মেঘ তিতলীর আব্বু

মেঘ তিতলীর আব্বু

অবন্তী ফেইবুকে সময় কাটানোর জন্য ঢুকলো। কিছুক্ষণ পর একটা বার্তা আসলো-
-হাই।।
-হ্যালো।
-কেমন আছেন?
-ভালো।।
-কি করেন?
-কিছু না।
-আপনার বয়ফ্রেন্ড কেমন আছে?
-আমার বয়ফ্রেন্ড নেই।।
-তাই।। তাহলে তো চান্স নিতে হবে।
-নিতে পারেন। তবে আপনার গার্লফ্রেন্ড এর কি হবে?
– কে আমার গার্লফ্রেন্ড?
– কেন অর্পি।
-কে আপনি?
-আপনার ভবিষ্যৎ।।।

(মেয়েটি ছেলেটির সম্পর্কে জানতো কারণ অর্পি অবন্তীর বন্ধু। কিন্তু ছেলেটি অবন্তীকে চিনতো না)

অবন্তী খুব ভালো একটা মেয়ে। সে এখন কলেজে পড়ে কিন্তু কখনোও কোনো ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়ায় না। মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করতো ওর সম্পর্ক করতে কিন্তু ভয় পেত ভীষণ।। সে ভাবতো তার জন্য কেউ অপেক্ষায় আছে স্বপ্নের দুয়ারে হাতছানি পেতে। সে হাজার ভিরের মাঝে খুঁজত তার কল্পনায় ভর করা রাজপুত্রকে। কিন্তু কখনোও বাস্তবে তার কাল্পনিক চরিত্রের সাথে মিলাতে পারতো না। তাই সে দিশাহীন পাখির মত শুধু আশ্রয় খুঁজত কিন্তু কোথাও ঠাই মিলতো না।

সে খুঁজত, এমন একটা বাহু যেখানে শত কষ্টের পর মাথা লুকালেও অবিরাম সুখের পরশ পাবে।

কিন্তু, হায়!!
এই যাতনাময় দুনিয়াতে মাথা লুকাইবার একটুকুও জায়গা নাই।

ভালোবাসার মত মন সে কখনোও খুঁজে পায়নি যাকে সে তার স্বতঃসিদ্ধতার অধিকারী বানাবে। কারণ যাকে তাকে তো আর রাজ্য শাসন করতে দেয়া যায় না। তার জন্য প্রয়োজন একজন ভালো রাজার।
ঠিক তেমনি,
সুন্দর মনের রাজ্য শাসক হতে গেলে তাকেও ভালো চরিত্র/মনের অধিকারী হতে হবে।

অবন্তীর জগৎটা ছিলো অন্য রকম যেনো রুপকথার কোনো উপন্যাস এর মত। নিজের সুখের চেয়ে প্রিয় মানুষের সুখের প্রাধান্য বেশি দিত। আর খুব আবেগী, বেশি কষ্ট সহ্য করতে পারতো না। একটুকু কষ্ট পেলেই মায়াবী আঁখি জোড়া ভিজে মাখো মাখো হয়ে যেতো। তবুও সে ভারি কষ্টকেও হালকা করে দেখতো।

কিন্তু অবশেষে অবন্তী সম্পর্কে জড়ালো, জড়াতে বাধ্য করলো কোনো এক অদ্ভুত টান। রিফাত অবন্তীকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু কখনোও বুঝতে দেয়নি সেটা ছলনাময়ী ভালোবাসা।
রিফাত অবন্তীকে ভালোবাসলেও তার চেয়ে বেশি ভালোবাসতো অবন্তীর অর্থকে। প্রায় প্রায় টাকা নিতো আর অবন্তী দিয়েও দিতো রিফাতকে ভালোবেসে। কিন্তু এভাবে আর কতো দিন???

অবন্তী যখন বুঝতে পারলো এই ভালোবাসা পরিপূর্ণ ভালোবাসা না।
একদিন অবন্তী রিফাতকে যাচাই করার জন্য টাকা দিতে না করলো। রিফাত অনেক খারাপ ব্যবহার করলো।
এভাবে কিছু দিন যাবার পর যখন অবন্তী রিফাতকে একে বারে টাকা দেয়া বন্ধ করে দেয়। তখন থেকে রিফাত অবন্তীর সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয় আর অবেশেষে ব্রেকআপ।

অবন্তী দিশেহারা হয়ে যায়।। টাকা অবন্তীর কাছে কিছু না কিন্তু অবন্তী চায় টাকাকে না তাকে কেউ একজন মন থেকে ভালোবাসবে। যে অবন্তীর সুসময়ে-দূঃসময়ে সবসময় কাঁধে হাত রেখে বলবে আমি পাশে আছি। এতোটুকু বলার মত অবন্তীর পাশে কেউ রইলো না। 

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত