অনেক দিন পর সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম
অনেক গল্পের পর
সবার থেকে বিদায় নিয়ে
গুটি গুটি পায়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
পকেটে হাত দিয়ে দেখে ১৫ টাকা আছে
অভ্যাস মত সামনের টং এর দোকান থেকে ১২ টাকায় একটা ব্যানসন আর মুখের গন্ধ নিবরনের জন্য একটি পালস নিয়ে সোজা হাটতে লাগলাম।
সন্ধা হবে হবে ভাব
হালকা শীত
তাই সিগারেট টা টানতে ভালই লাগছে
হটৎ পেছন থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠ থেকে ভেসে আসল
“রায়ননননন”
কন্ঠটা চেনা চেনা লাগছে!!!
হটাৎ দেখি পা দুটোও থেমে যাচ্ছে
ঠিক আগে যেমন এই কন্ঠটা শুনে থেমে যেত!!
পেছনে ঘুরে তাকাতে দেখি
স্নিগ্ধা!!
কিছু বলতে না বলতে ই স্নিগ্ধা সামনে এসে পরল
-কেমন আছ??
-তুমি যেমন রেখেছ!!
তুমি তো খুব ভালই আছ,
তাই না?
-তোমার তো এখনো বেশি বোঝার স্বভাব টা পালটায় নি দেখছি।
-কি বেশি বুঝলাম??
-এই যে আমি ভাল আছি কি না!
এটা জানলে কি ভাবে??
-এমনি।
(হাতে সিগারেট টা জ্বলছিল,
স্নিগ্ধা আর চোখে সেই দিকে তাকিয়ে দেখছিল)
-সিগারেট এখনও ছাড়তে পারলে না??
-নাহ।
যার জন্য ছাড়তাম সে ই তো নেই।
(এটা বলেই সিগারেট বড় একটা টান দিলাম,
কিন্তু হটাৎ কে স্নিগ্ধা ছো মেরে সিগারেটা নিয়ে ফেলে দিল।
তেমন আর্চয্য হলাম না
কারন এমন অনেক বার করেছে
কিন্তু তখন তো স্নিগ্ধা আর আমি রিলেসনসিপে ছিলাম
এখন দুই জন দুই পথে)
-সিগারেট টা ফেল্লে কেন??
-তো!!
অনেক বার না করছি এটা খেতে,
তবুও কেন খাও??
-আমিও তো অনেক বার বলছিলাম আমার জীবনে থাকতে,
তবুও তো চলে গেলে।
-সিগারেট না খাওয়া আর চলে যাওয়ার মধ্যে কর মিল নেই।
আর সিগারেট খাবা না ব্যাস।
-এই কথা গুলো বলার অধিকার অনেক আগেই তুমি হারিয়ে ফেলেছ।
-এত যুক্তি দেখাও ক্যান??
খেতে না করছি খাবা না ব্যাস।
-যুক্তি দেওয়া পুরোনো অভ্যাস
কিন্তু তোমার কথা শোনার অভ্যাস টা তো অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
-ওহ।
যাক বাদ দাও।
তোমার নতুন গফ কেমন আছে??
নিশ্চই সে অনেক সুন্দর??
-আমি অন্য সবার মত
নতুন করে অন্য কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারি না।
-রায়ননন
-হুম। বলো।
-আমরা কি আবার রিলেসন টা নতুন ভাবে শুরু করতে পারি না??
-নাহ পারি না।
-কেন??আমি জানি তুমি এখনও আমাকে ভালবাস।
তবে রিলেসন করতে সমশ্যা কি??
-ভালবাসলেই কি রিলেসন করতে হবে??
আর ভাঙা রিলেসন জোড়া লাগাতে হলে ভাঙা বিশ্বাস জোড়া লাগাতে হয়।
(বলতে বলতে হটাৎ স্নিগ্ধার ফোনের
ওয়াল পেপারের দিকে চোখ গেল,
দেখি আমার সেই পিকটা ওর ওয়াল পেপারে।
হটাৎ ভাবতে লাগলাম স্নিগ্ধা কি
এখনও আমাকে ভালবাসে??)
-রায়নননন
!!!
(স্নিগ্ধার ডাকে হটাৎ ঘোর কাটল)
-হুম। বলো।
-কি ভাবছিলে???
-কই কিছু না তো।
-ওহ।
চলো না সামনে গিয়ে একটু বসি?
-নাহ।
থাক।
সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে,
তুমি বাসায় যাও।
-না,
চলো।
হতেই পারে আজ আমাদের শেষ বসা।
(কিছু একটা ভাবলাম
)
-ওকে চলো।
(এরপর সামনে গিয়ে একটা বেন্চে বসলাম)
-তারপর নিজের চেহারার এই হাল করেছ কেন??
-কি হবে চেহারা দিয়ে??
-তা জানি না।
বাট এত বড় বড় দাড়ি কেন??
দাড়ি কাট না কত বছর??
-এই তো।
কার জন্য স্মার্ট হয়ে চলব??
-জানি না।
বাট আমার রাজপুত্র কে দেবদাস লুকে দেখতে চাই না।
-হাহাহা,
তোমার রাজপুত্র ছিলাম।
এখন নেই।
-যাই হোক।
কাল যেন ক্লিন হয়ে চলতে দেখি।
-হুম দেখি।
-দেখি মানে??
আর মরা মানুষের মত হুম হাম করে কথা বলছ কেন??
-তো কি বলব??
-কিছু না।
আচ্ছা রায়ন মনে আছে??
আমাদের প্রথম দেখা কিন্তু
এমন একটা বিকেলেই হয়ে ছিল।
-মনে আছে।
কিন্তু তোমার কি ভাবে মনে আছে বুঝি না।
-উফফফ।
খোচা মেরে কথা বলার হচ্ছে এখনও যায় নাই??
-নাহ।
আমি আগের মত ই আছি।
শুধু দাড়ি গুলো একটু বড় হইছে।
-তার মনে আগের মত ই আমাকে ভালবাস??
-……….
-কি হলো চুপ কেন??
-বাদ দাও।
এখন উঠো।
সন্ধ্যা হয়ে যাবে।
(এটা বলেই আমি উঠে হাটা শুরু করলাম,
কারন আর কিছুক্ষন থাকলে হয়ত নিজে কে ধরে রাখতে পারবনা)
-এই কই যাও??
-জানি না।
-দাড়াও বলছি।
(আর কিছু বলতে পারলাম না তার আগেই টের পেলাম কেউ একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে)
-এই কি করছ,
কেউ তো দেখে ফেলবে।
-দেখুক।যাকে ভালবাস, যাকে ছাড়া থাকতে পার না,
তার থেকে দুরে চলে যাচ্ছ কেন??
(কিছু বলতে যাব এর মধ্যেই দেখি পাগলিটা কান্না করছে,
কি আর করার আমিও আলতো করে জড়িয়ে ধরলাম,
কিন্তু অমনি কান্নার গতি আরও বেড়ে গেল)
-স্নিগ্ধা।
কান্না করো না।
-…………
(কেঁদেই চলছে)
-থামো বলছি।
-তুমি বল সব সময় আমাকে এই ভাবে জড়িয়ে রাখবা??
-কিন্তু……
(কিছু বলার আগেই মুখ চেপে ধরল)
-কোন কিন্তু নেই।
আমার ভুল হয়েছে,
আমাকে শেষ বারের মত ক্ষমা করে দাও,
প্রমিস করলাম আর কখনও ভুল হবে না।
-ওকে।
এবার ছাড়ো।
(আমাকে ছেড়ে দিয়ে
আমার দিকে তাকিয়ে তখনও কাঁদছে,
আমি আলতো করে চোখ মুছে দিলাম।)
-কাঁদে না,
পাগলি আমি আছি তো।
-হুম
-এই বার একটু হাসো।
(এবার মুচকি একটু হাসি দিয়ে
আবার বুকে ঝাপিয়ে পরলো পাগলিটা)
-Love u Rayon.
-Love u too snigdha.
(এভাবেই আবার জোড়া লাগল দুই জনের ভালবাসা, ফিরে আসুক হারানো ভালবাসা গুলো, ভালো থাকুক রায়ন-স্নিগ্ধারা)