প্রতিটামানুষই তার জন্মলগ্ন থেকেই তার নিঃসঙ্গতা দুর করণের জন্য একজোড়া নির্ভরযোগ্য হাতের খোঁজে থাকে।
যে হাত জোড়া তার সুখ-দুঃখ সব কিছুতেই পাশে থেকে সাহস আর পথ চলার অনুপ্রেরণা যোগায়।।
আর সেই জন্য আমার একেঅপরকে ভালোবাসি,সারাজীবনে একসাথে থাকার প্রতিজ্ঞা করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দু জনে মিলে স্বপ্ন পূরণের পথে পাড়ি জমায়।
তেমনি আজকের গল্পটাও একজন বিবাহ দম্পতির স্বপ্ন পূরনের গল্প, আর যে স্বপ্ন পূরনের জন্য একজন ছেলে তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিলো নতুন জীবনের সুচনালগ্নে…
চাররাস্তায় মৌড়ের উপরে সদ্য বসে থাকা গুটিকয়েক দোকানের মালিক রাহাত।।বয়স কত হবে খুব বেশি হলেও ২৫ আর এই অল্প বয়সে ব্যবসাদার হিসেবে মহল্লার সবার অন্তরজুড়ে আছে সে।
ব্যবহার আর সততার মাধ্যমে সে আজ এতদুর পর্যন্ত এসেছে।।
রাহাতের যখন ১৫ বছর বয়স,তখনি রাহাতের বাবা পরলোকগমন করেন,আর পরিবারে থাকা ছোট্ট বোন আর মায়ের দেখভাল করার জন্য রাহাত লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে ভেসে যাওয়া পরিবারটাকে নিজের কাঁধের উপরে নিয়ে নেই।
ছোট্ট একটা কাঠের দোকান দিয়ে বসে এই মৌড়াটাতে আর সেই কাঠের দোকান থেকেই আজ সে চারটা বড় দোকানের মালিক।।
ছোট বোনটার বিয়ে দিয়েছে বছর কয়েক হলো,এখন তার পৃথিবী বলতে একমাত্র তার মা।
মায়ের শরিরের অবস্থাও দিনকে দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে, ইদানীং কোমরের ব্যাথাটাও বেড়েছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরিরের শক্তিটাও ক্রমশই কমে যাচ্ছে দিন দিন।।
রাহাত ভেবেছিলো কখনো বিয়ে করে অন্যকারো মায়াতে জড়াবে না,কিন্তু মায়ের অবস্থা আর ছোট বোনের আবদার রাখতে ঠিকি বিয়ের বাঁধনে জড়িয়ে নিয়েছিলো নিজেকে।।
দোকানে বসে বসে ভাবছে রাহাত..! আসলেই তো বাবা-মা তো আর সারাজীবন থাকে না,তারপর তো বাকিটা পথ অতিক্রম করার জন্য একজন সঙ্গিনীর প্রয়োজন,আর এখন বিয়ে করলে মায়ের একাকিত্ব টাও দুর হবে।।
সব দিক বিবেচনা করে রাহাত তার মায়ের সিদ্ধান্তে মত দিলো।।
বিয়েতে মত দেওয়ার কিছুদিন পরেই পাশের গ্রামে একটা মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করা হলো।।
মেয়েটা নাকি সব দিক থেকেই ভালো,লেখাপড়া আর অনেক লক্ষি।
মা ও মেয়েটিকে অনেক পছন্দ করেছে।।
আমাকে দেখতে যেতে বলেছিলো কিন্তু দোকান ছেড়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে নি তাই মা নিজে থেকেই’ সবকিছু ঠিক করছিলো।।
অবশ্য আমাকে একবার ছবি দেখিয়েছিলো আর ছবিতেই মেয়েটিকে ভারি মিষ্টি লাগছিলো দেখতে।।
