ফাহাদ বাসর ঘরে ঢুকেই দেখে ইরা মনের সুখে সিগারেট টানছে। দেখেই ফাহাদের মাথায় রক্ত উঠে গেল,
-আপনার সাহস কত বড় আমার বেডরুমে বসে সিগারেট খাচ্ছেন? আর নতুন বউ হয়ে এগুলো করছেন লজ্জা করে না? ইরা খুবই উদাস ভাবে বলল,
-না করে না
-কোন ভদ্র ফ্যামিলির মেয়ে সিগারেট খায়না । আপনি আসলেই একটা অসভ্য টাইপের মেয়ে। ইরা ফাহাদের কথায় খুব উৎসাহিত হয়ে বলল,
-তাহলে আমাকে ছেড়ে দিন।ডিভোর্স দিয়ে দিন তাহলেই তো হয়ে যায়। এই কথা শুনে ফাহাদ চুপ হয়ে গেল।আর কথা বাড়া
ল না ইরার সাথে। এভাবে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য বিয়ে করেনি সে, করেছে অন্য কারনে। চুপচাপ ফ্রেশ হতে চলে গেল।
ইরা ভাবছে ফাহাদ এতটা লোভী কখনও ভাবেনি সে। দেখে সহজ সরল মনে হয়েছিল তাই বিশ্বাস করে তার অসুস্থতার কথা বলেছিল। কিন্তু কি করল এই ছেলে ?সেটা দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে করল ওকে। তবুও তিনদিনের মধ্যে। বুঝতে অসুবিধে হয়নি ইরার যে ফাহাদ এটা কেন করেছে।করেছে সম্পত্তির লোভে। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে ইরা। ও মরে গেলে ফাহাদ সব কিছু খুব সহজেই হাত করতে পারবে।
বিশ্বাস করে এত বড় ধোঁকা খেল ভেবে কস্ট লাগছে।বাবা মাকে জানাতে পারত সব,কিন্তু লাভ হত না,উল্টো বাবা মায়ের কস্ট বাড়ত।নাহ এই ছেলেকে নিজেই হ্যান্ডেল করবে সে। এমন কিছু করতে হবে যাতে করে এই ছেলে নিজেই ওকে ছাড়তে বাধ্য হয়।্ফাহাদ ফ্রেশ হয়ে আসার পর বলল,
-আমার খুব ঘুম পেয়েছে। সরুন শোব।
-মানে কি?আপনি ভাবলেন কি করে যে আপনাকে আমার সাথে শুতে দিব? একটা বালিস মেঝেতে ঢিল মেরে ফেলে দিয়ে ইরা বলল,
-যান ওখানেই শোন আপনি। আমার ধারে কাছেও আসার চেষ্টা করবেন না বলে দিচ্ছি। টাকার লোভে বিয়ে করেছেন ভাল কথা,আমাকে জ্বালাবেন না একদম,সাবধান। ইরার কনফিডেন্স ছিল যে এই ছেলের সম্পত্তির লোভ থাকলে ও মরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ওকে তেমন ঘাটাবে না।কোন কিছুতে জোর জবরদস্তিও করবে না। হলও তাই। ফাহাদ চুপচাপ আলমিরা থেকে একটা চাদর বের করে মেঝেতে বিছিয়ে শুয়ে পড়ল।ফাহাদ ভাবছে ইরার কথা। বিয়েতে একদম মত ছিল না ওর। ইরা দেখতে ভালই কিন্তু মেয়েটার মাথায় সমস্যা আছে বলে মনে হয়েছিল প্রথম পরিচয়ে।তাদের বাবা মা দুজনকেই ট্যুরের বাহানায় কক্সবাজার নিয়ে গিয়েছিল। প্রথম দিনেই মিথ্যা বলে ফাহাদকে নিয়ে রাতে জঙ্গলে গিয়েছিল ইরা তাবু খাটিয়ে থাকবে বলে। তার নাকি এডভেঞ্চার পছন্দ। সে এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা ছিল। তখন প্রতি মুহূর্তে ইচ্ছা করছিল মেয়েটাকে একটা চড় লাগাতে কিন্তু সেই রাতে ইরা কথায় কথায় বলে ফেলেছিল তার অতিরিক্ত হাসিখুশি থাকার কারণটা। মেয়েটা অসুস্থ,ওর কাজ কর্ম যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন সে রাগ কন্ট্রোল করার ট্রাই করবে।ইরাকে আর স্ট্রেস দিবেনা। ইরা বিছানায় শুয়ে বালিসে মুখ বুজে কাঁদছিল জীবনের শেষ কটা দিন এভাবে কাটাতে হবে ভাবেনি সে।ভেবেছিল বাবা মাকে যতটা সম্ভব বেশি সময় দিবে। কিন্তু তা আর হলোনা।এই ধোঁকাবাজ ছেলেটার সাথে বাকি দিনগুলো কাটাতে হবে । বাবা মা তো জানেও না যে সে মাথায় টিউমার নিয়ে ঘুরছে। বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ৫% । একথা বাবা মা কে জানালেই বা কি হত? বাকি দিনগুলোও কষ্টে কাটাতেন উনারা। ভাবতে ভাবতে আপনা থেকেই একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল ইরার। সকালে দরজায় মায়ের ডাকে ঘুম ভাংল ফাহাদের।সে তারাতারি মেঝে থেকে বিছানা সরিয়ে হাই তুলতে তুলতে দরজা খুলল। -কিরে নটা বাজে।বৌমা কি ঘুমাচ্ছে এখনও?
-হুম কাল অনেক ধকল গেছে তো। মা হেসে ফেললেন। ডেকে তুল বৌমাকে।তোর বাবা নাস্তার টেবিলে অপেক্ষা করছে।বলে চলে গেলেন ফাহাদের মা।ফাহাদ ইরা কে ডাকল,
-এই যে উঠুন।মা নাস্তার জন্য ডাকছে। ইরা ঘুম জড়ানো গলায় বলল,
-এখন নাস্তা খাবনা। আমাকে বেড টী দিতে বলুন।
-দেখুন আপনি বাড়ির নতুন বউ।প্রথম দিনই এরকম করলে মা অনেক কস্ট পাবে ইরা ঝাড়ি মেরে বলল,
-যান তো ।ঘুমাতে দিন আমাকে। ফাহাদ খেয়াল করেনি মা আবার রুমে এসেছেন ফাহাদ চা খাবে কিনা জানতে।এসে সবই শুনলেন।হঠাত মায়ের আওয়াজে চমকে তাকাল ফাহাদ। -বউমা না এলে তুই একাই আয় খেতে।ও পরে খেয়ে নিবে।বলে চলে গেলেন। শ্বাশূড়ির গলা শুনে ইরা উঠে বসল।ফাহাদ রেগে গেল,
-হলো তো ?এখন আপনি খুশি? বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ইরা ভাবল ফাহাদের বাবা মায়ের সাথে বেয়াদবি করা উচিত হবেনা । উনাদের তো কোন দোষ নেই। তাছারা ইরার বাবা মা এগুলো শুনলে কস্ট পাবেন। সে চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে খেতে এল। নাস্তার টেবিলে কেউ কথা বলছে না।বুঝতে পারল তার আচরণে সবাই অষন্তুষ্ট। সেও এসব পাত্তা না দিয়ে খাওয়া শুরু করল। ফাহাদের মা হঠাত বলে উঠলেন,
-বউমা বাসার কিছু নিয়ম কানুন আছে।আমরা সবাই ঠিক নটায় একসাথে বসে নাস্তা করি।টাইম মত উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে আসবে। এর মধ্যেই ইরার মাথায় খুব যন্ত্রণা হতে লাগল। ও দুহাতে মাথা চেপে ধরল। ফাহাদ তারাতারি উঠে গিয়ে পানি খাইয়ে দিল ইরাকে।আপনার শরীর খারাপ।চলুন রুমে গিয়ে রেস্ট নিবেন। হাত ধরে ইরাকে রুমে নিয়ে গেল।এদিকে ফাহাদের মা ভাবছেন উনার কথা শুনে ইরা বিরক্ত হয়ে এই নাটক টা করেছে। ফাহাদের বাবা মা দুজনেই অবাক হয়ে ফাহাদের চলে যাওয়া দেখছে।যে ছেলে বিয়ের নাম শুনে দৌড়াত সে একদিনে এরকম বউ ভক্ত হয়ে গেল?মেয়েটা কি যাদু করেছে কে জানে। ফাহাদের মা ভাবতে লাগল এই মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিয়ে উনারা কোন ভুল করেননি তো?
এদিকে রুমের কাছে এসেই ইরা ঝাপ্টা মেরে সরিয়ে দিল ফাহাদকে।
-দূরে থাকুন আমার থেকে।বাহানা পেলেই কাছে ঘেঁষার ধান্ধা।
-আপনার হেল্প করছিলাম শুধু।আপনার সাথে ওভাবে ঘেষার ইচ্ছা আমার কখনই ছিল না।
-ও তাই?তাহলে বিয়ে করলেন কেন? থাক থাক বলতে হবে না।আমি খুব ভাল করেই জানি কিসের লোভে বিয়ে করেছেন আপনি।আরেকটা কথা আমি মরে গেলেও আমার হেল্প করার দরকার নেই আপনার। ধন্যবাদ। এটা বলেই ইরা নিজেই আসতে আসতে হেঁটে রুমে চলে গেল।ফাহাদ তাকিয়ে আছে। মেয়েটাকে ভালবাসে না সে অথবা বউ হিসেবেও দেখে না। তাহলে ওকে বিয়ে করল কেন সে? হুম মেয়েটার জন্য কেমন যেন মায়া কাজ করেছিল। ইরাকে ওয়াদা করেছিল যে সে আর কাওকে তার অসুস্থতার কথা জানাবে না। কিন্তু মেয়েটাকে জেনেশুনে চোখের সামনে এভাবে মরতে দেখতে পারবে না। কিছু একটা করতেই হত।বিয়ে না করলে হেল্প করার সুযোগটা কোন ভাবেই পেত না। মেয়েটাকে মরতে দিবে না সে, এটা শুধু জানে ফাহাদ ওয়াশরুমে শেভ করছিল।হঠাত করেই ইরা ঢুকে গেল ওয়াশরুমে।
চমকে ফিরে তাকাতে গিয়ে ফাহাদের গাল অনেকখানি কেটে গেল। মেয়েটার মাথায় তিল পরিমাণ ঘিলুও নেই। ফাহাদ চেঁচিয়ে উঠল,
-আমি ওয়াশরুমে আছি জেনেও এভাবে নক না করে ঢুকে গেলেন কেন? মেনার্স বলতে কি কিছু নেই আপনার? -না নেই।ওয়াশরুমের দরজা খোলা ছিল। বুঝলাম সেরকম কিছু করছেন না।তাই ঢুকে গেলাম। এখন বেরুন আমি গোসল করব। রাগ আর ধরে রাখতে পারল না ফাহাদ।একে তো নক না করে ঢুকেছে। ওর এই স্টূপিডিটির জন্য তার গাল কেটে গেছে কিন্তু এই নিয়ে মেয়েটার কোন মাথাব্যথাই নেই। সব কিছুর একটা লিমিট আছে। -আমি শেভ করছি দেখছেন না? আমার কাজ শেষ হলে গোসল করবেন আপনি।যান এখন।
-মোটেও না।আমি এখনই গোসল করব।শুধু শুধু রাগাবেন না আমাকে বলে দিচ্ছি।আপনি রুমের আয়নায় দেখে শেভ করুন গিয়ে। চেঁচামেচি শুনে মা এলেন।
-কিরে কি হয়েছে? চেঁচামেচি শুনে দৌড়ে এলাম।ঝগড়া করছিস নাকি? ফাহাদ বিপাকে পড়ে গেল।মায়ের সামনে ঝামেলা বাড়াতে চাচ্ছে না।বাড়ালে এই পাগল মেয়ে কি বলে বসে ঠিক নেই। শুধু শুধু মা কস্ট পাবে।
-আরে না মা।তোমার বৌমাকে কখন থেকে বলছি গোসল করতে। ও রাজি হচ্ছিল না।তাই ওয়াশরুমে টেনে নিয়ে এলাম।এমনিতেই শরীর টা ভাল না ওর তার উপর গোসল করতে চাইছিল না আলসেমি করে। ইরা লক্ষিটী তুমি প্লিজ গোসল করে নাও।আমি রুমে শেভ করব। বলেই মাকে ধরে বাইরে নিয়ে গেল ফাহাদ।ইরা মজা পাচ্ছিল। এই ফাজিল ছেলেকে জ্বালাতে ভালই লাগছে।রুম থেকে কাপড় এনে ধুম করে ওয়াশরুমের দরজাটা লাগিয়ে দিল।ফাহাদের খুব মেজাজ খারাপ হচ্ছিল।এই ঝগড়াটে মেয়ের সাথে ঝগড়া করেও পারবে না সে। থাক কিছুদিনের ব্যাপার তারপর ঘরের মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে দেবে। ডাইনিং এ বসে লাঞ্চ করছিল সবাই। ফাহাদ হঠাত ওর বাবাকে বলল,
-বাবা একটা কথা ছিল।
-হুম বল।
-আমার কিছু টাকার প্রয়োজন। ফাহাদের বাবা মা দুজনেই একটু অবাক হলেন।এই ছেলে কখনই মুখ ফুটে টাকা চায়নি। উনারা নিজেই বরং যা লাগে তার থেকে বেশি টাকা ছেলেকে দেন। পড়াশুনা শেষে চাকরি নিতে চেয়েছিল ফাহাদ।বাবা মাই দেন নি।ভবিষ্যতে গিয়ে তো বাবার বিজনেসই দেখতে হবে।চাকরি নিয়ে কি করবে?আজ ফাহাদ টাকা চাইছে। এক্সট্রা টাকা কিসের জন্য চাইছে বুঝতে অসুবিধে হল না উনাদের।তবুও বললেন,
-কত লাগবে বল।
-বিশ লক্ষ টাকা। ওর বাবা মা যেন আকাশ থেকে পড়লেন। নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না উনারা। তবুও বাবা নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, -এত টাকা তো এর আগে কখনই প্রয়োজন হয়নি তোর ।হঠাত কেন দরকার?
