মিষ্টি পাগলী

মিষ্টি পাগলী

—আপনার সমস্যা কি কাকু?
—-আপনি কি আমাকে বলছেন?
—-জ্বি কাকু আপনাকে বলছি কাকু।
মোবাইল টা পোকেট থেকে বের করে নিজের চেহারাটা একটু দেখে নিলাম।
যে আমার কোন দিক থেকে কাকু বলে মনে হচ্ছে তার।
আমার চেহারা দেখা নিয়ে মেয়েটি একটা হাসি দিয়ে বললো,
—-এতো কি দেখছেন? (মেয়েটি)
—-কাকু ডাকার কারন খুজি। (আমি)
—-যায় হোক আপনি আমার পিছু কেনো নিয়েছেন?
—-কে বললো আপনাকে?
—-কে বলবে মনে,
অনেক আগে থেকে আপনি আমার ফলো করছেন।
—-গন্তব্য পথ যদি একি হয় কি করার আছে বলেন?
—-তাই নাকি?
—-তাই বলেতো মনে হচ্ছে।
—-দেখুন?
—-অনেক সুন্দর দেখছি তো ।
—-ফাজলামো করেন?
—-আমি সেটা বুঝিনা।
—-বুঝতে পেরেছি আর বলতে হবে না।
—-কি বুঝলেন?
—-আপনার নাম কি?
—-সবার মাঝে আমার বসবাস ।
—-মানে?
—-হৃদয় খান ,,,,,,,আপনার?
—-ওহহ্। আমার নাম শুনলে হুস্ হারাবেন।
—-আপনি তো আছেন ফেরনোর জন্য?
—-আমার বয়েই গেছে।
—-বেশী হলে তো বয়ে পড়বেই।
—-আচ্ছা বাই, আর আমার পিছু নেওটা বাদ দেন কোনো লাভ নেই তাতে।
—-আপনার নাম টা?
—-সবাই,, মিষ্টি,,,, বলে ডাকে,আসল নাম, পূজা রায়….
বলেই মেয়েটা চলে গেলো আমার সামনে থেকে।
আমি থ হয়ে দাড়িয়ে আছি।
যাকে আজ এক মাস ধরে ফলো করে আসছি সে কি না অমুসলিম ঘরের মেয়ে।
ওরে মনরে তুই কি আর দেশে মেয়ে পাস নি?
এই অসম্ভস মেয়ে কে তোকে ভালোবাসতে হলো?
এখন কি করবি বল রে মন?
সামনে এগোবি না এখানে সব শেষ করে দিবি।?
মনের গহিন থেকে উওর পেলাম।
পাগল রে,,
ভালোবাসা, জাত, ধর্ম, বড়লোক গরিব দেখে হয়না রে?
ভালোবাসা হয় দুটি মন দিয়ে।
দুটি হৃদয় দিয়ে।
এমন উওর পেয়ে নাচতে নাচতে বাড়িতে রওনা হলাম।
আমার ছোট্ট পরিচয় দেই,,
আমি হৃদয়,, বাড়ির ছোট ছেলে তাই আদর বেশীই পেয়েছি।
আর তাতে ভদ্র বাদর ও বটে 😜
অর্নাস পাস করে বসে আছি,
আর মাঝে মাঝে বাবার ব্যবসা দেখা নোনা করি।
আমারা তিন ভাই, বড় ভাইয়াদের বিয়ে হয়ে গেছে,
তাই তারা তাদের জীবনকে গোছাতে ব্যস্ত হয়ে আছে।
আর যে মেয়েটার সাথে কথা হলো সে হলো,, পূজা রায়,,
সবাই মিষ্টি বলে ডাকে।
ধর্মে মেয়েটা হিন্দু,, আর এই হিন্দু মেয়েটাকে আমি ভালো বাসি।
তার পর থেকে আমার প্রতিদিন এর রুটিন হলো।
মিষ্টির কলেজ এর সামনে ওর জন্য অপেক্ষা কর।
মিষ্টির সাথে পিছু পিছু চলা,
তার ঝাড়ি শোনা।
আর বেহায়া মনটা সেইটা বার বার চাইবে।
তাকে নাকি ঝাড়িটা শুনতে ভালো লাগে।।
এর মাঝে মিষ্টির সাথে একটু আকটু কথা হতো
তাতে ওকে আমি তুমি করে বলার পারমিশন নিয়ে নেই।
একদিন মিষ্টির জন্য তার কলেজের সামনে দাড়িয়ে আছি।
পেছন থেকে কেও আমাকে ডাকলো।
হৃদয় কাকু, ডাক টা শুনে পিছনে ফিরলাম
দেখি মেরা জানেমানব,,আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে।
—-কি করছেন একানে?( মিষ্টি)
—-ইস্পেসাল কারো জন্য অপেক্ষা করছিলাম। (আমি)
—-অপেক্ষার প্রহর কি শেষ হলো?
—-হয়তো হয়ে গেছে।
—-আপনি জানেন আমি হিন্দু ঘরের মেয়ে?
—- হুমম, জানি তুমি বলেছিলে।
—-আপনি মুসলিম সেটা জানেন তো?
—-জান বো না কেনো।
—-তাহলে এতো পাগলামো করছে কেনো?
—-কোথায় করলাম?
—-সব সময় আমার পিছে লেগে আছেন কেনো?
—-সাথে চলার অধিকার নেই তাই।
—-এটা বাদ দিন আপনার পক্ষে ভালো?
—-সেটা হয়তো আর পারবো না।
—-কেনো পারবেন না?
—-ভাবোবাসি হয়তো তাই।
—-আবেগ বাদ দিয়ে, বিকেক এর দিকে লক্ষ করেন,
আর আবেক দিয়ে জীবন চলে না।
—-আর শুধু বিবেক দিয়েও জীবন চলে না।
—-ওহ্,,আপনাকে কি করে বুঝায়?
—-কতো টা ভালোবাসো সেটা।।।।
—-আমার পক্ষে কারো ভালোবাস সম্ভব না?
—-কারান মা বাবা যেখানে বিয়ে দেবে সেখানে আমি বিয়ে করবো।
—-নিজের চাওয়া পাওয়াটা, ইচ্ছাটা কি হবে?
—-আমার কোনো ইচ্ছা নেই? তাই কাওকে ভালোবাসি না।
—-আমি তো বাসি নিজের থেকেও।
—-কেও কখনো নিজের জীবন এর থেকে কাওকে ভালোবাস তে পারে না
—-এটা ভুল বললে।
—-মটেই না।
—-আমার এই বুকে শুধু তোমার নাম টাই লেখা আছে?
—-কই দেখান তো দেখি কতো বড় করে লেখা?
—-দেখতে চাও তুমি?
—-হুমম দেখতে চাই দেখান?
—-তাহলে আগামীকাল দেখাবো।
—-তাই নাকি?
—-হুমম,,
—-আর কাল থেকে আমাদের কোনো রকম যোগাযগ হবেনা,,
কালকেই শেষ কথা আমাদের মাঝে ওকে?
—-ওকে,
—-বাই,
—-বাই,,,
বলে সারানদিন বাবার ব্যবসাতে সময় দিয়ে।
রাতে বাড়িতে বসে আছি।
রাতের খাবার খেয়ে নিজের রুমে বসে আছি আনমনা হয়ে।
কাল থেকে আর মিষ্টি আমার সাথে কথা বলবেনা?
আগামীকাল কিরে দেখাবে হৃদয়ে ওর নাম ছাড়া আর কারোরো নেই?
খালি গায়ে আইনার সামনে দাড়িয়ে আছি।
আমি দেখতে পারছি এই হৃদয়ে শুধু মিষ্টির নাম টাই।
ওকে এটা কি ভাবে দেখাবো।
অনেক ভেবে দেখলাম উপাই একটাই আছে।
আর সেটাই করলাম।
একটা কাঁচ ভাঙ্গা নিয়ে বুকের বাম পাসে ,
মিষ্টির নামটা লেখা শুরু করলাম।
নামের ক্ষত জায়গাথেকে রক্ত গড়িয়ে আমার বুক টা লালে লাল হয়ে গেছে?