ঘড়ির কাটা অতিক্রম করার সাথে সাথে দিনগুলিও কেমন জানি পার হয়ে যেতে লাগলো।।
অবশেষে আমাকেও বেঁধে দেওয়া হলো মায়ার বাধনে।।
ছোট থাকতে যখন দেখতাম কেও মাথাই টোপর আর পাঞ্জাবি পরে বর সেঁজে বউ আনতে যেতো তখন খুব ইচ্ছে হতো বর সাঁজার।।কিন্তু আজকে যখন নিজে বর সেঁজেছি তখন মনের ভিতরে একটা ভয়ের আশংকা কাজ করছে।।
বার বার মনে হচ্ছে যাকে আনতে যাচ্ছি সে আমার মা আর আমার পরিবারকে সুখে রাখতে পারবে তো।
পরিবারের দুঃখ কষ্ট কে নিজের করে মানিয়ে নিতে পারবে কি না।।
হাজারো প্রশ্নের বাঁধ অতিক্রম করে বিয়ের কার্য সম্পন্ন করা হলো আমার।।
দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাতের আধাঁরে জ্বলতে থাকা জোনাক পোকার আওয়াজ শুনছি।।
মিটিমিটি আলোতে মনে হচ্ছে আকাশের তারা গুলো নিচে নেমে এসে খেলা করে বেড়াচ্ছে।।
এমন সময় রিমি এসে ডাক দিলো(ছোট বোন)
:-ভাইয়া এতো রাতে কি করছো এখানে?
রিমির কথা শুনে ঘড়ির দিকে একবার তাকিয়ে আবার রিমির দিকে তাকিয়ে জবাব দিলাম..
:-কিছু না রে এমনি দাঁড়িয়ে আছি।
:-ভাবিকে একা রেখে বাইরে কি করছো,এমনিতেই নতুন পরিবেশ তার উপরে সারাদিনে অনেক ধকল গেছে।চলো ঘরে চলো…!
:-তুই যা আমি একটু পরে যাচ্ছি।
সত্যিই তো রাত অনেক হয়ছে,ঘড়ির দিকে একবার আবারো একবার তাকিয়ে ধিরে ধিরে পা বাড়াতে লাগলাম।
আসতে করে ঘরের দরজা টা খুলে ভিতরে ঢুকে সালাম দিলাম।
মস্ত বড় ঘোমটার আড়ালে থেকে মিষ্টি কন্ঠে সালামের জবাব দিলো।
কেমন জানি একধরনের সংকচতা কাজ করছে মনের ভিতরে।।জীবনে এই ১ম বার কোনো অপরিচিতা মেয়ের এতো কাছে দাঁড়িয়ে আছি।।
দ্বিধাহীন ভাবেই জিজ্ঞাসা করলাম,
:-আপনার নাম কি?
:-আমার নাম নিতু..!আর আমাকে তুমি করে বললেই খুশি হবো।
:-আচ্ছা ঠিক আছে,কিছু মনে না করলে তোমার ঘোমটাটা সরাবে।
এটা সাধারণত ছেলেরাই করে থাকে,কিন্তু আমার সাহস না হওয়ার কারনে নিতুকেই ঘোমটাটা সরাতে বললাম।।নিতু কোনো রকম প্রতিউত্তর না করে ঘোমটাটা আসতে করে সরায়ে নিলো।
আমি অপলোক দৃষ্টিতে নিতুর দিকে তাকিয়ে আছি,মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদটা আমার ছোট্ট ঘরে নেমে এসেছে।ছবির থেকেও অনেক সুন্দরী দেখতে নিতু।কি কথা বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না,তাই সাধারণ কথা দিয়ে শুরু করলাম।
:-আচ্ছা মা বলছিলো তুমি নাকি আরো পড়তে চাও।
:-জ্বি,কিন্তু বিয়ের পর তো আর পড়া হবে নাহ্।
:-কে বলেছে পড়া হবে না,শুনেছি তুমি অনেক ভালো ছাত্রী।।
তো তোমার ইচ্ছেটাকে শেষ হতে দেয় কি করে।।
:-আমি ডা. পড়তে চাই।।মানুষের সেবা করতে চাই।
:-আচ্ছা আমি তোমাকে ডা. পড়াবো।আমি তোমার ইচ্ছে পূরণ করবো কথা দিলাম।
:-কিন্তু তার জন্য তো অনেক টাকার প্রয়োজন।
:-সেটা নিয়ে তুমি ভেবো না,তুমি তোমার লক্ষে অটল থাকবে আর লক্ষে পৌছে দেওয়ার দায়িত্ব আমি নিলাম।।
নিতুর স্বপ্নের কথা শুনলাম,তার ইচ্ছে আকাক্ষা তার সম্পর্কে জানতে জানতে কখন যে রাত পেরিয়ে গেছে বুঝতেই পারি নি।।
ফযরের আযানের ধ্বনি কানে ভেসে আসতেই দু’জন মিলে নামাজ আদায় করে ঘুমিয়ে পড়লাম।।
সকালে নিতুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো তাকিয়ে দেখি চা এর কাপ হাতে করে দাঁড়িয়ে আছে,
আমি যেমনটা আশা করেছিলাম ঠিক তেমনটাই হয়ছে আমার বউ টা।
লেইট ঘুমিয়ে আবার সকাল সকাল উঠে সবাইকে চা নাস্তা দিয়ে আমার জন্য চা বানিয়ে এনেছে।।
নিতু সত্যি অনেক লক্ষি একটা মেয়ে,এই কই দিনে পরিবারের সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে।।
কিন্তু পরিবারে থাকলে তো হবে নাহ্ তার ইচ্ছে পূরণের জন্য তো তাকে শহরে যেতে হবে।।
সেদিন দুপুরে খাবার খেতে বাসায় এসে নিতুর হাতে একটা সাদা খাম দিয়ে বললাম,
:-এই নাও,এখানে তোমার ভর্তির সব কাগজ পত্র আছে,আর আমি তোমার ভর্তির সব কিছু ঠিকও করে ফেলেছি।
সামনে সপ্তাহ থেকে তোমার স্বপ্ন পূরনের দিন শুরু হবে।।
ব্যাগ পত্র গুছিয়ে দিয়ে পরিবারে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিতুকে নিয়ে শহরে পাড়ি জমালাম।।বাস করে আসার সময়
সারাপথ নিতু আমার বুকে মাথা দিয়ে এসেছে।।
মেয়েটির চেহারাতে সত্যি একঅন্যধরনের মায়া কাজ করে,যত দেখি ততোই প্রেমে পড়ে যাই।।
নিতুকে হোস্টেলের সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে আসছিলাম।।
কিন্তু অবুঝ হৃদয়টাকে কিছুতেই বুঝ দিতে পারছিলাম না,পাগলিটার মায়া ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে পিছপা হওয়ার শক্তিটা নিমিষেই হারিয়ে যাচ্ছিলো।
তবুও নিতুর স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছি একটুকু কষ্ট তো মেনে নিতেই হবে।।
নিতুকে রেখে এসেছি এক সপ্তাহ হলো,প্রতিটা সময় ওর সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়।।সারাক্ষন ওর সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে কিন্তু ওর পড়ার ক্ষতি হবে ভেবে ফোন দেয় না,তবুও খাবার সময়গুলোতে প্রতিনিয়ত ফোন দিয়ে খোঁজ নেওয়ার বাহানাতে কথা বলতাম।।
১০ দিন হয়ে গেছে না অবুঝ মনটাকে আর মানাতে পারছি না,দোকান ফেলে রেখে শহরের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম।।
হোস্টেলে ঢুকতে বারন তাই ফোন করে বাইরে আসতে বললাম নিতুকে।।
পাগলিটা গেইটের বাইরে আসতেই আমাকে দেখে দৌড়ে এসে আমার বুকে মাথা লুকালো।
আমিও পাগলিটার কপালে আলতো করে ভালোবাসার রেখা এঁকে দিয়ে মন ভরে দেখে নিলাম।
সত্যি প্রিয় মানুষটাকে দেখার ভিতরে যে একটা শ্রান্তি আছে আগে কখনো উপলব্ধি করি নি।।
এভাবে যখনি নিতুকে দেখতে ইচ্ছে করতো গিয়ে দেখা করে আবার চলে আসতাম।।
এদিকে আমার অনুপস্থিতিতে দোকানের ব্যবসা যাই যাই অবস্থা তারউপরে নিতুর ডা. পড়ার খরচ চালানো।
সব বুঝে দোকান গুলো বিক্রি করে দিলাম।।
এখন আমি শহরেই থাকি,তবে সেটা নিতু জানে না।।
দিনের আলোতে মুখে গামছা মুড়িয়ে রিক্সা চালায় আর নিতুর ডা. পড়ার খরচ জোগাড় করি।।
নিতুকে কখনো বুঝতেও দেয় নি,যে আমি রিক্সা চালাই।পাগলিটা জানলে হয়তো তার স্বপ্নকে স্বপ্ন রেখেই ছুঠে চলে আসবে।।
দেখতে দেখতেই অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেলো।।
নিতুরও ডা. পড়া শেষ।।
ভালো রেজাল্ট করেছে,তাকে ঘিরে এক বিশাল অভ্যর্থনার আয়োজন করেছে।।
নিতু ফোন করে শহরে আসতে বললো,তার পাশে থাকার জন্য।।
আজকে নিজেকে খুব ভাগ্যমান মনে হচ্ছে।।কারন আমি পেরেছি,পেরেছি নিতুকে দেওয়া ওয়াদা পালন করতে।।
নিতুর দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী গেলাম,রিক্সাটা এক কোণে রেখে গামছা দিয়ে মুখটা ভালো করে মুড়িয়ে নিলাম।।
বেশ জমজমাট করে সাজানো হয়েছে চারপাশটা,গেইট দিয়ে সব ভদ্র মানুষ গুলো ঢুকছে।।
তাদের গায়ে ভালো ভালো জামা-কাপড়।।
সবার মাঝে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগছে।তবুও ধিরে ধিরে পা বাড়াতে লাগলাম।
গেইট দিয়ে ঢুকতে যাবো এমন সময় দারোয়ান পথ আগলে দাঁড়ালো।
:-এই ভিতরে কোথায় যাস?যাহ্ এখানে কোনো ভিক্ষা হবে নাহ্।
:-যেই ম্যাডামের অনুষ্টান সে আমাকে চিনে।
:-পাগল গারদ থেকে পালিয়ে এসেছিস নাকি দিনের বেলাতে গাঞ্জা খেয়েছিস যাহ্ ভাগ এখান থেকে।
বলেই ধাক্কা মেরে ফেলো দিলো।।
ঠিকি তো ভিতরে তো সব বড় বড় মানুষদের আনাগোনা তাদের ভিতরে কি আমাকে মানায়,কিন্তু নিতুকে তো দেখতে হবে তাই বাইরে একটা কোণে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।।
দেখি নিতু ফোন করেছে।
:-কতদুর তুমি? তুমি না আসলে কিন্তু আমি মঞ্চ এ উঠবো না,তোমাকে পাশে করে তারপর মঞ্চে উঠবো।
নিজের কান্নাকে চেপে রেখে উত্তর দিলাম।
:-আমি জ্যামে আটকে গেছি,সমস্যা নেই আমার জন্য অপেক্ষা করতে হবে নাহ্ আমি তাড়াতাড়ি পৌছে যাবো।
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
একটু পরে নিতু মঞ্চে আসলো,,,হাতে ডা. পোষাক।
নিতুর সাফল্য দেখে সবাই হাততালি দিচ্ছে।।
কেও একজন নিতুকে প্রশ্ন করলো তার ডা. পড়ার পিছনে সবথেকে বড় অবদান কার।।
নিতু তার প্রশ্নের উত্তর হিসেবে বললো..
:-আমার সহধর্মী, আমার সারাজীবনের পথচলার সাথি আমার বর।।
আমি স্বপ্ন দেখতাম ডা. হবো আর সে আমার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিনত করেছে।
আমাকে অনুপ্রেরিত করেছে।
নিতুর কথা শুনে মুহুর্তের ভিতরে এতেদিনের কষ্ট গুলো নিমিষেই হারিয়ে গেলো।
চোখ দিয়ে নিজের অজান্তেই জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো।।
সবাই জানতে চাইলো তার সাফল্যলাভ এর পিছনে থাকা সেই মানুষটা কোথায়।
নিতু আবার ফোন দিছে,,
:-তুমি কোথায় তাড়াতাড়ি আসো না,তোমাকে সবাই দেখবে।
নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলাম না,,
:-আমি বাইরে অনেক্ষন ধরেই অপেক্ষা করছি,কিন্তু এখানকার দারোয়ান আমাকে ঢুকতে দেয় নি তাই বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।
নিতু আমার কথা শুনে দৌড় দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে বাইরে চলে আসলো।
এসে চারিদিকে খুঁজলো কিন্তু কোথাও কোনো মানুষ নাই,একজন রিক্সাওয়ালা ছাড়া।
নিতু আমাকে না পেয়ে আবার ফোন দিলো,ফোনটা বার করতেই নিতু অবাক দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসলো।
:-রাহাত তুমি?
নিতুর কথা শুনে মুখ থেকে গামছাটা সরিয়ে নিয়ে
:-হুম আমি।
:-তুমি এভাবে কেন,কি পরেছো এগুলো..”!
:-আমি একজন রিক্সাওয়ালা,তোমার স্বপ্ন পূরণের প্রত্যাশী।।
:-মানে,তুমি এভাবে কেন?
:-তোমার ডা. পড়ার খরচ যোগাতে গিয়ে সব বিক্রি করে দিছি।
:-আমাকে বলো নি কেন?
:-তোমাকে বললে তো তুমি আর পড়তে না,আর আমি সেটা কখনো চাই নি তাই।।
:-তাই বলে আমার জন্য তুমি তোমার সর্বস্ব শেষ করে দিবে।
:-ভালোবাসি তোমাকে,আর যাকে ভালোবাসি তার স্বপ্নটাকে ভেঙ্গে যেতে দেয় কিভাবে।
নিতু আর কোনো কথা না বলে আমার ঘামার্থ বুকের ভিতরে নিজের মাথা লুকিয়ে নিলো।।
আমিও প্রতিবারের মতন এবারো নিতুর কপালে ভালোবাসার চুম্বন এঁকে দিয়ে বললাম,ভালোবাসি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
:-নিজেকে আজ অনেক ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে তোমার মতন একজন জীবনসঙ্গী পেয়ে।।
:-আমিও অনেক ভাগ্যবান,যে তোমার মতন একটা লক্ষি বউ পেয়েছি।।
:-এই তোমার হাটুতে কি হয়েছে।
:-ওহ্ কিছু না,সামান্য কেটে গেছে।
:-সামান্য কোথায়,অনেক রক্ত বার হচ্ছে একটু দেখে চলবা না।
:-ইচ্ছে করেই আঘাতটা লাগিয়েছি,যাতে তোমার ভালোবাসার পরশ দিয়ে ক্ষতটা সারিয়ে দিতে পারো।।
:-হুম চলো এখন ভালো করে সেবা করবো তোমার,পাগল একটা……
ভালোবাসা গুলো এমনি হয়ে থাকে নিঃস্বার্থ।।
আর প্রিয় মানুষগুলোর ক্ষেত্রে ভালোবাসার নিঃস্বার্থতার পরিচ্ছেদ তো অগণিত।
প্রিয় মানুষগুলোর স্বপ্ন পূরণের জন্য বিলীন হয়ে যাই নিজের সবকিছু,তবুও দিন শেষে নিজেকে সুখি ভেবে নেই শুধু মাত্র প্রিয় মানুষটির সুখি মুখ টাকে দেখে।
বেঁচে থাকুক এমন ভালোবাসা গুলো হাজার হাজার বছর ধরে…
বেঁচে থাকুক রাহাত আর নিতুর ভালোবাসা।।
গল্পের বিষয়:
ভালবাসা