-দরকার আছে।দিতে পারবে কিনা বল।পরে বুঝিয়ে বলব। ছেলে কখনই মুখ ফুটে বড় কিছু চায়নি।প্রথমবার চাইছে।না করতে পারলেন না বাবা। -ঠিক আছে।বিকেলের মাঝে এরেঞ্জ হয়ে যাবে। খাওয়া শেষে ফাহাদ আর ইরা চলে গেলে মা বলতে লাগলেন,
-নিশ্চয়ই এই মেয়ের কারসাজি এটা।আমার সহজ সরল ছেলেটার মাথা গিলে খাচ্ছে। তোমার এভাবে রাজি হয়ে যাওয়া উচিত হয়নি। কাল এসে বলবে পুরো সম্পত্তি আমার বউয়ের নামে লিখে দাও।তাই দিবে?প্রশ্রয় দিয়ে একদম ঠিক করনি।
-দেখ আমার যা আছে সব আমার ছেলেরেই। তাছাড়া ছেলেটা কখনই কিছু চায় নি।প্রথমবার চাইল না করতে পারলাম না ।টেনশন নিয়ো না।পরের বার থেকে এরকম হবে না। রুমে এসে ইরা ভাবছে ছেলেটা আসলেই লোভি। কত সহজে বাবা মায়ের থেকে এতগুলো টাকা আদায় করে নিচ্ছে।এই ছেলেকে বড় রকমের শিক্ষা দিতে হবে। অনেক বার বেড়ে গেছে। রুমে এসেই ফাহাদের মাথা ঘুরে গেল।ওর সব কাপড় ইরা ছুড়ে ছুড়ে ফ্লোরে ফেলছে। -এসব কি করছেন আপনি?
-আমার কাপড় চোপড় কি স্যুটকেসেই থাকবে নাকি?এত ছোট আলমিরাতে হবে না আমার।আরেকটা আলমিরা লাগবে।আজকেই এনে দিন। মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ফাহাদের।
-আমার কাপড়গুলো এখনই মেঝে থেকে তুলুন বলছি। আপনার সাহস কিভাবে হল আমার আলমিরা তে হাত দেওয়ার?আপনার আলমিরা লাগবে বললেই হত।এনে দেওয়া যেত।
-তুলে নিন নিজেই।আর তারতারি আলমিরার ব্যবস্থা করুন। বলেই ইরা নিজের কাপড় গুছানোয় মনযোগ দিল। মন চাচ্ছিল মেয়েটাকে একটা চড় লাগাতে। কিন্তু নিজেকে সামলে নিল।এখন কাজের মেয়েকে কাপড় গুছাতে ডাকলে মায়ের আর কিছু বুঝার বাকি থাকবে না। রাগে ফুলতে ফুলতে নিজেই কাপড়গুলো তুলতে লাগল।এক গ্লাস পানি হাতে তুলে খায়নি আজ পর্যন্ত আর এই মেয়ে দুইদিনে ওর জীবনটা তামা তামা করে দিচ্ছে।আজ মেঝে থেকে কাপড় তুলাচ্ছে কাল কাপড় ধোয়াবে।আর কিছু চিন্তা করতে পারল না ফাহাদ।মাথা ব্ল্যাঙ্ক হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যায় হাসপাতালে গেল ফাহাদ।ডাক্তারের সাথে কথা বলে বুঝতে পারল দেশে চিকিৎসা করালে বাঁচার পসিবিলিটি খুব কম ইরার।
দেশের বাইরে করালে তবুও চান্স আছে। কিন্তু তার জন্য আরও টাকার প্রয়োজন। বাবাকে আর চাপ দেওয়া যাবেনা।,এমনিতেই বিজনেসে লস যাচ্ছে,যা দিয়েছে এই ঢের।বূঝতে পারছিল না কি করবে।এতকিছু করার পর হাল ছাড়তে ইচ্ছা করছে না। অন্য কোন রাস্তা বের করতে হবে ।সব ব্যবস্থা না করে ইরাকে কিছুই জানাবে না ভাবছে।আগেই এই পাগল মেয়েকে মিথ্যা আশা দেওয়া উচিত হবে না। রুমে ঢুকতে গিয়েই ফাহাদের মনে হল ভিতরে ইরা ম্যাডাম আছেন।না জানি এখন নতুন কি ঝামেলা পাকানোর প্ল্যান করছেন। যাই হোক চিন্তা বাদ দিয়ে সাহস করে রুমে ঢুকেই গেল। ঢূকেই দেখল আপন মনে কাপড় চোপড় আবার স্যুটকেসে ঢুকাচ্ছে ইরা।ফাহাদের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।এত কস্ট করে আলমিরা আনল আর এখন উনি কাপড় আবার স্যুটকেসেই ঢুকাচ্ছেন। যাই হোক এই নিয়ে ঝামেলা করতে ইচ্ছা হল না। এখন কিছু বললেই আবার ঝগড়া শুরু করবে।এই মেয়ের তো ওকে জ্বালানোর জাস্ট একটা বাহানা দরকার। যা ইচ্ছা করুক।ফাহাদ ঠিক করল কিছুই বলবে না।চুপচাপ রুমে ঢুকে ফ্রেশ হতে যাবে তখনই ইরা বলল,
-তৈরি হয়ে নিন।শ্বশুড় বাড়ি যাবেন আজ বলেই একটা রহস্যময় হাসি হাসল।
-মানে? -মানে বিয়ের পর বউ কে নিয়ে নতুন জামাই কিছুদিনের জন্য শ্বশুর বাড়ি যায়। এত ডিটেইলস আমি বলতে পারব না।আপনার মায়ের থেকে জেনে নিন। কি বলছে এই মেয়ে? এখন আবার এই পাগলের সাথে তার বাড়িতে গিয়ে থাকতে হবে? নেভার।ফাহাদ ওর মাকে ডাকল। ডাক শুনে মা এলেন।
-কি হল?ডাকছিস কেন? -আমার নাকি এখন আবার শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে?
-ও হ্যা।এটাই নিয়ম। রেডি হয়ে নে।ইরার মা ফোন করেছিল। -দেখ আমার কিছু কাজ আছে।আমি কোথাও যেতে পারব না।ড্রাইভারকে বল ইরাকে নামিয়ে দিয়ে আসতে। ফাহাদের মা মনে মনে একটু খুশিই হলেন। বউয়ের পিছু পিছু ছেলে শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইছে না। এই মেয়ের একটা শিক্ষা হও্য়া দরকার ছিল।
উনি বললেন, -কাজ থাকলে আর যাবি কিভাবে? তাহলে বরং বউমারও যাওয়ার দরকার নেই।
জামাই ছাড়া গেলে লোকজনও খারাপ বলবে।আমি ইরার মাকে ফোন করে না করে দিচ্ছি। বলেই একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেলেন।শ্বাশুড়ি যেতেই ইরা রেগে গেল। ফাহাদ কে বলল, -এবার আপনি খুশি? আমাকে আর আমার বাবা মাকে আরেকটু কস্ট দেওয়ার সুযোগ পেলেন। বলেই ইরা স্যুটকেসের দিকে দৌড়ে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে গুছানো কাপড় বের করতে শুরু করল।এবার ফাহাদের একটু মায়া হল। এমনিতেই মেয়েটা অসুস্থ তার উপর বাবা মায়ের থেকে দূরে।ওর জন্য ইরা বাবা মায়ের কাছেও যেতে পারছে না।
নাহ এমন টা হতে দেওয়া যায় না ।দুই একদিনেরই তো ব্যাপার।ম্যানেজ করে নেবে । ও হেঁটে ইরার কাছে গিয়ে বলল, -থামুন ।যাব আমি। কান্নাকাটি করবেন না দয়া করে। ইরা জেদের বশে ফাহাদের কথা পাত্তাই দিল না।কাপড় বের করেই যাচ্ছে।ফাহাদ ইরার হাত ধরল। -থামুন।এত রাগ কেন আপনার?অনেক কেঁদেছেন।যান মুখ ধুয়ে আসুন।আমি কাপড়গুলো গুছাচ্ছি।
-আমার কাপড় আপনার গুছিয়ে দেবার দরকার নেই।আর আপনার আমার সঙ্গে কোথাও যাবারও দরকার নেই।
-উফ এত জেদী কেন আপনি?
যান ফ্রেশ হয়ে আসুন তারাতারি।আপনার বাবা মা ওদিকে কস্ট পাচ্ছে।মা এতক্ষনে উনাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে আমরা যাবনা।তারাতারি ওখানে পৌছে উনাদের সারপ্রাইজ দিতে হবে। হাত ধরে প্রায় জোর করেই ওয়াশরুমের দরজায় দিয়ে এল ইরা কে। এই প্রথমবার ফাহাদকে কিছু বলতে পারল না ইরা।বিয়ের পর এই প্রথমবার কেন জানি ছেলেটাকে খারাপ মনে হচ্ছে না। অথচ এই দুদিনে অনেক জ্বালিয়েছে ফাহাদকে। তবুও ছেলেটা ওর কস্টের পরোয়া করছে। অদ্ভুত।কিছুতেই হিসেব মেলাতে পারছিল না। ফাহাদের মা টেবিলে খাবার রেডি করছিলেন।তখনই ফাহাদ আর ইরা স্যুটকেস হাতে নিচে নামল।
ফাহাদ বলল, -মা আমরা এখন খাব না। ইরাদের ওখানে গিয়েই খাওয়া দাওয়া করব -মানে?তুই না বললি যাবিনা? মায়ের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।কিন্তু বুঝালেন না
-মা ইরা অনেক মন খারাপ করছিল। তাই ডিসিশন চেঞ্জ করলাম। দু একদিনেরই তো ব্যাপার।নতুন বউয়ের জন্য এটুকু করাই যায়। বলেই ফাহাদ হাসল। ফাহাদ আর ইরা বেড়িয়ে যাচ্ছে।মা চেয়ে রইলেন।ছেলেটা বদলে যাচ্ছে। মেয়েটা ছেলেটাকে কন্ট্রোল করতে শুরু করেছে। অথচ এই মেয়েকে ফাহাদ বিয়েই করতে চাইছিল না। উনারাই জোর করেছিলেন। এখন হিতে বিপরীত হচ্ছে।মায়ের চোখে কেন জানি পানি চলে এল। ইরার বাবা মা দুজনই মন খারাপ করে বসে আছেন।আজ জামাই নিয়ে ইরার আসার কথা ছিল কিন্তু আসে নি।মনটাই ভেঙ্গে গেছে উনাদের। সকাল থেকে ইরার মা তারাহুরো করে অনেক কিছু রান্না করেছেন। জামাই প্রথমবার বাসায় আসবে। নতুন জামাই বলে কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এল না কেউই। হঠাত কলিংবেল বাজল।ইরার মা দরজা খুলে হতবাক। মেয়ে আর মেয়ের জামাই দুজনেই দরজায় দাঁড়িয়ে।ফাহাদ হাসছে।
খুশিতে আত্মহারা হয়ে ইরাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন ইরার মা। ফাহাদ শ্বাশুরিকে সালাম করতে করতে বলল, -ভাবলাম আপনাদের সারপ্রাইজ দেব।যাই হোক প্ল্যান কাজ করেছে। বলেই হাসল ফাহাদ। মানুষগুলোকে এতটা খুশি করতে পেরে কেন জানি অনেক ভাল লাগছে ওর। রাতে ঘুমানোর জন্য ফ্রেশ হয়ে এসেই ইরা দেখে ফাহাদ বিছানার একপাশে শুয়ে পড়েছে। মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ইরার।
একদিন একটু সাপোর্ট দিয়েছে বলেই যেন হিরো হয়ে গেছেন উনি।ভাবল কি করে এই ছেলে যে ইরা ওকে তার সাথে শুতে দিবে? চেঁচিয়ে উঠল ইরা, -আপনি আমার বেডে কোন সাহসে শুয়েছেন? প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিল ফাহাদ।কাচা ঘুম টা ভাঙ্গিয়ে দিয়েছে এ মেয়ে। ফাহাদও রেগে গেল।
উঠে বসতে বসতে বলল, -তাহলে কি আমি আপনার মাথায় শোব?পুরো রুম আলতু ফালতু জিনিসে ভরা। কোথাও ফ্লোরিং করার একটু জায়গা নেই। আপনি কি চান বাইরে গিয়ে সোফায় শুই? চাইলে যেতে পারি কিন্তু আপনার বাবা মা কোন প্রশ্ন করলে তার উত্তর আপনি দিবেন।
ইরা বুঝতে পারল এই বিষয়ে ঝগড়া করা অর্থহীন। রুমে শোয়ার আর কোন জায়গা নেই।
তারপর বলল, -ঠিক আছে বেডেই শোন। কিন্তু আমার থেকে অন্ততপক্ষে দুইহাত দূরত্ব বজায় রাখবেন। সাবধান কোনভাবেই যেন আমার সাথে আপনার গা না লাগে। -দেখুন আপনি কোন হুরপরী না যে আপনার সাথে শুলে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।আপনার থেকে অনেক সুন্দরি সুন্দরি মেয়ে আমার পিছনে ঘুরেছে। আমি পাত্তাই দেইনি। নিশ্চিন্তে শুয়ে পড়ুন। আপনার প্রতি আমার কোন ইন্টারেস্টই নেই।
বলেই অন্যপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল ফাহাদ।ইরার শরীরটা জ্বলে গেল। কত বড় কথা। সে কি সুন্দরি না নাকি? তার পিছনেও ছেলেরা লাইন ধরত। মন চাচ্ছিল কথাটা জোরে জোরেই শুনিয়ে দেয় ফাহাদকে।কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করে নিল। মাঝরাতে বাবা মা ঝগড়া শুনলে ভেজাল হবে। রাতের বেলা হঠাত ইরার ভয়ার্ত আওয়াজে ঘুম ভেঙ্গে গেল ফাহাদের। উঠেই দেখে ইরা চোখ বন্ধ করে সমানে কাঁপছে। সারা শরীর ঘেমে ভিজে গেছে আর আবল তাবল বলছে।ফাহাদ বুঝল ইরা খারাপ কোন স্বপ্ন দেখছে।
সে আধশোয়া হয়েই ইরাকে ডাকল। ফাহাদের ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেল ইরার। জেগে উঠেই কাঁপতে কাঁপতে ফাহাদকে জড়িয়ে ধরল।ফাহাদ কি করবে বুঝে পেল না।ইরা বলেছিল ওর থেকে অন্ততপক্ষে দুইহাত দূরে থাকতে।কিন্তু মেয়েটা ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। ও আস্তে করে ইরাকে জড়িয়ে ধরল। -কি হয়েছে?খুব বেশি ভয় পেয়েছেন?
ইরা ফাহাদের বুকেই মুখ বুজে কাঁদতে কাঁদতে বলল, -স্বপ্নে আমি মারা যাচ্ছিলাম। অনেক কস্ট হচ্ছিল।আমাকে বাঁচান প্লিজ।এই অসুখ টা আমায় খেয়ে নিবে। আমি মরতে চাই না।একদম চাই না। ফাহাদ আরও শক্ত করে ইরাকে জড়িয়ে ধরল।
মনে মনে বলল, -আমি আপনাকে মরতে দিব না। সকালে নাস্তার টেবিলে ফাহাদ ইরা কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছে না।গতরাতের ঘটনার জন্য ইরা যথেষ্ঠ লজ্জিত।এখন ফাহাদের সামনে মুখই উঠাতে পারছে না। এদিকে ফাহাদেরও ইরার সাথে চোখ মেলাতে কেমন যেন আনকম্ফর্টেবল লাগছে। ইরার মা ব্যাপার টা লক্ষ্য করলেন।
উনি বললেন, -তোমাদের দুজনের আবার কি হল?কেউ কারও দিকে তাকাচ্ছ না। ঝগড়া হয়েছে নাকি? ফাহাদের একটু মজা করতে ইচ্ছা হল। -আরে না মা।আপনার মেয়ের মত এত লক্ষী মেয়ের সাথে কি ঝগড়া হতে পারে?
আপনার মেয়ে আমার অনেক খেয়াল রাখে।সেদিন পায়ে ব্যথা পেয়েছিলাম একটু সে পা টিপে দিতে শুরু করল।না করছিলাম,কিছুতেই শুনল না।আর কাল রাতের কথা আর কি বলব খাটে দুজনের জায়গা হচ্ছিল না।উনি আমাকে জায়গা করে দিয়ে নিজে নিচে শুতে চাইলেন। বলেই হেসে ফেলল ফাহাদ।মেয়ে এত স্বামীভক্ত হয়ে গেছে শুনে ইরার মা মনে মনে স্বস্তি পেলেন।কি উচ্ছৃঙ্খলই না ছিল মেয়েটা।কিন্তু খাটে জায়গা হচ্ছিল না শুনে ইরার মা আবার ব্যস্ত হয়ে পড়লেন, -বল কি বাবা!জায়গা হচ্ছিল না মানে?আমি আজকেই বড় খাটের ব্যবস্থা করছি।
-আরে না মা।এখন আমরা ম্যানেজ করে নিয়েছি। মিলেমিশে শুতে শিখে গেছি।ছোট খাটই ভাল। এভাবে ভালবাসা বাড়বে।বলেই ইরার দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্ট হাসি হেসে বলল,কি বল ইরা?ঠিক বলেছি না?
রাগে ইরার শরীর টা জ্বলে যাচ্ছিল।মা নতুন খাট আনবে শুনে একটু স্বস্তি পেয়েছিল।এই ছেলে আবার সব বিগরে দিয়েছে।কি আর বলবে এখন?একটা মলিন হাসি হেসে বুঝাল যে ফাহাদ ঠিকই বলেছে। মা হেসে ফেললেন। এদিকে এই মেয়েকে প্রথমবার একটু জ্বালাতে পেরে ফাহাদেরও মজা লাগছে। ইরার চিকিৎসার বাকি টাকা কিভাবে ম্যানেজ করবে এই চিন্তা করতে করতেই ফাহাদ রুমে ঢুকল।ইরার চিৎকারে সংবিত ফিরে এল। -বাইরে এই ড্রামাটা কেন করলেন? ফাহাদ হকচকিয়ে গেল। তারপর খেয়াল হল।
-কেন?সমস্যা কি? আপনার মা ভাবছে আপনি অনেক ভদ্র হয়ে গেছেন।আপনাকে বরং বড় করলাম উনাদের সামনে। -মোটেও না।আপনি খাট আনতে না করলেন কেন? গতরাতের ঘটনায় কি ভেবেছেন?আমি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি তাই আপনাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম?ব্যাপারটা মোটেও ওরকম না।আমি স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়েছিলাম জাস্ট।
-হয়েছে হয়েছে আপনার মতলব সব বুঝি আমি। আমাকে নিজের এত কাছে পেয়ে আসলে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি। ব্যাপার না।আমি মাইন্ড করিনি। হেসে গুনগুন করতে করতে ফাহাদ গোসলে চলে গেল।
মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ইরার।এখন চাইলেও ঝগড়া করতে পারবে না।বাবা মা শুনবে ।ভালই মজা নিচ্ছে এই সুযোগে। ফাহাদ গোসল সেরে এসে দেখে ইরা বিছানায় কাতরাচ্ছে।ও দৌড়ে এসে বলল, -কি হয়েছে আপনার?
-কিছু না শরীরের পেশীগুলোতে ব্যথা হচ্ছে।একটূ পর সেরে যাবে।এটা নরমাল। মেডিসিন নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। ফাহাদের নিজের উপর রাগ হল খুব।এত বড় অসুখ নিয়ে ঘুরছে মেয়েটা অথচ সে ঠিকমত খেয়াল রাখতে পারছে না।
-এখন মেডিসিন নিয়েছেন? ইরা চোখ বন্ধ করেই বলল,
-হুম আপনার প্রেসক্রিবশন টা কোথায়?
-কেন? -যা বলছি উত্তর দিন।
-ব্যাগে। ফাহাদ ব্যাগ থেকে প্রেসক্রিবশন টা বের করে এনে বলল,
-এখন থেকে টাইম মত আমি অসুধ খেতে বলব আপনাকে।এটা আমার কাছেই থাকবে। এই নিয়ে কথা বলার শক্তি নেই ইরার।ও চোখ বন্ধ করল।
ইরা ঘুমাচ্ছে। ফাহাদ ইরার বাবার রুমে এল। -বাবা আপনার সাথে কিছু কথা ছিল আমার।
-হুম বল বাবা
-আপনার থেকে একটা হেল্প দরকার ছিল আমার। -বল কি হেল্প লাগবে। আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করব।
-আমার কিছু টাকার দরকার।আমি পরে আপনাকে দিয়ে দিব। মাথা নিচু করে কথাগুলো বলল ফাহাদ।
-কত টাকা লাগবে?
-১৫ লক্ষ ইরার বাবার কাছে এই টাকা দেওয়া কঠিন কিছু না।
কিন্তু বিয়ের পরেই নতুন জামাইয়ের মুখে টাকার আবদার শুনে একটু মনক্ষুন্ন হলেন।কিন্তু বোঝালেন না।
-ঠিক আছে।তুমি বস।আমি চেক লিখে দিচ্ছি। সন্ধ্যেবেলা ইরার মা ইরাকে আলাদা ডেকে নিয়ে বললেন, -ফাহাদ কি কোন সমস্যায় পড়েছে? ইরা বুঝল না মা ঠিক কি বলতে চাইছে।সে বলল, -কেন কি হয়েছে? -ও তোর বাবার থেকে কিছু টাকা নিয়েছে তাই মনে হল। কথাটা শুনে ইরা কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলল।ছিঃ তাহলে এই ছিল উনার এখানে আসার পিছনে কারন?
ওর মরে যাওয়া পর্যন্তও অপেক্ষা করতে পারল না? ফাহাদ সব হিসাব করছিল কিভাবে কি করবে।দেশের বাইরে যাবার প্রয়োজন নেই। বাইরে থেকে ভাল একজন ডাক্তার আসবেন নেক্সট উইকে। ট্রিটমেন্ট টা দেশেই করানো সম্ভব।এখন ইরাকে সব জানানো উচিত। এর মধ্যেই ইরা রুমে ঢুকল।ইরা কে দেখে উঠে দাঁড়াল ফাহাদ। কিছু বুঝে উঠার আগেই ওর বুকে সজোরে এক ধাক্কা দিল ইরা।
-ভেবেছেন টা কি আপনি? জামাই হয়েছেন বলে কি সবার মাথা কিনে নিয়েছেন?আমার বাবার থেকে টাকা নেওয়ার সাহস কিভাবে হল? লজ্জা করল না একটু? আরেকবার ধাক্কা দিতে আসছিল তখনই ইরার হাত শক্ত করে ধরে ফেলল ফাহাদ। -একদম সিন ক্রিয়েট করবেন না