এই কথা শুনে আমার ঠিক কোন ধরনের রিয়্যাকশন দেয়া উচিত আমি বুঝতে পারলাম না। হাসবো, দুঃখ পাবো, নাকি অবাক হবো?
আমি অবিশ্বাসের ভঙ্গি করে বললাম, ‘সিরিয়াসলি? এতোজন ছেলে?’
মেয়েটা কিছুক্ষণ চুপ করে আমার দিকে চেয়ে রইলো। তারপর ব্যাগ থেকে ডায়েরী মতো কিছু একটা বের করে খুলে আমার সামনে রেখে বললো, দেখেন।
আমি দেখলাম একটা লিস্ট। এক থেকে তেরো পর্যন্ত তেরোজনের নাম লেখা। আমি চোখ বুলালাম।
লিস্টের এক নাম্বার নাম, আসিফ ইকবাল। পাশে লেখা, সুইসাইডের কারন- ‘তিনমাস প্রেম করার পর ছ্যাকা।’
তার পাশে লেখা, সুইসাইডের মাধ্যম- ‘ঘুমের ঔষধ খেয়ে মৃত্যু।’
লিস্টের দুই নাম্বারে, সঞ্জয় সরকার। সুইসাইডের কারন, ‘হিন্দু বলে কয়েকমাস ঘুরিয়ে তার প্রেমে শেষ অব্দি সাড়া না দেয়া।’
সুইসাইডের মাধ্যম- ‘গলায় দড়ি।’
এইভাবে মোট তেরজনের ব্যাপারে সুন্দরভাবে বিস্তারিত লিখে রাখা। মাঝে আট আর এগারো নাম্বার নীল কালিতে লেখা, তের নাম্বার লেখা সবুজ কালিতে।
আমি প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে চাইতেই মেয়েটা বললো, নীল কালিতে লেখা দুজন ভার্সিটি পড়ুয়া। একজন ডিইউ আরেকজন চিটাগাং ইউনিভার্সিটির। আর সবুজ কালিতে যে জনের নাম লেখা সে ডাক্তার ছিলো। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের।
তারপর একটু আফসোস করে বললো, বুয়েট আর কুয়েটের দুইজনও আমার জন্য এটেম্পট করেছিলো কিন্তু শেষপর্যন্ত বেঁচে যায়। বুয়েটের জন তো চারতলা থেকে লাফ দিয়ে টানা তিনদিন আইসিইউতে ছিল। ডাক্তার বলেছে তার বেঁচে ফেরাটা মিরাকল। ইস!
আমি ভালোভাবে মেয়েটার দিকে চাইলাম। রেস্টুরেন্টের মৃদু আলোতেও বেশ স্পষ্ট টের পাওয়া যাচ্ছে। অনিন্দ্য সুন্দরী। এরকম কোনো মেয়েকে দেখেই বুঝি কবি বলেছিলেন, ‘মুনিগণ ধ্যান ভাঙি দেয় পদে তপস্যার ফল।’
মেয়েটার সাথে আমার পরিচয় ফেসবুকে। আমার লেখা গল্পের নাকি খুব ফ্যান ও। একদিন রাতে ইনবক্সে নক করে বলে, আমাকে একটা ইন্টারেস্টিং গল্প শোনাতে চায়। মেসেঞ্জারে বা ফোনে না, সামনাসামনি। প্রোপিকে ডল পুতুল আর কভারে লতাপাতার ছবি দেয়া প্রায় ফেক আইডির মতো কারো এই টাইপ আহবানে সাড়া দেয়ার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলোনা।
আমি না বলে দেই সরাসরি।
মেয়েটা তখন মেসেঞ্জারে একটা ভয়েস এসএমএস পাঠায়। মেয়েলী কন্ঠের অনুরোধ, ‘সোহাইল প্লিজ, আমার সাথে একটা বার দেখা করেন। প্লিজ প্লিজ প্লিজ।’
আমি কন্ঠ শুনে টানা বিশ মিনিট সোজা বাংলায় যাকে বলে তব্দা খেয়ে বসে থাকি। এতো সুন্দর, আইমিন এতো এতো সুন্দর কন্ঠ একটা মানুষের কিভাবে হতে পারে? উফ! যেকোনো বিখ্যাত গায়িকা এই মেয়ের কাছে জাস্ট ডালভাত।
আমি তখনই সিদ্ধান্ত নেই এই অদ্ভুত সুন্দর কন্ঠের মালকীনকে যেভাবেই হোক সামনাসামনি দেখতেই হবে আমার।
আর আজ তার গল্প শুনতে এসে মেয়েটাকে দেখে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসলো। বুকের মধ্যে এতো জোরে জোরে ধুকপুক শব্দ শুরু হলো যে আমি ভয়ই পেয়ে গেলাম রেস্টুরেন্টের মানুষজন বাইর থেকে আমার হৃদযন্ত্রের ধুকপুকানি শুনে না ফেলে। শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়া গলা ভেজাতে এক চুমুকে সামনে রাখা গ্লাসের পানি শেষ করে অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমি মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছি।
মেয়েটা বলে আর কতক্ষণ চালাবো এবারে একটা নাম দেই। আসল নামটা বলা যাবেনা, তাই একটা ফেক নাম দিয়ে দেই গল্প এগিয়ে নেয়ার খাতিরে। আচ্ছা ধরি ওর নাম তৃষা। আমাকে চুপ করে থাকা দেখে তৃষা বললো, ‘আপনি কিছু ভাবছেন?’
ওর কথায় বাস্তবে ফিরলাম। আমতা আমতা করে বললাম, ‘তোমার গল্পটা বললা না তো। কি গল্প যেন শুনাতে চাইছিলা।’
হ্যাঁ, হ্যাঁ, তৃষা ভুলে গেছিলো এখন মনে পড়েছে টাইপ ভঙ্গি করে হাসলো। হাসি দেখে আমার হার্ট অলমোস্ট আরো কয়েকটা বিট মিস করলো।
তৃষা বললো, ‘গল্পটা আসলে লাস্ট যে ছেলে সুইসাইড করেছে আমার জন্য তাকে নিয়ে। ঐ যে বললাম না ডাক্তার যে জন। নাম রাফি আহমেদ। ওর সাথে আমার পরিচয় হয় একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে। আমার কাজিনরা ওকে দেখে কানাঘুষা করছিলো। ছেলেটা ডাক্তার, তার উপরে খুবই হ্যান্ডসাম, সব মেয়েদের ক্রাশ, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি ওদের কথা শুনেই ঠিক করে ফেলি রাফি নেক্সট টার্গেট। কারন আমার অনেকদিনের স্বপ্ন কোনো ডাক্তার ছেলেকে ফাঁসানো। ডাক্তার ছেলে ছাড়া আমার লিস্টটা কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে এরকম অনেককেই সুইসাইডের চেষ্টা পর্যন্ত তো অন্তত নিতে পেরেছি, কিন্তু এখন অব্দি কোনো ডাক্তারের সাথেই আমার প্রেম করা হয়নি। হ্যাঁ, আপনাকে বলে রাখি যে আমি নিজে একজন মেডিকেল পড়ুয়া। সুতরাং ডাক্তার ছেলে বিহীন আমার লিস্টটা থাকা আমার জন্য অপমানেরও বটে। তো যেই ভাবা সেই কাজ, আমি কাজিনকে বলি ছেলেটার সাথে আমার যেন পরিচয় করিয়ে দেয়। কাজিন রাজি হয়। রাফিকে ডেকে এনে আমার সাথে পরিচয় করায়। আমিও ডাক্তারি পড়ছি শুনে খুব ইমপ্রেস হয়ে যায় ও। আমরা ঘন্টাখানেক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করে ফিরে যাওয়ার সময় একে অন্যের ফোন নাম্বার নিয়ে রাখি।