নাম লেখাটা শেষ হলো।
অসম্ভব রকক যন্ত্রনা হচ্ছে,
প্রচন্ড জ্বালা করছে ওখানে একটা কাপড় নিয়ে গা থেকে
রক্ত গুলো মুছে নেই।
কিন্তু রক্ত পড়া বন্দ হচ্ছে না
একটা কাপড় দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরলাম ১০ মিনিট পরে বন্ধ হলো।
ঐ রাতে আর তেমন ঘুম হয়নি।
সকালে কোনো উঠতে দেরি হয়েছে বলে গোসল কারা সময় পাইনি, বুকে রক্তের ছাপ গুলু বুঝা যাচ্ছিলো।
কেনো রকম নাস্ত করে বেড়ি য়ে পড়ি।
গিয়ে মিষ্টির কলেজ এর সামনে দাড়িয়ে আছি।
সামনে থেকে মিষ্টি আসছে।
আমার সামনে আসতেই বলি,,,
—-আজ থেকে আমার সাতে আর কথা বলবে না তাই তো? (আমি)
—-হুমম তাই। (মিষ্টি)
—-আজ তাহলো শেষ কথা?
—-হুমম,,
—-তাহলে চলো কিছু টা সময় কথা বলি এক পাসে গিয়ে?
—-ঠিক আছে চলেন?
মিষ্টির কলেজ এর ভিতরে মাঠের এক পাসে বসে আছি আমরা।
মিষ্টি বললো,,,
—-বলেন কি বলবেন?
—-ভালোবাসি তো অনেক।
—-কেনো আপনি বুঝতে চাচ্ছেন না, এটা হয় না?
—-কেনো হয়না?
—-সমাজ এটা কখনো মেনে নেবেনা।
—-আমিতো মেনে নিচ্ছি.
—-আপনি কি পাগল?
—-হুম তোমার জন্য।
—-আপনি খুব ভালো,, আমি অন্যর কাছে শুনেছি তাই আমি চাই না আপনি কষ্ট পান তাই আপনাকে আমি বার বার মানা করছি।
—-হাজার বার করলেও শুনবো না,?
—-আমাকে ভুলে যান প্লিজ?
—-সম্ভব না,,, যার নাম লিখেছি এই বুকে তাকে কখনো ভুলতে পারবো না.।
—-সময় সব একদিন ভুলিয়ে দেবে।
—-তাহলে এটা কি করে মুছেদেবে,, ( বুকে লেখা নামটা দেখালাম)
মিষ্টি অবাক হয়ে গেছে দেখে।
লেখা জায়গাটা লাল হয়ে ফুলে আছে তা দেখা যাচ্ছে।
প্রচন্ড বেথা হয়েছে কথা বলতেও যেনো কষ্ট হচ্ছে বেথা তে।
ঠাসসস্,,,,,করে মিষ্টি আমার গালে একটা চড় মারে।
বললো,,
—-ঐ আপনি এটা কি করেছেন হ্য?
—-তুমি তো দেখতে চাইছিলে তাই দেখাল।
হুপ করে আমার বুকের কেমন বেতা লাগলো।
কারো শরীর স্পর্শ আনুভব করলাম আমার এই বুকে।
হ্যা ভাবতে অবাক লাগছে পাগলিটা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে।
আমি যোনো বিশ্বাস করতে পারছিনা।
—-আমাকে ভালোবাস মিষ্টি?
—-এখনো সেটা বলেদিতে হবে?
—-কবে থেকে বাসতে?
—-অনেক দিন থেকে, কিন্তু আমাদের মাঝে যে ধর্মটা বাধা আছে সেই জন্য আমি দুরে ঠেলে দিয়েছি আপনার।
—-আর এখন?
—-আমি কখনো ভাবতে পারেনি কেও আমাকে এতো টা ভালোবাসতে পারে?
আমার এক কথাতে সে নিজেকে এতো কস্ট দিতে পারে?
—-ধুর পাগলি এটা আবার কষ্ট হলো, ভালোবাসি তো?
—-আমি বাসি না,,,,
—-হুমম, সত্যি ভালোবাসি আমিও।
—-কখনে ছেরে যাবোনা তো ?
—-গেলে খুন করবো। আচ্ছা এখন যেতে হবে?
—-হুমম যাও আমি তোমার ছুটিতে আসবো।
—-মা আপনি আগে ডাক্তার এর কাছে যান প্লিজ?
—-আমার কিছু হবে না।
—-না হোক তাও জান?
—-আচ্ছা,,, তাহলে বাই
—-হুমম, বাই
এর পর থেকে শুরু হলো আমাদের নতুন জীবন।
নিয়মিত দেখা করা।
রাত ভর চুপিচুপি ফোনে কথাবলা।
ক্লাস ফাঁকি দিয়ে গল্প করা হাতে হাত রেখে চলা।
এভাবে দিনগুলো মধুময় হয়ে কাটছে আমাদের
তার থেকে শুরু হলো আমার আর পূজার পথ চলা।
বাবার ব্যবসাতে সময় দেওয়া আর বাকি সময় মিষ্টি কে দেওয়াটা আমার নিত্য দিনের রুটিন হে যায়।
মিষ্টি সত্যি একটা মিষ্টি পাগলী।
মাঝে মাঝে এমন ভাবে কথা বলতো কিছু বুঝতাম না।
জানতে চাইলে বলবে,
এটা পাগলীদের ভাসা তুই বুঝবিনা।
আমাকে ও ইচ্ছা খুসি ডাকে, যেভাবে পারে সে ভাবে
কখনো আপনি, কখনো তুমি কখনো তুই
আমিও তার সাথে সাথে তাল মিলিয়ে চলি।
আমাকে ও কতো টা ভালোবাসে হয়তো বোঝাতে পারবে না।
আমি যে ওকে তার থেকেও বেশী ভালোবাসি।
এভাবে ৬টা মাস পার হলো মিষ্টির ইন্টার পরিক্ষা শেষ হয়ে গেছে।
এখন বাড়ি থেকে ওর বিয়ের চাপ দেচ্ছে।
ওকে আর পড়াতে চাই না।
ভালো কোনো সম্মন্ধ আসলে ওরা বিয়ে দিয়ে দেই তাদের মেয়েকে।
আর মিস্টি হলে এক মাএ মেয়ে, আর ছোটো একটা ভাই আছে

মিষ্টির জন্য ছেলে দেখলো,
পছন্দ হয়ে গেছে বিয়ের দিনটা এখনো পড়ে নি।
মিষ্টি আমাকে দেখা করতে বললো,,,
—-আমার বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে?
—-হুমম, তাই তো বললে।
—-এখন কি করবে বলো?
—-তোমাকেই ভালোবাসি আর বেসে যাবো।
—-আর আমি?
—-জানি না তো।
—-আমি বাঁচনো কি করে?
—-তাহলে চলো পালিয়ে যায়?
—-তোমার পরিবার কি মেনে নেবে?
—-পরে ঠিকি মেনে নেবে।
—-আর যদি না নেই তখন?
—-নেবে আমার পরিবারকে আমি চিনি।
হয়তো কয়েক দিন রাগ করে থাকবে পরে ওরাই এসে নিয়ে যাবে।
—-তোমার সাথে গেলে আমার মা বাবা কে চিরদিন এর জন্য ছাড়তে হবে,আর তাদের আমি খুব ভালোবাসি।
কি করবো আমি এখন?
না তোকে ছাড়তে পারবো?
না আমি আমার মা বাবাকে?
—-তুমি একদিন ভেবে দেখো মিষ্টি কি করবে।
—-ওকে,, বাই
—-ভালোবাসি খুব,, বাই,
আমি জানি মিস্টি কি সিন্ধান্ত নেবে।
তাই আমার আগে থেকে সব ব্যবস্তা করতে হবে।
ফেবুতে এক বড় আপুর সাথে আমি সবকিছু শেয়ার করি।
(আপু টারস নাম,,, নারগিস,,,,)
এটাও বললাম।
সে বললো টেনশন করিস না তোর বড় আপু তোর সাথে আছে।
ঐ দিন রাতে মিষ্টি আমাকে ফোন দিয়ে বলে।
আমার জন্য সব কিছু পারবে।
তার একদিন পরে আমি মিষ্টিকে নিয়ে বাড়ি ছাড়া হলাম।
মিষ্টিকে নিয়ে পালিয়ে গেলাম আমি।
তা ছাড়া আর কিছু করার নেই আমার।
জানি সমাজ এটা মানবে না,
তবুও আমার কিছু আসে যায় না।
যাকে নিয়ে সারাটা জীবন কাঁটাবো সে যদি মনের মতো না হয়
তাহলে বেঁচে থেকে লাভ নেই।
যেনে শুনে নিজেকে আমি এই ভাবে সপে দিতে পারিনা ।
টাকা পয়সা, অর্থ সম্পদ, বাড়ি গাড়ি দেয়ি কি হবে?
