , আর মেয়েটির জন্য দোয়া চাইত যেন মেয়েটির সামনে পরীক্ষাটা ভালো যেন হয় ।
অথচ এই ছেলেটি নিজের জন্য একটা মোম পর্যন্ত মসজিদে দেয়নি । আর ছেলেটি ওই মেয়ের পরীক্ষা ভালোর জন্য আল্লাহ্ এর ঘরে এসে ফরিয়াদ করতো কেননা ছেলেটি জানত আল্লাহ্ এর ঘরে কেউ কিছু মন থেকে চাইলে আল্লাহ্ তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না । ছেলেটা কখনও আত্মহত্যা করতে পারবে না কারণ এই অসহায় পৃথিবীতে দুই জন কে ভালোবাসে এক তার মাকে আর এক জন সেই মেয়েটিকে । ছেলেটি এই জন্যই মরতে পারবে না কেননা সে তার মা কে কখনও কষ্ট দিতে পারবে না । কেননা ছেলেটি জানে তার মা তাকে অনেক অনেক বেশি ভালোবাসে । যা কেউ কখনও পারবে না ।
ছেলেটি জানত যে মেয়েটা কোনদিন তার হবে না। তবু কেনও ?? এত ভালোবাসে মেয়েটিকে । কারণ ছেলেটির আশা ছিল মেয়েটা কে না পেলেও তার জীবনে জীবন সঙ্গিনী না করতে পারলেও মেয়েটির জন্য তার জীবনের সব কিছু করে যাবে । মেয়েটি যদি ছেলেটিকে কোন একটি কাজ দিত ছেলেটি পাগলের মত সকল কাজ করে দিত । মেয়েটির জীবনে যা চাওয়ার আছে তা আজ অনেকটাই পূর্ণ হয়েছে । তার পরেও বাকি চাওয়া গুলো, বাকি স্বপ্ন গুলো ছেলেটি তার জীবন দিয়ে হলেও পূর্ণ করতে সচেষ্ট ।
এই ছেলেটা হয়তোবা কোন মেয়েকে কোনদিন ভালবাসতে পারবে না । কেননা তার সকল ভালোবাসা সে ওই মেয়েটাকে উজাড় করে দিয়ে দিছে। ছেলেটার সামনে যদি কখনও স্বর্গের অপ্সরী এনে দেয়া হয় তবে ছেলে কখনও ওই দিকে ফিরে তাকাবে না । কেননা ছেলেটির কাছে সুখের স্বর্গের অপ্সরী ওই মেয়েটাই । এই রকম অফুরন্ত ভালোবাসার মাঝে ছেলেটা এখন শুধু আজ এক জন কেই ভালোবাসে আর সেটা হল তার জম্মধাত্রি “মা” কে । কারণ ছেলেটি ভিন্ন অবস্থানে দুই জন কেই সমান ভাবে ভালোবাসে । ছেলেটার হৃদয়ে শুধু দুই জনের জায়গা । কিন্তু এই কথা গুলো ছেলেটির মা জানলেও ওই মেয়েটি বুজে না । কেনও বুজে না তা এক মাত্র আল্লাহ্ তালাই জানেন ।
ছেলেটা হয়তো আর কোন দিন মেয়েটাকে পাগলের মত ফোন দিতে পারবে না , পারবে না একটা এসএমএস করতে , শুধু নীরবে মেয়েটা কে ভালোবেসে যাবে সারাজীবন । যা সে কাওকে কোনদিন বুজতে দিতে পারবে না । ছেলেটা কষ্ট পেতে পেতে তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাবে । কিন্তু তা কেউ জানবে না । ছেলেটা মেয়েকে চন্দ্রমুখী আর মেয়েটি ছেলেটিকে দেবদাস বলে ডাকতো । ছেলেটি হয়তোবা দেবদাসের মত অপরিমিত হবে না । কিন্তু মেয়েটি কে ছাড়া ছেলেটি কি আদৌ সুখী হতে পারবে কি ?????
এই হল একটি ছেলের ভালোবাসার ছোট গল্প । গল্পটি আজ নিঃপ্রান কিন্তু নিষ্পাপ । আর গল্পের শেষ টা হল ছেলেটি সারাজীবন মেয়েটাকে ভালবাসবে মেয়েটি বুজুক আর না বুজুক । আর মেয়েটা ছেলেটাকে কে ভালোনাবাসলেও একটি সান্ত্বনা নিয়ে বেঁচে থাকবে সে মেয়েটিকে ভালোবাসে । ছেলেটা মেয়েটিকে কতটুকু ভালোবাসে মেয়েটি এখন না বুজলেও এক সময় ঠিকই বুজতে পারবে । আর ছেলেটি তার জীবনের শেষ দিনে দেবদাস বিবর্ণের রুপ ধারন করে মেয়েটি কে বলে যাবে । “ আমি তোকেই ভালোবাসি ”