পরদিন রাতে কল দেয় রাফি।
তার পরদিন আবার। তার পরদিন আবার।
ঠিক দুইসপ্তাহ হর আমাকে প্রপোজ করে ছেলেটা।
আমি ভেবেছিলাম এক সপ্তাহতেই কাজ হবে। কিন্তু আমার ধারনা ভুল প্রমাণিত হওয়ায় আমার ভীষণ রাগ হয়। আমি ঠিক করি, আমাকে এতোদিন ঘুরানোর জন্য কঠিন প্রতিশোধ নিবো। সুইসাইড করাবো খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। অন্যদের মতো দীর্ঘদিন অপেক্ষা করবো না। সেইমত আমি একটা প্লান ঠিক করি। তারপর ওর প্রপোজ একসেপ্ট করি।
পরবর্তী দশদিন আমরা টানা পাগলের মতন প্রেম করি। পুরা সখি ধর ধর অবস্থা। গল্পের মাঝে তৃষা হাসে হি হি করে।
হাসি থামিয়ে বলতে থাকে, আমি এমন ভাব করি যেন এক মুহুর্ত ওকে ছাড়া থাকতে পারিনা টাইপ। একটু পর পর ফোন দেয়া, ডেইলি ওর হোস্টেলের সামনে এসে দাঁড়ায়ে থাকা, ওকে বাসা থেকে রান্না করে নিয়ে গিয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়া, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি যখন বুঝতে পারলাম ছেলেটা আমার প্রেমে পাগলপ্রায় তখন ঠিক দশদিন পর ওকে বলি তুমি আজ এক্ষুণি আমাকে বিয়ে করবা। আমি তোমাকে আমার ভেতরে ধারণ করতে চাই। কিন্তু ইউ নো, বিয়ে ছাড়া শারিরীক সম্পর্ক হারাম। সো তুমি আজই বিয়ে করবা আমাকে কাজি অফিসে।
রাফি আমতা আমতা করে। বলে, ‘বিয়ে করলে খাওয়াবো কি? আমাদের ফ্যামিলি কি বলবে? হ্যান ত্যান।’
আমি সমাধান দেই। দেখ, আমরা বিয়ে করে রাখবো কিন্তু কাউকে বলবো না। মাঝে মাঝে একসাথে রাতে থাকবো শুধু। দুজনই যেহেতু হোস্টেলে থাকি সেহেতু প্রবলেম হবে না। তারপর কয়েক বছর পর আমাদের লেখাপড়া শেষ হলে ফ্যামিলিকে সব জানাবো।
রাফি খুশি হয়ে রাজি হয়। আমরা সেদিনই কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে করি। রাতে একটা হোটেলে স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে কাবিননামা দেখিয়ে রুম ভাড়া করি। আমাদের বাসর হয় হোটেল কক্ষে। ফিজিকাল রিলেশন করি আমি আর রাফি।’
‘হোয়াট! এইবার আমি ছোটখাটো একটা চিৎকার দেই। তুমি সিরিয়াসলি ওর সাথে সেক্স করেছিলে?’
‘হ্যাঁ, করেছিলাম। এগুলো নিয়ে আমার তেমন কোনো এলার্জী নেই। আগেও বহুবার করেছি। তুমি গল্প শুনো।’
আমি লক্ষ্য করলাম সে আমাকে আপনি থেকে তুমিতে নামিয়ে এনেছে।
আমি গল্প শুনতে আগ্রহী ছিলাম। চোখমুখ শক্ত করে বললাম, ‘তারপর কি হলো বলো।’
‘তারপরের গল্প খুব বেশি না। পরদিন সকালে আমি হোটেল থেকে চলে আসি। দুইদিন ওর সাথে কোনো যোগাযোগ রাখিনা। ও প্রায় পাগল হয়ে যায় আমার কোনো খোঁজ না পেয়ে। তৃতীয় দিন আমি ওকে বলি আমার ডিভোর্স চাই। কারন হিসাবে বলি, তুমি শারীরিক ভাবে অক্ষম। আমাকে পূর্ণ তৃপ্তি দিতে পারোনি। তোমার সাথে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না।
ইউ নো, তোমার জানার কথা একটা ছেলের কাছে এই জিনিস কতটা অপমানের। রাফি উত্তরে কিছুই বলতে পারেনা। চুপচাপ চলে যায় সামনে থেকে। পুরোপুরি ভেঙে পড়ে ও। ড্রাগ নেয়া শুরু করে। আমি তখন ওকে আরো জ্বালিয়ে দিতে দুইদিন পরই অন্য এক ছেলের সাথে রিলেশনে যাই। ফেসবুকে ইন এ রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দেই। আমাদের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ওকে পাঠাই। বলি তুমি যেটা পারোনি এই ছেলে সেটা আমাকে নিয়মিত দিতে পারছে।
রাফি আর সহ্য করতে পারেনা। প্রচন্ড ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। আমি ওকে আরো নানাভাবে অপমান করতে থাকি। মেসেজ দেই, আজ আমার বাবু পুরো বিশ মিনিট করেছে। আর তুমি তো ছিলে পুরুষত্বহীন। ভাগ্যিস তোমাকে ছেড়েছিলাম টাইম মতো।
ফাইনালি সহ্যের ক্ষমতা বুঝি শেষ হয় ওর। পরদিন ঘুম থেকে উঠে আমি কাঙ্ক্ষিত খবর পাই। তখনই সবুজ কালিতে ডায়েরীর পাতায় লিস্টটা বারো থেকে তের করি।’
গল্প শেষ করে তৃষা আমার দিকে তাকায়। আমি সামনে রাখা ডায়েরী দেখি। নাম্বার তের, রাফি আহমেদ। বিয়ে, ডিভোর্স, পুরুষত্বহীনতার অপবাদ। ছয়তলার ছাদ থেকে লাফ দেয়া।
শুরুতেই ধারনা করেছিলাম, এবার শিওর হলাম। তৃষা নামের এই অতি সুন্দরী মেয়েটা একজন সাইকো। কিন্তু আমি তারপরও সিদ্ধান্ত নিলাম প্রেম আমার এর সাথেই করতে হবে। আমার নিজের উপর ভরসা অনেক। এই সাইকো মেয়েকে আমি ঠিক সুস্থ করে তুলবো।
আমি তৃষার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসি। আসার সময় নাম্বার চাই। ও দেয়। আমিও আমার নাম্বার দিই।
তৃষা বাসায় গিয়ে ডায়েরীটা বের করে। লাল কালী দিয়ে বড় বড় করে লেখে, “নেক্সট টার্গেট সোহাইল রহমান- একজন লেখক।”
আমি পরদিন ওকে ফোন দিয়ে বিকালে দেখা করতে বলি। রেস্টুরেন্টে আবারো আমার মুখোমুখি তৃষা। আমি কথা বলি, ‘দেখ, আমি খুব স্ট্রেইট কাট একজন মানুষ। যা বলার সরাসরিই বলি। আমি তোমার গল্প শুনেই বুঝেছি তুমি মানসিকভাবে অসুস্থ। কিন্তু তারপরও আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেছি। আমি আমার লাইফে তোমাকে চাই। সারা জীবনের জন্য। আমি তোমার অতীতের সবকিছু ভুলে যেতে রাজি আছি। তোমার বাকি জীবনের জন্য তুমি আমাকে একমাত্র পুরুষ বানাও, আমি তোমাকে সুস্থ করে তুলবো। আই লাভ ইউ, ডু ইউ লাভ মি? হ্যাঁ অথবা না বলো। যদি হ্যাঁ বলো, তো আমি প্রমিজ করছি তোমার জীবন বদলে দেব একদম। তোমার জন্য আর কোনোদিন কোনো ছেলে সুইসাইড করবে না। তবে, তুমি এটা ভেবেও হ্যাঁ বলতে পারো যে আমি তোমার নেক্সট টার্গেট। সেক্ষেত্রে আমি তোমাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। চলো প্রেম করি। দেখি কে সাকসেসফুল হয়। আমি তোমাকে ঠিক করে ফেলি, নাকি তোমার জন্য আমিই সুইসাইড করি। ধরবা বাজি? লাগবা চ্যালেঞ্জ?’
তৃষা অনেক্ষণ চোখ সরু করে রেখে বলে, ‘লাভ ইউ টু। আমিও আসলে ভালো হয়ে যেতে চাই সোহাইল। প্লিজ হেল্প মি।’
মনে মনে অবশ্য কুৎসিত একটা হাসি দিয়ে বলে, ‘চ্যালেঞ্জ একসেপ্টেড।’
তৃষা আমার প্রেমিকা। আমরা এখন বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড। মাত্র চার পাঁচ দিনেই আমি বুঝে ফেলি পাগলের মতো প্রেম বলতে আসলে কি বুঝায়! তৃষা যেন একদম বদলে গেছে। আমাকে একটা রুটিন করে দিয়েছে, যেটা ও আর আমি দুজনই মানবো এখন থেকে। রুটিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আছে, ঠিকমতো খাওয়া আছে, ফেসবুকিং করার জন্য সময় আছে, ওর সাথে কতক্ষণ ফোনে কথা হবে আর কতক্ষণের জন্য দেখা হবে ডেইলি, সেটাও লেখা আছে। আমি রুটিন মেনে চলি। দিনগুলো কাটে স্বপ্নের মতন। তারপর ঠিক এক সপ্তাহ পর তৃষা আমাকে মেসেজ পাঠায়, ‘তোমাকে এক্ষুণি হাগ করতে ইচ্ছা করতেছে আমার। এক্ষুণি এক্ষুণি এক্ষুণি। তুমি ব্যবস্থা করো।’
আমি এক বন্ধুর ফ্লাটের চাবি নিয়ে বন্ধুকে পাঠিয়ে দেই সিনেমা দেখতে। আসতে বলি তৃষাকে। তৃষা আসে। কপট ঢং করে বলে, ‘শুধু হাগ হবে কিন্তু, আর কিচ্ছুনা, ওকে?’ আমি আচ্ছা বলে জড়িয়ে ধরি ওকে। হাগ আস্তে আস্তে কিস অব্দি গডায়। কিস সেক্স অব্দি।
তৃষা আমার পাশে শুয়ে জামা পরতে পরতে বলে, কাজটা তুমি কিন্তু একদম ঠিক করলা না। আমি ভেবেছিলাম ভালো হয়ে যাবো। তোমার জন্য পারলাম না। ফাজিল কোথাকার।
আচ্ছা স্যরি, আমি প্রমিজ করি, এই ভুল আর কক্ষণো হবে না। তুমি বসো আমি কফি বানিয়ে আনছি। ক্যাপুচিনো না এক্সপ্রেসো? বাসায় কফি মেকার আছে।
তৃষা মুচকি হেসে বলে, ‘আমি ডায়েট করছি। সিম্পিল ব্লাক।’
পরিশিষ্ট: ব্লাক কফি খেয়ে তৃষা নীল হয়ে যায়। আমি চাদর দিয়ে ওর শরীর ঢেকে নিজের ব্যাগ থেকে ডায়েরী বের করি।
নীল কলম বের করে লিখি তেতাল্লিশ। ফারজানা হাসান মিম। সেক্স প্লাস খুন; দুটোই কমপ্লিট। হ্যাঁ, ওর আসল নাম এইটা। আমার মিশন কমপ্লিট, এখন আর ফেক নাম দিয়ে কি হবে।
আর ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের পার্থক্য নেই, সবার জন্যই আমি নীল ব্যবহার করি। কেন, কে জানে! হয়তো বিষের রঙ নীল এজন্য। অথবা হয়তো কারনটা নীল- বেদনার রঙ বলে!