যদি ভালোবাসর মতো মানুষ টা না থাকে?
তাকে নিয়ে বাঁচতে সেখো যে তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই।
যে তোমাকে তার জীবন ভাবে।
তুমি ছাড়া তার জীবন অন্ধকার,
এমন কেও তোমার জীবনে আসলে হারাতে দিও না,
জীবনের সবথেকে ভুলটা করবে তখন।
যায় হোক,,
মিষ্টি কে নিয়ে সেই আপুর বাড়িতে উঠলাম।
আমার একটা ছেলে আর একটা মেয়ে।
চার জনের সংসার তাদের খুব সুখে আছে আপু।
মিস্টিকে দেখে বললো তুমি কেনো টেনসন করো না।
আমরা আছি তোমাদের পাসে সারাজীবন।
মিষ্টি আপুকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
সে তারর মা বাবা কে ছেড়ে আমার হাত ধরে চলে এসেছে।
আমাকে বিশ্বাস করে এসেছে।
এই মেয়েটা কে আমি কখনো কষ্ট দেবো না।
কখনো বুঝতে দেবো না একাকিত্ত টা।
খুব ভালোবাস দিয়ে রাখ বো ওকে আমি।
যতোটা ভালোবাসা আছে সব টুকু উজার করে দেবো।
তার পরের দিন আপু আর দুলা ভায়। আমাদের কাজী অফিসে নিয়ে যায়।
প্রথমে মিষ্টি কে মুসলিম হতে হলো তার পরে বিয়ে হলো।
পূজা নাম টা বাদ দিয়ে তাকে মিষ্টি নাম টাই দেওয়া হলো।
আমার মিষ্টি পালগী হয়ে রইলো।
বিয়ে সম্পর্ন হলে আমার্দের। আপু বাসায় নিয়ে আসে।
আপু আমাদের জন্য মনে মনে কখন বাসর ঘর সাজিয়েছে।
মিষ্টিকে লালা বেনারসি তে সাজিয়েছে।
মাথায় টিকলি দিয়েছে,
চোখে কাজল একেঁছে,
হাতে আপু তার নিজের বিয়ের চুরি টা পরিয়ে দিয়েছে।
আমি ভাবতে পারছিনা,
একটা রক্তের সম্পর্কের কেও এটা করবে না।
আমি আপু পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলাম।
আমি খুসিতে কেঁদে ফেলি।
যে আপু আমাকে এতো ভালোবাসে, নিজের ভাই এর মতো আমাকে ভালোবাসে।
এর আপু আমাকে আর মিস্টিকে বাসর ঘরে পাঠিয়ে দিলো।
আমি যেনো আমার মিষ্টি পগলী থেকে চোখ ফেরাতে পারছি
আমার মিষ্টিকে এতো টাই মিষ্টি লাগছিলো।
যেনো আমি আবার নতুন করে ওর প্রেমে পরেছি।
অপলক তাকিয়ে আছি,,
মিষ্টি আমাকে বললো
—-এভাবে কি দেখো?
—-এক পাগলীকে।
—-এমন করে দেখলে লজ্জা পাবে তো।
—-একটু লজ্জা পাওয়াটা ভালো,
—- তাই?
—-হুমম তাতে পাগলীটাকে অপরূপা লাগে।
—-তাহলে পাবো না।
—-কেনো?
—-আমি তোমার পাগলী হয়ে থাকতে চাই, কোনো অপরূপা না।
—-হা হা হা,,, তুমি তো আমার মিষ্টি পাগলী।
—-হুমম, খুব মিষ্টি আমি তাই না?
—-হুমম তাই আজ মিষ্টি পেতে চাই?
—-হিহিহি,, কখনো না।
—-মু হা হা হা,,, আমার জিনিস আমি আদায় করে নিবো।
—-ঐ ভিলেন মতো হাসি দিবানা?
—-আজ আমি ভিলেন হবো তোমার।
—-ঐ কাছে আসবা না কইলাম? (আমার জামার কলার ধরে )
—-আসবো কইলাম।
—-আমি কিন্তু চিৎকার করবো হুহ?
—-করো সমস্যা নেই।
—-দেখো ভালো হবে না কিন্তু হুহ?
—-একটু খারাপ হলেও ক্ষতি নেই।
—-শয়তান, ইতোর, বাদর ভালোবাসি খুব,
কখনো ছেরে য়েওনা।
—-মরনের পরেও না।
—-ছি, এমন কথা বলো না আজ,
—-তাহলে মিষ্টি দেও?
—-ইসস্, লজ্জা করে না বুঝি।
—-আচ্ছা আমি নিচ্ছি।
😜😜বাকিটা ইতিহাস 😜😜
এর পর থেকে আমাদের ভালো দিন চলতে থাকলো।
দুই জনে আনেক সুখি আছি।
আপুর বাড়িতে আছি,,৩মাস হয়ে গেলো।
নিজের জমানো এক লক্ষ টাকা ছিলো।
সেটা আপু আমার কোনে মতে খরচ করতে দিললো না।
আমি দুলাভাই এর সাথে কাজ করতে থাকি।
বসে থাকা তো যায় না,,,
হাজার বার বারন করা সর্তেও মি করি।
খুব সুখে চলছে দিন গুলো।
বাড়িতে আমার সাথে শুধু মা এর সাথে কথা বলি।
আর বাকিরা কথা বলেনা।
এক মাস পর আমার ভাইয়া ভাবি আর মা,,
আপুরর বাসাতে আসে হঠ্যাৎ,
কে বললো ওদের আমি এখনে আছি?
হয়তো আপু বলেছে? হুমম আপু সব তাদেরর বলেছে?
ভাইয়া এসে আমাকে থাপ্পর দিয়ে বললো
—–আমারা কি তোর পর, আমাদের বললে কি আমরা মেনে নিতাম না?
আমাকে তো বন্ধু ভাবিস ভাই না,, তাহলে আমাকে বললে কি হতো?
—- আসলে ভয়তে বলতে পারিনি ভাইয়া (মাথা নিচু করে)
—-তুই আমাকে এই চিনলি,,
তোর বড়ভাইয়া টা কে এমন চিনলি,
যে তোকে কোনোদিন একটা থাপ্পড় দেইনে?
—-কে বললো দিসনি এইতে এখন দিলি,,(একটু মজা করে বললাম)
—-এটা তোর দেষে দিতে বাদ্ধ হলাম,
এখন চল বাড়িতে চল।
—-আব্বা তোর কাজে খুসি আছে চিন্তা করিরিস না।
তার পরে কি খুসিতে মন টা নাচতে থাকলো আমার।
এদিকে মনটা আবারবার কান্না করছে আপুকে ছেড়ে চলে যেতে হবে বলে।
যে এতো টা ভালোবেসেছে আমার, নিজের ছোট ভাইয় এর মতো ভালোবাসা দিয়েছে।
কষ্ট হচ্ছে খুব।
সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে সাথে আপুকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম আমার বাড়িতে,,
মা বলেছে যখন আসতে তো হবেই।
সম্মান এর সহিত মিষ্টিকে বাড়ির ছোট বউ বলে মেনে নিলো।
খুব সুখে কাঁটতে থাকলো আমাদের।
মিষ্টি কে আমার বাড়ির সবাই খুব ভালেবাসে।
মা তো তার নিজের ছোট মেয়ে বলে ডাকে।
মিষ্টিও আমার মা বাবাকে নিজের মা বাবার মতো ভালোবাসে।
এর মাঝে মিষ্টির পরিবার এর মানুষ গুলো মিষ্টিকে খেজ নেই।
তাদের সাথে কথা বলে,
দেখতে দেখতে ৩ টা বছর কেটে গেলো।
আমার মিষ্টি পাগলী টা ছোট্ট একটা মিষ্টির মা হলো,
আমাদের ছোট্ট পরিবার টা বড় হলো।
মিষ্টি, আর আমাদের ছোট্ট মিষ্টি, ও আমার পরিবার এর সবাইকে নিয়ে সুখি পরিবার।
এভাবে যে সারা জীবন সুখে
থাকতে পারি আমার
,, মিষ্টি পাগলী,,,,কে নিয়ে।

গল্পের বিষয়:
ভালবাসা
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত